Shadow

বসন্ত সংখ্যা

পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে – সোনালী গুহ

পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে – সোনালী গুহ

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
।। পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে।। সোনালী গুহ পৌষ সংক্রান্তিতে শীতের ওম মেখে পিঠে পুলি খাওয়ার মজাই আলাদা। খুব মনে পড়ছে, ছোটবেলায় এইদিনে সকাল থেকেই শুরু হতো আমাদের যাদবপুরের বাড়িতে বাস্তুপুজো। আগের দিন বাগানের একটি জায়গায় মাটি খুঁড়ে উনান বানানো হতো। জায়গাটা লেপা হতো গোবর দিয়ে।সংক্রান্তির ভোরে পুরোহিত মশাই এসে শুকনো ডালপালা, নারকেল পাতা দিয়ে উনান জ্বালাতেন। পৌষ বা মকর সংক্রান্তিকে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলে। কারণ, এই দিন থেকে সূর্য উত্তরায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে। উত্তরায়ণ সংক্রান্তিতে বাস্তুপূজার প্রচলন আছে। শঙ্খপাল বঙ্কপাল ক্ষেত্রপাল নাগপালের ধ্যান করে বাস্তুর ধ্যান করা হয় এইদিনে। বাস্তুর প্রণাম মন্ত্র হল,“ওঁ বাস্তুরাজ নমস্তুভ্যং পরমস্থানদায়ক। সর্বভূতজিতস্ত্বঞ্চ বাস্তুরাজ নমোহস্তুতে।“ সেইমতো গৃহ পুরোহিত উনান জ্বালিয়ে পেতলের কড়াইতে পায়েস রান্না করতেন। উপাদেয় সেই পায়েসকে ...

সম্পাদকীয় (বসন্ত সংখ্যা) – দেবদত্ত বিশ্বাস

বসন্ত সংখ্যা
সম্পাদকীয় দেবদত্ত বিশ্বাস কৃষ্ণচূড়া আর পলাশ আর শিমুল বনের রঙ বার্তা এনেছে বসন্ত এসে গেছে। দূরন্ত শীতলতার পর মৃদু মন্দ বাতাস রিনরিন করে অনুভবে আনছে বসন্তের আমেজ।  প্রাকৃতিক নিয়মে বসন্ত নতুন রঙের সম্ভার নিয়ে আসে।ফাগের রঙে রাঙিয়ে তোলে ত্রিভুবন। ফুল ফোটে,পাখি  গায়। কিন্ত এবার এ কোন বসন্ত এলো ?অজানা মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক কাটিয়ে একটু একটু করে যখন স্বাভাবিক হচ্ছে জীবন, তখনই  প্রকৃতি বড় নির্মম হলো। কালের নিয়মে বজ্রবর্ষণ হলো আমাদের মনের ওপর। এই বসন্তে হৃদয় শূণ্য করে ঈশ্বর ডেকে নিলেন মা সরস্বতীর দুই রূপকে। স্তব্ধ করে দিলেন দুই কোকিল কণ্ঠীকে। লতা মঙ্গেশকর এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় পাড়ি দিলেন সুরলোকে। সুরসৃষ্টির দুই প্রজন্ম অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কভি অলবিদা না কহেনার জনক বাপ্পী লাহিড়ি অলবিদা জানালেন। সত্তর আশির দশকের কথা মনে পড়ে যায়। কলকাতা ময়দানে দুই'পা দিয়ে  ঝঙ্কার তোলা ছিপছিপে,দী...
ধ্রুবসত্য – ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী

ধ্রুবসত্য – ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
ধ্রুবসত্য ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় সবকিছুই পরিবর্তনশীল। সবকিছুই পাল্টায় সময়ের হাত ধরে,নিয়ম করে, তাইতো দিন থেকে কাল,কাল থেকে যুগ,যুগ সাক্ষী হয় ইতিহাসের ।। এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় মানুষ ও পাল্টায় সময়ের সাথে পা মেলাতে মেলাতে,নিজের খোল-নলচে বদলে ফেলে কখন, তা সে নিজেও জানে না বা জানতে চায় না। সময়ের সাথে চলতে চলতে কেউ বা যায় এগিয়ে কেউ রয়ে যায় পিছনে,আবার কেউ মুখ থুবড়ে পড়ে। টেনে তোলার হাত তখন পাবে,যখন তাদের দলভুক্ত হবে।। মূল‍্যবোধ ও পরিবর্তিত হয়,সময় থাকে তার সাক্ষী।। আজ যা সত্যি কাল তা মিথ্যা আর কাল যা ছিল মিথ্যা আজ তা সত্যি। সত্যি-মিথ্যার চলে লুকোচুরি এখন যা ভালো পরে তা খারাপ,আর এতদিন যা খারাপ ছিল আজ তা ভালো। এ জগতে ধ্রুবসত্য কিছুই নেই,সবকিছু আপেক্ষিক।। এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় সবাই পাল্টায়,সবকিছুই পাল্টায়,পাল্টায় না শুধু বোকারা। তাই বোকারা একা আর কিছুটা বিভ্...
অনাকাঙ্খিত জীবন – ঊর্মি সরকার

