Shadow

রহস্যময় সেই রাতে – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

PC: iStock

রহস্যময় সেই রাতে

              সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়                                        

‘বাজনা শুনতে পাচ্ছিস?’ – আমার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়ে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করল অনুরাধা। একে ঘুম চোখ। তায় ঘরে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। ওর মুখ ঠাহর করতে পারলাম না। কন্ঠস্বরে আতঙ্কের ছাপ অনুভব করায় উঠে বসলাম। ও আমাকে জড়িয়ে ধরল। ওর সিঁটিয়ে যাওয়া শরীর, ঘর্মাক্ত হাতের তালুর স্পর্শে আঁতকে উঠলাম।
ঘরের এক কোণে রাখা তেলের কুপি কিছুক্ষণ আগেও জ্বলছিল। খোলা জানলাগুলো দিয়ে একটা মৃদু আলো আসছিল। তবু তো আসছিল। অচেনা-অজানা জায়গায় বৃষ্টিমুখর লোডশেডিংয়ের রাতে ওই সামান্য আলোটুকুই ছিল ভরসা। কুপিটা কোনো কারণে নিভেছে। জানলাগুলো আমরা বন্ধ করেছি। একটা জানলার বাইরে অদূরে ঝাউবন ও সমুদ্র। ঝোড়ো হাওয়ায় সেই জানলার ভাঙা পাল্লার ধাক্কা লেগে বহু পুরোনো কাঠের আলমারিতে শব্দ হচ্ছিল – খট খট খট। শব্দের চোটে এর আগে একবার আমাদের ঘুম ভেঙেছে। প্রথমে শব্দের উৎস বুঝতে না পারায় অনুরাধা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কারণ শনাক্ত করে আমার চুড়িদারের ওড়নাকে দড়ির মতো পাকিয়ে তা দিয়ে পাল্লা দুটোকে কোনোমতে আটকালাম। শব্দ বন্ধ হল। যদিও ঘরের কাঠের মেঝে ও খুঁটিতে ধরা ঘুণপোকারা ক্রমাগত কুর-কুর-কুর-কুর শব্দ করেই চলেছিল। অনুরাধার জোরাজুরিতে বাকি জানলাগুলোতেও ছিটকিনি দিতে হল।
আমরা আছি বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জের কাছে এক কাঠের বাংলোতে। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি আমি কলকাতার একটা এন.জি.ও-তে কাজ করছি। অনুরাধা আমার সহকর্মী। একটা ‘কেস স্টাডি’ করতে শিয়ালদহ থেকে লোকাল ট্রেন ধরে আমরা এসেছিলাম নামখানায়। সেখানে কাজ মিটে যেতে বৃষ্টির মধ্যে আর বাড়ি ফিরতে মন চাইল না। চলে এলাম এখানে।
বাংলোর ঠিকানা দিয়েছিল জগুমামু।  জগুমামু মায়ের সহোদর নয়। তুতো ভাই-ও নয়। কোনো এক দূর সম্পর্কের। যাকে বলে লতায় পাতায় জড়ানোতবু মা তাকে আপন ভায়ের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। আমাদের বাড়িতে তার নিত্য আসা-যাওয়া। নামখানা থেকে মামুকে ফোন করে বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ বেড়ানোর ইচ্ছের কথা জানাতেই মামু এই বাংলোয় থাকার ব্যবস্থা করে দিল। বাংলোর মালিক মামুর বন্ধু। তিনি থাকেন কলকাতায়। বাংলোর দেখভাল করে চৌকিদার ও তার বউ। তবে বলতে গেলে সংস্কারের অভাবে একতলা বাংলোটি এখন একরকম পরিত্যক্ত। দু-একটি বাদে বাকি সব ঘর জরাজীর্ণ হওয়ায় একেবারেই বাসের অযোগ্য। বহু দিন এখানে কোনো পর্যটকের পায়ের ধুলো পড়ে নি তা বেশ বোঝা যায়।
আমার উত্তর না পেয়ে অনুরাধা অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। বলে, ‘কিরে, বাজনা শুনতে পাচ্ছিস না?’
‘কই, না তো’ আমি জবাব দিলাম। ‘কী বাজনা? এখানে এত রাতে বাজনা বাজাবার লোকই বা কোথায়!’
‘ভালো করে শোন।’ চাপা উত্তেজিত স্বরে অনুরাধা বলে, ‘একটা হারমোনিয়াম বাজছে।’
‘হারমোনিয়াম!’ বিস্ময় জাগে আমার গলায়। এবার কান খাড়া করতেই হারমোনিয়ামের আওয়াজ শুনতে পেলাম। একটা গানের সুর বাজছেতবে তা খুবই অস্পষ্ট।
মোবাইলের টর্চ জ্বেলে বিছানা থেকে নামতে যেতেই অনুরাধা পেছন থেকে আমার কামিজ খামচে ধরল। ভয়ার্ত গলায় বলল, ‘কোথায় যাচ্ছিস?’
‘ আরে, হারমোনিয়ামের শব্দ কোন দিক থেকে আসছে দেখি’ আমি ধমকে বলি, ‘এত ভয় পেলে চলে!’

