PC: Jugantor
একুশে পালন
প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
যাঁদের ছেলেপুলের শুনি “বাংলাটা ঠিক আসেনা…..”!!
তাঁরা ভাবেন আমরা সবাই মুখ দিয়ে চলি ঘাসে, না?
আজ যে তাঁরাই সভাপতি কেউ,
ভাষার দরদে কাঁদে ভেউ ভেউ,
কেউ বা প্রধান অতিথি হয়েও বাংলা কে ভালোবাসেনা !!
ছেলের বন্ধু, তার যে জননী, রোজ রাতে তাঁর “কিটি”।
চলনে বলনে বিলিতিয়ানার লিভিং পাবলিসিটি।
বললেন তিনি এসে অ্যাট লাস্ট….
“আজকেই বুঝি টুয়েন্টি ফার্স্ট !!”
চেয়ে দেখি তাঁর ছেলেটা শুদ্ধ হাসছে যে মিটি মিটি।
“একুশে”র এটা বাস্তব ছবি। আঁতেল তো !! ঝেড়ে কাশে না।
ছেলেটার খিদে। রাঁধুনি আসেনি। তবুও ময়দা ঠাসেনা।
কর্তা অফিস ফেরার পথে….
তুলে নেবেন খাবার, রথে….
“বাঞ্ছারাম” বা “ডিম্পি”-র থেকে। কোনটাই আশেপাশে না।
বাংলায় আজ শুধু ভিনভাষা !! মাতৃভাষা যে ভুললো !!
বাংলা বচন ইংরাজিতে লিখে রাখা খাতা খুললো….
“একুশে” পালন যাঁদের ত্যাগে তে….
নামগুলো লিখে ভরেছে ব্যাগে তে….
এনারা “একুশে” প্রধান অতিথি, দেবতার সমতুল্য।
বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, ফিরে যদি ওঁরা আসতেন।
“বাংরেজ” এই আঁতেলরা ঠিক বাংলা কে ভালোবাসতেন।
নেতা-নেত্রীরা বিদেশী ভাষায়….
ভুলভাল বলে লোক যে হাসায়….
আমরা তবুও আশায়, বিধাতা যদি মুখ তুলে হাসতেন !!
শিশুর কান্না বুঝিস না ওরে !! ইংরাজি তে সে কাঁদেনা।
শুক্ত কিংবা আলুপোস্তটা ইংরাজিতেও রাঁধেনা।
তবুও এঁরাই আজকে একুশে
বাঙালির মনে ইংরাজি পুষে
“রুফটপ” থেকে সমাজ চালায়। তিনতলার ওই “ছাদে” না।
তবুও বাংলা যুগ যুগ ধরে হেসে খেলে বেঁচে থাকবে।
আগামীর শিশু বাংলা ভাষার সুগন্ধি রেণু মাখবে।
শত্রু কসুর করতে ছাড়েনি
ভাগ করে তবু মারতে পারেনি
খেটে খাওয়া আর মধ্যবিত্ত বাঙালি-ই মা-কে রাখবে।
***************************************
প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচিতি
ফরিদপুর কাউলিপাড়ার শেষ জমিদার নন্দমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বংশের বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ও নিবাস ইতিহাস প্রসিদ্ধ মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরে। ১৯৬৫-তে তাঁর জন্ম হয় ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পরিবেশে এমন এক পরিবারে, যেখানে ভারতবিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞদের যাতায়াত ছিলো অবারিত। কৈশোরে কবিতা লেখা দিয়ে সাহিত্যানুরাগের হাতেখড়ি। পরবর্তীতে জেলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণামূলক কাজে নিজেকে জড়িয়েছেন। বাড়িতে সঙ্গীতাবহে বড় হয়ে ওঠায় সঙ্গীতের প্রতি প্রসেনজিৎ যথেষ্ট অনুরক্ত। ব্যাঙ্ক কর্মচারীর গুরুদায়িত্ব সামলিয়েও তিনি ইতিহাস, সাহিত্য ও সঙ্গীতের প্রতি তাঁর অনুরাগ যে এতোটুকুও নষ্ট হতে দেননি, তার প্রমাণ তাঁর এই কবিতা।
11 Comments
Comments are closed.
অসাধারণ লেখা।
অনেক অনেক ভালোলাগা রে।
খুব প্রাসঙ্গিক কবিতা।
কলমের বলিষ্ঠ ভাষাকে শ্রদ্ধা জানালাম।
‘কুলায় ফেরা’-পত্রিকার জন্য রইলো সীমাহীন শুভেচ্ছা।
অনেক ভালোলাগা শ্রাবণী।
oh! ajker Bangalir kichu jon toe ei bhavei chalche tai tomar ei kobita monke sparso korche. Anek bhalobasa railo.
আপনার মতামত আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দাদা। এভাবেই সাথে পেতে চাই। এভাবেই কুলায়ফেরা-র পাশে পেতে চাই।
সুন্দর পরিবেশন!
অনেক ভালোলাগা। তৃপ্ত হলাম রে।
বাংলা ভাষা কে shardha জানানোর জন্য এর থেকে সুন্দর আর কিছু হতে পারে না, চাকুরি সূত্রে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকার জন্য বাংলা ভাষা কে বোধ হয় আরো বেশি করে ভালো লাগে, তাই আপনার এই কবিতা সত্যিই মন প্রাণ স্পর্শ করে গেলো,কি ভাবে বাঙালিরা banrejite কথা বলেন সেটা পশ্চিমবাংলার বাইরে গেলে ভালো ভাবেই শোনা যায়, তাই এই কবিতা পড়ে আমার তাদের কথা বেশি করে মনে পড়ছে
ভীষণ সুন্দর লাগলো দাদা, ভাষা দিবসের জন্য একদম যথার্থ পরিবেশনা,এর থেকে সুন্দর আর কিছু হতে পারে না
খুব আনন্দ পেলাম। কুলায়ফেরা-র সাথে থাকুন। অনেক অনেক গুণীজনের অসাধারণ সব লেখা ও অন্যান্য সৃষ্টি রয়েছে কুলায়ফেরা-র পাতায় পাতায়। তাঁদের উৎসাহিত করুন।