Shadow

মুক্তি – শাশ্বতী হোসেন

মুক্তি

শাশ্বতী হোসেন


এমন অতিমারীর দাপটের পরেও
যদি বেঁচে উঠি
কিছু না পারি,নিতান্ত ভালোবাসাটুকু নিয়ে ঘরে ফিরব।
অন্ধকারকে দরজার বাইরে রেখে বলব, আর এস না,
এখন আমাদের ডুলুং নদীর বনডুংরি চাঁদ ছুঁয়ে
মেঘের একান্ত লুকোচুরি দেখতে দাও।
কেন না,এই দেখাই আমাদের আশ্বাস,
আমাদের আবেগ।
এতদিন খালি দেখেছি চারদিকে অক্সিমিটার,ভেপার মেশিন,আগুনমাটির স্তুপাকৃতি লাশ,পিপিই কিটস।
রাতের পর রাত কেটেছে না- ঘুমের ভিতর।
মানুষের নষ্টপ্রায় ফুসফুসের ভিতর এখনো গাঙুরের মৃত্যুস্রোত—
তবুও চিতাকাঠ থেকে  কারো গামছা
ঝড়ে উড়তে উড়তে  বাঁচার স্বপ্ন দেখে যায়
কি করে তাদের ভুলি বলো?
এখন এই অতিমারীর দাপটের পরেও
 যদি বেঁচে উঠি
তাহলে ভুলে যাওয়া  সুরে গানের কলি সাজিয়ে
এক সংসার ছুঁয়ে থাকব।
প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙতেই
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
নতুন জন্মদিনের আনন্দ ভাগ করে নেব।
গোল গোল সস্তার আলু মাখা ঝোল দিয়ে ভাত খেয়ে
মুখ থেকে ঝালের শিস উঠবে—-
তোর কলম খুঁজে বেড়াব
তোর উশমাখা চাদর ছুঁয়ে থাকব
তোর ভাঙাচোরা ছাতায় ছাদের জল আটকাব
তোর হাড়মাস সব…… সব…
এমন অতিমারী দাপটের পরেও
 যদি বেঁচে উঠি
দেখিস শীতে পরিযায়ী পাখিরা ফিরে আসছেই ।
এক জমি থেকে আরেক জমি অবধি আলুর ক্ষেতে সেচ দিচ্ছে নিখিল ভুঁইয়ার বউ-ছেলে
পাকা মরিচ রোদে শুকোচ্ছে আদুরি কাকি।
ওঠ… ও.. এই ওঠ না,আজো রোদ ওঠে নি,বলে
বিরতিহীন বর্ষার কোকিলের মতো ডাক দিয়ে যাচ্ছিস
তোর এক ডানা মেঘ,এক ডানা রোদ
তোর চোখে ময়ূরের সুখ
তোর এক সংসার ঘর মেঘের সাথে
মিশে যেতে যেতে গেয়ে উঠছে ,
আমার মুক্তি আলোয় আলোয় ।।
এই আকাশে………
******************************************************************

শাশ্বতী হোসেন পরিচিতি:
জন্ম-১৯৬৪। হবি-লেখা। বিভিন্ন বাণিজ্যিক,(দেশ তথ্যকেন্দ্র) ওয়েব ম্যাগ, প্রচুর পত্রপত্রিকায় লেখা প্রকাশিত। জঙ্গলমহলের আঞ্চলিক মানুষের জীবনচর্চা ওদের মুখের ভাষা নিয়ে কবিতার চর্চা।

 

 

 

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!