Shadow

রেলওয়ে লাউঞ্জ – জলি চক্রবর্তী শীল

Pc.. ArchDaily

রেলওয়ে লাউঞ্জ

জলি চক্রবর্তী শীল

ট্রেনটা যখন প্ল্যাটফর্মে ইন করল তখন ঘড়িতে প্রায় মধ্যরাত | প্রায় সাতঘন্টা লেট | ট্রেনের যাত্রীদের আর ধৈর্য ধরছে না বসে থাকার | প্ল্যাটফর্মে ঢোকার অনেক আগে থাকতেই তাই যাত্রীদের মধ্যে অস্থিরতা | অনেকেই বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে ট্রেনের গেটের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করছে | প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার সাথে সাথেই তাদের মধ্যে তাড়াহুড়ো পড়ে গেছে নামার | ফলে ট্রেনের দরজার কাছে নামা নিয়ে গোলমাল চলছে | ট্রেনটা এখন স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়াবে | তাড়াহুড়োর কিছু নেই আর এই মধ্যরাতে অনেকে স্টেশনেই কাটিয়ে দেবে | কিন্তু সেটা কে কাকে বোঝায় ! লুম্বিনী ধীরেসুস্থে দুটো পায়েই নীকাপ গলিয়ে নেয় | তারপর উঠে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক তাকায় ট্যুর পার্টির ছেলেগুলোকে দেখতে পায় কিনা | ঠিক সেইসময় উল্টোদিক থেকে শশাঙ্ক নামে ট্যুর পার্টির ছেলেটা এসে বলে‚’রেডি তো জেঠিমা? ‘লুম্বিনী ঘাড় নাড়ে |’ তাহলে আপনি ধীরেসুস্থে গেটের কাছে যান‚ওখানে আমাদের ছেলেরা আছে‚আপনাকে ধরে নামিয়ে দেবে | আমি আপনার ল্যাগেজ নামিয়ে দিচ্ছি |’ লুম্বিনী এগিয়ে যায় গেটের দিকে | প্ল্যাটফর্মে থাকা ট্যুরের ছেলেদের সাহায্যে লুম্বিনী নেমে আসে প্ল্যাটফর্মে | স্টেশন বলেই এই মধ্যরাতেও এদিকে ওদিকে অনেক লোকের চলাফেরা | চরাচর ভেসে যাচ্ছে সাদা‚হলুদ‚লাল নানা আলোর বন্যায় | মাঝে মাঝে কাকেদের চিৎকার | লুম্বিনীর বাক্স-প্যাঁটরা নামিয়ে দেয় শশাঙ্ক | এখানেই ওদের সার্ভিস শেষ | এবার নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই করতে হবে | ট্যুরের সাথে যারা গিয়েছিল তাদের অনেকেই ফিরতি পথ ধরে নিয়েছে | ইতি-উতি দু-একজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে |
লুম্বিনী এত রাতে আর কাউকে বিব্রত করতে চায়নি | তাই নিজের ছেলে-বৌমা কাউকেই খবর দেয়নি | দিলে রূপ ঠিকই স্টেশনে হাজির হত | কিন্তু কাউকে নিজের প্রয়োজনে বিব্রত করাটা একান্তই না পসন্দ লুম্বিনীর | রাত শেষ হতে তো বিশেষ বাকি নেই | স্টেশনের এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জেই ঘন্টা কয়েক সময় কাটিয়ে দেবে সে | কিন্তু ল্যাগেজগুলো বইবার জন্য তো একজন কুলি লাগবে‚কিন্তু সেইরকম কাউকে দেখছে না সে | অগত্যা শশাঙ্ককেই বলে সে‚’ শশাঙ্ক যদি কিছু না মনে কর‚তাহলে কি আমার ল্যাগেজটা একটু লাউঞ্জ অবধি পৌঁছে দেবে ?’
