Shadow

কবিতা – বিদ্যুৎ পাল

 

ছবি : ব্রতী ঘোষ

কবিতাবিদ্যুৎ পাল 

          ভিডিও ফোনকলে গান 

সেদিন দুপুরে আগারা ঝিলের ঢালু কিনারে দাঁড়িয়ে
ভিডিও ফোনকলে তোমায় গান গেয়ে শুনিয়েছিলাম।
আমাদের জন্য ব্যাপারটা প্রথম,এবং হয়ত একবার
বা বড়োজোর আরো দুয়েকবার হয়েই থেকে যাবে।
দূর থেকে জলে বিলি কেটে আসা হাওয়ায় ভাবছিলাম
কী গাই, তখনি মনে এল বছর পঞ্চাশ আগের বিশ্বে,
অলেখা গানের খোলা পংক্তিদুটোপৃথিবী তোমার
নতুন জন্ম দেখে যাবদেখে যাব? সত্যিই? নাকি
জন্ম হচ্ছে; আশার ধরণটাই বাসি,তাই চিনছি না?
সব গাছে তো কুঁড়িমুখ ফোটে না একদিনে, বরফের
দেশে বরফও,শুধু পাতলা হয়,চিড় ধরে কোথাও,
এমনকি উল্টে ঝরে নিভিয়ে দেয় শেষ আগুনটুক্‌ও!
চিনতে হয় চোখে,গাঝাড়ায় প্রত্যাসন্ন ঋতুবদল ……
নতুন প্রজন্ম নিজের মত জাগে,পাল্টায় বাঁধা ছক;
পৃথিবী,ভারত,কেন আমার ভাবা পথে এগোবে?
বেঁচে আছি যখন,পরের ভিডিও কলে আমি নিশ্চই
গানটা বদলে দেব। না পারি,অন্ততঃ দেখাব বেশকিছু
নতুন জন্ম পৃথিবীর,একুশের এই দুতিনটে দশকে।
———————————————————-

    মাঝরোদ্দুর 

ভাষার কথা যদি বলো,
মা আমার বাংলা তবে,
হিন্দিও ধাই মা।
মাঝরোদ্দুর আমার খেলা,
একটেরে ছায়ায় গিয়ে
ছন্দই পাই না
মুখে লেথোই ধড়িবাজির
তিলকধারী সরকারি
ভাষার দাদাগিরি।
কিন্তু মাথায় থাকে পাড়ার
চমইন ধাইমায়েরও হাত,
পথ দাপিয়ে ফিরি।
মাঝরোদের কুয়োতলায়
বালতিটা ওই ডুবো ডুবো
পাঠাচ্ছে ঢুপঢুপ?
মাতৃভাষায় খুঁজি বরং
কার বুকে বাজছে আর
কার বুকটা চুপ!
জলই আমার দুই মা,
যখন যেমন শব্দ, লিপির
জুড়ি করতল
প্রতিধ্বনি শুনি আমার
ডাকের,খাই কুয়োর মিঠে,
কেঁপে ওঠা জল।।
**************************

বিদ্যুৎ পাল পরিচিতি
জন্মতারিখ ২৪শে জুলাই ১৯৫২। জন্মস্থান পাটনা (বিহার)। পড়াশুনো সবটাই পাটনায়। চাকরি  ব্যাঙ্কে,বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। সারাদিনের ব্যস্ততায় শামিল নিজের লেখালিখি,পড়াশুনো,বিহার হেরল্ডের সম্পাদনা,দেশবিদেশের সঙ্গীত শোনা,বইপত্র সম্পাদনা। বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা,গল্প ও প্রবন্ধ (প্রবন্ধটা অবশ্য বাংলা,হিন্দী এবং ইংরেজি,তিন ভাষাতেই লিখতে হয়) প্রকাশিত। আপাততঃ ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘বিহার হেরল্ড’এর সম্পাদক,ও বিহার বাঙালি সমিতির মুখপত্র ‘সঞ্চিতা’র যুগ্মসম্পাদক।

 

 

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!