ফিরে দেখা
রাজু সেনগুপ্ত
ঠিক হলো, ঠিক সকাল ৯টায় গোলপার্ক এল নাইন বাস স্টপে আমরা তিন জনে মিট করবো। সেখান থেকে দীঘা যাবার বাসে দীঘা।
তিনজনে এর আগে আমি অনেকবার গেছি,পয়সা কম দিতাম বলে সবসময় রিক্সায় আমায় কারো কোলে,অথবা রাতে ঘুমনোর সময় দু জনের মাঝখানে শুতে হতো।
এইবার আমি পুরো নিজের পয়সায় যাচ্ছি,তাই আগে থেকে বলে রেখেছি বন্ধুদের দরকারে দুটো রিক্সা বা দুটো ঘর নিতে হবে,আমি আর কিছুতেই কারোর কোলে বসবো না বা দুজনের মাঝে শোবো না।
বাসব চুপ করে ছিলো এতক্ষণ। সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায় নিজের খেয়ালে,যতোসব নাম না জানা উদ্ভট জায়গায়। কিন্তু আমাদের সাথে কোথাও যেতে বল্লেই নানান অজুহাত দেখায়। বলে ওঠে,
– তোরা দীপুদা ছাড়া কোথাও যাবার কথা ভাবিস না কেন?
– নিলু বলে, দীপুদা গেলে আমি যাবোনা। আমিও নিলুর সাথে।আমাদের চার জন করার জন্য দীপুদাকে দলে নেবার কোনো প্রয়োজন নেই।
– বাসব বলে “ওরে আমি দীপুদা বলতে দীঘা,পুরী,দার্জিলিং এর কথা বলছি। ঐ সব জায়গাগুলো বিয়ের পরে বৌ বাচ্চা নিয়ে যাবার জন্য রেখে দে। দেশটাকে দেখতে হলে, জানতে হলে পশ্চিমবঙ্গের বাইরেও যেতে হবে তো”।
– মধ্যপ্রদেশ চল!
নিলু বলে, ধুর ওখানে চা খেতে পাবো না, ওখানে চায়ে পিতে হয়। আর তা ছাড়া হিন্দিতে কথা বলা।
মধ্যপ্রদেশ শুনেই আমি মনে মনে শোলে,গব্বর,চম্বল! মারো গোলি দীঘার!
– আমি বলি তোদের হিন্দির জন্যে চিন্তা করতে হবে না। এতো বছর ধরে যে স্কুল কেটে হিন্দি সিনেমা দেখলাম সেই সব কি বৃথা?
আমি হিন্দি ছাড়াও,গোলপার্কে এক মাস রাশিয়ান ফ্রেঞ্চ ক্লাস করেছি,তাই একটু রাশিয়ান আর ফ্রেঞ্চ জানি।
– বাসব বলে অনেক ভাষা শেখার ক্ষমতা জীবনের এক অমূল্য সম্পদ কিন্তু তার চেয়েও অনেক বড়ো ক্ষমতা যে কোনো ভাষায় নিজের মুখ বন্ধ রাখা। তেজোময় বলে “আমার জীবনের চূড়ান্ত অহংকার এই যে, আমি এমন এক ভাষাবিদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।” ঠিক বুঝ্লাম না এরা আমার প্রশংসা করলো নাকি …….
ঠিক হলো, আমি, তেজো, নিলু আর বাসব এই চার জনে মিলে মধ্যপ্রদেশ যাবো। আমার বহুমুখী প্রতিভার জন্য আমি টিম ম্যানেজার। টাকা পয়সার ব্যাপারে আমার একটু হাতটান থাকায় নিলু ক্যাশিয়ারের দায়িত্বে। এখন প্রশ্ন ট্রেনের টিকিট বুকিং।
-নিলু বলে রিজার্ভেশনের জন্য চিন্তা করিস না। আমার ছোটো মামার বন্ধু,খোকন মামা। খোকন মামাকে একবার বলে দিলেই ………
-খোকন মামা আবার কে?
-আরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল মিনিষ্টার! ছোটো মামাকে বলে টিকিটের ব্যবস্থা করে নেবো।
বড় ঘড়ির তলায় পৌঁছে গেছি আমরা তিন জনে। মিনিট পনেরো পরে নিলু হন্তদন্ত হয়ে পৌঁছে বলে,ছোটো মামাকে পেলাম না,তাই শুধু চারটে টিকিট কেটে নিলাম! টিকিট চেকারকে ধরে রিজার্ভেশন করে নেবো!
আমি টিম ম্যানেজার,এই সব ছোটো খাটো ব্যাপারগুলো ওদের ওপর ছেড়ে দিলাম। বাসব জানালো আমাদের চার জনের জন্যে তিনটে স্লিপার কোচ টিটি কে বলে ম্যানেজ করা গেছে। ম্যানেজার হিসাবে,অনেক দায়িত্ব আমার। আমার ঘুমের দরকার। হিসেব করে দেখলাম,মাঝের বাঙ্কে কেউ শেয়ার করবেনা। তাই মাঝের বাঙ্কে আমি একা শোবো। নিজের পয়সায় যাচ্ছি,কেন শেয়ার করবো?
আমাদের মতই বিনা রিজার্ভেশনে আছে এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ফ্যামিলি,মা ও মেয়ে! যাবে বম্বে। মেয়ের সাথে বাসবের খুব জমে গেছে। আমিও জমাতে পারতাম,কিন্তু ইংরেজিতে কথা বলছে বলে আমি মুখ বন্ধ করে বসে আছি।
বাসব আমার মতই মাদুরে বসে বাংলায় ইতিহাস ভূগোল পড়তো। কবে যে এমন ইংরেজি শিখলো কে জানে! কামু,কাফকা,গদার এদের নিয়ে কথা হচ্ছে! এরা কারা? আমিও ইংরেজি জানি সেটা বোঝাতে ভাবছিলাম বলেই ফেলি,”ইয়োর্স ফেথফুলি”!
বাসবের জন্য লোয়ার বার্থ ঐ মা মেয়েকে কে ছেড়ে দিতে হলো। বাসব এখন আমার সাথে মাঝের বাঙ্কে। সেই আবার আমার ভাগ্যে শেয়ার করা! বাসব আর এই অ্যাংলো ইন্ডিয়ান মেয়ের ট্রেন অ্যাক্সিডেন্ট হবার আগেই রায়পুর এসে যাওয়াতে ওরা দু জনেই অক্ষত অবস্থায়। রায়পুরে নেমে আমারই সব দায়িত্ব!
– এক জনকে জিগালাম ‘ ইয়ে বাস কোথায় যায়েগা’?
-ভদ্রলোক বলেন,”কোথায় যাবে”?
-আপনি কি করে বুঝলেন আমি বাঙালি?
-তোমার হিন্দি শুনে!
– যাবো ধমতেরি।
ভদ্রলোক পরামর্শ দিলেন বাসে না গিয়ে জীপে যেতে। সেই জীপে আগে থেকেই প্রায় গোটা ১৫ জন বসে আছে, সেখানে আবার আমরা ৪ জন! ড্রাইভার কোথায় বসবে? কিন্তু কি আশ্চর্য আমরা আরো বেশ কিছু স্থানীয় লোক এবং ছাগল সমেত ৪ জন তো ফিট হয়ে গেলাম!
