অতি পরিচিত গল্প
ব্রতী ঘোষ
আজকাল অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে আমার আর ভালো লাগে না | বাস থেকে নেমে পাড়া দিয়ে হেঁটে যখন বাড়ি ফিরি তখন আমার পা দুটো আর চলে না কারণ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই লীনা আর মায়ের কথা কাটাকাটি লেগেই থাকে ৷ লীনার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বছর তিনেক আগে ৷ আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,মার নয়নের মণি ৷ মা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছেন আর সে কথা পাড়া–প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনকে বলতে বেশ গর্ব বোধ করেন ৷ বাবার ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বদলির চাকরি–সবে দু বছর হলো অবসর নিয়েছেন ৷ বারো ক্লাস পর্যন্ত প্রতিদিন মা সাথে করে স্কুলে,টিউশনে নিয়ে গিয়ে বসে থেকেছেন ৷ মার পরিশ্রমের মূল্য আমি দিয়েছি,আইটি সেক্টরে বেশ বড় একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে মোটা মাইনের চাকরি করি আমি ৷ ও হ্যাঁ,বলতে ভুলে গেছি,আমি তন্ময় চক্রবর্তী ৷ চাকরি পেয়ে মার পছন্দ করা সর্বগুণসম্পন্না মেয়েকে বাড়ির বউ করে এনেছি। লীনাকে যখন প্রথম দেখি হলুদ শাড়িতে, মনে হয়েছিল বিধাতা পুরুষ যেন ওকে আমার জন্যই তৈরি করেছেন ৷ মার পছন্দের প্রশংসা না করে পারিনি ৷ এখনো মনে পড়ে লীনাকে নিজের করে পাওয়ার দিনটার কথা ৷ ওর উষ্ণতায় হারিয়ে যেতে যেতে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম নিজের কাছে যে, কোনদিন লীনাকে কষ্ট পেতে দেব না ৷ কিন্তু এখন এ কথা ভাবলেই আমার বুকটা টনটন করে ওঠে ৷ কারণ আমি আমার প্রতিজ্ঞা রাখতে পারিনি ৷ আজও যথারীতি বাড়ি ফিরে দেখলাম লীনা বাবানকে নিয়ে ঘর অন্ধকার করে শুয়ে আছে ৷ আমার ঘরে ঢোকার শব্দ পেয়েও কোন কথা বললো না ৷ মার ঘরে গিয়ে দেখলাম মাও মাথায় একটা হাত দিয়ে শুয়ে আছে ৷ দুজনের কেউই জানতে চাইল না আমি কিছু খাব কিনা ! হায়রে ! আমার কপাল ! মা ভাবছে বিয়ে দিয়ে ছেলে এখন বউয়ের ৷ কাজেই বউ বুঝবে ছেলে কিছু খাবে কিনা আর বউ ভাবছে মার ছেলে মা বুঝবে ছেলে কিছু খাবে কিনা !
আমি বেরিয়ে এলাম বাড়ি থেকে–অসহ্য লাগছিল ৷ বিমলের দোকান থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে নেতাজি পার্কের দিকে হাঁটতে লাগলাম ৷ পার্কের বেঞ্চে বসে শুধু একটা কথাই আমার মনে হচ্ছে–আচ্ছা !! কেন এমন হয়? কেন শাশুড়ি আর বৌমার চিরকালের ঝগড়ার কোন শেষ হয় না? অথচ বিয়ে ঠিক হবার পর মা আমাকে কথা দিয়েছিল,”দেখিস আমি অন্য শাশুড়িদের মতো হবো না ৷ লীনাকে ঠিক আমার মনের মতো করে গড়ে নেব ৷” কিন্তু বিয়ের পর কিছুদিনের মধ্যেই মার সর্ব্বগুণসম্পন্না লীনা পরিণত হল অকর্মার ঢেঁকিতে ৷
