Shadow

জয় পরাজয় – রেশমি দত্ত

ছবিঃ নতুন গতি

জয় পরাজয়

                রেশমি দত্ত                   

জীতেনবাবুর ভাগ্যকে অনেকেই ঈর্ষা করেন। জীতেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় যা চান তাই পান। অফিসের দাবা কম্পিটিশনে ব’লে ব’লে হারিয়ে দেন সকলকে। বংশের একমাত্র ছেলে,শ্বশুর বাড়িতে একমাত্র জামাই,কপাল যেন সোনায় বাঁধানো। সরকারি চাকরিটাও করে দিয়েছিলেন আপন মেসোমশাই। এহেন পুরুষকে নির্দ্বিধায় ভাগ্যবান বলা যায়। তিনি নিজেও এর জন্য বেশ গর্ব অনুভব করতেন।
এবার তিনি বাবা হতে চলেছেন,দারুণ আনন্দের খবর,বাড়িতে বংশধর আসতে চলেছে,জীতেনবাবু তো তাঁর মাকে গিয়ে বললেনমা নাতির নাম ঠিক করো |’ অর্থাৎ তিনি ধরেই নিয়েছেন তাঁর একটি পুত্র সন্তানই হবে। কিন্তু এবার উল্টে গেল পাশা। হল একটা ফুটফুটে সুন্দর মেয়ে। এই খবর পাওয়া মাত্র তিনি বিছানায় ধরাশায়ী হলেন। এই প্রথম বার তিনি হারলেন,না পাওয়ার জ্বালা বুঝলেনভাবলেন মুখ দেখাবেন কি করে সকলকে? কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় তার পৌরুষত্ব আঘাত পেল। মায়ের কাছে গিয়ে কেঁদে ফেললেন,বারবার বলতে লাগলেন,আমি হেরে গেছি,আমি হেরে গেছি’| মা সমব্যথী হয়ে বললেন,ভাবলাম বংশধর আসবে! যাকগে,সময় তো বয়ে যাইনি,তুই এর পরের বার ঠিক ছেলের বাপ হবি |’ মায়ের কথায় একটু শান্ত হলেন আমাদের জীতেনবাবু।
রাগে দুঃখে মেয়ের মুখই দেখলেন না তিনি। বলতে গেলে এরকম মেয়ে আমাদের সমাজে অনেক আছে,কারুর কথা প্রকাশ্যে আসে কারুর আসেনা। এখনও আমাদের শিক্ষিত সমাজের অনেকেই সাদরে মেয়েদের অভ্যর্থনা করে না। কিন্তু এত সুন্দর একটা ফুটফুটে মেয়ে দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। তার মা তার নাম রাখলেনঅপরাজিতা। ছোট থেকেই মা ছাড়া তার আপন বলে কাউকে মনে হয়নি। বাবা যে তাকে একেবারেই পছন্দ করেন না,তা সে ছোট থেকেই বুঝতো।                    বছর খানেক ঘুরতে না ঘুরতেই ভগবান জীতেনবাবুর মনের আশা পূরণ করল,ছেলের বাপ হলেন তিনি। ছেলেকে কোলে নিয়ে তাঁর সে কি আনন্দ,কি করবেন আর কি করবেন না ভেবে উঠতে পারছেন না। সখ করে ছেলের নাম রাখলেন দুর্জয়। বংশধর বলে কথা। জীতেন বাবুর কড়া নির্দেশ বাড়ির সবাইকে,’ছেলের আদর যত্নের যেন কোনো ত্রুটি না হয়।’
