মালিকা-এ-তরন্নুম
পল্লব চট্টোপাধ্যায়
“ইয়ে না হামারি কিসমত মে থী”- এ তো আমার ভাগ্যে ছিল না!
দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ দশক তাঁর জাদুকরী কণ্ঠসুধায় মোহাবিষ্ট ছিল ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের গজল ভক্তরা। তিনি গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতার। তার জন্মশতবার্ষিকী পেরিয়েছে নয় বছর আগে।
সঙ্গীত জগৎ তাঁকে গজল সম্রাজ্ঞীর আসনে বসালেও বেগম আখতারের ব্যক্তিজীবন ছিল যেন যন্ত্রণার এক অন্তহীন যাত্রা। শিশুকালেই পিতা তাকে পরিত্যাগ করেন। বয়স তখন মাত্র চার- এসময়ে সম্পত্তিলোভী কুটিল আত্মীয়রা বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা চালায় যমজ দুবোনকে। কিন্তু সকল প্রতিকূলতা আর ভয়াবহ শত্রুতাকে দূরে ঠেলে এক প্রাকৃতিক শক্তির মতই জেগে উঠেছিলেন বেগম আখতার যেন কষ্টের সাগর পান করা নীলকণ্ঠ।
তাঁর মৃত্যুর পর লক্ষ্মৌয়ের ‘পসন্দাবাগ’-এ সমাধিটার উপর জমেছে শুকনো ঝরাপাতার রাশি, জ্বলেছে হাজার মোমবাতি। কখনো বা কোনো ভক্ত এক গোছা রক্তিম গোলাপ রাখতে গিয়ে মাটিতে আলগোছে ছড়িয়ে দিয়েছে কয়েকটা পাপড়ি। প্রকৃতির নান্দনিক ছন্দে সেখানে মাঝে মাঝে ভেঙে গেছে অনন্ত নীরবতা। যাঁর কণ্ঠের এক প্রান্তে ‘রুহি-গুলাবের’ গন্ধমাখা ঠুমরি, দাদরা কিংবা গজলের স্মৃতিসুধা, তারই অন্য প্রান্তে, জমে থাকা বিরহ, বিষণ্নতা আর যন্ত্রণা। আর এ দুয়ের মাঝে লুকিয়ে রয়েছে বিবি, আখতারি বাঈ ফৈজাবাদি থেকে বেগম আখতার হয়ে ওঠার নস্টালজিক ও ট্র্যাজিক কাহিনি এবং ঔপনিবেশিক যুগে তথাকথিত অভিজাত মুসলমান পরিবারের কুসংস্কারাচ্ছন্নতার বিরুদ্ধে নারীসত্ত্বার লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে আত্মপ্রতিষ্ঠার সত্য-গল্পও তাঁর জীবনের নিবিড় অথচ করুণ অংশ।
ভারতের উত্তর-প্রদেশের ভাদ্রাসা গ্রামে আইনজীবী আসগর হোসেনের দ্বিতীয়, মতান্তরে তৃতীয় স্ত্রী মুসতারী ১৯১৪ সালের ৭ অক্টোবর যমজ কন্যার জন্ম দেন। বাবা আদর করে তাদের নাম রাখেন জোহরা ও বিব্বি।
তবে মুশতারিকে পরবর্তীকালে স্বীকার করেননি স্বামী সৈয়দ আসগর হুসেন। তিনি ব্যারিস্টার, অভিজাত সৈয়দ বংশের সন্তান; এর বিপরীতে অসামান্য সুন্দরী হলেও মুশতারি সামান্য এক ব্যবসায়ীর মেয়ে, বংশমর্যাদা নেই। ফলে, যমজ কন্যার জন্ম দিয়েও একা থাকতে হত মুশতারিকে। বাচ্চাদের চার বছর বয়সকালে একদিন তাদের হাতে বিষ মাখানো মিষ্টি দিয়ে গেল পিতৃকূলের স্বজনরা। মারা গেল জোহরা, বেঁচে থাকল বিবি। এরপর তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল সৈয়দ বংশের ভাড়া করা গুণ্ডারা, তবু বেঁচে রইল মা-মেয়ে। স্বামীর বাড়ি ছাড়লেন মুশতারি। এরপর অনেক কষ্টের জীবন কাটে বিবিকে নিয়ে। মা চেয়েছিলেন লেখাপড়া করাতে। কিন্তু মেয়ে চায় গান শিখতে। এই ছোট্ট বিবিই পরে পরিচিতি পান আখতারি বাই ফৈজাবাদী; কাকোরির বেগম ইশতিয়াক আহমদ আব্বাসি,বেগম আখতার প্রভৃতি নামে।
