Shadow

পূর্ণবাবুর জন্মদিন – চন্দ্রকান্তি দত্ত

PC JoinCake

পূর্ণবাবুর জন্মদিন

চন্দ্রকান্তি দত্ত

পূর্ণবাবুর মন ভাল নেই। ছেলে-বৌমা তাঁর জন্মদিন পালন করবে এই খবরটা পাওয়া অবধি তিনি কিছুটা মুষড়ে পড়েছেন।
পূর্ণবাবু তিনদিন পরে,মানে আগামী ২১শে জ্যৈষ্ঠ পঁচাত্তর পেরিয়ে ছিয়াত্তরে পড়বেন। এই বিশেষ দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতে ছেলে-বৌমা মিলে কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিমন্ত্রিত হবেন,কেক কাটা হবে,গান-বাজনা,খাওয়া-দাওয়াও হবে। সেখানেই পূর্ণবাবুর আপত্তি। যদিও তিনি ওদের সে আপত্তির কথা জানান নি।
পূর্ণবাবু মনে-প্রাণে নিপাট বাঙালি। ছেলেবেলা থেকে দেখে এসেছেন,বাড়িতে ঘটা করে জন্মদিন পালনের কোন রেওয়াজ ছিল না। জন্মদিনে কোন উপহারও আসত না। মা গোবিন্দভোগ চালের পায়েস রান্না করতেন। যার জন্মদিন সে আগে পায়েস মুখে দিলে অন্যেরা পায়েস পেত। এভাবেই পালিত হত সবার জন্মদিন।
পূর্ণবাবু সেই পরিমন্ডলে বড় হয়েছেন। সেই সংস্কৃতিকেই জীবনের চলার পথে আঁকড়ে ধরেছেন। কষ্ট করতে হলেও এই সংস্কৃতি তিনি ত্যাগ করেন নি। এজন্য তিনি কিছুটা আত্মশ্লাঘাও অনুভব করেন। যদিও মুখে কখনও প্রকাশ করেন না।
বছর তিনেক আগে শৈল হঠাৎ চলে যাওয়ার পর পূর্ণবাবু একেবারে একা হয়ে গেছেন। শৈলর এভাবে চলে যাওয়ার কথা ছিল না। পূর্ণবাবুর হার্টের কিছু সমস্যা দেখা দিলেও,আপাতদৃষ্টিতে শৈল কিন্তু সুস্থই ছিল। অথচ,মাত্র তিনদিনের জ্বরে ও যে এভাবে চলে যাবে,পূর্ণবাবু কল্পনাও করতে পারেন নি। প্রায় বিয়াল্লিশ বছর সুখে-দুঃখে একসাথে পথ চলার পর শৈলর হঠাৎ এভাবে চলে যাওয়াটা পূর্ণবাবু মেনে নিতে পারেন নি। তাঁর শরীর ও মন,দুই-ই ভাঙতে আরম্ভ করেছে। ইদানিং মাঝে মাঝেই তিনি বুকে একটা ব্যথা অনুভব করেন। একাকিত্ব তাঁর কাছে দুঃসহ হয়ে উঠেছে। অবশেষে তিনি শৈলর সাথে কথা বলতে আরম্ভ করেছেন। মনের কোণায় কোণায় জমে থাকা প্রতিটি কথা, প্রতিটি অনুভূতি তিনি শৈলর সাথে ভাগ করে নেন। দিনের মধ্যে অন্ততঃ পাঁচ থেকে ছবার পূর্ণবাবুর এই বাক্যালাপ চলে। আজও যেমন চলছে।
