“বোধন”
শ্রুতি দত্ত রায়
ডাইনিং টেবিলে ব্রেকফাস্ট সাজাতে সাজাতে ভাবছিল মৌলি। আজ কথাটা অগ্নিকে বলতেই হবে। তিনদিন আগে ফোনটা আসার পর থেকে বলবো-বলবো করে বলাই হচ্ছে না। উপযুক্ত সময় সুযোগ কোনটাই জুটছে না। তাছাড়া কথাটা শুনে অগ্নি কিভাবে রিয়্যাক্ট করবে সেটাও ঠিক বুঝতে পারছে না মৌলি। অবশ্য গতকাল অফিস ফেরার পর থেকে এখনও পর্যন্ত অগ্নির মুড ভাল আছে বলেই তো মনে হচ্ছে। আজ বোধহয় প্রমোশন অর্ডারটা হাতে পাবে। কদিন ধরে ওর অফিসের আবহাওয়া মনে হয় অনুকূলেই আছে। অবশ্য সেটা অনুকূলে আনতে অগ্নিকে কম পরিশ্রম করতে হয়নি। নিজেকে কোম্পানীর হাতে পুরোপুরি সঁপে দিয়েছে তো বটেই,তার সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে বাগে আনতে অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছে। আর তাই উন্নতির সিঁড়িগুলো টপকাতে পেরেছে সহজেই। এখন বাকি একটি মাত্র ধাপ। ওটা পেরোতে পারলেই কেল্লা ফতে করবে মৌলির সুদর্শন,স্মার্ট,উচ্চাকাঙ্খী স্বামী অগ্নিমিত্র সেন,যিনি বিখ্যাত রায় এন্ড রায় কোম্পানির বর্তমান এ.জি.এম।
মৌলি আজ ব্রেকফাস্টে অগ্নির পছন্দের কড়াইশুঁটির কচুরী আর কাশ্মীরি আলুর দম করেছে। ডেসার্টে ভ্যানিলা পুডিং। আজ একটু অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে অগ্নিকে। বোধহয় ভেতরে ভেতরে খানিকটা উত্তেজিত। প্রমোশন লেটারটা হাতে না পাওয়া অবধি মনে যেন স্বস্তি নেই।
“আরও দুটো কচুরী দেব তোমাকে?” জিজ্ঞেস করল মৌলি।
“দাও,তবে একটা।” বলেই খবরের কাগজের পাতায় ডুব দিল সে। এটা অগ্নির বরাবরের অভ্যাস। অফিস যাবার আগেই খবরের কাগজের পাতায় চটজলদি চোখ বুলিয়ে নেওয়া। বিশেষত বিজনেস কলামে।
কথাটা কি পাড়বে এখন? এখন ছাড়া বলবেই বা কখন? প্রতিদিন তো একই রুটিন। সকালে ঘুম ভাঙার পর বাথরুম থেকে একবারে শেভিং,স্নান সেরে বেরোয় অগ্নি। জলখাবার খেয়েই ছোটে অফিসে। সেখানে হাজারটা মিটিং,কনফারেন্স নিয়ে ব্যস্ততা। রাতের দিকে ক্লান্ত শরীরে কোনরকমে ডিনার করেই বিছানায়। তারই মাঝে হাজারটা ফোন । কোম্পানি মাসের শেষে যে মোটা টাকাটা দেয়,তার বদলে খাটিয়েও নেয় তেমনই। অবশ্য অগ্নির এতে তেমন কোনও আপত্তি নেই। সংসারের হাজারো ঝুট ঝামেলা সামলানোর চেয়ে এই জীবনটাকে যেন একটু বেশিই উপভোগ করে মৌলির স্বামী।
(২)
“শুনছ,একটা কথা ছিল।” গরম কচুরীটা প্লেটে তুলে দিয়ে বলল মৌলি।
“হুঁ…..” কাগজ থেকে চোখ না তুলেই উত্তর দিল অগ্নি।
“বলছি…কদিন আগে ‘সোনার বাংলা’ চ্যানেল থেকে আমার কাছে একটা ফোন এসেছিল। ওদের ‘পাঁচ ফোঁড়ন’ অনুষ্ঠানের জন্য আমি সিলেক্টেড হয়েছি। কাল স্টুডিওতে শুটিং।” কথাগুলো কোনরকমে উগড়ে দিল মৌলি। তারপর বাধ্য স্ত্রীর মত স্বামীর উত্তরের অপেক্ষায় রইল।