‘সে আপনি না বললেও দিতাম জেঠিমা |’ শশাঙ্ক হেসে উত্তর দেয় | তারপর মালপত্রগুলো মাথায় তুলে এগিয়ে যায় | লুম্বিনী পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করে | কিন্তু শশাঙ্কের সাথে তাল মেলাতে পারে না | শশাঙ্ক দ্রুত চোখের আড়াল হয়ে যায় | লুম্বিনী তাড়াহুড়ো করে না‚ছেলেটা নিশ্চয় সে না যাওয়া অবধি দাঁড়াবে |
লাউঞ্জে পৌঁছে দেখে শশাঙ্ক দাঁড়িয়ে আছে মালপত্র নিয়ে | তাকে দেখে এগিয়ে আসে সে |
‘জেঠিমা লাউঞ্জের ঐদিকে আপনার সিট | আপনি আমার সাথে আসুন আমি ল্যাগেজটা ওখানে রেখে আসি |’ বলে শশাঙ্ক এগোয়| লুম্বিনীও শশাঙ্ককে অনুসরণ করে নির্দিষ্ট জায়গায় এসে উপস্থিত হয় | ব্যবস্থা বেশ ভালো | টাকাটা যেমন নিচ্ছে ব্যবস্থাও তেমন মনঃপুত হলে ভালো লাগে | লাউঞ্জে সিট বুকিংটা শশাঙ্কই করে রেখেছিল সময় থাকতে | ছেলেটা বেশ করিতকর্মা | খুশি হয় লুম্বিনী | শশাঙ্ককে কিছু টাকা দিতে গেলে শশাঙ্ক নেয় না | হেসে বলে‚’বকশিশ তো আগেই দিয়েছেন‚আবার কেন ?’
‘বা! এই যে তুমি আমার ল্যাগেজ বয়ে দিলে‚আমার থাকার এত ভালো বন্দোবস্ত‚সেসব  তুমি না থাকলে কি হত বল ? তার জন্য আমি খুশী হয়ে তোমায় দিচ্ছি তুমি নাও ৷’
শশাঙ্ক টাকা নিয়ে বিদায় নিয়ে চলে যায় |
লাউঞ্জে খুব একটা ভিড় নেই | ঢোকার মুখেই দুটো পরিবার | লুম্বিনীর ঠিক উল্টোদিকের সিটেও মনে হয় একটা পরিবার আছে‚ জিনিসপত্র রয়েছে কিন্তু লোক কেউ নেই‚হয়ত টয়লেটে বা অন্য কিছু কিনতেও যেতে পারে | টেবিলে রাখা একটা ম্যাগাজিন তুলে নিয়ে পাতা ওল্টায় | ঠিক সেই মুহূর্তেই দুজন যাত্রীকে এগিয়ে আসতে দেখে সে | মনে মনে ভাবে যাক কথা বলার লোক পাওয়া গেল তবে | যাত্রী দুজনেই এসে ঐ উল্টো দিকের সিটের ওপর থেকে মালপত্রগুলো নামিয়ে নিয়ে বসে | মুখোমুখি ওদের দেখতে পেয়েই চমকে ওঠে লুম্বিনী | ম্যাগাজিনটা মুখের সামনে তুলে ধরে আড়াল করে | বুকের ভিতরটায় একটা চাপ অনুভব করে | শুকনো চোখে জল আসে না কিন্তু জ্বালা করে ওঠে |
‘নাও একটু জিরিয়ে নাও | ভোর হতে এখনো বেশ কিছু সময় বাকি |’ নারীকণ্ঠ বলে ওঠে উল্টোদিকের সিট থেকে |
‘তুমিও একটু জিরিয়ে নাও সুধা |’‚মোলায়েম পুরুষ কন্ঠ শুনে লুম্বিনীর ভিতরটা চিড়বিড়িয়ে ওঠে |
‘আমার জিরোতে লাগবে না | তুমি জিরিয়ে নাও |’ বলে সুধা নাম্নী মহিলা ফোন নিয়ে খুটখাট করতে থাকে | ম্যাগাজিনের আড়াল থেকে দেখতে থাকে লুম্বিনী |
সুধা কিন্তু বেশিক্ষণ মোবাইলে ব্যস্ত থাকে না | সামনের দিকের যাত্রিণীর দিকে তাকিয়ে উশখুশ করে | লুম্বিনী ম্যাগাজিনটায় ভালোভাবে মুখটা ঢেকে নেয় |