দেওয়ালে টাঙানো শৈলর ছবির সামনে দাঁড়িয়ে পূর্ণবাবু বলতে লাগলেন,”জানো শৈল,ওরা সাহেবী কায়দায় আমার জন্মদিন পালন করবে। তুমি তো জানো, এসব বিলিতি কায়দার অনুকরণ আমি সহ্য করতে পারি না। আজ তুমি থাকলে ওরা এসব করতে পারত না। কেন তুমি চলে গেলে শৈল আমাকে এভাবে একা রেখে। দুজনে একসাথে গেলে হতো না? না শৈল,আমি ওদের কিছু বলি নি। ওদের আনন্দ আমি নষ্ট করতে চাই না। তুমিও চাইতে না,তাই না শৈল? তবে মনে বড় কষ্ট হচ্ছে,জানো। এক তো তুমি নেই। তোমাকে ছাড়া কোন আনন্দানুষ্ঠানের কথা আমি ভাবতেও পারি না। আর একটা কারণ, ওই কেক কাটা আর সাহেবদের মত সবাই মিলে ‘হ্যাপি বার্থডে’ বলা। সে যে কি অসহ্য শৈল। আমি কি করব বলো। মেনে নেওয়া ছাড়া তো কোন উপায়ও নেই, তাই না।
“তুমি চলে যাওয়ার পর আমি আর হারমোনিয়ামে হাত দিই নি। কিন্তু ওরা আবদার করছে, আমাকে গান গাইতে হবে। তুমিই আমাকে গান গাইতে শিখিয়েছিলে। আজ তুমি নেই,আমি কি করে গান গাইব শৈল? বড় আতান্তরে পড়েছি গো,বড় আতান্তরে পড়েছি।”
গান গাওয়া প্রসঙ্গে একটা কথা পূর্ণবাবুর মনে বারবার আসছিল। রাত্রে সুমিতা যখন দুধ নিয়ে এল,পূর্ণবাবু কিছুটা ইতস্ততঃ করে কথাটা বলেই ফেললেন। বললেন,”বৌমা,একটা কথা বলব?”
সুমিতা পূর্ণবাবুর দ্বিধাজড়িত গলা শুনে কিছুটা অবাক হল। বলল,”বাবা, অত ইতস্ততঃ করছো কেন? অনুরোধ নয়,আদেশ করো বাবা।”
-“না মা। আসলে ব্যাপারটা তোমাদের কাছে একটু বিসদৃশ লাগতে পারে,তাই।”
-“না বাবা। যা-ই লাগুক,তোমার অনুরোধ আমাদের কাছে আদেশের সমান। তুমি নিশ্চিন্তে বলো বাবা।”
-“বলছি কি বৌমা,আমরা যেখানে বসব,সেখানে তোমার শাশুড়ীমায়ের একটা ছবি রাখলে কি খুব অসুবিধা হবে?”
-“না বাবা,একটুও না। আমি আগেই ভেবেছি,মায়ের একটা ছবি মালা দিয়ে সাজিয়ে ওখানে রাখব। মাকে ছাড়া তোমার জন্মদিন পালন যে অর্থহীন হয়ে যাবে বাবা।”
-“তুমি সাক্ষাৎ লক্ষ্মী বৌমা।”
-“বাবা, তুমি কিন্তু আমাকে একটুও ভালবাসো না।”
-“কেন মা, ওকথা বলছ কেন?”
-“আমি তোমাকে অনেকদিন ধরেই বলছি, আমাকে বৌমা না বলে সুমি বলে ডাকবে। কিন্তু তুমি শোন না।”
-“না মা। তার মানে তোমাকে ভালবাসি না,তা নয়। আসলে আমি একটু প্রাচীন পন্থী লোক তো। তাই সহজে আধুনিক হতে পারি না। আচ্ছা মা,ঠিক আছে। এবার থেকে আর ভুল হবে না।”
আজ একুশে জ্যৈষ্ঠ। পূর্ণবাবু আজ পঁচাত্তর পূর্ণ করে ছিয়াত্তরে পা দিলেন। সকাল থেকেই একটা মিশ্র অনুভূতি তাঁর মধ্যে কাজ করছে। একদিকে একটা আনন্দ। কারণ,শৈলর কাছে যাওয়ার সময়টা আরও এগিয়ে আসছে। অন্যদিকে একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি-আজকের সাহেবী কেতার অনুষ্ঠান।