ছেলের জন্য নিয়ম করে ফল,দুধ,ছানা সব আনা হতো অথচ স্ত্রী যখন বলত মেয়ের কথা,মেয়ের জন্য কিছু আনার কথা,উনি বলতেন মেয়েদের অত কিছুর দরকার নেই। বড় করে ছেলের অন্নপ্রাশন হল,জন্মদিন হল,কিন্তু এই বাড়ির নিয়ম মেয়েদের কোনও জন্মদিন হয়না। জীতেন বাবু পরিষ্কার করে স্ত্রীকে বোঝালেন,’দেখ মেয়ে বড় হলে পরের বাড়ি চলে যাবে,তাই মেয়ের পেছনে খরচ করা বৃথা,কিন্ত ছেলে আমার বড় হবে,চাকরি করবে,বাবা মাকে দেখবে,সংসারের দায়িত্ব নেবে,তাই ছেলের পেছনে কোন খরচ বিফলে যাবে না |’ সেই মতো ছেলেকে ভর্তি করা হল একটা নামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে,আর মেয়ে পড়ছিল একটা বাংলা মাধ্যম স্কুলে। ছেলের পড়া নিয়ে জীতেন বাবু খুবই চিন্তিত,যতই খরচ হোক ছেলেকে যে সুপ্রতিষ্ঠিত হতেই হবে,বিদেশ যাবে ছেলে আর জীতেন বাবুরও শেষ জীবনটা কাটবে বিদেশেইমনে মনে বললেন, একেই বলে কপালতখনও হবে তারই জয় ছেলের ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মাইনে,খাতা বই,স্কুল বাস সব নিয়ে বেশ মোটা অঙ্কের টাকাই খরচ হয় ছেলের পেছনে তবু জীতেন বাবুর কোনো কষ্ট নেই কারণ তার দৃঢ় বিশ্বাস আজকের এই কষ্ট ভবিষ্যতে তাকে অনেক লাভ দেবেই।
এদিকে অপরাজিতা নিজের মাতৃভাষায় সব পড়াই খুব তাড়াতাড়ি আত্মস্থ করে ফেলছে,সে যত বড় হচ্ছে পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ তত বাড়ছে। সব পাঠই তার ভালো লাগে,তবে যে পাঠ গুলিতে সেবার কথা বলা হয়,যেমন মাদার টেরেসার কথা,ফ্লোরেনস নাইটিঙ্গেলের কথা এগুলি তাকে বেশি আকৃষ্ট করে। এগুলি পড়লে বারবার তার মনে অপরকে সেবা করার ইচ্ছা জাগে,মনে মনে ভাবে বড়ো হয়ে সেও একদিন মাদার টেরেসার মতন হবে। আর্তদের সেবার কাজে লাগবে সে। তার স্কুলে এরকম অনেক সহপাঠিনী আছে যারা সারাদিন প্রায় কিছু না খেয়েই পড়াশোনা করে। টিফিন বেলায় টিফিন খাবে বলে সে যখন কেক কেনে,তখনই মনে পড়ে যায় তাদের কথা। কেন যে এমন হয় তা সে নিজেও বোঝেনা। কেকটা কিনে তাদের মুখে একটু করে না দিয়ে সে খেতেও পারেনা। একদিন সে দেখেছিল মা লুকিয়ে বাবার মানিব্যাগ থেকে টাকা নিয়ে তাকে টিফিনের পয়সা দিয়েছিল তাই বন্ধুদের টিফিনের জন্য বেশি পয়সা সে কি করেই বা চাইবে। তখনই মনে মনে সে ঠিক করল-‘লেখাপড়া করে একটা চাকরি আমাকে করতেই হবে। একদিন সে শুনতে পেল মা বাবাকে বলছে,’আমাদের মেয়েটা বড় ভালো গো, বলে বড় হয়ে গরীবের সেবার করবে‘,উত্তরে বাবা বলে উঠল,’ওই তো ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াবে। কথাটা অপরাজিতার মনে থাকলেও তার মানে সে তখন বুঝতে পারেনি। বড় হয়ে যাওয়ার পর অনেকবার কথাটা তার মনে পড়েছে। এইভাবে বড় হতে লাগল অপরাজিতা দুর্জয়।
দুর্জয় যেহেতু ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ে তাই জীতেন বাবু ছেলের জন্য পাঁচজন গৃহ শিক্ষক  রাখলেন। ইংরেজি,অঙ্ক, বিজ্ঞান,ইতিহাস ভূগোল এবং একজন স্পোকেন ইংলিশের। জীতেন বাবু বলেন,ছেলে বিদেশ গেলে ইংরেজিতে কথা বলতে হবে ঝরঝর করে,তাই স্পোকেন ইংলিশ অত্যাবশ্যক।
আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠল দুই ছেলেমেয়েই। ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যেতে চায় বিদেশ। এদিকে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন জীতেনবাবু,সরকারি চাকরি,হাতে টাকা পয়সা বিশেষ কিছু পাননি,যতটুকু সম্ভব সবটাই খরচ করে ফেললেন ছেলের পড়াশোনায়। স্ত্রী একবার বললেন,’মেয়েটার বিয়ের জন্য কিছু রাখবেনা?’ জীতেন বাবু বললেন,’আমি কারুর বিয়ের কথাই ভাবছি না,আমি শুধু আমার ছেলের বিদেশ যাওয়ার কথাই ভাবছি,আমি যা পারিনি তা করে দেখাবে, বিদেশ যাবে|’
এদিকে অপরাজিতা তৈরি হচ্ছিল ডাক্তারির এন্ট্রান্স পরীক্ষার জন্য,বরাবর সে সরকারি স্কুল কলেজে পড়েছে,এমনকি উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে খুব ভালো ফল করেছেতাও আবার বিনা গৃহশিক্ষকে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ভালো ফল করলেও ডাক্তারিতে তার একটুর জন্য সুযোগ হলনা,তবে সে ভর্তি হল সরকারি নার্সিং কলেজে। ভগবান তার কথা শুনেছেন,সেবাতেই তার মন,তাই নার্সিং ভর্তি হয়ে সে খুশি। এরপর দুর্জয় চলে গেল বিদেশ,ধীরে ধীরে বাবাও বৃদ্ধ হচ্ছে, ঠাকুমা গত হয়েছেন,অপরাজিতা নার্সিং পাশ করে চাকরি পেল একটা নামি সরকারি হাসপাতালে। সদা হাস্যমুখ অপরাজিতা সবার কাছেই প্রিয়,চোখ দুটোর মধ্যে এত ভালোবাসা রয়েছে,যে কোনো আর্ত মানুষের কাছে এলে অর্ধেক কষ্ট লাঘব হয়ে যায়। এর পাশাপাশি কত প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে কত গরীবের চিকিৎসা করে সে,নিজের রোজগারের কতকটা দিয়ে আসে গ্রামের মানুষগুলোকে,কত সংসার চলে তার টাকায় আর সেখানে ঘরে ঘরে কন্যা সন্তানরা যাতে মানসিক শারীরিক ভাবে অত্যাচারিত,অবহেলিত না হয় সেই প্রচেষ্টাই করত সে। এবার তো মাইনে বাড়ার সাথে সাথে গ্রামে গিয়ে ঘোষণা করল,’যাদের ঘরে কন্যা সন্তান জন্মাবে তারা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা উপহার পাবে। মাঝেমধ্যে তার মনে হয় বাবা কেন তাকে বোঝা মনে করত? বাবা কেন তাকে বংশধর ভাবতো না? যদি এরকম হত বিবাহ সূত্রেও মেয়েদের পদবী বদল হয়না,আজকাল নাকি এমন হয়,পদবী বদলের প্রয়োজন নেই,তাহলে বাবা কি এসব জানেনা? যাই হোক অপরাজিতা ঠিক করেই ফেলেছিল সে বিয়ে করবে না,সেবাতেই তার আনন্দ। একবার গ্রামে গিয়ে যত বৃদ্ধ বৃদ্ধা আছেন তাদের একমাসের যা যা প্রয়োজনীয় জিনিস সব কিনে দিয়ে এল। এক বৃদ্ধা দুচোখে জলের ধারা,কাঁপা কাঁপা হাত দিয়ে অপরাজিতার হাত দুটো চেপে ধরে বলল,’তোমার মতন মেয়ে যে বাবা মা পেয়েছেন তারা ধন্য।এই কথাটা সারাক্ষণ তার কানে বাজছে,ভাবলো কথাটা কি ঠিক? কিন্তু বাবাতো দুঃখই পেয়েছে তাকে নিয়ে সারা জীবন! যাইহোক দুর্জয় বিদেশে খুব বড় একটা কোম্পানিতে চাকরি করছে,বেতন পায় খুব ভালো,কিন্তু ওখানে ওই বেতনে নিজের একটা বাড়ি বা এপার্টমেন্ট কেনা খুব কঠিন,তাই বাবা মা কে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হল না।