একটা জানলার পাল্লা একটু খুলতেই বৃষ্টির ছাঁটের সাথে দমকা হাওয়া ঢুকে আসে ঘরের ভেতরে। হারমোনিয়ামের সুর জোরালো হয়ে কানে ধরা দেয় চেনা গানের কলি। ‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায় … ও সেই চোখের দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়!’ হারমোনিয়াম বাজছে ঠিক আমাদের পাশের ঘরেই।
‘এ নির্ঘাৎ তেঁতুল গাছের ভূত।’ ভয়ে ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে অনুরাধা বলে, ‘জানলাটা তুই বন্ধ কর শিগ্‌গির।’
বিকেলে যখন আমরা বাংলোয় পৌঁছাই, সামনের বাগানে এক দঙ্গল লোককে দেখেছিলাম। ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে তারা বাগানের এক পাশে ঝড়ে ওপড়ানো মস্ত এক তেঁতুল গাছ কাটার কাজ করছিল। গাছের ওপরের অংশের ডালপালা প্রায় অনেকটাই ছাঁটা হয়ে গেছে। শিকড় সহ প্রায় বারো-তেরো ফুট গুঁড়ি কাটতে আরও দিন কয়েক লাগবেগাছের পাশে বর্ষার জলে ভরা এক নয়ানজুলি। শিকড়ের বেশ খানিকটা অংশ এখনও সেই জলের নিচে মাটির গভীরে গেঁথে আছে কিনা। গাছটার দুঃখে ‘আহা’ বলতেই চৌকিদারের বউ তাদের ঘরের দাওয়ায় দাঁড়ে বসা চন্দনাকে আদর করতে করতে বলল, ‘ দিদি, ও গাছ গেছে ভালো হয়েছে। ও গাছে ভূত ছিল।’ কৌতূহলী হয়ে উঠতে চৌকিদার বলল, ‘আমার আগে যে চৌকিদার ছিল, একদিন সন্ধ্যায় সে ওই গাছের নিচে বসে বিড়ি ফুঁকছিল। হঠাৎই গাছের ওপর থেকে এক আওয়াজ শুনে সে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়এখানে আরও অনেকেরই রাতের বেলায় গাছটার তলা দিয়ে আসতে-যেতে নানারকম ভুতুড়ে অভিজ্ঞতা হয়েছে।’ 
‘ভূত মাঝরাতে আমাদের রবীন্দ্রসংগীত শোনাচ্ছে?’ আমি হাসতে হাসতে বলি, ‘চৌকিদার যে গল্পগুলো বলেছে, সে সবই হল চোখের ভুল, মনের ভুল। বুঝলি?’
‘কিন্তু হারমোনিয়াম …’ অনুরাধার কথা শেষ না হতেই ঘরের বাইরে চৌকিদারের বউয়ের আর্ত চিৎকার শোনা যায়, ‘দিদি!’ ‘দিদি!’
হারমোনিয়ামের আওয়াজও হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়।
আমি দ্রুত ঘরের দরজা খুলতে যাই।
‘তুই খেপেছিস?’ দু’হাতে দরজা আগলে দাঁড়ায় অনুরাধা। তারপর কাঁদো কাঁদো মুখে বলে, ‘প্লীজ, যাস না।’
‘আমাকে যেতেই হবে। দেখতে হবে না ওদের কোনও বিপদ হল কিনা!’ – বলে এক ধাক্কায় অনুরাধাকে সরিয়ে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসি। দেখি কেউ কোত্থাও নেই। পাশের ঘরের দরজা বিকেলে যেমন ছিল, তেমনই রয়েছে। ভেজানো। বাংলোর বন্ধ প্রবেশ-দরজার ধারে চৌকিদারের ঘরও অন্ধকার। কোনো সাড়াশব্দ নেই। জমাট মেঘের মতো নিস্তব্ধতা ভেসে বেড়াচ্ছে আকাশে-বাতাসে। বৃষ্টি থেমেছে। থেকে থেকে বিদ্যুতের ঝিলিকে আলোকিত হচ্ছে চারপাশ। সেই আলোয় হঠাৎ দেখলাম মাথা কাটা ভাঙা তেঁতুল গাছটা সোজা হয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পেছনে আমার পায়ের কাছে একটা গোঙানির আওয়াজ করে কেউ লুটিয়ে পড়ল। সে অনুরাধা গাছটা তার নজরও কেড়েছে। 