শৈলর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন পূর্ণবাবু। দেখলেন,শৈল হাসছে। পূর্ণবাবু বললেন,”তুমি হাসছ শৈল? আমিও হাসছি, দেখ। আজ বড় আনন্দের দিন,জানো? তোমার কাছে যাওয়ার সময়টা দেখতে দেখতে আরো এক বছর কমে এল। তাই না,বলো? ওরা যা করছে করতে দাও। আমি শুধু তোমার কাছে যাওয়ার দিন গুনি।”
সুমি চা নিয়ে এসেছিল। পায়ের ধুলো মাথায় নিয়ে বলল,”শুভ জন্মদিন বাবা। তুমি চা খেয়ে নাও। আমি এক্ষুণি আসছি।”
পূর্ণবাবু তখনও চায়ে চুমুক দেন নি। সুমি ঢুকল হাতে দুটো বড় বড় প্যাকেট নিয়ে। বলল,”বাবা, এটাতে ঘরে পরার পাজামা-পাঞ্জাবী আছে। আজকে চান করে পরবে। আর এটাতে একটা ধুতি আর সিল্কের পাঞ্জাবী আছে। সন্ধ্যেবেলার জন্য। তোমার ছেলে এনেছে। কিন্তু তুমি বকবে,সেই ভয়ে আসতে পারে নি।”
-“সতুটা এখনও একই রকম রয়ে গেল। ভয় কিসের? ওকে ডাকো তো।”
সত্য এলে পূর্ণবাবু বললেন,”কিরে? এত দামী দামী পোষাক এনে আবার ভয় পাচ্ছিস?”
সত্য মাথা নীচু করে ধীরে ধীরে বলল,”না মানে,তুমি তো এসব খুব একটা পছন্দ করো না তাই।”
-“আরে,দেখ ছেলের কান্ড। ওরে,এখন তো বুড়ো হয়েছি। এবার তো তোদের কথামতোই চলতে হবে।”
সুমি বাধা দিল। বলল,”না বাবা। এ বাড়িতে তোমার উপরে কেউ নেই। তুমি যা বলবে,সেটাই শেষ কথা। তোমার উপরে হুকুম চালাবে কে বাবা?”
দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে পূর্ণবাবু শৈলর কাছে এসে দাঁড়ালেন। মুখে তৃপ্তির একটা নির্ম্মল হাসি। বললেন,”জানো শৈল,আজ তোমার বৌমা যা রেঁধেছে না,তোমাকে কি বলব। নারকেল দিয়ে ভাজা মুগের ডাল,ফুলকপির ডালনা আর তিন রকমের মাছ। তুমি বেগুন দিয়ে মৌরলা মাছের যে চচ্চড়িটা করতে,হুবহু সেইটা করেছে। এছাড়া বড় কাতলার দই মাছ আর পার্শে মাছের ঝাল। একটু বেশীই খেয়ে ফেলেছি, বুঝলে। এবার হজম হলে হয়। না না,এমন কিছু বেশী খাই নি। আই-ঢাই করছে না। তবে বয়সটার তুলনায় একটু বেশী,এই যা। কি করব বলো? বৌমা এত জোর করল। বৌমার মনটা হয়েছে ঠিক তোমার মতো,বড্ডো নরম।”
পূর্ণবাবু একটু শুয়েছিলেন। চোখটা লেগে এসেছিল। তখন প্রায় সাড়ে তিনটে। বুকের মাঝখানে একটা চিনচিনে ব্যথা। সাথে শারীরিক অস্বস্তি। পূর্ণবাবু বেল বাজিয়ে সুমিকে ডাকলেন। সুমি এলে বললেন,”সুমি,মনে হচ্ছে একটু হজমের গোলমাল হয়েছে। তুমি আমাকে লিকুইড অ্যান্টাসিডটা এক চামচ দাও তো।”