আসলে লীনা আর আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক গুণমান এক হলেও ওদের পরিবার অনেক বেশি উদার ৷ সেখানে লীনার মা চাকরি করেন ৷ ওর বাবা এবং ভাই পরিবারের কাজকর্ম ভাগাভাগি করে করেন ৷ বিয়ের পর ওদের বাড়ি গিয়ে দেখেছি লীনার বাবাকে জামাকাপড় তুলে ভাঁজ করে রাখতে ৷ ওর ভাই সৌম্যকে দেখেছি বাসন মাজতে ৷ যেগুলো আমাদের বাড়িতে কেউ ভাবতেই পারেনা ৷ ওদের বাড়িতে সবাইকে একসাথে টেবিলে বসে খেতে দেখেছি ৷ যে যার পছন্দ মতো মাছের পিস তুলে খেয়ে নিচ্ছে অথচ এখানে সেটা কেউ ভাবতেই পারেনা ৷ ছুটির দিনে আমার আর বাবার খাওয়া হয়ে গেলে তবে মা ও লীনা খেতে বসে ৷ রান্নার দায়িত্ব যথাসাধ্য সামলালেও পছন্দমত মাছের পিস তো দূরের কথা, পারলে সবচেয়ে ছোট মাছের পিসটা ওর ভাগে পড়ে ৷ বাপের বাড়ি থেকে ও যে কিছুই শিখে আসেনি সে কথা উঠতে বসতে শোনাতে মা কখনোই ছাড়েন না ৷ প্রথম প্রথম চুপ করে থাকলেও লীনাও এখন মাকে কথা শোনাতে ছাড়ে না ৷ বাপের বাড়ির নিন্দা শুনলে ওর মাথাতেও আগুন জ্বলে ৷ মা ও যে কতটা নিম্ন মানসিকতার মানুষ সেটা মাকে শোনাতে ভোলেনা ৷ আচ্ছা মা !! তুমি কি কখনো লীনা কে নিজের মেয়ে ভেবে বড় মাছের পিসটা দিতে পারো না? ওকে আমার আর বাবার সাথে খেতে দিতে পারো না? রাতে কোনদিন বাবানকে একটু নিজের কাছে রেখে ওকে ঘুমোতে দিতে পারো না? আর লীনা তুমিওকি মাকে নিজের মা ভেবে, তাঁর বয়স হয়েছে ভেবে একটু চুপ করে থাকতে পারো না? মাঝে মাঝে আমার বড্ড কান্না পায় ৷ কার কথা শুনবো? কাকে কি বোঝাবো? আমি যে তোমাদের দুজনকেই ভালোবাসি ৷
***************************************************
বেশ রাত করে বাড়ি ফিরল তন্ময় ৷ বাড়ির গেট খুলতেই মার গলা কানে এলো ৷ লীনার গলাও শোনা যাচ্ছে কিন্তু অস্পষ্ট ৷ “তুমি এই মুহূর্তে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও ৷”
“আমি বেরিয়ে যাব কিন্তু আইনসম্মতভাবে যে আমার ভরণ–পোষণের দায়িত্ব নিয়েছে তাকেও আমি সঙ্গে করে নিয়ে যাব ৷”
তন্ময় সোজা নিজের ঘরে ঢুকে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে দেয় ৷ ঘাড়ে মাথায় জল দিয়ে বেরিয়ে এসে দেখে লীনা বাবানকে নিয়ে বেরিয়ে যাবার জন্য রেডি ৷ অর্থাৎ ও আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল যে আজ বেরিয়ে যাবে ৷
“আমি অনেক সহ্য করেছি, আজ তুমি যদি আমাকে নিয়ে বাড়ি না ছেড়েছ তবে তোমার আর আমার আজই শেষ দিন ৷”
তন্ময় লীনার মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে যে আজ সারাদিন ওর খাওয়া হয়নি ৷ একবার শেষ চেষ্টা করে ও লীনাকে বোঝাতে ৷ কিন্তু স্বামী হিসাবে ও ব্যর্থ | যে প্রতিজ্ঞা ও করেছিল লীনাকে সুখী করার তাও রাখতে পারেনি ৷ লীনার ব্যাগ হাতে নিয়ে তন্ময় এসে দাঁড়ায় মার কাছে ৷
