মৃত্যু – নগরী
কাকলি সেন
এ যাবৎ নিভে থাকি বেশ,
শূন্য পাতা,না বলা কথা নিয়ে অবশেষ।
দুপুর তামাদি হলে,
আঁধার ভীড় করে আসে
কিছু ভালোবেসে।
গাঢ় হয় ,দৃঢ় হয় স্নেহশৃঙ্খল,
ধূলি ধূসরিত খাতা,স্মৃতিসম্বল।
কথা ছিল নত হবো,দ্রব হবো,
আজান ভোরে,
দেখা হবে,লেখা হবে কোনো
অজানা চত্বরে।
নেই তট,নেই ঘাট,নদীও স্হবির,
ভাঙন ধরেছে বুকে নেই সেই তীর।
অতীত জমছে ক্রমে নস্টালজিয়া
হিসেব মেলেনি আজও প্রেম-পরকীয়া।
মানুষ একলা শব শূন্য সারনী
ভীড় আছে,হাত নেই বুঝতে পারিনি।
ধার করা স্মৃতি লেখে প্রেম,প্রাপ্তি,ঋণ,
যা কিছু হয়নি বলা গোপন গহীন।
শব্দের ভীড় নেই,নিভৃতবাস
নয়নে বাস্পবারি শোক জলোচ্ছ্বাস ৷
হে আমার গতজন্ম,আরণ্যক মন,
নতজানু হই মোরে দাও উত্তরণ।
বিভেদ দূরে থাক করো নির্মোক,
পদ্যের সাথে সেই গল্পটা হোক।
দেশ বেশভূষা যাক দূরে বহুদূরে,
ধার্মিক নিক ছুটি আপাত মন্দিরে।
মসজিদে সন্ন্যাসী লালন আওড়াক,
আবার উঠুক বেজে ঘন্টা ও শাঁখ।
যুদ্ধের খেলা নয়,অসুখ নিপাত,
রাবণের চিতা জ্বলে যম সাক্ষাৎ।
পাবক শান্ত হও,ও….ম স্বাহা
গর্ভিনী হোক মাটি হোক সর্বংসহা।
রাজপথে কাঁদে শিশু সদ্য মা-হারা
রক্ত বেঁধেছে জমাট নির্বাক ধরা।
তবু ভোট,হবে জোট,চালু ষড়যন্ত্র,
জনতার লাশ দেখে হাঁটে গণতন্ত্র
আবার মোচ্ছব হবে বিজয়োল্লাসে,
খেলা হবে রঙে রঙে রক্তিমাকাশে,
কাঙ্খিত মৃত্যু যেন শান্তির হয়,
এ দেশ আমার দেশ, মৃতের দেশ নয়।
*********************************************************
কাকলি সেন পরিচিতি :
হুগলি জেলার বৈদ্যবাটী তে জন্ম ও স্হানীয় স্কুলেই শিক্ষা লাভ। পরে হাওড়া নরসিংহ দত্ত কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ এবং ইংরেজী ভাষায় স্নাতকোত্তর। ফরাসী ভাষায় ডিপ্লোমা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ চন্দননগর ফরাসী ইনস্টিটিউট থেকে। স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখির শুরু। পরে কলেজ এবং কলেজপরবর্তী সময়ে স্বাধীন ভাবে লেখালেখি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম এর ফরচুন সিটি আবাসন এর একটি ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ঋত র সম্পাদিকা, যেটি সাফল্যের সাথে দশ বছরের যাত্রাপথ অতিক্রম করেছে। কবিতা ছাড়াও গল্প, প্রবন্ধ ও নাটক লিখেছেন। ওনার রচিত দুটি নাটক শব্দজব্দ এবং পঞ্চকন্যা ইতিমধ্যেই মঞ্চস্থ হয়েছে। আবৃত্তি পাঠ এবং সংগীত পরিবেশনেও ওনার উপস্থাপনা প্রশংসনীয়। অবসরে গান শোনা,বই পড়া এবং ভ্রমণ ওনার অন্যতম নেশা।