জীপের বাঁ দিকের বনেটে আরো তিন জন! জীপ এগিয়ে চলল ধমতেরির দিকে। ড্রাইভার সাহেবের পাশে যে বসে আছে সে মনে হয় ব্রেক আর ক্লাচ কনট্রোল করছে। কেননা ড্রাইভার সাহেবের শরীরের বেশ খানিকটা অংশ গাড়ীর বাইরে ঝুলছে! লোকের অসুবিধা না হলেও,ছাগলের বেশ অসুবিধা হচ্ছে আর তাই সে মাঝে মাঝে ব্যা ব্যা করে চিৎকার করে জানান দিচ্ছে।
ঐ অবস্থায় ড্রাইভার ছাগলের মালিকের উদ্দেশ্যে বলে,
– এ বকড়ি কা মুখ বন্ধ কর।
-বাসব আমার কানে কানে বলে এটাই হলো আমাদের প্রকৃত ভারতবর্ষ! দ্য রিয়েল টেস্ট অফ ইন্ডিয়া।
আজ ধমতেরিতে থাকা হবে। যদি এটাকে হোটেল বলা হয় তাহলে সেই হোটেলে আমরা আজ থাকবো। আমি সেই হোটেলে ঢুকে কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারি আমার পকেট থেকে দুটো দশ টাকা অর্থাৎ কুড়ি টাকা হারিয়ে গেছে।
সম্ভাব্য সব জায়গা খুঁজে বুঝলাম,এই টাকা আর ফেরত আসবেনা। কিছু বেশী সহানুভূতি পাবার আশায় আরো পাঁচ টাকা জুড়ে মোট পঁচিশ টাকা হারিয়ে গেছে বলে হুলুস্থুল বাধিয়ে দিলাম। মধ্যপ্রদেশে ছিলাম বলে কিনা জানিনা বলে উঠি,“ম্যায় বরবাদ হো গয়া,ম্যায় লুঠ গয়া!”
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমায় নিলু জিজ্ঞেস করে,কিরে টাকার শোকে রাতে ঘুম হয়েছিলো তো?
-আমি বলি রাতে আমি একদম শিশুর মতো ঘুমিয়েছি।
-সেটা আবার কি রকম ঘুম রে?
– আমি বলি ঐ শিশুদের মতো কিছুক্ষণ ঘুমোই,মিনিট পাঁচেক কাঁদি,আবার কিছুক্ষণ ঘুমোই আবার কিছুক্ষণ কাঁদি!
সকালে ব্রেকফাস্ট করার উদ্দেশ্যে আমরা বেরোলাম। তেজো স্নান সেরে বেরোবে। তার আগেই আমরা তিন জনে সামনেই এক দোকানে গরম গরম দুটো করে লুচি আর তরকারি সাঁটালাম।
চায়ে পিতে পিতে স্থানীয় লোকেদের কাছে জানতে পারি, জেপুরে যেতে আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো জীপ ভাড়া করে যাওয়া।
ইত্যবসরে তেজো স্নান সেরে আসতেই টিম ম্যানেজার আমি দোকানদার কে বলি,
-“ইসকো ভি দুটো পুরি অউর সব্জি দিজিয়ে”।
এই আপাত নিরীহ বাক্যে শান্ত তেজো হঠাৎই মারমুখী হয়ে আমায় বলে,
-একদম বাজে কথা বলবিনা।! আমি ভাবলাম বাঙালটা হিন্দি বুঝতে পারেনি, অন্য কিছু ভেবে বসেছে। আমিও মেজাজ দেখিয়ে বলি, “আমি তোকে কি বল্লাম? বল্লাম তোকে দুটো লুচি দিতে।” ভাবলাম এইবার বোধহয় বাঙালটা নিজের ভুলটা বুঝে টিম ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। ওমা দেখি দ্বিগুন তেজে, তেজো আবার আমার দিকে তেড়ে এসে বলে,
– আবার বাজে কথা বলছিস? যেটা জানিসনা সেটা নিয়ে কোনো কথা বলবিনা। জানিস আমাদের পরিবারে কেউ কোনোদিন দুটো লুচি খায়নি? এই সেদিনও দেখলাম আমার খুড়্তুতো দাদার ছেলে মাত্র চোদ্দ বছর বয়স আঠেরোটা লুচি খেলো!
– বাসব বলে তুই কটা লুচি খাবি?
– মিনিমাম কুড়িটা তো খাবই!
-আমি বলি জলখাবারে এই এতো বড়ো সাইজের কুড়িটা লুচি খাবি?
-তেজো বলে,কেনো? জলখাবারটা কি খাবার নয়?!
