Shadow

রাবড়ি গ্রামের কড়চা – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

রাবড়ি গ্রামের কড়চা

সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

গত শতকের দ্বিতীয়ার্দ্ধের ঘটনা। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রমঞ্চে এক স্বনামধন্য সাহিত্যিকের সংবর্ধনার ব্যবস্থা হয়েছে। তাঁর পাশে উপবিষ্ট সভার অন্যতম বক্তা শিশুসাহিত্যিক অখিলবন্ধু নিয়োগী। ‘স্বপনবুড়ো’ নামে যাঁর অধিক পরিচিতি। মঞ্চে মানপত্র পাঠ হল। বক্তারা একে একে বলছেন। কিন্তু যাঁকে ঘিরে এত আয়োজন, তাঁর মন উশখুশ। একসময় অস্থির হয়ে স্বপনবুড়োকে তিনি বলেই ফেললেন,“এসব মানপত্রটত্র দিয়ে আমার কী হবে? ঘরের দেওয়ালে টাঙানোর জায়গা নেই। আর পেরেকই বা কে এনে দেবে?” স্বপনবুড়ো আশ্বস্ত করলেন তাঁকে। বললেন,“সে পেরেকের ব্যবস্থা না হয় করে দেওয়া যাবে।”এবার তিনি আরও অসহিষ্ণু। বললেন,“ধুর মশাই,পেরেক আনানোর বদলে একটু রাবড়িটাবড়ি আনলে… বেজায় খিদে পেয়েছে।”শেষে তাঁর জন্য রাবড়ি এল। মঞ্চে বসেই শিবনেত্র হয়ে তিনি তা খেতে শুরু করে দিলেন। এই না হলে তিনি শিবরাম চক্রবর্তী!
রাবড়ি খেতে খুব ভালোবাসতেন শিবরাম। বলতেন,“নেশা করলে রাবড়ির নেশা করাই ভালো।”একবার এক কথোপকথনকালে তিনি বলেছিলেন, ‘রাবড়িই তো পৃথিবীর চরম আশ্চর্য, দিনে একবার রাবড়ি না খেলে কি চলে?”
রাবড়ির নেশা ছিল আরেক খ্যাতনামা মানুষের তিনি বাংলার চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতের মহান কৌতুকাভিনেতা জহর রায়। কলকাতার রংমহলের রাবড়ি ছিল তাঁর পছন্দের তালিকায় অগ্রগণ্য।
হাসির রাজাদের রসনার তৃপ্তি ঘটিয়ে যে মিষ্টি তার কেরামতি দেখিয়েছে, তার জন্ম অবশ্য এই বাংলায় নয়। বেনারসে। সেই মধ্যযুগ থেকেই থকথকে মালাইয়ের বেনারসী রাবড়ি আপামর বাঙালির চিত্ত জয় করে আসছে। বাঙালির রাবড়ি-প্রীতি বাঙালি হালুইকরদের রাবড়ি বানাতে উদ্বুদ্ধ করেছে। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র গ্রাম থেকে শহরে ছোটো-বড় বহু মিষ্টির দোকানে এখন রাবড়ির দেখা মেলে। যদিও একটি ফেসবুক-পেজে এক রাবড়ি-প্রেমীকে আক্ষেপ করে লিখতে দেখেছি, “আমরা বাঙালিরা রাবড়ির সঠিক কদর করতে শিখিনি। এখনও কেজিতে রাবড়ি বেচি আমরা। অথচ রাবড়ি কেনা-বেচা করা উচিত সোনার মতো ভরি বা রতিতে”। রাবড়ির কদর প্রাপ্তির প্রসঙ্গে তাঁর কথা হয়তো কিছুটা সত্য। তাই চন্দননগরের জলভরা সন্দেশ, বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানা, কৃষ্ণনগরের সরপুরিয়া-সরভাজা বা শক্তিগড়ের ল্যাংচা জগদ্‌বিখ্যাত হয়ে গেলেও রাবড়ি গ্রামের রাবড়ির খবর এখনও অনেকেরই অজানা। সুস্বাদু রাবড়ি তৈরিতে সুদক্ষ সেই গ্রামের কারিগরদের এখনও মেলেনি তেমন কোনও সম্মান বা স্বীকৃতি