‘এই শুনছ? ওদিকের ঐ মহিলাকে দেখ মুখটা ম্যাগাজিনে কিভাবে ঢেকে রেখেছে,’ফিসফিস করে বলে ওঠে সুধা |
ভদ্রলোক সত্যি সত্যি ঘুমিয়ে পড়েছেন,সাড়া দেন না | এবার সুধা গায়ে ঠেলা দিয়ে জাগিয়ে দেয়| ‘শোনো না‚ঐ যে উল্টোদিকের মহিলার কথা বলছি‚দেখ কেমন মুখ ঢেকে রেখেছে| কেন বল তো ? পুলিশের থেকে পালানো কোনো অপরাধী নয় তো ?’ ফিসফিস করে বলা কথাগুলো শুনতে পায় লুম্বিনী | গায়ের ভিতরটা জ্বালা করে ওঠে |
‘আঃ !! থাক না যে যেভাবে আছে | তোমার অত কি দরকার | তুমি একটু ঘুমিয়ে নাও |’ বলে ভদ্রলোক আবার চোখ বন্ধ করে ফেলেন |
‘থাক তুমি ঘুমাও | আমি দেখছি’ বলেই সুধা উঠে এগিয়ে গিয়ে বলে‚’এই যে শুনছেন‚মুখ থেকে ম্যাগাজিনটা সরাবেন প্লিজ |’
লুম্বিনীর মাথাটা গরম হয়েই ছিল‚সুধার কথা শুনে আরও গরম হয়ে গেল | মুখ থেকে ম্যাগাজিনটা সরিয়ে বলে ‚’ সারাজীবন একইরকম রয়ে গেলে তুমি সুধা | পরের ব্যাপারে কৌতূহল তোমার আর গেল না |’
যেন ইলেক্ট্রিক শক খেল সুধা | স্থানুর মত দাঁড়িয়ে রইল সে |
রাগে লুম্বিনীর গলার স্বরটা জোরেই হয়েছিল | সুধার স্বামীও চমকে উঠল | সেও খুব অবাক চোখে তাকিয়ে রইল |
‘পরের জিনিস‚পরের স্বামী‚পরের যেকোন জিনিসেই তোমার অপার কৌতূহল সুধা | এতটা কৌতূহল না থাকলেই ভালো হত | আজকের এই সিচুয়েশনটা না তোমাকে‚না আমাকে ফেস করতে হত |’
‘লুম্বিনী‚তুমি শান্ত হও‚সুধা বুঝতে পারেনি |’ বলে ওঠে সুধার স্বামী |
‘বিভাস‚তোমাকে ছাড়া মনে হয় আর কিছুই সুধা বোঝেনি কখনও |’ লুম্বিনীর গলায় ব্যঙ্গ ফুটে ওঠে |
‘আমার স্ত্রী আমাকে বুঝবে সেটা কি উচিত নয় লুম্বিনী ? যাক এসব বাদ দাও‚এত বছর পর দেখা তোমার সাথে‚কেমন আছ বল ?’
‘দেখে কি খারাপ আছি মনে হচ্ছে তোমার?’ লুম্বিনী বলে |
‘তুমি তো স্বয়ংসম্পূর্ণা লুম্বিনী | তুমি কি করে খারাপ থাকতে পার ? তুমি ভালো থাক সেটাই তো সবসময় চেয়েছি আমি |’
‘তাই বৌ থাকতে শালির সাথে লাম্পট্য করতে তোমার বাঁধেনি |’ লুম্বিনী ফুঁসে ওঠে |
‘শান্ত হও তুমি | আমরা অনেক বছর পিছনে ফেলে এসেছি  লুম্বিনী | এখন আর এই কথাগুলোর কোন মূল্য নেই | আমরা আজ অনেক পরিণত | আর লাম্পট্য যদি বলো-না লাম্পট্য আমি করিনি | তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম‚কিন্তু নারীর কাছে পুরুষ যা চায় তা শুধু শরীর নয় লুম্বিনী | সে সখ্যতা চায়‚সে স্ত্রীর মধ্যে এমন একজনকে খোঁজে যে তার মায়ের মত স্নেহশীলা হবে | তোমার মাঝেও আমি সেগুলোর খোঁজ করেছিলাম‚কিন্তু তুমি বড্ড বেশি স্বাধীনচেতা | এতটাই স্বাধীন যে তোমার আমাকে কোনদিনই দরকার পড়েনি | বাড়ির কোণে পড়ে থাকা ভাঙা বালতি‚গামলার মত জীবনে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম |’