১১ বছর বয়সে কলকাতায় এক চ্যারিটি অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে নির্দিষ্ট গায়কদের অনুপস্থিতিতে হঠাৎ সুযোগ পান বেগম আখতার। এখানে তার কণ্ঠইন্দ্রজালে মোহাবিষ্ট সবাই। এই সেই আসর যেখানে সানাই গুরু বিসমিল্লাহ খান প্রথম আনুষ্ঠানিক পরিবেশনা করেন-তাঁর কিশোর বয়সে। আখতারির পরিবেশনার প্রশংসায় তখন ভাসছিলেন কলকাতার অভিজাত সম্প্রদায় আর পত্রিকাওয়ালারা। মেগাফোন কোম্পানির বড়কর্তা জে এন ঘোষ চুক্তি করলেন আখতারির সঙ্গে। গাড়ি-বাড়ি হল, এল নাম ডাক। তার বাবা অসগর হুসেন তখন জাস্টিস। লক্ষ্ণৌতে তার বাড়ির একেবারে বাড়ির উল্টো দিকে নিজের মহল গড়লেন বেগম আখতার- নাম দিলেন আখতারি মঞ্জিল।
কেরিয়ারের শুরুর দিকটায়,ওই ১১/১২ বছর বয়সে বেরেলির বাসিন্দা ও পারিবারিক আধ্যাত্মিক গুরু পীর আজিজ মিয়া আখতারিকে বলেছিলেন,‘শোহরত তুমহারি কদম চুমেগি,দৌলত তুমহারি বান্দি হো কর ঘুমেগি’।
পীরের কথা মতো দৌলত-শোহরত,প্রেম-বিয়ে সবই হয়েছিলে তাঁর।
কিন্তু হয়নি সুখ। নির্মম ঘটনাটি ঘটে তখনকার উর্দুভাষী অভিজাতদের অবক্ষয় জর্জরিত বিহারে। সেবার সেখানকার এক রাজার দরবারে গান শোনাতে গেছেন। সেই রাজা কুরূপ হলেও সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি ছিল। দরবারে গানের আসর শেষে নিজের তাঁবুতে ফিরে এলেন আখতারি, এমন সময় রাজবাড়ি থেকে ফের ডাক পড়ল। এরপর সারা রাতে ফিরলেন না। ভোররাতে দারোয়ান তাঁবুতে ফেলে দিয়ে গেল আখতারির সংজ্ঞাহীন রক্তাক্ত দেহ। ‘সঙ্গীতপ্রিয় রাজা’ ধর্ষণ করেছেন তাকে। ছ’দিন পর জ্ঞান ফেরে আখতারির। ততদিনে মা মুশতারি তাকে নিয়ে লক্ষ্ণৌ চলে এসেছেন। সেখানেই নয় মাস পরে এক মেয়ের জন্ম দিলেন আখতারি। তখন তাঁর ১৪ বছর বয়স। মেয়ের নাম রাখা হল শামিমা। দেখতে শিশুটি তার বাবার মতই কুরূপা হয়েছিল। ওই রাজার নির্মম লালসার ফসল এই শিশুটিকে সামাজিক নিরাপত্তা দিতে তার নানী (মুশতারি) নিজের সন্তান অর্থাৎ বেগম আখতারির বোন বলে পরিচয় দেন-বাকি জীবন ভর।
চোদ্দ বছর বয়সে আখতারি যোগ দিলেন থিয়েটারে। সেখানে অভিনয়েও নিজের দক্ষতার পরিচয় দেন। এর পরেই সিনেমায় অভিনয় করার জন্য বম্বে থেকে ডাক আসে। পাশাপাশি আসতে থাকে বিভিন্ন রাজপরিবারে সঙ্গীতের মেহফিলে গান গাইবার অনুরোধ। ‘নলদময়ন্তী’ ছবিতে অভিনয়ের পরে ‘রোটি’তে তিনি অভিনয় করেন। ছবিতে অভিনয়ের আমন্ত্রণের সংখ্যা এর পর যায় বেড়ে। কিন্তু বম্বের জীবনযাত্রা আখতারির না-পসন্দ। তাই তিনি ফিরে এলেন লক্ষ্ণৌতে। সেখানেই বাড়িতে প্রতি সন্ধ্যায় বসত গানের মেহফিল।
এরই মাঝে হঠাৎই আখতারির ডাক পড়ল উত্তরপ্রদেশেরই রামপুরের নবাব-দরবারে। নিমন্ত্রণ রাখলেন আখতারি। কিছু দিন সেখানে থাকার পর,নবাব আখতারিকে নিকাহ্ করার প্রস্তাব দেন। তবে,আখতারি শুধু তা নাকচই করেননি,রামপুর ছেড়ে চলে গেলেন।