আমরা যাবো জেপুর,সেখানে আদিবাসী মেলা দেখতে। জায়গাটা মনেহয় অন্ধ্র আর মধ্যপ্রদেশের বর্ডারের কাছে।
যাত্রাপথে একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মাওবাদীদের উৎপাত। ড্রাইভার সাহেব দিন থাকতে থাকতে সেই জায়গা অতিক্রম করতে চায়। পথে আর কোনো উল্লেখ্য ঘটনা ঘটেনি।
বাসবের একমাত্র নিজস্ব ক্যামেরা আছে , যাত্রা পথের অনেক ছবি তুলেছে। বেশ কিছু রীল বাঁচিয়ে রেখেছে আদিবাসী মেলার ছবি তোলার জন্যে।
আমরা জেপুরে যেখানে আছি সেটাকে ঠিক কি বলা চলে আমার জানা নেই। চারটে দড়ির খাটিয়া আমাদের চার জনের জন্য বরাদ্দ। সাথে পোকা মাকড়, ধুলো, বালি ফ্রী।
এখানে সামান্য একটা ঘটনা ঘটে যাওয়াতে আমার টিম ম্যনেজারের পজিশন হাতছাড়া। যদিও এতে আমার কোনো দোষ নেই। বাসবের ক্যামেরার কাভারটা আমার খাটে পড়েছিলো। তাতে দেখি অনেক ধুলো বালি, আর সাথে একটা পোকা পড়ে আছে। আমাদের খিদমত খাটার জন্য একজন স্থানীয় লোক আমদের সঙ্গী। আমি তাকে ক্যামেরার কভারটা তুলে বলি,”ইসকো ফেক দিজিয়ে”। লোকটা কি বুঝলো কে জানে! আমার দিকে একবার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে,আমরা কিছু বোঝার আগেই,যাহ ক্যামেরার কভারটা সামনে বয়ে যাওয়া নর্দমায় ফেলে দিলো! আমার হিন্দির জন্যই নাকি এটা হয়েছে। আমার ম্যানেজার পদটা গেলো। নিলু এখন ক্যাশিয়ার প্লাস ম্যানেজার।
এক বয়স্ক স্থানীয় লোকের কাছে এই আদিবাসী মেলা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পেলাম। এক সুঠাম চেহারার আদিবাসীকে দেখিয়েউনি বললেন,“ঐ যে দেখছো ছেলেটার মাথায় পাখির পালক,ঐ পাখির পালকের জন্য এরা দু তিন মাস বাড়ী ছেড়ে জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। সবার ভাগ্যে জোটেনা এই বিশেষ পাখির পালক।”
আমি প্রশ্ন করি এই পাখির পালক কেন লাগায় এরা?
একটু হেসে সেই বৃদ্ধ বলেন,”সব জায়গায়,সব দেশে,সব জাতিতে পুরুষেরা সব সময় চেষ্টা করে রমণীদের মন জয় করতে। আদিবাসিরা তার ব্যতিক্রম নয়। মুগ্ধ পুরুষ কেবল সৃষ্টি করে, কিন্তু সৃষ্টির প্রেরণা তো সেই নারী! আদিবাসী রমণীদের মন জয় করতে তাই এতো কষ্ট সহ্য করে পাখির পালক জোগাড় করে। যার মাথায় পালক,সে প্রমাণ’ করছে সে খুব পরিশ্রমী। এই মেলার মাধ্যমে আদিবাসীরা তাদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনী খুঁজে নেয়। সে হিসেবে এ এক মিলন মেলা আদিবাসীদের কাছে।”
একথা সেকথায় উনি বলেন,”জলের ধারা যেমন উঁচু থেকে নীচের দিকে ধাবিত হয়,ঠিক তেমনি স্নেহের ধারাও বড়ো থেকে ছোটোদের মধ্যে প্রবাহিত হওয়া উচিৎ।তাই যারা বয়সে বড়ো তাদের কর্তব্য/ দায়িত্ব অনেক বেশী। নিজের ছোটো ভাইয়ের সাথে জমি নিয়ে বিবাদ হয়। ভাই মামলা মোকদ্দমা করতে গেলে ভাইকে বলে,-ওরে তোকে ছোটো বেলায় মায়ের কোল ছেড়ে দিতে পেরেছিলাম,আর বড়ো হয়ে তোকে সামান্য জমি ছেড়ে দিতে পারবোনা!”