‘থাক থাক আর পুরোনো কাসুন্দি তোমায় ঘাঁটতে হবে না বিভাস | এ সবই তো আগেও শুনেছি | যাক আমার মধ্যে না পেলেও সুধার মধ্যে তো সবকিছু পেয়েছ |’ লুম্বিনী থামিয়ে দেয় বিভাসকে |
‘আর ক বছর বাঁচব লুম্বিনী ? এখনও এত রাগ পুষে রেখেছ?’
‘রাখব না বিভাস ? আমার ভালোমানুষির সুযোগ নিয়ে তোমরা আমার জীবনে সিঁদ কেটেছ | আমি সেসব ভুলে যাব ? কোনদিন না‚ কোনদিন তোমাকে আর সুধাকে আমি ক্ষমা করতে পারব না | আমার নিজের বোন হয়ে কি করে এই নোংরামোটা করল আমি আজও ভেবে পাই না |’ লুম্বিনীর চোখ জ্বালাটা বেড়ে যায় |
‘দিদি ক্ষমা করে দিস | আমি সিঁদ কাটি নি | আমি দেখেছিলাম বিভাস কিভাবে একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে | আমি যে কখন বিভাসকে সামলাতে গিয়ে নিজেই হারিয়ে গেলাম আমি আজও খুঁজে পাইনি | আর তার জন্য শাস্তিও তো পেয়েছি‚পাইনি কি ? ‘ মৃদু ভেজা গলায় বলে ওঠে সুধা |
সুধার হাতটা চেপে ধরে বিভাস | টলটলে জল চোখ উপচে নেমে আসে | রুমাল দিয়ে যত্ন করে মুছিয়ে দেয় বিভাস | তারপর তাকে বসিয়ে দেয় সিটের ওপর | বুকের ভিতরটা তারও টনটন করে| তারপর বলে‚’এতদিন পর আর এসব কথার কি কোনো মানে আছে লুম্বিনী? আমরা তো আর অতীতে ফিরে গিয়ে সবকিছুকে ঠিক করতে পারব না | আমি কোন সাফাই দিতে চাই না | তবু বলব‚ দোষ তো আমারও ছিল‚ আমি যদি প্রশ্রয় না দিতাম এই সম্পর্কটাকে‚ তাহলে হয়ত সম্পর্কটাই এগোতো না | যা ঘটে গেছে তা নিয়ে আর চর্বিত-চর্বণ না হয় আর নাই করলাম | বরং এই যে কিছুটা সময় আমরা পেলাম পুরোনো সবকিছুকে ভুলে কি সুন্দরভাবে মুহূর্তগুলো কাটিয়ে দিতে পারি না? দিনের আলো ফুটলে তো যে যার গন্তব্যে চলে যাব | আর হয়ত কোনদিনই আমাদের দেখা হবে না |’
লুম্বিনী চুপ করে থাকে | কি করে বোঝায় ভিতরে যে তার তোলপাড় চলেছে | এখনো সে ভালোবাসে বিভাসকে? এখনো এত ক্ষোভ সে পুষে রেখেছে ভিতরে ভিতরে | অথচ ভেবেছিল সব কিছু সে ভুলে গেছে | সেই যে সেইসব দিনে বিভাসের তার জন্য ইউনিভার্সিটির গেটে অপেক্ষা করে থাকা | মিটিং-মিছিলে একসাথে পা মিলিয়ে হাঁটা |কিছুই তো সে ভুলে যায়নি | ভুলে যায়নি তিক্ততার প্রতিটা  মুহূর্তও | পার্টির কাজ‚ মিটিং-মিছিল‚ পরবর্তীতে চাকরী এসব নিয়েই এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল সে যে সংসারটার দিকে তাকিয়ে দেখারও সময় হয়নি | সময় হল তখন যখন রূপ জন্মাল | টনক নড়ল যখন তখন অনেকটা দেরী হয়ে গেছে | মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ‚  পরিবারের সম্মান রাখতে সরে এসেছিল রূপকে নিয়ে | রূপের মুখের দিকে তাকিয়ে ভুলে গিয়েছিল সবকিছু | কিন্তু আজ টের পাচ্ছে কিছুই ভুলে যায়নি ‚ শুধু চাপা পড়েছিল ভুলে যাওয়ার অন্তরালে |