সুমি ওষুধ দিয়ে বলল,”বাবা, এ অবস্থায় বিছানায় শোওয়া ঠিক হবে না। তুমি এই ইজি চেয়ারে বোসো। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।”
ঘন্টাখানেক বাদে পূর্ণবাবু কিছুটা আরাম বোধ করলেন। বুকের ব্যাথাটা কমে এল। তবে অস্বস্তিটা রয়েই গেল। পূর্ণবাবু সুমিকে বললেন,”এখন অনেকটা ভাল লাগছে মা। তুমি যাও। একটু বিশ্রাম নিয়ে নাও। সন্ধ্যেবেলা তো আবার অনেক ঝামেলা আছে।”
-“না বাবা। আমার বিশ্রাম লাগবে না। আমি আর একটু তোমার কাছে বসি। তুমি চোখ বোজো।”
ঘন্টাখানেক পরে সুমি চলে গেলে পূর্ণবাবু শৈলর দিকে তাকালেন। বললেন,”শৈল,তুমি কি আমাকে ডাকছ? আমি যে তোমার ডাক শুনতে পাচ্ছি। বুকের ভিতর তোমার ডাকের অনুভূতি বড় স্পষ্ট শৈল। বড় স্পষ্ট।”
সন্ধ্যেবেলা অতিথি অভ্যাগতরা এলে পূর্ণবাবু তৈরি হয়ে বেরিয়ে এলেন। শরীরের অস্বস্তিটা একটু একটু করে বাড়ছে। পূর্ণবাবু স্বাভাবিক থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁর জন্য আজকের অনুষ্ঠান ভেস্তে যাক,এটা তিনি চান না। কিন্তু সুমির দৃষ্টি এড়াতে পারলেন না। সুমি পাশে এসে নীচুস্বরে বলল,”বাবা, তোমার শরীরের অবস্থা তো ভাল নয় মনে হচ্ছে। কি কষ্ট হচ্ছে বাবা?”
পূর্ণবাবু বললেন,”না মা। এমন কিছু নয়। দুপুরে ঠিকমতো বিশ্রাম হয়নি তো, তাই একটু অন্যরকম লাগছে। ও কিছু নয়।”
পূর্ণবাবু লক্ষ্য করলেন,অতিথিরা প্রায় সকলেই উপস্থিত। কিন্তু কেক-এর চিহ্ন মাত্র দেখা যাচ্ছে না। তবে কি কেক কাটা হবে না? বৌমা কি অন্য ব্যবস্থা করেছে?
জ্যৈষ্ঠ মাস। প্রবল গরম। সত্য উপস্থিত সবাইকে ঠাণ্ডা পানীয় দিয়ে প্রাথমিক আপ্যায়ন করল। পূর্ণবাবু নিলেন না। ও জিনিষটি তিনি কোনদিনই পছন্দ করেন না।
সুমি বলল,”বাবার শরীরটা খুব একটা ভাল নেই। আমরা তাই আর দেরী করব না। প্রথমে বাবা একটু পায়েস মুখে দেবেন। তারপর আমরা সবাই পায়েস খাব।”
পূর্ণবাবুর বিস্ময়ের আর সীমা-পরিসীমা রইল না। কি করেছে বৌমা। কেক না এনে পায়েস রান্না করেছে। এ মেয়ে তো সাক্ষাৎ লক্ষ্মী।
পায়েস পর্ব সমাধা হলে,সুমির বাবা সৈকতবাবু বললেন,”এবার যদি আমরা পূর্ণবাবুর গলায় একটা গান শুনি, কেমন হয়? কি পূর্ণবাবু,আপত্তি নেই তো?”
সুমি বাধা দিল। বলল, “বাবার শরীরটা ভাল নেই। গান আজ না-ই বা হল?”