এভাবেই নানা ঘটনার ভেতর দিয়ে কেটে যাচ্ছিল আখতারির জীবন। আচমকাই তাঁর সঙ্গে দেখা হল,বিয়েও হল পেশায় ব্যারিস্টার কাবুলির নবাব ইশতিয়াক আহমেদ আব্বাসির। বিয়ের পর তিনি পেলেন শিক্ষিত-সুপুরুষ স্বামীর ভালবাসা,অর্থ,প্রতিপত্তি সব কিছুই। শুধু জীবন থেকে বিদায় নিল গান,কেননা বিবাহে আব্বাসি সাহেবের শর্তই ছিল আখতারিকে গান ছাড়তে হবে। কাজেই জীবনের অর্থ বদলে গেল আখতারির কাছে। সব আছে, অথচ কিছুই নেই! সন্তান ধারণ করলেন আখতারি। গর্ভপাত হল,এক বার নয়, সাত-সাত বার। কৈশোরের যৌন নিপীড়নের শোধ তাঁকে এভাবেই দিতে হল। ডাক্তার জানিয়ে দিলেন,আখতারির পক্ষে আর মা হওয়া সম্ভব নয়। মানসিক অবসাদ গ্রাস করল তাঁকে। ডাক্তার বললেন,একমাত্র গানই বাঁচিয়ে রাখতে পারে তাঁকে। আব্বাসি সাহেব অমত করলেন না,কিন্তু শর্ত,বাইরে গাওয়া চলবে না। সেই শর্ত অবশ্য রাখলেন না আখতারি। এক দিন আব্বাসি সাহেবের সঙ্গে ঝগড়া হল। তিনি কোর্টে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই রেডিয়ো স্টেশনে ফোন করলেন আখতারি। সেখানে ছিলেন তাঁর বহুপরিচিত এল কে মালহোত্রা। আব্বাসি সাহেবের অজ্ঞাতসারে স্টুডিয়োয় রেকর্ডিং সেরে বাড়ি ফিরলেন আখতারি।
বাড়ি ফিরেই নতুন দুশ্চিন্তা। রেডিয়োয় তাঁর নাম ঘোষণা মানেই আব্বাসি সাহেবের নামটাও জড়িয়ে যাওয়া। সেই অভিজাত পুরুষের অসম্মান। স্বামীর প্রতি গভীর প্রেম ছিল আখতারির,আর ছিল কৃতজ্ঞতাবোধ। একটা অসম্মান ও অনিশ্চিতায় ঘেরা আক্রান্ত ও মর্যাদাহীন জীবন থেকে বেগমের মর্যাদা দেওয়ার কৃতজ্ঞতা। মালহোত্রা বুঝলেন সমস্যাটা। তাঁর কৌশলে গান বেগম আখতারের নামে প্রচারিত হয়। আখতারিবাঈ পেলেন এক নতুন নাম।
শূন্য জীবনে নতুন করে আবার শুরু হল গান। গান গাওয়ার পাশাপাশি আখতারি এ বার গান শেখাতেও শুরু করেন। আকাশবাণীর লখনৌ এর স্টেশন ডিরেক্টর,আরেকজন বাঙালি সঙ্গীত-সমঝদার সুনীল বসু ইতিমধ্যেই আব্বাসি সাহেবের বাড়ি গিয়ে অনেক কাকুতিমিনতি করে বেগমের গান রেকর্ড করতে তাঁকে রাজি করান। আখতারি গান গাইবেন শুনে গ্রামোফোন কোম্পানি তাঁকে রেকর্ড করার প্রস্তাব দিল। তবে আর আখতারি বাঈ ফৈজাবাদি নয়! জন্ম হল এক নতুন শিল্পীর- বেগম আখতার। সেই নামেই প্রকাশিত হল দু’টি বিখ্যাত গান-‘কোয়েলিয়া মত কর পুকার’ এবং ‘সঁইয়া ছোড় দে’। শুরু হল বেগমের গানে ভরা নতুন জীবন। একের পর এক প্রকাশিত হচ্ছিল রেকর্ড। পাশাপাশি দেশ জোড়া খ্যাতি আর অসংখ্য অনুষ্ঠান। আখতারি যেন নতুন করে বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে পেলেন। গজল গায়কির আজকের ধারার প্রবর্তন করেন তিনি।