অনাকাঙ্খিত জীবন – ঊর্মি সরকার

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
আমি সুতপা। বাবা-মায়ের দুই সন্তানের আমি প্রথম। আমার একটা ছোট বোন আছে। তার নাম অনুতপা। আমার শৈশব কাটে মুম্বইয়ে, দাদু-দিদার কাছে। আমার যখন তিন মাস বয়স, তখন মা আমায় রেখে ফিরে যান আমার বাবার সংসারে। পাঁচ বছর পরে আমায় নিয়ে আসা হয় আমার পৈতৃক বাড়িতে। কিন্তু আজকের কথা আমায় নিয়ে নয়। এ কাহিনী আমার মায়ের জীবনের কাহিনী। একটা বয়সের পর থেকে মা কিছুটা আমার বন্ধু হয়ে গেছিলেন। মানে, সেই আমলে, যতটা ফ্রি হওয়া যায়। তখন মা'র কাছেই মা'র নিজস্ব কিছু কথা শুনেছিলাম। কিছু অনুভূতির কথা। সেই কথাই আজ বলতে এসেছি। রেখা অল্প বয়স থেকেই, "বিবাহ" নামক বস্তুটি কে একদম পছন্দ করত না। কোনদিনই বিয়ে করতে চায়নি সে। চেয়েছিল উচ্চশিক্ষা নিয়ে স্বাধীন জীবন যাপন করতে। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরে এই আবদার মানা হবে কেন? তাই যথা সময়ে, তার বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়। রেখা সুন্দরী ছিলনা মোটেই। তবে সুশ্রী ছিল। উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা মেয়েটি পড়াশোনা ...
ব্যথা – কাজরী বসু

ব্যথা – কাজরী বসু

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
ব্যথা কাজরী বসু দরজাটা সামান্য ফাঁক করে ঈশিতা দেখল হাত মুখ নেড়ে ঋষির সঙ্গে গল্প করছে ঋদ্ধি। ঋষিও শুনছে খুব মন দিয়ে। মধ্যে মধ্যে হেসে উঠছে হো হো করে,ঋদ্ধিও হাসছে পাহাড়ী ঝর্নার মতো কলকলিয়ে,অনাবিল খুশিতে। ঋষিকে কেমন অচেনা লাগছে,শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় এত সাবলীল কবে থেকে হলো ঋষি? ঈশিতা অবাক। কাস্টডি মামলায় ঈশিতা ছেলের দখল পেলেও ডিভোর্সের সময় কোর্টের নির্দেশ ছিল ঋদ্ধিকে সপ্তাহে একবার ওর বাবার কাছে নিয়ে যেতে হবে। ছেলের হেফাজত পেতে খুব লড়েছিল ঋষি। মামলায় হেরে গিয়ে খুব মুষড়ে পড়েছিল সম্ভবত আর তারপরেই চাকরি থেকে দীর্ঘকালীন ছুটি নিয়ে কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। ঋদ্ধিকে যে আনবে,অনেক চেষ্টা করেও ঋষির পাত্তাই পায়নি ঈশিতা। ইতিমধ্যে প্রীতমকে বিয়ে করে নতুন সংসারের গোড়াপত্তন করার কাজটিও মিটে গেছে। দুম করে গতকালই হোয়াতে মেসেজ করে ঋষি জানায় সে ফিরেছে, ঋদ্ধিকে দেখতে চায়। সেই অনুযায়ী বেলতলা রোডের এই ফ্ল্যাটে ...
অঙ্কন – অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়

অঙ্কন – অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়

অঙ্কন, বসন্ত সংখ্যা
অঙ্কন শিল্পীঃ অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়   ************************************** অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায় পরিচিতিঃ টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ অফ পাব্লিক স্কুলে ক্লাস সেভেন এ পাঠরত, চন্দননগরের বাসিন্দা, Taekwondo শেখে।            
দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

বসন্ত সংখ্যা, ভ্রমণ কাহিনী
দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা                              সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় রংবেরঙের বিচিত্র গড়নের বিভিন্ন রকমের পুতুল। সবই কাঠের পুতুল। উজ্জ্বল নানা রঙের বৈভবে গোল গোল চোখওয়ালা তিন কোণা ছোটো-বড় পেঁচাগুলো সবার আগে নজর কাড়ত। রাজা-রানী,বর-বউ বা উদ্বাহু নৃত্যরত গৌর-নিতাই পুতুলগুলো দেখেও মজা পেতাম। নিজের হাতে বানানো এইসব পুতুল ঝুড়িতে সাজিয়ে বিক্রি করতেন এক ফেরিওয়ালা। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় চন্দননগর স্টেশন রোডে শ্যাম মাস্টারের গলির কাছে। প্রতি বছর মোটামুটি একই জায়গায় তিনি তাঁর পসরা নিয়ে বসতেন। তাঁকে দেখলেই 'ভানু পেলো লটারী' ছবিতে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'লিপ'-এ শ্যামল মিত্রের গাওয়া 'পুতুল নেবে গো পুতুল' গানটা মনে পড়ে যেত। গানটা সেইসময় রেডিওতে প্রায়ই বাজানো হত। 'সেইসময়' বলতে আমার তখন শৈশবকাল। স্কুলে নীচু ক্লাসে পড়তাম। একবার একটা পেঁচা কিনেছিলাম। আর একবার একটা বউপুতুল। সেটিকে দেখতে অনে...
অতি পরিচিত গল্প – ব্রতী ঘোষ