হুগলি জেলার দুটি গ্রাম-আঁইয়া ও গাংপুর। আঁইয়া চন্ডীতলা ব্লক এবং গাংপুর জাঙ্গীপাড়া ব্লকের অন্তর্গত। রাবড়ি উৎপাদনের সুবাদে পাশাপাশি অবস্থিত এই দুটি গ্রামই এখন লোকমুখে ‘রাবড়ি গ্রাম’ নামে পরিচিত। ১৯৮০-’৮২ সাল নাগাদ এখানকার বাসিন্দা মনসা চরণ বালতী ও পান্নালাল বালতী কলকাতার ভবানীপুরের এক মিষ্টির দোকানে কারিগরের কাজ করতেন। সেখানে রাবড়ি তৈরির কাজ শিখেছিলেন এই দুই সহকর্মী সেই সময় জীবিকার তাগিদে অবসর পেলে দুজনে মিলে অল্প পরিমাণে রাবড়ি বানিয়ে কলকাতার দু-একটা দোকানে সরবরাহ করতেন শেষে সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রামে ফিরে তাঁরা সেখান থেকেই ব্যবসাটা একটু বড়ো আকারে করতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে তাঁদের দেখাদেখি আরও অনেক গ্রামবাসী চাষের কাজের পাশাপাশি রাবড়ি তৈরি ও বিক্রির কাজকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। যদিও গত প্রায় তিরিশ বছর ধরে রুটি-রুজির জন্য কৃষিকাজের তুলনায় রাবড়ির ব্যবসাই এখানে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। গ্রামের ৫০-৬০টি বাড়ির মধ্যে ২৫-৩০টি বাড়িতে রাবড়ি তৈরি হয়। বুড়ো থেকে বাচ্চা,নারী-পুরুষ সহ বাড়ির সব সদস্যই নিয়োজিত এই কাজে। প্রচুর পরিমাণে রাবড়ি বানাতে হলে বাইরে থেকে কারিগর নিয়োগেরও প্রয়োজন হয়। কোনও বাড়িতে দুই প্রজন্ম ধরে কাজ চলছে, কোনও বাড়িতে তিন প্রজন্ম। বয়স্কদের কাজের ধরন দেখে দেখে হাত পাকান নতুন প্রজন্মের কারিগরেরা। কি গ্রীষ্ম,কি শীত-প্রতিটা বাড়িতেই সকাল থেকে রাত অবধি কাজ চলে। বর্ষায় বিক্রিবাটা ভালো না হলেও শীতকালে এবং জন্মাষ্টমীর সময় বাজারে রাবড়ির চাহিদা বাড়ে। তখন দিন-রাত এক করে খাটতে হয় পরিবারের সবাইকে। প্রতিদিন প্রায় প্রত্যেক বাড়ি থেকে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, নদীয়া, দুই চব্বিশ পরগণা সহ পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার মিষ্টির দোকানগুলোতে রাবড়ি সরবরাহ করা হয়। এছাড়া অর্ডার মাফিক বিয়েবাড়ি, অন্নপ্রাশন বা স্থানীয় অন্য কোনও অনুষ্ঠানেও তাঁরা রাবড়ির যোগান দেন। এখানে কিলো প্রতি চিনির তৈরি রাবড়ির দর ৩০০ টাকা। শীতকালে খেজুরের গুড় দিয়েও রাবড়ি বানানো হয়। তার দাম প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা। ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য সুগার ফ্রি দিয়ে তৈরি রাবড়ির দর আর একটু বেশি। প্রতি কিলো ৪০০ টাকা।
