এগারোই জুলাই রবিবার সন্ধ্যায় ‘শাওন গগনে’,কুলায় ফেরার বর্ষাবরণের দ্বিতীয় পর্বের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোট ন’জন কলাকুশলী যাঁরা তাঁদের গুণপনার প্রকাশে এই অনুষ্ঠানকে করে তুলেছিলেন সর্বতোভাবে উপভোগ্য। এদিন ছিল “কুলায় ফেরা”র ফেসবুক পেজের প্রথম সরাসরি সম্প্রচার৷ অনুষ্ঠানের সুত্রপাত বহরমপুরের প্রেরণা মুখার্জির নৃত্য পরিবেশনা ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’ দিয়ে ৷ তাঁর অনুপম নৃত্যশৈলী প্রমাণ করে তাঁর সহজাত নৃত্য পারদর্শীতা,যা এক সংগীত নৃত্য মুখর আবহের শুভ সূচনা করে। বহরমপুরের আরো এক কিশোর শিল্পী সুপর্ণ ত্রিপাঠী পরিবেশন করেন জয় সরকারের সুরে অত্যন্ত জনপ্রিয় গান ‘দেখেছ কি তাকে ঐ নীল নদীর ধারে’। তাঁর সাবলীল ও অপূর্ব গায়নশৈলী উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের মনে ভালোলাগার রেশ ছড়িয়ে দেয়। এই মুগ্ধতার রেশকে টেনে নিয়ে যায় কলকাতার গোপা ভরদ্বাজের আবৃত্তি পরিবেশনা রবীন্দ্রনাথের ‘বর্ষার দিনে’। প্রেমে উদ্বেল হয়ে ওঠা কবিমনের সঠিক রূপ তিনি তুলে ধরেন তাঁর আবেগময় কণ্ঠ মাধুর্যে৷ অনুষ্ঠানের সঠিক সুর ও ছন্দের ধারাকে অব্যাহত রেখে কলকাতার অর্ণি চন্দ্র পরিবেশন করেন সুধীন দাশগুপ্তের কথায় ও সুরে ‘এলো বরষা যে সহসা মনে তাই’৷ কিশোরী শিল্পীর পরিবেশিত সুন্দর গান রিমঝিম বর্ষার আমেজ ছড়িয়ে দেয় দর্শক শ্রোতাদের মনে,নিশ্চিত করে তাঁর সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। এরপর কলকাতা থেকে ভাস্বতী সাধুখাঁ পরিবেশন করেন ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে’। তাঁর আন্তরিক পরিবেশনা উপস্থিত দর্শক ও গুণীজনের প্রশংসা আদায় করে নেয়। বর্ধমানের শিল্পী দীপশিখা মুখার্জি গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি কবিতার মালা গেঁথে নিবেদন করলেন তাঁর বাচিক উপস্থাপনায় ৷ বাচনভঙ্গী,কণ্ঠ মাধুর্যে ও উপস্থাপনার গুণে তিনি দর্শক শ্রোতাদের করলেন মুগ্ধ৷ এরপর মল্লার রাগের নিজস্ব প্রকাশের সঙ্গে রবীন্দ্র গান ‘মন মোর মেঘের সঙ্গী’ কে মিলিয়ে দিয়ে বেহালার অপূর্ব সুর মূর্চ্ছনায় ভরিয়ে দিলেন কলকাতার এস রঙ্গনাথন৷ বিশাখাপত্তনমের মৌমিতা আচার্য মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় মজুমদারের ‘বর্ষামঙ্গল’ কবিতার রূপ দান করলেন অপূর্ব নৃত্যশৈলীর মাধ্যমে,তাঁর মনোমুগ্ধকর পরিবেশনে দর্শকদের করলেন মুগ্ধ৷ নজরুল গীতি ‘ফিরিয়া এসো হে,এসো হে ফিরে’ আন্তরিক ভাবে পরিবেশন করলেন কলকাতার দীপা ভরদ্বাজ,অনুষ্ঠানের সর্বশেষ শিল্পী৷ সমস্ত দর্শকদের আপ্লুত করে দিলেন তাঁর গানে ৷
কুলায় ফেরার সার্বিক অধীক্ষক প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাঞ্জল সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের ছন্দ রইলো বাঁধা৷ গ্রন্থনায় মধুমিতা মিত্র তাঁর লিখনশৈলী দিয়ে বর্ষার ছবি এঁকে দিলেন সকলের মনের মাঝে। প্রথম ফেসবুক লাইভ এর গুরুদায়িত্ব খুব সুন্দর ভাবে সামলে ও পরিচালনা করে সমগ্র অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যের মুখ দেখালেন কুলায় ফেরার সহ-সম্পাদিকা বিশাখাপত্তনম থেকে দেবলীনা সরকার। দর্শক শ্রোতাদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণতা পেল।।
প্রতিবেদক ব্রতী ঘোষ