অবাধ্যতা ছোটবেলা থেকেই মৌলির স্বভাববিরুদ্ধ। স্কুলে টিচারদের আর বাড়িতে মা বাবার ভারি বাধ্য ছিল সে। ওকে মানুষ করতে তাই কোন বেগ পেতে হয়নি তাঁদের। লেখাপড়া,গান বাজনা ,ছবি আঁকা সবেতেই ছিল মেয়ের স্বচ্ছন্দ বিচরণ। এম.এ. অবধি সম্মানের সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছিল সে। ইচ্ছে ছিল কলেজে পড়ানোর। তাই পিএইচডির আবেদনও করেছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে এক বিয়ে বাড়িতে অগ্নির বিধবা মায়ের নজরে পড়ে মৌলিকে। বিয়ের প্রস্তাব আসতে দেরী হল না। সুন্দরী,শান্ত স্বভাবের,শিক্ষিত,বাবা মায়ের একমাত্র সন্তানকে বাড়ির বউ করে আনতে অগ্নির মায়ের ছিল প্রবল আগ্রহ। অগ্নিও ছিল মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর। কাজেই দুই বাড়ি থেকেই সম্বন্ধ পাকা হয়েছিল সহজেই। বাধ্য মেয়ে মৌলি আর আপত্তি করেনি। হবু শ্বশুরবাড়ি আশ্বাস দিয়েছিল বিয়ের পর মৌলি পড়াশোনা নিশ্চিন্তে চালাতে পারে।
বিয়ের প্রথম দুটো বছর শ্বশুরবাড়িকে অতটা কঠিন মনে হয়নি মৌলির। বরং স্বামী হিসেবে অগ্নিকে কিছুটা ননইন্টারফেয়ারিং মনে হয়েছিল। বরাবরই অগ্নি ওর কোম্পানির উন্নতি….সেই সঙ্গে নিজের অগ্রগতি,দুই নিয়েই মাতোয়ারা হয়ে থাকত। ফলে মৌলিও ওর পড়াশোনার জগতে নিশ্চিন্তে ব্যস্ত থাকতে পারত। তবে মাঝে মধ্যে একটু মনখারাপ হত না তা নয়। ওর বান্ধবীদের যাদের ইতিমধ্যেই বিয়ে হয়েছিল,তাদের নতুন দাম্পত্যের উচ্ছল গল্প শুনে মৌলি বুঝতে পারতো ওর জীবন বাকিদের জীবনের থেকে একটু যেন আলাদা। অগ্নি-মৌলির দাম্পত্যে আর যাই থাক,সহজ স্বাভাবিক বন্ধুত্বের সম্পর্কটা নেই। একটা আবেগবিহীন যান্ত্রিক কর্তব্যের সম্পর্ক। দিনের বেলা যে যার জগতে ব্যস্ত,সন্ধ্যেরাতে খাবার টেবিলে টুকটাক কথা,আর মধ্যরাতে রুটিন মাফিক সহবাস। পরদিন সেই এক রোজনামচা। তবুও নিজের জগতেই খুশি থাকার চেষ্টা করতো মৌলি। আর ওর এই খুশিতে আড়াই বছরের মাথায় অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল অয়ন। নার্সিংহোমে যেদিন প্রথম মৌলি অয়নকে কোলে তুলে নিয়েছিল,ওর ফর্সা টলটলে মুখের দিকে তাকিয়ে জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার হিসেব ভুলে গিয়েছিল এক নিমেষে। রাতদিন তখন শুধুই ছেলেকে নিয়ে পুতুল পুতুল খেলা। এভাবেই বছর দুইএর মাথায় পুতুল খেলার মধ্যে দিয়েই মৌলি আবিষ্কার করল ওর একমাত্র সন্তান আর পাঁচটা শিশুর মত সুস্থ স্বাভাবিক নয়। আর ডাক্তারী পরীক্ষায় যেদিন জানা গেল অয়ন অটিস্টিক চাইল্ড সেদিন হল মৌলির জীবনে আসল ছন্দপতন। ঘরের চেনা মানুষগুলোর মুখ বড় অচেনা হয়ে উঠল। প্রতিনিয়ত উঠতে বসতে মৌলিকে শুনতে হল এসবের জন্য একমাত্র সেই নাকি দায়ী। অগ্নি নিজেকে বরাবরই কাঠিন্যের চাদরে জড়িয়ে রাখতো। এবার সেই কাঠিন্য যেন কঠিনতর হয়ে উঠল। ধীরে ধীরে সংসারে কোণঠাসা মৌলি অসুস্থ ছেলের মুখ চেয়ে নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নিয়ে চার দেওয়ালের অন্তরালে স্বেচ্ছা নির্বাসিতা হল। আর এই দীর্ঘ নয়টা বছরে শুধু ছেলে,সংসার আর রান্নাঘর ছাড়া অন্য কোন কিছুতেই কোন আগ্রহ দেখায়নি মৌলি। নিজের অজান্তেই রান্নাঘর হয়ে উঠেছে ওর একমাত্র অবলম্বন,প্রাণ খুলে শ্বাস নেবার জায়গা। শাশুড়ির গঞ্জনার হাত থেকে রেহাই পেতেই হোক কিংবা লুকিয়ে চোখের জল ফেলা….