যখন অন্য চোখে
অর্চনা মহান্তি
————————-
জরার মধ্যে বাস করতে করতে সতেজতা কাকে বলে ভুলেই গেছি
মনে হয় সবকিছুই দোমড়ানো মোচড়ানো,কুঁচকে থাকা বলিরেখায় আক্রান্ত,
মাঝে–মাঝে মুখময় মেচেতার ছোপ আর কাঁচাপাকা চুলের মতো দ্বিধায় বিভক্ত।
চিকনতা নেই,সবুজ পালিশ নেই,রসালো বৃন্ত নেই
পোকায় কাটা সে কুঁড়িতে ফুল ফুটবে কেন ? আশা ভরসা সব মাটি,অথচ পায়ের তলায় তেমনভাবে যেন মাটি নেই।
এসব কথা তোমার অসংগত লাগছে বুঝতে পারছি,কিছুই শুনতে চাও না মন দিয়ে,
এই দেখ,ভুল বললুম,মন দেওয়া নেওয়ার পাঠ সেই কবেই শেষ,এখন শুধু কথার খই,তবে কথা কেউ শোনেনা,পড়ে,আর সেটাই সুবিধা —
ভেবেচিন্তে যুৎসই মিথ্যে সাজিয়ে দেওয়া যায় পাতে অজুহাত সাজাতেও তেমন কোন আপত্তি নেই।
তা যাক সেসব কথা,ভস্মে ঘি ঢালতে আমিও রাজি নই
তোমাকে বাতলাতে এসেছিলাম একটা অন্য কথা,গতকাল পার্কে দেখলুম বিস্তর সবুজ,আর দোলনায় দোল খাচ্ছে অবুঝ বাচ্চারা।
বুঝে এলুম সবটাই জরাজীর্ণ নয়,এখনো সব সতেজতা মরে যায়নি,বিস্তর আছে,শুধু দেখার চোখটা একটু নিভু নিভু,উস্কে দিলেই হয়।
তাই ভাবছিলাম সলতেটা আর তেলটা আছে বলেই প্রদীপটা জ্বলছে,
তুমি বলবে সে তো গোড়ার কথা,আজ আমি আর আপত্তি করব না।
গোড়া ছুঁয়েই তো বেঁচে থাকার অভ্যাস,
পরিবর্তনটা হাতের মুঠোয় চেপে ধরি,কিন্তু মানতে পারিনা কোনমতেই
বার্ধক্য বোধহয় মগজে,হলেই ভালো,তোমরা ভালো আছো জানলেই খুশি হই।
********************************
অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য পাঠের সুন্দর পরিবেশে বড় হওয়ায় খুব ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য অনুরাগী। কলেজ জীবনে লেখায় হাতেখড়ি।
তিন বছর আগে অসুস্থতার অবসাদ কাটাতে আবার কলম হাতে তুলে নেওয়া। ছন্দ,গদ্যকবিতা ও ছড়ায় সাবলীল ভাবে লেখা তিন বছরের ফসল এক হাজারেরও বেশি কবিতা,কয়েকটি গল্প ও রম্য রচনা। তারই কিছু বহু প্রশংসিত কবিতা দিয়ে বই ‘উত্তরণ’ প্রথম প্রয়াস।