সম্পাদকীয়
‘বিহানবেলায়’ তৃতীয় বার্ষিকী
বছর তিন আগে মেদিনী ভেদ করে মাথা তুলে দাঁড়ানো সুগন্ধময় শিশু পর্ণখন্ডটি এখন পল্লবিত এবং পুষ্প শোভিত। ডালপালা ছড়িয়ে যেন বহু বিস্তৃত এক পুষ্পবন।
বাঙলার ঋতুচক্রের আবর্তন সঞ্চালিত হয় নিয়মিত। গ্রীষ্মের শুষ্ক তপ্ত দিনগুলির শেষে,বাদল ছোঁওয়া লেগে নবপত্র শোভিত সবুজ মেঘে ঢেকে সে তখন যেন নতুন জীবনের বার্তা বয়ে আনে। এরপরেই ঝলমলে রূপোলী কাশবনের হাসিতে মুখর এক শ্বেতলীনা! আলো ছড়িয়ে দেয় দিক থেকে দিগন্তরে। শিউলি দিন শেষ হলে,পাতা খসানোর পালা সারা হলে,পার্বণে মেতে ওঠে। আর? দীর্ঘ বর্ষ শেষে,আবাহন করে নূতনকে,নব সূর্যরশ্মি মাখা কুসুম কুসুম বিহান বেলায়।
কুলায় ফেরা’র নববর্ষ সংখ্যা ‘বিহান বেলায়’ র প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় বাংলা ১৪২৭ সনে। পর পর প্রকাশিত হতে থাকে নির্ধারিত সংখ্যাগুলি। এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপিত হয় ‘ফেসবুক লাইভে’।
উল্লেখ্য বিষয়,ভার্চুয়ালিটি থেকে রিয়ালিটি তে উত্তরণ। কম্পিউটার বা মোবাইলের পর্দা থেকে বেরিয়ে এসে গত ডিসেম্বর মাসে কুলায়ফেরা নেমে এসেছে মাটিতে। সদস্যরা বেহালা বইমেলায় উপহার দিয়েছেন মাটির গন্ধ মাখা বাউলগানের অনুষ্ঠান। গত ২৬ মার্চ আরেকটি মাইলফলক কুলায় ফেরা’র জীবনে। ওই সন্ধ্যায় সম্প্রচারিত হলো “গদ্য পদ্য পাঠে” শীর্ষক অনুষ্ঠান। যেখানে কবি গল্পকাররা কুলায় ফেরা’র বিভিন্ন সংখ্যায় প্রকাশিত তাঁদের রচনা পাঠ করলেন। আগামীতে শুভ নববর্ষের বৈঠকী সন্ধ্যায়,রবীন্দ্র-নজরুল, বর্ষাবরণ ও সাহিত্যআড্ডা মিলিয়ে আরো অনুষ্ঠান এবং সুকুমার রায়ের দ্বিশতবার্ষিকী পালনের ভাবনাও রয়েছে। এই পর্যন্ত দুটি সাহিত্য প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়েছে ২০২০ সালে। ‘স্বর্গত সম্পদ বন্দোপাধ্যায় স্মৃতি সাহিত্য প্রতিযোগিতা’ এবং ২০২১ সালে স্বর্গত ‘সুধীর কুমার দত্ত স্মৃতি সাহিত্য প্রতিযোগিতা’। আগামীতে আরও সাহিত্য প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে। এ ছাড়াও কুলায়ফেরা’র বিভিন্ন সঙ্গীত শিল্পী,বাচিক শিল্পী এবং বাদ্যযন্ত্রী দের নিয়ে নিজস্ব একটি সাংস্কৃতিক দল গঠনের ভাবনাও রয়েছে। ‘কুলায় ফেরা’ যে এখন ক্রমশ: বিস্তার লাভ করছে,এসমস্ত তারই প্রতিফলন। আর সকল প্রকার সঙ্গীত শিল্পী,যন্ত্রশিল্পী,কবি সাহিত্যিক,যাঁরা কুলায় ফেরা’য় অংশ নিয়ে পত্রিকাটিকে সমৃদ্ধ করে তুলছেন তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ। সমস্ত স্তরের পাঠক পাঠিকাকে অজস্র শুভেচ্ছা। সম্পাদনায় সাহায্য,এবং যে সকল কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ তাঁদের নিরলস পরিশ্রম এবং উদ্ভাবনে কুলায় ফেরা’কে দর্শক শ্রোতাদের কাছে মেলে ধরছেন,শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন তাঁদেরকেও।
ধন্যবাদ।শুভ নববর্ষ।
শুভ হোক ১৪৩০।
নমস্কারান্তে,
দেবদত্ত বিশ্বাস
সম্পাদক
কু লা য় ফে রা
১ বৈশাখ,১৪৩০ বঙ্গাব্দ।