বনহুগলি থেকে জগৎবল্লভপুরগামী‘২৬সি’বাস যায় রাবড়ি গ্রামে। ডানলপ-দক্ষিণেশ্বর-বালিঘাট-বালিহল্ট-ডানকুনি-মশাট হয়ে যায় এই বাস। মশাট বাস স্ট্যান্ড পেরোলেই অহল্যাবাঈ হোলকার রোড ছেড়ে বাস বাঁ দিকে জগৎবল্লভপুরের রাস্তা ধরে। সে রাস্তা দিয়ে প্রায় ৬ কিমি গেলেই আঁইয়া পাঁচমাথার মোড়। সেখানে বাস থেকে নেমে বাঁ-হাতি একটা রাস্তায় টুকটুক করে মিনিট ৫-১০ হাঁটলেই দেখা মেলে গন্তব্যের কলকাতার দিক থেকে যাঁরা নিজেদের গাড়িতে এখানে আসতে চান, তাঁরা এই বাস রুট ধরতে পারেন। ট্রেনে যেতে চাইলে যাওয়া যায় একটি ভিন্ন পথেও। সেক্ষেত্রে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর বা আরামবাগগামী ট্রেন ধরে হরিপাল স্টেশনে নেমে অটো বা ট্রেকারে চাপতে হবে। ১৬-১৭ কিমি দূরত্ব পেরোলেই এসে যাবে আঁইয়া পাঁচমাথার মোড় ফুরফুরা শরিফ হয়ে গেছে সেই পথ।
যাত্রাপথে পাকা রাস্তার দু’ধারে আদিগন্ত সবুজ মখমলের মতো ধানক্ষেত। তার মাঝে মনের সুখে খাবার খুঁজে বেড়ায় নানা প্রজাতির বক ও কালো মাথা কাস্তেচরারা। দূরের গাছপালার ভিতর থেকে উঁকি মারে ছোটো ছোটো ঘর-বাড়ি। অপরূপ সেই দৃশ্যপটের সান্নিধ্যে কাব্যপ্রেমী মানুষের মনে জীবনানন্দ বা জসীমুদ্দিনের কবিতা উঁকি দেবেই। একসময় বসতির ঘনত্ব বৃদ্ধিই জানান দেয় আঁইয়া পাঁচমাথার মোড় এসে গেছে। মোড়ে বেশ কয়েকটি দোকান।
এক নজরে আঁইয়া-গাংপুর গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেরই আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল বলে মনে হয়। কাঁচা ঘরের তুলনায় পাকা বাড়িই বেশি। কারো গোয়ালে গরু বাঁধা। কারো উঠোনে ধানের গোলা। এই অঞ্চলে ধানের পাশাপাশি আলু ও পাটের ফলনও ভালো হয়। রাবড়ি-প্রস্তুতকারকদের বাড়ির সামনে সাইনবোর্ডে  তাঁদের নাম ও বিপণির বিজ্ঞাপন। অনুমতি নিয়ে কোনো এক রাবড়ি হাউসের হেঁশেলে ঢুকে পড়লেই হল। দেখা যাবে মাটি বা গ্যাসের উনুনের ঢিমে আঁচে বিশাল বিশাল লোহার কড়াইয়ে দুধ ফুটছে। রাবড়ি তৈরির মুখ্য উপাদান দুধ। এজন্য বাড়ি প্রতি দৈনিক ৬০-৭০ লিটার দুধ লাগে। এই দুধ তাঁরা সংগ্রহ করেন আশেপাশের গ্রামের খাটাল থেকে। লক্ষণপুর, জগৎবল্লভপুর, জাঙ্গিপাড়া, প্রসাদপুর, বিষ্ণুপুর, চাকপুর, দক্ষিণডিহি, বড়গাছিয়া, রামপাড়া, এমনকি ডানকুনি থেকেও দুধ আসে। সাধারণত একটা কড়ায় ৭ লিটার দুধ জ্বাল দেওয়া হয়। ফোটাতে ফোটাতে তা ১-২ লিটারে নামিয়ে আনা হয়। দুধ ফুটে ঘন হতে শুরু করলে এক হাত দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে হয় যাতে নিচে লেগে পুড়ে না যায়। অন্য হাতে তার ওপর তালপাতার পাখা দিয়ে