তুমি
মানবেন্দ্র নাথ সান্যাল
যতই উপরে উঠি দেখি
তার উপরে আছে আরো—
তবু যতটুকু পারি,তোমাকে দেখি
আর যতটুকু দেখি,তাতেই
তোমার অন্ত নেই।
রূপ থেকে কেবল রূপান্তরের শোভাযাত্রা
সে শুধু তৃপ্তিহীন স্পৃহা থেকে
অনন্ত অসীমের দিকে যাত্রা
কেননা আমার স্পৃহাও তুমি
তৃপ্তিও তুমিই।
যা আছে,তাও তুমি
যা চলছে,তাও;
যা পেয়েছি তোমাকেই পেয়েছি শুধু
আর,যা আমার না পাওয়া
তা,না পাওয়া তোমাকেই।
**************************************
আনন্দ আর দুঃখ
মানবেন্দ্র নাথ সান্যাল
সব কিছুরই দুটো দিক আছে
যেমন নাতনি বড় হতে থাকলে আনন্দ হয়
সেই সাথে সমান্তরাল বেড়ে চলে একরকম দুঃখ
সেটা কি রকম এক কথায় বলা চলে না
বেবি থেকে বিবি যখন বড় হচ্ছে
তখন প্রতিনিয়ত মনে হচ্ছে
এই পর্যন্ত সব ঠিক আছে
কিন্তু আরো বড় হয়ে গেলে
আমি গালটা টিপে আদর করতে পারব না কুচকুচে লম্বা চুলের বেণীটা শুঁকে
বলতে পারব না
তোমার চুলের গন্ধ কি সুন্দর!
*********************************
একাকার
মানবেন্দ্র নাথ সান্যাল
পৃথিবীর আলো কি তুমি দেখেছো
আকাশ ফুল সবুজ গাছপালা
সুন্দরী নারী?
টগবগে ছোকরা,নিষ্পাপ শিশু
এসব কি আমার জন্য ?
ধন্যবাদ ভগবান,তুমি সত্যিই ভালো।
ভগবান হাসলেন
বললেন চশমাটা খোলো
তারপর বলো
কিন্তু বলব কি
চশমাটা খুলতেই সব অন্ধকার
গাছপালা সুন্দরী সব একাকার।
*****************************************
মানবেন্দ্র নাথ সান্যাল পরিচিতিঃ
লেখক কৃতি ছাত্র ও ব্রতী পাঠক। স্কুল জীবন থেকেই সাহিত্য ও দর্শনের প্রতি আকর্ষণ। ছাত্র হিসেবে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার পর,একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর কর্মরত থাকা। জনসংযোগ আধিকারিক হিসেবে,দেশের নানা প্রান্তে প্রচার ও প্রসারমূলক কর্মকান্ডে একাত্ম অংশগ্রহণ।
কল্লোল যুগের প্রাণপুরুষ শ্রী অচিন্ত্য কুমার সেনগুপ্তের সান্নিধ্য পান,ছাত্রাবস্থায়,সেই যোগাযোগ ছিলো আত্মার,মননের। দর্শন,সাহিত্য,অর্থনীতি,এবং কবিতার প্রতি বিশেষ অনুরাগ শ্রী মানবেন্দ্র নাথ সান্যালের।
সাহিত্যিক শ্রী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় মুখবন্ধ লিখেছেন তাঁর বিশেষ বন্ধু মানবের একমাত্র প্রকাশিত কবিতার বই, ‘বেঁচে আছি,জেগে আছি’।
জাগরুক চিন্তক ও লেখক শ্রী মানবেন্দ্র নাথ সান্যাল।