বিদেশের মাটিতে জীতেন বাবু পা রাখতে না পারলে কি হবে,গর্ব তার একটুও কমেনি,ছেলেতো বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে,বিদেশে থাকে,বড় কোম্পানিতে চাকরি করে,তিনি কিন্তু জীবন যুদ্ধে জিতেই গেলেন। মেয়েকে নিয়ে তাঁর কোনোদিন মাথাব্যথা নেই | সে কি করে? না সরকারি হাসপাতালের নার্স! সেবা! সেবা! সেবা করবে! কি হবে সেবা করে? মাদার টেরেসা হবে! –ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোবছর খানেক বাদে হঠাৎ একদিন দুর্জয় ফোন করল,বাবা ফোন ধরেছে,ছেলে সবার খবরাখবর নেওয়ার পর আর কোনো সংকোচ না করে পরিষ্কার বলে দিল যে সে একটি মেয়েকে ভালোবাসে,মেয়েটিকে সে বিয়ে করবে,মেয়েটি জাতিতে খৃষ্টান,আর সেও খৃষ্ট ধর্ম নিতে চলেছে। তাই তার বাবা মানুক না মানুক সে তার নাম পদবী সবই পরিবর্তন করতে চলেছে।
ফোনের রিসিভার টা হাত থেকে পড়ে গেল,একি শুনলেন তিনি,জীতেন বাবুর পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে,সারা পৃথিবী যেন ঘুরছে,বুকে কি অসহ্য যন্ত্রণা,হৃদপিণ্ডটা যেন শরীর থেকে বেরিয়ে আসবে,চারিদিক অন্ধকার,ব্যাস আর কিছু জানেন না তিনি। সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করা হল অপরাজিতার হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতাল,বেড না থাকা সত্ত্বেও শুধু মিস মুখার্জির বাবা বলে ICU তে ভর্তি হয়ে গেলেন জীতেন বাবু। এবার ডাক্তার দের কাছে ছুটে যায় অপরাজিতা,বলেযে ভাবেই হোক বাবাকে বাঁচাতে হবে ডক্টর‘,সবার প্রিয় অপরাজিতার কথা রাখতে ডাক্তাররা সঙ্গে সঙ্গে চালু করলেন চিকিৎসা। মেয়ে বাবার পাশ থেকে আর নড়েনা,কখন বাবার জ্ঞান ফেরে! সবাই তাকে চলে যেতে বললেও তার মন সায় দেয়না। একজন নার্স হয়েও,কোথাও যেন তার কন্যা হৃদয়ই বেশি জাগরুক হয়ে উঠলো।সে বাবাকে বড় ভালোবাসেএটা সে কোনোদিন বাবাকে বোঝাতেই পারেনি।
ডাক্তার বাহাত্তর ঘন্টা সময় দিয়েছেন,আটচল্লিশ ঘন্টার পর অপরাজিতার বাবা যেন চোখ খুলে তাকালো,একভাবে দেখছে মেয়েকে,বাবার দুচোখের কোণ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে,অপরাজিতার হাত দুটো বাবার হাত ধরেই ছিল,ভিজিটিং আওয়ার,মা এসেছে,হাতে একটা চিঠি। মা বলল আজ বাড়িতে এই চিঠিটা বাইপোস্ট বাবার নামে এসেছে। তাই মা বাবার কাছেই নিয়ে এসেছে পড়বে বলে,বাবা বুঝুন না বুঝুন মা চিঠিটা বাবার সামনেই পড়তে শুরু করল।
