অসময়ে
চিন্ময় চক্রবর্তী
তুমি অসময়ে এসো।
সময়ের যূপকাষ্ঠে নিহত হোয়ো না।
যখন সময় শেষ, পৃথিবী ঘুমিয়ে গেছে,
সুমেরু পর্বত একা জেগে আছে শুধু,
তুমি সে সময়ে এসো।
বন্ধ হয়ে গেছে যদি দরজার তালা,
শেষ বাঁশি বেজে গেছে, শেষ সব খেলা,
পূজারী সেরেছে পুজো,
বেজে গেছে শঙ্খধ্বনি তার,
তারপর তুমি এসো।
আমার কাছেতে। বারবার।
তুমি অসময়ে এসো।
ঘুমাবো না আমি।
অদৃশ্য হবো না কোনো গভীর জঙ্গলে।
হারিয়ে যাব না কোনো ভীড়ে।
তুমি অসময়ে এসো।
খুব ধীরে ধীরে।
আমার তো তাড়া নেই।
আজকাল অখন্ড অবকাশ।
দু’কানের পাশ দিয়ে শীতল বাতাস বয়।
এখন শুনতে পাই।পাখি ডাকে,
দূরে কোনো মেয়ে, কোথাও তাকিয়ে আছে অপলকে চেয়ে,
পরিষ্কার দেখি আমি।
কোনো বাধা নেই।
ঝিম ঝিম ভাব নেই, দ্বেষ নেই।
অকারণে রাগ নেই। ঘৃণা নেই কোনো।
সান্ধ্য ঘন্টা বাজছে গো! কান পেতে শোনো।
কিছু শত্রু আজও আছে গুপ্তঘাতকের মত।
তবু তারা আজ সব মাথা নীচু করে বসে,
টাকা গোনে।
তাই, কোনো ভয় নেই।
তুমি অসময়ে এসো খানিকটা ভালবাসা নিয়ে।
মায়া দয়া, তাও এনো।
আমার ঘিরেছে আজ ক্ষমার প্রাচীর।
ধাক্কা খেয়ে পড়ে আছে শত শত ব্যর্থ তির।তার পাশে।
দেখে নিও, খুব চেনা লাগবে তোমার।
অসময়ে এসো তুমি ধীর পায়ে,
শুনিয়ো নূপুর ধ্বনি,
দেহে ফুলহার।
*************************************
চিন্ময় চক্রবর্তী পরিচিতি:
জন্ম ১৯৬৫ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি চন্দননগরে। রসায়নে সাম্মানিক নিয়ে স্নাতক। তারপর পরিবেশ বিজ্ঞানে স্নাতোকোত্তর। তারপর কর্মক্ষেত্র ও নানান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বুড়ি ছোঁওয়া। তার মধ্যে আই আই এম কলকাতা অন্যতম। চারটি স্বনাম ধন্য জাতীয় ও বহুজাতিক ঔষধ সংস্থায় নানান পদে কাজ করার ৩৩ বছর ৪ মাসের অভিজ্ঞতা। গত ২০২২ শের ৬ই মে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারনে একটি বহুজাতিক সংস্থার জাতীয় অধিকর্তার পদ থেকে স্বেচ্ছাবসর।
জীবন দর্শনের পাঠগুলো কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস ও ভ্রমন কাহিনীর মাধ্যমে প্রকাশ করতে ভালবাসেন। নিজের নামে ও ছদ্মনাম “নীলকণ্ঠ ফেরিওয়ালা” নামে লিখতে ভালবাসেন। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ ও একটি উপন্যাস প্রকাশিত ।