“মা,তুমি আমাকে কথায় কথায় বলোনা যে অনেক কষ্ট করে বড় করেছ কিন্তু সব বাবা মা ই তা করে থাকে তবে তার বিনিময়ে তাঁরা যা চাইবে তাই তাঁদের সন্তানকে করতে হবে এটা আশা করা কিন্তু কখনই উচিত নয় ৷ তুমি যে সবসময়ই চাও যে আমি লীনাকে বকাবকি করি সেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয় ৷ তোমাদের দুজনকেই আমি বোঝাতে পারিনি যে তোমরা দুজনেই আমার কাছে সমান প্রিয় ৷ আমি বোঝাতে পারিনি লীনাকে যে তুমি কি পছন্দ করো আর করো না ! বাবা কি খেতে ভালোবাসে ? আর মা ! ঠিক তেমনই তোমাকেও আমি বোঝাতে পারিনি লীনা কি খেতে ভালোবাসে বা ও কি চায় এ বাড়িতে ৷ লীনা তোমাকে ও মার মতোই ভালোবাসতে চেষ্টা করেছিল আপ্রাণ কিন্তু তুমি একটু সুযোগ ওকে দিতে চাওনি ৷ মা ! তোমাদের ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারব না কিন্তু এই প্রতিদিনের যন্ত্রণা আমি আর সইতে পারছি না ৷”
তন্ময়ের গলাটা ধরে আসে-“আমাকে তোমরা ক্ষমা করো ৷”
“লীনা ! ভবিষ্যতে তুমিও আমার কাছ থেকে কোনরকম মূল্যবোধ আশা কোরো না কারণ একমাত্র সন্তান হয়েও আমি আমার বাবা মাকে ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি আজ, আর তা আমার সমস্ত মানবিকতা ও মূল্যবোধকে গলাটিপে হত্যা করে ৷ চলো, কোথায় যাবে ?”
মাস তিনেক পর –
“হ্যাপি বার্থডে বাবাই” – বাবানের মিষ্টি গলার আওয়াজে ঘুম ভাঙে তম্ময়ের ৷ চোখ খুলে দেখে লীনা আর বাবাই দুজনেই বার্থডে উইশ করতে ওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে ৷ দুজনের ভালোবাসায় আপ্লুত হতে হতে তন্ময়ের মনটা ভরে ওঠে এক অনাবিল আনন্দে ৷ নাহ ! আজ অফিস যাবে না ৷ সারাদিন বাড়িতে থেকে লীনা আর বাবানের সাথে সময় কাটাবে ৷ মুহূর্তে মনে পড়ে যায় প্রতিবছর এই দিনটাতে সকালবেলা মন্দিরে গিয়ে পূজা দিয়ে মা ওর জন্য পায়েস রান্না করতে বসতো ৷ সকাল বেলার আনন্দ যেন এক মুহূর্তে ম্লান হয়ে গেল ৷ জীবনে এই প্রথম জন্মদিন এলো যেদিন মা নেই ওর সাথে ৷ আচ্ছা – মাও নিশ্চই ভাবছে ওর কথা ৷
নিজের অজান্তেই তন্ময় একটা ট্যাক্সি ডেকে কখন যেন গড়িয়ায় ওদের বাড়ির দিকে যেতে থাকে ৷ আজ তিন মাস ও বাবা মাকে একটা ফোন করেনি, কথাও বলেনি কিন্তু ওদের পাশের বাড়ির অমলেশ কাকুর থেকে নিয়মিত তাঁদের খবর রেখেছে ৷ অনেকবার অমলেশকাকু ওকে বলেছেন,”তুমি একবার বাড়ি এসো তন্ময়, দাদা বৌদি ভালো নেই ৷” কিন্তু কি এক অভিমানে তন্ময়ের ইচ্ছা করেনি বাবা–মার কাছে যেতে ৷ যে বাবা–মা সারা জীবন ধরে ছেলেকে বড় করেছেন তার সব কিছু খেয়াল রেখেছেন সেই বাবা–মা হঠাৎ ছেলের বিয়ের পর থেকেই তাকে অন্য গ্রহের বাসিন্দা ভাবতে শুরু করলো ? ও তো বিয়ে করতেই চায় নি ৷ মার পছন্দ করা মেয়েকে ই বিয়ে করে সুখী থাকতে চেয়েছিল ৷ তাহলে কেন এমন হলো ? কেন বিয়ের পর লীনাকে ভালোবাসে বলে মা ওকে পর করে দিল ? কেন মা ভাবতে শুরু করলো যে বিয়ের পর ও মাকে আর ভালোবাসে না ? সেদিন বাড়ি থেকে চলে আসার সময় একবার ও বললো না,”বাবু , তুই যাস না ৷ “এই ভালোবাসে আমাকে ? সন্তানকে বোঝার বা কিসে সে সুখে থাকে সেটা বোঝার দায়িত্ব কি তাঁদের কিছুই নেই ?
