তালাশ
কলমে – প্রদীপ মন্ডল
পৃথিবীর গা শুঁকে শুঁকে নিচ্ছিলাম ভালোবাসার ঘ্রাণ,
যদি,কোথাও মিলে যায় নিঃস্বার্থ একটা মন।
নিষ্পাপ কোমল অতিশয় বিগলিত হৃদয়,
মিথ্যা ছলনা প্রবঞ্চনা আর দুষ্টাচার নেই তেমন।
পাথরের কাছে গিয়ে পেলাম বিড়ম্বনা,
অশ্রু বিগলিত ঝর্ণাধারা বলে আমি নিজেই তো পাথর।
যুগ যুগান্তর ঘাত-প্রতিঘাতে হয়েছি কঠোর শিলা,
আমার কাছে মন খোঁজা অবান্তর।
অশ্রুধারায় নিমজ্জিত হয়ে গেলাম নদীর কিনারে,
সেও বলে আমিও যে ভীষণ নিরুপায়।
সব ময়লা ধুতে ধুতে নিজেই এক আবর্জনা,
আঘাতে আঘাতে গেছি এদিক সেদিক বেঁকে।
আকাশকে বললাম মনের কথা,
তারারা শুনে হাসলো মিটিমিটি।
চাঁদও বললো আমি নিজেই কলঙ্কিনী,
পরের আলোয় আলো দিয়ে আঁধারে মুখ ঢাকি।
ফিসফিসিয়ে শুনলাম বাতাসের কথা,
ঝড়ের গতিতে চলে একবুক দীর্ঘশ্বাস।
তার মন ঝড়ো হাওয়ায় ছুটে দিগ্বিদিক,
ভেঙেচুরে হয়ে গেছে তছনছ।
রাত সেও দেখি বেজায় মুখ গম্ভীর,
যত অপরাধী তাকে করে সাহারা।
ছলনা মিথ্যাচার নিয়ে খেলে অশরীরী,
নিরপরাধ অসহায় করে হাহাকার।
ঝুমঝুম বরষণ মুখর একদিনে,
বুকের পাঁজরে গেঁথে গেল বজ্রপাতের আঁচড়।
হুহুঙ্কারে গুমরে মরে মেঘেদের হৃদয়,
ভালোবাসার খোঁজ নিতে উদাসীন ওড়ে তারাও।
সূর্যের গা ঘেঁষে প্রখর উত্তাপ,
তপ্ত হৃদয় তার যায় গলে গলে।
পুড়ে পুড়েও আজীবন হলনা সে খাঁটি,
মুখমন্ডল লেলিহান আগুনে জ্বলে।
অবশেষে মাটির বুকে করলাম করাঘাত,
বললাম-একটু শান্তি দেবে হে বসুন্ধরা !
সোল্লাসে সজোরে ফেটে হলো চৌচির,
যত হিংসার রক্তপাত দগদগে ক্ষত তার বুকে।
একটা ফুল দূরে দাঁড়িয়ে উঠলো খিলখিলিয়ে,
সংক্ষিপ্ত রূপকথার এক আজব জীবন কাহিনী।
দুদিনের এই ভালোবাসা শুকালে ডাস্টবিনে,
স্বার্থান্বেষীর লেহনে লেহনে সেও গেছে ঝরে।
অবশেষে তাকালাম শূণ্যে মহাশূন্যে,
সবাকার মনগুলো মিলেমিশে একাকার।
মহাশূণ্যের ওপার হতে আসে নৈঃশব্দ,
মনগুলো আসলে মরীচিকার এক স্থূল কদাকার
মন বলে,কোনকিছুই কোনও কালেই নেই,
রজ্জুতে সর্প দেখার এক বিপুল বিভ্রম।
যাকিছু দেখছো ভাবছো সব মায়াময় কল্পনা,
সৃষ্টির আহুতি ওম্ এ অনাহুত হোম।
********************************