রান্নাঘর হয়ে উঠল মৌলির আশ্রয়। এই ঘরের আনাজপাতি,মশলার কৌটো,বাসনপত্র সব যেন ওর বন্ধু ,বড় আপন। আর তাই ওদের নিয়েই এখন চলে মৌলির সৃজনশীলতার চর্চা। বিভিন্ন উপকরণের সাহায্যে নিত্যনতুন পদ রান্না করা,অথবা পুরনোকেই নতুনের মোড়কে পেশ করা এখন মৌলির নেশায় পরিণত হয়েছে।
রান্নাঘর ছাড়া আর একটি ভরসার আশ্রয় অবশ্য আছে মৌলির। সে হল উল্টোদিকের ফ্ল্যাটের তপতীবৌদি। ওর জীবনের সবচেয়ে খারাপ দিনগুলোতে এই বৌদিটিই বন্ধুর মত ভরসা ও সাহস জুগিয়েছিল। শুধু তাই নয়। তপতীবৌদিই যোগাযোগ করে কাছের একটা স্প্যাসটিক চাইল্ডদের স্কুলে স্পেশাল এডুকেশন বিভাগে অয়নকে ভর্তি করাতে মৌলিকে উৎসাহ দিয়েছিল। এই কটা বছরে অয়নের যেটুকু বিকাশ হয়েছে সেটা এই বৌদি না থাকলে হয়ত মৌলির একার পক্ষে করা সম্ভব হত না। কারণ অসুস্থ ছেলের প্রতি অগ্নির ছিল চরম উদাসীনতা। মৌলির এই রান্নার নেশাটিও সবথেকে বেশি প্রশ্রয় পায় তপতীবৌদির কাছেই। দুই ফ্ল্যাটের মধ্যেও প্রায়দিনই চলে টিফিন বক্স আদানপ্রদান। এ বারেও তপতীবৌদির উৎসাহেই এতবছর পরে মৌলি একটা টিভি শোয়ের জন্য দুইখানা রেসিপি পাঠিয়েছিল। ভাবতে পারেনি সত্যিই সিলেক্টেড হয়ে যাবে। তিনদিন আগে ফোনটা পেয়ে আনন্দের থেকে চিন্তা হয়েছিল বেশি। কেন যে শুধু শুধু বৌদির পাল্লায় পরে এমন কান্ড বাঁধাল মৌলি। এ কটা দিন টেনশনের পারদ কেবল ঊর্দ্ধগামীই হয়েছে। গতকাল বৌদি এসে মাথার দিব্যি দিয়ে বলে গেছে আজ যেন অগ্নির কাছে মৌলি শুটিং এর কথাটা পেড়ে ফেলে।
(৩)
মৌলির কথাটা কানে যেতেই অগ্নি থমকে গেল। কিছুটা অবাক হল প্রথমে। তারপর যা ভেবেছিল তাই হল। চীৎকার করে উঠল অগ্নি,”এর মানে!!!!!আমাকে না জিজ্ঞেস করে এসব করার সাহস তোমার হয় কি করে?”
মৌলি জবাবে তপতীবৌদির উৎসাহের কথাটা বলতে শুরু করেছিল। কিন্তু অগ্নির গলার দাপটে মৃদুভাষী মৌলির স্বর কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
“এসব নায়িকা হবার ভূত মাথা থেকে তাড়াও। যার ছেলের এই অবস্থা তার মনে এত ফুর্তি আসে কী করে?”
অগ্নির গলার আওয়াজে পাশের ঘর থেকে শাশুড়িমা ছুটে এলেন। সব শুনে গলায় বিরক্তি ঢেলে বললেন,”তোমার আক্কেল আর কবে হবে বৌমা? তুমি জান ছেলে আমার এসব পছন্দ করেনা,তবুও এতবড় একটা কান্ড ঘটালে? বলিহারি শখের। শিগগির ফোনে না করে দাও। সক্কালবেলা যত ঝামেলা। ছেলেটার আমার ঠিক মত খাওয়া হল না আজ।”
মৌলি তবু মরিয়া হয়ে বলে উঠল,”শুটিং এর সব রেডি। এখন কি ভাবে না করব?”
