দাম্পত্য
নবনীতা সাঁতরা দে
আলমারির দরজায় দুজনকে পাশাপাশি দেখা যেত না।
একজনকে দেখা গেলে অন্যজন চলে যেত আড়ালে,
যেমনটা হয়ে থাকে দাম্পত্য জীবনে।
আমি চোখে কাজল লেপতে এলে তোমার চুলের সিঁথি সোজা হতো না,
মুখে কপট বিরক্তি নিয়ে সরে জেতে দাম্পত্যের রোজনামচায়।
রোজ সকালে বাসি বিছানা গোছানোর সময়,
সাহায্যের হাত না বাড়ানোর অকর্মণ্যতা বোঝাতে গিয়ে
যখন রাগে নীতিবাক্য আউরেছি,
তুমি তখন না শুনেই সরে গেছো অকাজের অছিলায়।
তবু জীবন তৃপ্ত থাকে বিছানা গোছানোয়।
দাম্পত্য বেঁচেছে এভাবেই।
তোমার অফিস মোজা আর আমার মুখ মোছা রুমাল,
একসাথে কেচে ধুয়ে রোদে শুকিয়েছে,
তারপর আবার জলেও ভিজেছে অনেকগুলো বছর।
যেভাবে পাশাপাশি থেকে যায় দাম্পত্যের আলোছায়া।
একসাথে পথে বেরিয়ে হেঁটেছ একগজ আগে নয়তো একগজ পিছে।
মনে হয়েছে এর চেয়ে একলা চলাই ছিল ভালো।
তবু খানিক পথ পেরিয়ে দাঁড়িয়েছ অপেক্ষায়,
যেভাবে বহু পথ অতিক্রম করা যায় কোন এক সাধারণ দাম্পত্যে।
মোটমাট কখনও ফিকে হয়ে আসা দাম্পত্যও,
ক্রমাগত শীত গ্রীষ্ম বর্ষা পেরিয়ে হেমন্তের সন্ধ্যার মতো ম্লান হয়ে মিশে যায় কোন এক ফাগুনের দরজায় এসে।
******************************************
নবনীতা সাঁতরা দে পরিচিতি
রবীন্দ্রভারতী থেকে ভোকাল মিউজিকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। পণ্ডিত বীরেশ রায়ের কাছে তালিম প্রাপ্ত নবনীতার গানবাজনার মতোই সাহিত্যপ্রীতি। গত বেশ কয়েক বছর নবনীতা কবিতা লিখছেন। নবনীতার অনেক কবিতাই ছাপা হয়েছে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।