সমানে বাতাস করে যেতে হয়। হাওয়া পেলেই দুধের ওপর মোটা সর পড়তে থাকে। সেই সর সরু একটি বাঁশের কাঠির সাহায্যে তুলে তুলে কড়াইয়ের গায়ে লেপ্টে রাখা হয়। আগুনের আঁচে সরগুলো শুকিয়ে যায়। বেশ কিছুটা সর জমা হয়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট দুধটুকুতে ৪০০-৫০০ গ্রাম চিনি মিশিয়ে কড়াই উনুন থেকে নামানো হয়। তারপর সেই চিনিমিশ্রিত দুধের মধ্যে সরগুলোকে নিপুণ কায়দায় ছুরি বা ধারালো কিছুর সাহায্যে চৌকো বা আয়তাকারে কেটে কেটে ফেললেই রাবড়ি তৈরি। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ঘন্টাখানেক বা তার চেয়ে একটু বেশি সময় লাগে।
আমাদের দেশের অন্যত্র রাবড়ি ঘন হয়। বাংলার রাবড়ি তুলনামূলকভাবে পাতলা রাবড়ি গ্রামেও তা-ই। কিন্তু স্বাদে-গন্ধে এর মাহাত্ম্য কতখানি আলাদা, যে না খেয়েছে সে বুঝবে না। এটুকু শুধু বলতে পারি দুধ ও চিনির অসামান্য মেলবন্ধনে তৈরি এখানকার রাবড়ি এতটাই নরম তুলতুলে যে মুখে দিলে নিমেষে মিলিয়ে যায়। জিভে বহুক্ষণ থেকে যায় এক অমৃত রসের আস্বাদ। রাবড়ির গুণগত মান নির্ভর করে সঠিক অনুপাতে দুধ ও চিনি মেশানোর ওপর। যে কারিগর সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেন, তাঁর হাতে ভালো রাবড়ি তৈরি হয়। রাবড়ি গ্রামে মুক্তরতন বালতী, শুভেন্দু বালতী, প্রশান্ত বালতী, জনার্দন বালতী, অর্জুন বালতী, পলাশ বালতী প্রমুখ কয়েকজন উৎকৃষ্ট মানের রাবড়ি প্রস্তুতকারক হিসেবে ক্রেতামহলে পরিচিতি পেয়েছেন। তবে আমার মনে হয় পুরো গ্রাম ঘুরে ঘুরে আরও অন্যান্য রাবড়ি হাউসের রাবড়ি অল্প অল্প করে চেখে দেখলে সেরাদের তালিকা দীর্ঘ হবে।
করোনা আতঙ্ক ও লক ডাউনের কারণে গত বছর বাংলা নববর্ষ ঘটা করে পালন করা যায়নি। মিষ্টিমুখ করার বদলে মাস্ক মুখে ঘরে বসেই বাঙালিকে বর্ষবরণ করতে হয়েছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা হলেও শুধরেছে। সপ্তাহান্তিক ছুটিছাটায় অনেকে কাছেপিঠে বেড়াতেও যাচ্ছেন। ইচ্ছে হলে এবারের নববর্ষ উদ্‌যাপন করতে একদিনের ছোট্ট সফরে কেউ চলে যেতেই পারেন বাড়ির কাছে আরশিনগর রাবড়ি গ্রামে। দুপুরের বা রাতের খাওয়ায় ভাত থাকুক, কি লুচিই থাকুক, দিন কতক শেষ পাতে রাবড়ি পড়লেই জমে যাবে মিষ্টিপিপাসু বাঙালির নতুন বছর।
তথ্যসূত্রঃ
(১) আনন্দবাজার পত্রিকা – ৯ জুলাই, ২০১৬
(২) আজও তারা জ্বলে (পর্ব ১৮) – সন্দীপ রায়চৌধুরী ; বর্তমান পত্রিকা – ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
(৩) https://www.facebook.com/bukpocket/posts/2240812695945278/