অগ্নি বেসিনে হাত ধুতে গিয়েও ফিরে এল মৌলির সামনে। দাঁতে দাঁত ঘষে হিসহিসিয়ে বলল,” আবার তর্ক? তুমি জান না আমি কোন স্ট্যাটাসে বিলং করি? যত্তসব মিডিল ক্লাস মেন্টালিটি…আর একটা কথা বললে ….”বলেই এঁটো ডান হাতখানা মৌলির গালে সজোরে নামিয়ে আনল। হঠাৎই চোখ পড়ল টেবিলের অন্যপাশে অয়নের দিকে। নির্বিকার অয়ন দুধ কর্ণফ্লেক্স খাচ্ছে। চোখ টিভির কার্টুনে। বিনা কারনেই হি হি করে হাসছে।
(৪)
বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ছেলেকে নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরল মৌলি। টিভিতে কার্টুন চালিয়ে ভাত খাওয়াতে বসল। ছেলেটা আজ একটু বেশিই অস্থিরতা করছে। বার বার গিয়ে ঠাকুমার ঘরের দরজার পাল্লাটা খুলছে আর বন্ধ করছে। ফ্ল্যাটের ভেতর দরজার দড়াম দড়াম আওয়াজ বড্ড কানে লাগছে।
“ছেলেটাকে একটু শান্তও করতে শেখনি…কেমন মা তুমি?” শাশুড়ির ঝাঁঝালো কন্ঠ শুনতে পেল মৌলি।
“অয়নসোনা,এদিকে এসো। অমন করে না। ঐ দেখ টিভিতে ডোরেমন হচ্ছে।”
কোন প্রতিক্রিয়া হল না দেখে অয়নের হাত ধরে ওকে একরকম জোর করেই সোফায় বসালো মৌলি। তারপর একটা একটা করে চ্যানেল পাল্টে মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করল ছেলের। হঠাৎই টিভির পর্দায় ভেসে উঠল ‘সোনার বাংলা’ চ্যানেল। গতকালের ‘পাঁচফোড়ন’ অনুষ্ঠানের রিপিট টেলিকাস্ট হচ্ছে। মাথার ভেতরটা কেমন দপ্ দপ্ করে উঠল মৌলির। তাড়াতাড়ি রিমোটের নেক্সট বাটন ক্লিক করল। হঠাৎই অয়ন ঝাঁপিয়ে পড়ল রিমোটের উপর। আবার চালিয়ে দিল ‘পাঁচ ফোড়ন’। মৌলি যতবার পাল্টানোর চেষ্টা করছিল ততবার ঐ এক জিনিসের পুনরাবৃত্তি করছিল অয়ন। অবশ্য এটাও ওর অসুস্থতার লক্ষণ। এক কাজ বারংবার করা।
“অয়ন,কেন এমন করছ?” সব জেনেও আজ কিছুটা অধৈর্য হয়েই চেঁচিয়ে উঠল মৌলি। অয়নও এবার কেমন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল যেন। সোফা থেকে এক লাফ দিয়ে পৌঁছে গেল টিভি ক্যাবিনেটের সামনে। হাতে তুলে নিল ক্যাবিনেটের ওপর সাজানো অগ্নির কাচের ফ্রেমে বাঁধানো একটি ফটোগ্রাফ। ছুঁড়ে দিল দেয়ালে। ঝন ঝন শব্দে ঘরময় ছড়িয়ে পড়ল ভাঙা কাচ। এতটা উগ্র হতে ছেলেকে আগে কখনও দেখেনি মৌলি। এ যেন এক অচেনা অয়ন। বুকের ভেতর কেঁপে উঠল মৌলির। চোখ বেয়ে নেমে এল জলের ধারা। কিন্তু এই কান্নায় আজ কোন কষ্ট নেই যেন,আছে এক অদ্ভুত ভালোলাগার আবেগ।
কিছুক্ষণ পর ছড়ানো কাচের টুকরোগুলো একটা একটা করে সযত্নে তুলে জড়ো করছিল মৌলি….যেন ওগুলো কাচ নয়। এই চার দেওয়ালের ভেতর ঘটতে থাকা মা-ছেলের এতবছরের অপমানের জমানো প্রতিবাদ।
******************************************************
শ্রুতি দত্ত রায় পরিচিতি:
সুন্দরী ডুয়ার্সের মফস্বল শহর জলপাইগুড়িতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পেশায় সরকারি বিদ্যালয়ের ভাষা সাহিত্যের শিক্ষিকা। ভালবাসেন গান শুনতে,বই পড়তে,ডুয়ার্সের প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে। আর গান গাইবার মধ্যে খুঁজে পান মুক্তির স্বাদ।