শ্রদ্ধেয় দাদা দিদি,
আশাকরি আপনারা খুব ভালো আছেন। আমি আপনাদের বড় দিদির মতন,আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ,এমন প্রকৃত মানুষের মত মানুষ একটি সন্তান তৈরি করেছেন। আপনার মেয়ের জন্য এই গ্রামের সকলে খেয়ে পরে বেঁচে আছি। আমি পুরানো দিনের লোক,লেখাপড়া জানিনা,তবে এটা বুঝতে পেরেছি আপনাদের মত পিতা মাতার জন্য সন্তান এত ভালো কাজ করে সমাজের উন্নতি করবে,গরীবের দুঃখ দুর করবে। আপনার মেয়ে সাক্ষাৎ মা অন্নপূর্ণা।
পুনশ্চ:চিঠিটা নিজে লিখতে পারিনি,মেয়ে বলে বাবা মা লেখাপড়া শেখায়নি,নাতনীকে দিয়ে লেখালাম,আপনার মেয়ে আমার নাতনীর পড়াশোনার সব খরচ চালায়।
            শ্রদ্ধা ভালোবাসা নেবেন,ইতি সৌরবালা।
চিঠিটা শেষ হতেই জীতেন বাবু যেন কেমন অস্থির হয়ে উঠলেন,যেন কিছু বলতে চাইছেন,উঠে বসতে চাইছেন,গায়ের জোরে অপরাজিতার হাত দুটো চেপে ধরলেন,কি যেন বলতে চাইছেন,বড়ো অস্পষ্ট,অপরাজিতা বোঝার চেষ্টা করল,শুনতে পেল দুঅক্ষরের একটা শব্দ বার বার বলছেন,’ক্ষমা ক্ষমা ক্ষমা………’তারপর সব চুপ,থেমে গেল ECG গ্রাফ,বাবার হাত থেকে আলগা হয়ে গেল অপরাজিতার হাত,কি হল? যদিও সে একজন নার্স তবুও সেই মুহূর্তে তার সকল শিক্ষা যেন  আবেগের কাছে হার মেনেছে। দৌড়ে গেল ডাক্তারদের কাছে,সব শেষ হল।
জীতেন বাবু মারা গেলেন,দুর্জয় কে ISD করা হল,সে চুপ করে সব শুনল,কিছুক্ষণ পর শান্ত গলায় দিদিকে বলল,’সব কাজ তুই করেনে দিদি,এখন আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা |’ অপরাজিতা জীতেন বাবুর শেষ কৃত্য সম্পন্ন করল। এক বছর পর তাদের বসত বাটিতেই অপরাজিতা তৈরি করল একটা সেবা প্রতিষ্ঠান। যে সমস্ত বৃদ্ধ বৃদ্ধার সন্তানরা বিদেশে থাকেন তারা যেরকম সেবা চান,বিনামূল্যে পরিসেবা পাবেন। এমনকি তাদের জন্মদিন পালন,পুজো পরিক্রমা,দেশ বিদেশ ভ্রমণ, বার্ষিক নাচ,গান, নাটক করা ইত্যাদি সবই পালিত হয় সেখানে। প্রতিষ্ঠানটি মহিলা দ্বারা পরিচালিত এবং নাম রাখা হলজীতেন্দ্রস্মৃতি সেবা কেন্দ্র
****************************
                                       
লেখিকা-রেশমি দত্তঃ
জন্ম পড়াশোনা কোলকাতায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরপেশায় শিক্ষিকা রেশমির অবসরের বিনোদন হলো বইপড়া শৈশব থেকে  বাবার অনুপ্রেরণায় গল্প কবিতা লেখার শুরু শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং ভ্রমণ ওর প্রিয় বিষয়

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!