পরদিন। বেলা প্রায় বারোটা। প্রতিবেশীর গাড়িতে শ্যামনগর থেকে জগুমামু এসে পৌঁছেছে বাংলোতে। চৌকিদার ও তার বউয়ের সহযোগিতায় অনুরাধার জ্ঞান ফেরানোর পর ভোর রাতে মামুকে ফোন করে সব জানাই। বাংলোর মালিক আসতে না পারলেও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে মামুকে বার বার ফোন করছেন। অনুরাধার শারীরিক অবস্থার কথা জেনে নিচ্ছেন। অনুরাধা এখন অনেকটাই সুস্থ। লাঞ্চ করেই আমরা রওনা হব। লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে পাশের ঘরে। সে ঘরের দরজা এখন হাট করে খোলা। ঘরে আসবাবপত্র বলতে শুধু একটা ছোটো খাট। খাটে অগোছালো বিছানা। এক পাশে একটা বালিশ। অন্য পাশে একটা হারমোনিয়াম!
এই ঘরে ভাড়া থাকেন এক সংগীত-শিক্ষকতিনি বিপত্নীক ও নিঃসন্তান। সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমায় তাঁর দেশের বাড়ি হলেও এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন। সারা দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে অনেককে গান শেখান। এটাই তাঁর রোজগার। অনেক রাতে ঘরে ফিরে চোখে যখন ঘুম আসে না, হারমোনিয়ামটাকেই সঙ্গী করেন। ‘কিন্তু ঘরের দরজা সব সময় ভেজানো থাকে কেন? রাতে শোওয়ার সময়েও দরজা দেন না?’ – আমার প্রশ্নের উত্তরে চৌকিদার বলে, ‘খেয়ালি মানুষ। কখনও দেন। কখনও দেন না।’
লাঞ্চ সেরে বাগানে যাই। সেখানে মানুষের ভিড় বাড়ছে। চৌকিদারের মুখ থেকে ক্রমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে আশেপাশের গ্রামগুলোতেও। সবাই আসছে সিধে হয়ে যাওয়া তেঁতুল গাছটাকে দেখতে।
জগুমামু বলল, ‘এটা কোনও তথাকথিত অলৌকিক ব্যাপার নয়। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। একবার বাটানগরে ঝড়ে ধরাশায়ী এক বিশাল অশ্বত্থ গাছ ডালপালা কেটে নেওয়ার পর ঠিক এভাবেই উঠে দাঁড়িয়েছিল। আমার এক বান্ধবী যুক্তিবাদী। খবরটা জেনে সদলবলে গিয়েছিলেন সেখানে। রহস্যের জট ছাড়াতে ওদের সাহায্য করেন কয়েকজন উদ্ভিদবিদ। তাঁদের দেওয়া বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা শুনেছিলাম বান্ধবীর মুখেই।’
‘তাহলে তুমিই বল ভেঙে পড়া তেঁতুল গাছটা আবার দাঁড়াল কিভাবে?’ আমি উদ্‌গ্রীব হয়ে জানতে চাই।
মামু বলে,‘গাছটা পড়ে গেলেও মরে তো যায়নি। প্রধান শিকড় সহ আরও কিছু শিকড় মাটি আঁকড়ে ছিল। শিকড়গুলো মাটি থেকে জলীয় রস সংগ্রহ করেছে। সূর্যের আলোয় সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় গাছ তার খাবার বানিয়েছে। কিন্তু ভেঙে মাটিতে প্রায় শুয়ে পড়ায় গাছের ভরকেন্দ্র সরে এসেছিল মাঝামাঝি জায়গায়, নিচের দিকে। ফলে সবুজ পাতায় তৈরি শর্করা গোটা গাছে ছড়িয়ে না পড়ে ভরকেন্দ্র ঘিরে ঘনীভূত হওয়ায় ওই অঞ্চলের কোষগুলোতে খাদ্যরসের ঘনত্ব বেড়ে চাপ সৃষ্টি হয়। নয়ানজুলি থেকে ক্রমাগত জল শোষণ করে গাছের গুঁড়ি ভারী হয়। এই অবস্থায় ডালপালা ছাঁটায় ভরকেন্দ্র আরও নিচের দিকে সরে আসে। ওপরের দিক হালকা হওয়ায় নিচের দিকের চাপ গাছটাকে খাড়া করে দেয়। শিকড়ের স্বাভাবিক টানও অবশ্য কাজ করেছে।’
অনুরাধা এবার মুখ খোলে। গাড়িতে উঠতে উঠতে বলে,‘সবই বুঝলাম,মামু। কিন্তু চৌকিদারের বউ তো ‘দিদি’ ‘দিদি’ বলে ডাকে নি! দুজনে একসাথে ভুল শুনেছি তা কি হতে পারে?’
জগুমামু কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। তার আগেই চৌকিদারের ঘর থেকে চন্দনা পাখিটা তীক্ষ্ণ স্বরে ডেকে উঠল,‘দিদি! দিদি!’
*****************************************************