ট্যাক্সিটা গড়িয়ার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় ৷ ভাড়া চুকিয়ে কলিং বেলটা বাজানোর আগে আরো একবার ভাবে তন্ময় ৷ মা যদি না ঢুকতে দেয় ? কলিং বেল শুনে মায়াদেবী রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে এসে দরজা খোলেন ৷ খানিকটা হতচকিত ৷ আজ সকাল থেকেই মন বলছিল বাবু ঠিক আসবে ৷ তবে দরজা খুলে মনের কথাটা সত্যি হওয়াতে যে খুশি হয়েছেন তা প্রকাশ করলেন না ৷ তন্ময়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, ঘরে আসতে বললেন না ৷
“কে এসেছে ?” বলতে বলতে সুধাময় এগিয়ে এলেন ৷ “দেখেছ তো ? তুমি এত ভাবছিলে ওর কথা ৷ ও এলো তো !”
তন্ময় অবাক হয়ে গেল বাবার কথা শুনে। ও তো ভেবেছিল মা ওকে দেখে খুশি হয়নি ৷ বাবাকে প্রণাম করে তন্ময় জিজ্ঞাসা করে,”বাবা ! মা কি আমার সাথে কথা বলবে না ?” “কেন বলবে না ? তুই যা তো মার কাছে ৷”
“মা !’ বলে তন্ময় মায়ের পায়ে হাত দেয় ৷ ছেলেকে জড়িয়ে ধরে মায়াদেবী হু হু করে কেঁদে ফেলেন ৷ মা ছেলের এই মিলন দৃশ্য দেখে চোখে জল এসে যায় সুধাময় বাবুর ও ৷ “মা ! আবার সব ঠিক হতে পারে না ? আমরা সবাই একসাথে থাকতে পারি না মা ? কেন তুমি বুঝতে পারো না তোমাদের ফেলে ওই বাড়িতে আমি কখনই ভাল থাকি না ৷”
“তুই যখন খুশি আসিস বাবানকে নিয়ে কিন্তু লীনা যেন না আসে ৷”
“সে কি মা ? ও তো তোমার পুত্রবধূ ৷”
“হতে পারে, কিন্তু ওর মত মুখরা মেয়ের সাথে আমার কথা বলা সম্ভব নয় ৷”
“তাহলে আমি আসি ৷ ওকে যদি ঘরে ঢুকতে দিতে না পারো তাহলে তো আমারও আসা উচিত নয় ৷”
“সে তুই যা ভাল বুঝিস ৷”
বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার পথে নামে তন্ময় ৷ নাহ ! আজ ঝোঁকের মাথায় আসাটা উচিত হয়নি ৷ মা এখনো লীনাকে সহ্য করতে পারেন না ৷ ভগবান ! এর কি কোন শেষ নেই ? কেন শাশুড়ি বৌমা একজন আরেকজনকে কখনোই সহ্য করতে পারে না ? আর কেন ওই দুজনের জন্য ওকে কষ্ট পেতে হবে ? কেন ওদের কেউ ওর কষ্টটা বুঝতে চেষ্টা করবেন না ? সকালে যে আনন্দ বুকে নিয়ে দিন টা শুরু হয়েছিল তার ছিটেফোঁটাও আর অবশিষ্ট নেই ৷ সকালে ভেবেছিল যে আজ সারাদিন বাড়িতে থাকবে ৷ কিন্তু সকালবেলার তালটা যে কেটে গেছে ৷ অফিসে চলে গেলো ও ৷ অফিসে সবার শুভেচ্ছা বার্তা আর কেক কাটা নিয়ে কখন সারাটা দিন কেটে গেল ৷ আজ বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হলো ওর ৷ হাত মুখ ধুয়ে নিজের ঘরে ঢুকে আলোটা অন্ধকার করে শুয়ে পড়লো ৷
“তুমি ফিরতে এত দেরি করলে ? ফোনটা ধরছিলে না কেন? সুমি ইতুরা কতক্ষণ অপেক্ষা করে করে ফিরে গেল ৷ কি হলো তোমার আবার ? ও বুঝেছি !! মার জন্য মন খারাপ ৷ হু : যে মা একমাত্র ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তার জন্য আবার মন খারাপ ৷”