অতি পরিচিত গল্প – ব্রতী ঘোষ

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
অতি পরিচিত গল্প ব্রতী ঘোষ আজকাল অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে আমার আর ভালো লাগে না | বাস থেকে নেমে পাড়া দিয়ে হেঁটে যখন বাড়ি ফিরি তখন আমার পা দুটো আর চলে না কারণ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই লীনা আর মায়ের কথা কাটাকাটি লেগেই থাকে ৷ লীনার  সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বছর তিনেক আগে ৷ আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,মার নয়নের মণি ৷ মা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছেন আর সে কথা পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনকে বলতে  বেশ গর্ব বোধ করেন ৷ বাবার ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বদলির চাকরি-সবে দু বছর হলো অবসর নিয়েছেন ৷ বারো  ক্লাস পর্যন্ত প্রতিদিন মা সাথে করে স্কুলে,টিউশনে নিয়ে গিয়ে বসে থেকেছেন ৷ মার পরিশ্রমের মূল্য আমি দিয়েছি,আইটি সেক্টরে বেশ বড় একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে মোটা মাইনের চাকরি করি আমি ৷ ও হ্যাঁ,বলতে ভুলে গেছি,আমি তন্ময় চক্রবর্তী ৷ চাকরি পেয়ে মার পছন্দ করা সর্বগুণসম্পন্না মেয়েকে বাড়ির বউ করে এনেছ...
ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া – সুলগ্না চক্রবর্তী

ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া – সুলগ্না চক্রবর্তী

আলোকপাত, বসন্ত সংখ্যা
ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া  সুলগ্না চক্রবর্তী খবর পাওয়া মাত্র মাহমুদ শাহ চোখে অন্ধকার দেখলেন। কী করবেন ভেবে পেলেন না। পশ্চিম থেকে শেরশাহ আসছে তাঁর রাজ্য আক্রমণ করতে। এই আক্রমণ রুখে দেওয়ার মতো লোকবল তাঁর কাছে থাকলেও তা যে খুব একটা কার্যকর হবে না তা তিনি জানতেন। তাই খবর পাঠালেন গোয়াতে পর্তুগীজদের কাছে , সাহায্যের জন্য। পর্তুগীজরা সাহায্য করতে রাজি হলো একটা শর্তে। মাহমুদ শাহ ভেবে দেখলেন আগে তো রাজ্য সামলানো যাক তারপর পর্তুগীজদের ব্যবসা করার অধিকার নিয়ে ভাবা যাবে। রাজি হয়ে গেলেন তিনি। মাহমুদ শাহের রাজ্য আক্রমণ করলেন শেরশাহ বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে। পর্তুগীজদের কিছু করার ছিলো না এবং গৌড় দখল হলো। শেরশাহ প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে গৌড় ছাড়লেন আর এই যুদ্ধে পূর্ব শর্ত অনুযায়ী পর্তুগীজরা গৌড়ে বাণিজ্য করার অধিকার পেলো। যখন সপ্তগ্রামে  পর্তুগীজরা বাণিজ্য করে মোটা লাভের মুখ দেখবো  দেখ...
মৃত্যুঞ্জয় – ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী

মৃত্যুঞ্জয় – ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
মৃত্যুঞ্জয় ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী    জীবন তুমি মৃত্যুকে ছুঁয়ে থাকো ভয়কে জয় করবে তুমি তখনই, জীবন তুমি ভয়কে দূরে রাখো জয়টা তোমার হবেই হবে জানি। জীবন তুমি মানুষকে ভালোবাসো ভালোবাসার মানুষ বড় কাঁদে, চলার পথে থমকে যেয়ো নাকো ভালোবাসা তোমায় বড়ো বাঁধে। বাঁধন পড়া তোমার কর্ম নয় বাঁধন টুটে দিতেই হবে পাড়ি , সঙ্গে থাকুক জীবনমুখী চলা চলার পথে তুমিই তো কান্ডারী। শূন্য হাতের শত বঞ্চনা আসুক শূন্য মানেই শূন্যতা নয়, হতাশার গ্লানি ঝেড়ে পড়ো নির্মোক বিবেকাদর্শে তুমিই মৃত্যুঞ্জয়। জীবন তুমি মৃত্যুকে ছুঁয়ে থাকো মৃত্যু তোমার স্পর্শে জীবন পাক, সত্য নিষ্ঠা সততার জয় হোক দেহটুকু শুধু অগ্নিতে পুড়ে যাক ৷ ********************************* ধ্রুবজ্যোতি  চক্রবর্তী কবি গল্প লেখক ও আবৃত্তিকার। এছাড়াও নাট্যশিল্পী ও নাট্যপরিচালক  ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!