উভয় তরফেই কেউ কোন কথা আর বলে না | পিনপতন নিস্তব্ধতা | সময় যেন স্থবির হয়ে গেছে | ঘড়ির কাঁটাও যেন এগোতে ভুলে গেছে | হঠাৎ করেই নিস্তব্ধতা খান খান করে   লুম্বিনীর মোবাইলটা বেজে ওঠে |রূপ জানতে চায় সে পৌঁছে গেছে কিনা | লুম্বিনী জানায় সে অপেক্ষা করছে লাউঞ্জে |  একটু পরেই এক সুদর্শন যুবক আর যুবতী পৌঁছায় সেখানে | লুম্বিনীকে জড়িয়ে ধরে তারা | তারপর ল্যাগেজগুলো নিয়ে এগোতে যাবার মুহূর্তে বিভাস আর সুধার দিকে ফিরে তাকিয়ে একমুখ হাসি নিয়ে বলে‚’ আমার ছেলে রূপ আর আমার বৌমা তাপ্তী|  ছেলে-বৌমা আমার বড্ড যত্ন করে বুঝলেন | বলেছিলাম আমি একাই উবের বা ওলা করে নেব‚ কিন্তু শুনলে তবে না | ভোর হতে না হতেই হাজির| আর রূপ-তাপ্তী,এঁরা আমার সহযাত্রী | আসি ভালো থাকবেন | আশা করি আর কোনদিনই আমাদের দেখা হবে না|’
রূপ আর তাপ্তী তাদের মায়ের শেষ কথায় অবাক হলেও মুখে কিছু প্রকাশ করে না‚ হেসে হাতজোড় করে | তারপর আসছি বলে তাদের মাকে নিয়ে বেরিয়ে যায় | লুম্বিনীর মুখে লেগে থাকে বিজয়িনীর  হাসি | বিভাসকে হারিয়ে ফেলেছে‚সুধার কাছে হেরে যেতে যেতে জিতে গেছে সে |
ওদের চলে যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে সুধা আর বিভাস| ছবিটা অন্যরকম হতে পারত কিন্তু হল না| সুধার বুকের মধ্যে হাহাকার করে ওঠে|   কতদিন পর দেখল সে রূপকে| চোখ উপচে জল গড়ায়, গড়াতেই থাকে‚বিভাস বাধা দেয় না|
সকালের নরম সোনালী  আলো মেখে পরিতৃপ্ত লুম্বিনী তখন লাক্সারী গাড়িতে করে শহরের বুকের ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে তার নীড়ে।।
***********************************

জলি চক্রবর্তী শীল পরিচিতিঃ
পেশাগতভাবে একজন কম্পিউটার অপারেটর একটি  সওদাগরী আপিসে। নেশা বই পড়া এবং কিছু লিখতে চেষ্টা করা। জলির লিখতে ভালো লাগে সেইসব প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে, জীবন যাদের কাছে প্রাত্যহিক লড়াইয়ের নাম। এক টুকরো রুটি বা এক থালা ভাতের কদর যেখানে সবচেয়ে বেশি সেইসব মানুষদের সুখ-দুঃখ-বেদনা-ভালোবাসার দৈনন্দিন গাঁথাই জলির লেখার উপজীব্য।

2 Comments

  • মুনিয়া

    ভালো লাগল তবে ঘটনাপ্রবাহ একটু দ্রুতগতিতে এগিয়েছে মনে হল।
    বহুযুগ আগের পড়া বাবা মায়ের বিয়েতে উপহার পাওয়া সুবোধ ঘোষের (?) একটি গল্প মনে পড়ে গেল!

Comments are closed.

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!