নিজের সব কিছু ভাইকে দিয়ে নিজের গ্রাম ছেড়ে আমি এখানে থিতু।ক্ষয়ে যাওয়া শরীর,তোবড়ানো গাল,খোঁচা খোঁচা দাড়ি,ফোকলা দাঁতের হাসির ভেতর লুকিয়ে ছিলো এমন এক জীবনদর্শন ! যা আমাদের টেনে রেখে দিলো বহুক্ষণ।
আমার ধারণা এমন জীবনদর্শন শুধু মাত্র এক ভারতীয়র হতে পারে।
আমি বাসব কে বলি তুই সব্বার ছবি তুলে রাখ।
-বাসব বলে না রে!
ভাবলাম ক্যামেরার কাভার খুইয়ে বোধহয় খুব হতাশ!
-বাসব বলে কৃত্রিম ফ্লাশ বাল্বের আলো জ্বালিয়ে এদের সারল্য ছবিতে ধরে রাখা সম্ভব নয়। এরা থাকুক এদের নিজস্ব পরিমন্ডলে।
রাত হয়েছে , হ্যাজাকের আলোয় উড়ে বেড়াচ্ছে নাম না জানা পোকা,আলো ছাড়িয়ে অন্ধকারে শুনতে পাচ্ছি ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। জীপ ছুটে চলেছে কালো রাস্তা চিরে। সরে সরে যাচ্ছে সব গাছপালা।
পেছনে পড়ে রইলো আদিবাসীদের মেলা,সেই বয়স্ক লোক আর আমার বন্ধুদের সাথে কাটানো আমার এক খন্ড যৌবন বেলা!
[এখানেই শেষ করি? নাকি এই লেজুড়টাও জুড়ে দেবো?]
এতো বছর পরে এই সব যখন কম্পিউটারে বসে টাইপ করছি তখন নিজেকে বড্ড নিঃসঙ্গ লাগছে। এই নিঃসঙ্গতার মধ্যে এক ভয়ঙ্কর একাকীত্ব অনুভব করি। মনে হয় সবাই যেন তার প্রিয় জনের সাথে,আর আমি শুধু একা নির্বান্ধব এক অচেনা পুরীতে।
আমার এই একাকিত্ব ঘোচাতেই বোধহয় আকাশে চাঁদ দেখা দিলো । রজনীগন্ধা,হাসনুহানা বাতাসে তার সমস্ত সৌরভ বিলিয়ে আমায় যেন কানে কানে বলে,”জিনা ইসি কা নাম হ্যায়”!
প্রকৃতি সেজে উঠেছে,জোনাকি জ্বালালো আলো। ঝাউ,ম্যাপেল মাথা দুলিয়ে জানান দেয় তারাও তৈরী আজ সান্ধ্যকালীন জলসায়।
এই বুঝি ঝঙ্কার উঠলো গীটারে,
আর আমি? নিজের অজান্তেই হেঁড়ে গলায় গেয়ে উঠি,” হরি দিন তো গেল,সন্ধ্যা হলো পার করো আমারে এ এ এ এ !”
*****************************************
রাজু সেনগুপ্ত পরিচিতি
সুনীল গাঙ্গুলী শক্তি চট্টোপাধ্যায়,সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের বই পড়া,কিশোর,মান্না,সন্ধ্যা,হেমন্তর লংপ্লে রেকর্ডে গান শুনে ও টুকে পাস করে দিব্য আছি। করোনাতে যদি ২০২০ সালে বেঁচে যাই,তবে ইচ্ছা মৃত্যু……কলির কেষ্ট হবার ইচ্ছে ছিলো,সময়ান্তরে কলির ভীষ্ম হয়ে বাঁচবো ……।।