লাল সবুজের মেলা
সাত্যকি লাহিড়ি
একটি ছোট্ট মেয়ে ছিল দিঠি। সে তার মায়ের সাথে থাকতো। তার যখন মাত্র তিন বছর বয়স সে তখন তার বাবাকে হারায়। তার এখন বয়স নয়। মায়ের সাথে সে একলা থাকতো। একদিন দিঠি তার বন্ধুদের কাছ থেকে জানলো যে কোন এক জায়গায় একটা মেলা বসেছে,নাম লাল সবুজের মেলা। শুনে দিঠি মার কাছে আবদার করলো মেলায় যাবার। সে যখন মা কে গিয়ে কথাটা বলল তখন মা তো রাজি হলেনই না বরং দিঠিকে বকুনি দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিলেন। বেচারী দিঠি আর কি করে,মনমরা হয়ে ঘরে ফিরে গেল। মা দিঠি কে একলা যেতে দিতে চাননি,পাছে দিঠি হারিয়ে যায়। গোধূলি বেলায় দিঠির বন্ধু মায়া দিঠিকে ডাকতে এলো,”কি রে দিঠি লাল সবুজের মেলায় যাবি না?” “না রে! মা বারণ করেছে।” দিঠি বলল। মায়া একটু দুঃখ পেয়ে চলে গেল। পরেরদিন মা দিঠি কে আদর করে খেতে ডাকলেন,দিঠি অভিমান করে থাকলে,মা বললেন,”সন্ধ্যেবেলায় মেলায় যাব আমি,তোকে নিয়ে যাব না ৷” শুনে সে তড়াক করে লাফিয়ে উঠে মাকে জড়িয়ে ধরল। খাওয়াদাওয়া করে সন্ধ্যেবেলায় দুজনে চলল মেলায়। সত্যি লাল সবুজের মেলা সে কোনদিন দেখেনি। নাগরদোলা আছে,জিলিপি ভাজা হচ্ছে,কত খেলনা সাজানো আছে,ঘুগনি,ফুচকা আরো কত কি! দেখে দিঠির খুব আনন্দ। মা কে বলল তাকে পুতুল কিনে দিতে। মা তাকে দুটি পুতুল কিনে দিলেন,জিলিপি কেনা হল। মেলা থেকে বেরিয়ে আসার পথে দিঠি লক্ষ্য করল তার মতো একটি মেয়ে মায়ের সাথে দাঁড়িয়ে বেলুন বিক্রি করছে। মাকে জিজ্ঞেস করল,”ঐ মেয়েটা মেলায় কিছু কিনছে না কেন?” মা বললেন,”ও যখন বেলুন বিক্রি করে পয়সা পাবে তখন ও খাবার কিনতে পারবে।”
শুনে দিঠির খুব খারাপ লাগলো। সে তার দুটি পুতুল থেকে একটি পুতুল,আর জিলিপি মেয়েটি কে দিল। মেয়েটি তো ভারী খুশি। দিঠির মাও এই দেখে আনন্দ পেলেন। বললেন,”এই ভাবেই মানুষের পাশে থেকো।” দিঠির মনটা লাল সবুজে ভরে গেল। সে মহা আনন্দে মার গলা জড়িয়ে ধরলো ৷
*************************************
সাত্যকি লাহিড়ি পরিচিতি:- স্কুল-পাঠভবন,বয়স-৯,গান করতে আর খেলতে ভালবাসে।
ভারী সুন্দর লিখেছ সাত্যকী,বুঝতে পেরেছি তুমি ও দিঠির মতো অমন সুন্দর মনের।এমনি আরও লেখা লেখ 🥰