তথ্য প্রদানের জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি রাবড়ি গ্রামের অন্নপূর্ণা রাবড়ি হাউসের মালিক শুভেন্দু বালতীর কাছে।
************************************************************
সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচিতিঃ
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনএ স্নাতকোত্তর সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত একজন লেখিকা, সংগীতশিল্পী এবং বিজ্ঞান ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী।‘কালান্তর,‘সুস্বাস্থ্য’,‘উৎস মানুষ’,‘টপ কোয়ার্ক’,‘যুক্তিবাদী’,‘এখন বিসংবাদ’,‘মানব জমিন’,‘আবাদভূমি’,‘সাহিত্য সমাজ’,‘সারথি’,‘অভিক্ষেপ’ ইত্যাদি পত্রিকা ও সংবাদপত্রে তাঁর লেখা গল্প,কবিতা,নিবন্ধ ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ‘আজকাল’,‘আনন্দবাজার পত্রিকা’,‘দৈনিক স্টেটসম্যান’,‘ভ্রমণ’ইত্যাদি পত্রিকায় তাঁর চিঠিপত্র ছাপা হয়েছে। ‘ভারতের মানবতাবাদী সমিতি’-র উদ্যোগে তাঁর সম্পাদনায় ‘র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন’ প্রকাশন থেকে ড.পবিত্র সরকারের ভূমিকা সহ প্রকাশিত হয়েছে ‘ছোটোদের কুসংস্কার বিরোধী গল্প’গ্রন্থের দুটি খন্ড। তাঁর লেখা ‘ইতিহাসের আলোকে মরণোত্তর দেহদান-আন্দোলন ও উত্তরণ’বইটি উচ্চ-প্রশংসিত। দূরদর্শনে ‘মরণোত্তর দেহদান’নিয়ে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্যও রেখেছেন। সম্প্রতি গায়িকা-অভিনেত্রী কানন দেবীর জীবন নিয়ে তাঁর গবেষণামূলক লেখা ‘ফেসবুক পেজ’-এ প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রসংগীতে তিনি ‘সংগীত প্রভাকর’ ও ‘সংগীত বিভাকর’। তালিম নিয়েছেন শাস্ত্রীয় সংগীতেও। স্কুলজীবনে বেতারে ‘শিশুমহল’,‘গল্পদাদুর আসর’ ও ‘কিশলয়’-এ নিয়মিত গান গেয়েছেন। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গে ও এই রাজ্যের বাইরে রবীন্দ্রসংগীত,পল্লীগীতি ও গণসংগীত ছাড়াও তাঁর ভাই রাজেশ দত্তর কথায়-সুরে ‘মানবতার গান’ মঞ্চস্থ করেছেন। রাজেশের কথায়-সুরে তাঁর গাওয়া ‘পাল্টা স্রোতের গান’  অডিও ক্যাসেট ও সিডি আকারে প্রকাশিত। কয়েকটি নাটক ও শ্রুতিনাটকে তিনি অভিনয় করেছেন, পুরস্কৃতও হয়েছেন। আবৃত্তি,সংগীত ও কয়েকটি ‘রিয়্যালিটি শো’ প্রতিযোগিতায় বিচারকের পদ পেয়ে সম্মানিত হয়েছেন। খেলাধূলার ক্ষেত্রে ‘কবাডি’-তে কৈশোরে স্কুলে নিজের ক্লাসের দলে অধিনায়কত্ব করেছেন,‘ জিমনাস্টিকস্‌’-বিশেষত ‘তারের খেলা’ শিখেছেন, ব্রতচারী নাচে শংসাপত্র পেয়েছেন। আঁকা, ছবি তোলা, রন্ধন ও ভ্রমণ-ও তাঁর শখের বিষয়।

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!