প্রসঙ্গত,কলকাতা ও বাঙালি সমাজের সঙ্গে আখতারির অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বহু দিনের। জিতেন্দ্রনাথ ঘোষ ও সুনীল বসু ছাড়াও আরেকটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। সে আরেক ইতিহাস, তবে পর্দার। জমিদার বিশ্বম্ভর রায়ের ছেলের উপনয়নের সেই সন্ধে। জলসাঘরে গানের আসরে দুর্গাবাঈ ধরলের পিলু রাগে ঠুমরি ‘ভরি ভরি আয়ি মোরি আঁখিয়া’। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকে আশ্রয় করে সত্যজিৎ রায়ের ‘জলসাঘর’-এর সেই গানের মায়াবী মাদকতায় আজও আচ্ছন্ন সঙ্গীত রসিকেরা,সেই সঙ্গে চিরস্মরণীয় দুর্গাবাঈর চরিত্রে বেগম আখতার। কিংবা ডিক্সন লেনে জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের বাড়ির সেই আড্ডা,বা রাত একটার সময় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গান শুনতে যাওয়ার সেই ঘটনার কথা আজ হয়ত কারোই মনে নেই। তবুও বাঙালির হৃদয়ে ‘জোছনা করেছে আড়ি’,‘পিয়া ভোলো অভিমান’,‘কোয়েলিয়া গান থামা’ ইত্যাদি গান আজও নবীন। ‘আই মোহাব্বত’,‘উয়ো যো হাম মে তুম মে’ কিংবা মির্জা গালিবের রচিত ‘ইয়ে না থি হামারি কিসমৎ’ আপামর গজলপ্রেমীদের কাছে কোনোদিনই পুরনো হবে না। এছাড়াও তাঁর গাওয়া ‘দিওয়ানা বনানা হ্যায় তো দিওয়ানা বনা দে’,‘ও জো হামমে তুমমে কারার থা ও তুমহে ইয়াদ হ্যায় কি ইয়াদ নাহি’ এখনও শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে ফেলে মুহূর্তেই।
লবণাম্বু-সমৃদ্ধ অতল অপার বারিধি-সমান বেদনার জীবনে আত্মমগ্ন, গানের ভেতর দিয়ে বেঁচে থাকার অর্থ ও আনন্দ খুঁজে পেতেন বিব্বি অথবা আখতারি বাঈ ফৈজাবাদি; সবার কাছে চেনা বেগম আখতার। ‘মালেকা-ই-গজল’ অর্থাৎ গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতার ১৯৭৪ সালে আহমেদাবাদে এক অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৩০ অক্টোবর, মাত্র ৬০ বছর বয়সে সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
আজ এই অক্টোবরে,যা তাঁর জন্মমাস,মৃত্যুর মাসও- শ্রদ্ধা জানাই রাগপ্রধান,গজল ও ঠুমরির অবিস্মরণীয় সম্রাজ্ঞী মালিকা-এ-তরন্নুম বেগম আখতারকে।
*****************************************
পল্লব চট্টোপাধ্যায় পরিচিতিঃ
রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংএ স্নাতক। কর্মসূত্রে বিভিন্ন দেশের খনিজ তৈলক্ষেত্রে কাটিয়েছেন সারাজীবন,সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত। বিহারের,অধুনা ঝাড়খণ্ড,যে অঞ্চলে তিনি মানুষ সেখানে ‘নানা ভাষা,নানা জাতি,নানা পরিধান’ হলেও একসময় বাংলাভাষা শিক্ষা ও চর্চার আবহ ছিল। সেই শিক্ষা থেকে সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ জন্মায় ও বিগত কয়েক বছরে অবসর,জয়ঢাক,ম্যাজিক-ল্যাম্প,ছুটির ঘন্টা,আদরের নৌকা,ঋতবাক ইত্যাদি নেট-পত্রিকা ও যুগ,ট্রৈনিক,বোম্বে-ডাক ইত্যাদি মুদ্রিত পত্রিকায়,ক্যাফে-টেবল প্রকাশিত শরদিন্দু স্মৃতি-সংখ্যায় লিখে আসছেন। তাঁর প্রকাশিতব্য গল্প সংগ্রহ ‘আড্ডা আনলিমিটেড’ ও ‘বরাহ-নন্দন ও অন্যান্য গল্প’- দুটিই এখন যন্ত্রস্থ।