লেখক পরিচিতিঃ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘দর্শন’-এ স্নাতকোত্তর সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় মূলত একজন লেখিকা, সংগীতশিল্পী এবং বিজ্ঞান ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী। ‘কালান্তর’, ‘সুস্বাস্থ্য’ ‘উৎস মানুষ’, ‘টপ কোয়ার্ক’, ‘যুক্তিবাদী’, ‘এখন বিসংবাদ’, ‘মানব জমিন’, ‘আবাদভূমি’, ‘সাহিত্য সমাজ’, ‘সারথি’, ‘অভিক্ষেপ’ ইত্যাদি বেশ কিছু পত্রিকা ও সংবাদপত্রে তাঁর লেখা গল্প, কবিতা, নিবন্ধ ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। একসময় তিনি ছিলেন ‘আজকাল’ পত্রিকার নিয়মিত পত্রলেখিকা। ২০০৩-এ ‘ভারতের মানবতাবাদী সমিতি’-র উদ্যোগে তাঁর সম্পাদনায় ‘র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন’ প্রকাশন থেকে ড. পবিত্র সরকারের ভূমিকা সহ প্রকাশিত হয়েছে ‘ছোটোদের কুসংস্কার বিরোধী গল্প’-র দুটি খন্ড। তাঁর লেখা ‘ইতিহাসের আলোকে মরণোত্তর দেহদান – আন্দোলন ও উত্তরণ’ বইটি বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। দূরদর্শনে ‘মরণোত্তর দেহদান’ নিয়ে সম্প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্যও রেখেছেন। সম্প্রতি চলচ্চিত্রাভিনেত্রী ও সঙ্গীতশিল্পী কানন দেবীর জীবন নিয়ে তাঁর একটি গবেষণামূলক কাজ ‘ফেসবুক’-এ তাঁর টাইমলাইনে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রসংগীতে তিনি ‘সংগীত প্রভাকর’ ও ‘সংগীত বিভাকর’। দীর্ঘদিন শাস্ত্রীয় সংগীতেও তালিম নিয়েছেন। শৈশব ও কৈশোরে বেতারে ‘শিশুমহল’, ‘গল্পদাদুর আসর’ ও ‘কিশলয়’-এর অনুষ্ঠানে বহুবার গান গেয়েছেন। পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলায় ও এই রাজ্যের বাইরেও মঞ্চানুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত, পল্লীগীতি ও গণসংগীত ছাড়াও তাঁর ভাই রাজেশ দত্তর কথায়-সুরে ‘মানবতার গান’ পরিবেশন করেছেন। ২০০৬-এ রাজেশের কথায়-সুরে তাঁর গাওয়া ‘পাল্টা স্রোতের গান’ অডিও ক্যাসেট ও সিডি আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রজীবনে বেশ কয়েকটি নাটক ও শ্রুতিনাটকে অভিনয় করেছেন। পরবর্তীতে চন্দননগরের ‘কোরক’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাট্যাভিনয় করেছেন। আবৃত্তি, সংগীত ও কয়েকটি ‘রিয়্যালিটি শো’-এ বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কৈশোরে খেলাধূলার জগতেও তিনি বিচরণ করেছেন। স্কুলে ইন্টারক্লাস ‘কবাডি’ খেলায় নিজের ক্লাসের টীমে তিনি ‘ক্যাপ্টেন’-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। চন্দননগরের ‘চিত্তরঞ্জন ব্যায়ামাগার’-এ তিনি ‘জিমনাস্টিকস্‌’, বিশেষত ‘তারের খেলা’-র প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ব্রতচারী নাচের প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্র-ও অর্জন করেছেন। এখন গৃহকর্মের ফাঁকে ও অবসরে লেখালেখি ও গানের চর্চা ছাড়াও আঁকতে ও ছবি তুলতে ভালোবাসেন। কিন্তু তাঁর নিজের সবচেয়ে প্রিয় বিষয় ’ভ্রমণ’।

 

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!