পূর্ণবাবু বললেন,”না মা। তোমরা এত সুন্দর ব্যবস্থা করেছ। তাছাড়া, আমি তো এখন মোটামুটি ভালই আছি মা। সবার যখন অনুরোধ,তখন গাই না একটা গান। তুমি শুধু শৈলর ছবিটা একটু সামনে এনে রাখো।”
একটা গদির উপরে গালিচা পাতা হয়েছিল। পূর্ণবাবু হারমনিয়ামটা টেনে বসলেন। প্রায় তিন বছর পরে আজ গাইতে বসেছেন।
হারমনিয়ামে সুর তুলতে তুলতে পূর্ণবাবু একদৃষ্টে শৈলর ছবির দিকে চেয়ে রইলেন। মনে মনে বললেন,’শৈল, তোমার ডাক আমি শরীরের প্রতিটি বিন্দুতে অনুভব করছি। বুঝতে পারছি, তোমার কাছে যাওয়ার সময় হয়েছে।’ তারপর ধরলেন,
“এ জীবনে যত ব্যথা পেয়েছি,
তুমি যে দিয়েছ সবই ভুলায়ে।
মুছায়ে দিয়েছ আঁখিজল,
কোমল পরশ তব বুলায়ে।”
অনুষ্ঠানে নিমেষে স্তব্ধতা নেমে এল। যাঁরা নীচুস্বরে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন, তাঁরাও থেমে গেলেন। পূর্ণবাবু গাইছেন,
“আহত এ ঝড়ের পাখিরে,
ঠাঁই দিলে বক্ষের নীড়ে।
মোর আঁধার গগনে চাঁদ হয়ে,
হৃদয় সাগর দিলে দুলায়ে।”
সুমি লক্ষ্য করল,পূর্ণবাবুর দৃষ্টি দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। একটা অসহনীয় কষ্ট তাঁকে গ্রাস করছে। পূর্ণবাবু তখনও গাইছেন,
“এ জীবন মরুসম ছিল গো,
তুমি সেথা আনিলে বসন্ত।
বুঝিলাম ধরনীতে রয়েছে…………….”
গান শেষ হল না। পূর্ণবাবু বুকে হাত চেপে গদির উপরে লুটিয়ে পড়লেন। সুমি পাশেই ছিল। তাড়াতাড়ি পূর্ণবাবুর মাথাটা নিজের কোলে নিয়ে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,”বাবা, কি হল বাবা?” বলেই দেখল,পূর্ণবাবুর জ্ঞান প্রায় নেই। তার উপর প্রবলভাবে ঘামছেন। সুমি আর্তনাদ করে উঠল,”ডাক্তারকাকা।”
ডাক্তার সরকার ইতিমধ্যে পূর্ণবাবুকে পরীক্ষা করতে আরম্ভ করছিলেন। বললেন,”এক্ষুনি একটা গাড়ি রেডি কর। হাসপাতালে যেতে হবে।”
পূর্ণবাবু ধীরে ধীরে চোখ মেললেন। ক্ষীণকন্ঠে বললেন,”না সুবীর। আমাকে আর কোথাও নিয়ে যেয়ো না। কোন লাভ হবে না। আমার হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। সমস্ত শরীর অনুভূতি হারাচ্ছে। শৈল এসেছে আমাকে নিতে। আমাকে তোমরা যেতে দাও।”
পূর্ণবাবুর কথা প্রায় বন্ধ হয়ে এল। পূর্ণবাবু ভাষাহীন দৃষ্টিতে কাউকে খুঁজতে লাগলেন। তারপর আরও অস্পষ্ট,ক্ষীণকন্ঠে কোনক্রমে বললেন,”শৈল,তুমি এসেছ শৈল? তুমি এসেছ?”
পূর্ণবাবুর দুচোখ বন্ধ হয়ে এল। পূর্ণবাবু স্থির হয়ে গেলেন।।
*************************************
চন্দ্রকান্তি দত্ত

চন্দ্রকান্তি দত্ত পরিচিতিঃ
ভারতীয় জীবন বীমা নিগমের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। জন্ম মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুনা শহরে ১৯৫৯ সালে। স্কুল শিক্ষার শুরুটা পুরুলিয়ায় হলেও, প্রায় পুরোটাই হয়েছে দুর্গাপুরে। উচ্চ শিক্ষাও সেখানেই। নিজেকে লেখক না বলে গল্পকার বলতেই বেশী ভালবাসেন। লেখার শুরু গত শতকের নয়ের দশকের শেষ দিকে, তাও একজন সিনিয়র সহকর্মীর উৎসাহ ও চাপে। সেই থেকে টুকটাক লিখলেও, শারীরিক অসুস্হতার কারণে  লেখাতে ছেদ পড়েছে অনেকবার। এখন, চাকরী থেকে অবসরের পরে, প্রায় নিয়মিত লেখেন। গল্প ছাড়াও কয়েকটি কবিতাও লিখেছেন-বাংলা ও হিন্দিতে।

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!