তন্ময় কোন উত্তর দেয় না ৷ ও এটুকু বুঝে গেছে যে এই দুজনের মাঝখানে ও হল শুকনো লঙ্কার মত ৷ শিলনোড়া ঘষাঘষি করেই যাবে কিন্তু কষ্টটা ওকেই পেতে হবে ৷ কেউ কারোর এতোটুকু ইগো ছাড়তে নারাজ ৷ ও কিসে ভালো থাকে, কি চায় সে কথা কারুর জানার দরকার নেই ৷ মাঝে মাঝে মরে যেতে ইচ্ছে করে ওর | বেঁচে থাকার কোন কারণ খুঁজে পায়না ৷ ভাবতে–ভাবতে কত রাত হয়েছে ঠিক বুঝতে পারে না তন্ময় ৷ সম্বিত ফেরে বাবানের ডাকে,”বাবা ! ও বাবা ! তুমি শুয়ে আছো ? খাবে না ? মা ডাকছে তো ?”
“বাবাই“,বলে ছেলেকে বুকে টেনে নেয় তন্ময় ৷ এতদিনের জমে থাকা কান্না হু হু করে বেরিয়ে আসে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে ৷ ঐটুকু ছেলে হলেও বুঝতে পারে ওর বাবার খুব কষ্ট হচ্ছে ৷ তাই অদ্ভুতভাবে ওর ছোট ছোট আঙুল দিয়ে বাবার চোখের জল মুছিয়ে দিতে দিতে বলে,”একি বাবা ! তুমি কাঁদছো ? ছেলেরা তো কাঁদে না,মা যে বলে !”
“মা ভুল বলে বাবান ৷ কষ্ট হলে সবাই কাঁদে ৷ মায়েদেরটা দেখা যায় আর বাবাদের টা দেখা যায় না ৷”
বেঁচে থাকার তাগিদ টা তন্ময় বুঝতে পারে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ৷ বাবানের জন্যই ওকে বাঁচতে হবে ৷
*****************************************************
ব্রতী ঘোষের পরিচিতি
জন্ম,পড়াশোনা সবই কলকাতায় ৷ তিরিশ বছর ধরে ভারতীয় জীবন বীমা নিগমে কর্মরতা। সঙ্গীত অনুরাগী মানুষটি এখন ভালোবাসেন লিখতে ৷ এই পত্রিকাতেই তার লেখার পথ চলার শুরু।
অনবদ্য লেখা
খুবই সুন্দর আর প্রাসঙ্গিক লেখা। লেখার মান উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে।আরও লেখা চাই।
ধন্যবাদ সুরজিৎদা 🙏
ধন্যবাদ অমৃতা 😊
বাস্তব জীবনের এক অতি পরিচিত ছবি তূমি তোমার সুন্দর লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছ ব্রতী… খুব সুন্দর প্রয়াস❤️
তোমার জন্য রইলো অনেক ভালোবাসা !!❤️❤️
খুব ভালো লাগলো,প্রায় ই যা ঘটে সেটাকে আপনি খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন, দারুন দারুন!!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে 🌹🌹
সংসারের যাঁতায় না পিষলেও ভালো লিখেছো , চালিয়ে যাও ।👏👏
উৎসাহিত হলাম 🙏🙏
সত্যিই খুবই পরিচিত। বর্তমান সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।👍
অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে 🙏🙏
পড়তে পড়তে চোখে জল এসে গেলো l লেখার প্রশংসা টা তাই ভাষাতে করতে পারছি না l চালিয়ে যা l কোনো একদিন তোর বই প্রকাশিত হবে সেই কামনা করি
তোর আন্তরিকতায় আমি আপ্লুত ৷ মনে হচ্ছে লেখাটা সার্থক হলো ৷ ভালো থাকিস ।