
সম্পাদকীয়
দেবদত্ত বিশ্বাস
বছরঘুরে মা আবার এসেছেন পিতৃভূমে। শালুক,শিউলি,কাশফুলে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। কিন্ত সেই সোনালী রোদ্দুর কোথায় গেল?কোথায় গেল আসমানী রঙের আকাশে পেঁজাতুলোর মতন ভাসমান মেঘ বালিকাদের উচ্ছ্বলতা? এর বদলে দ্বিপ্রহরেই অন্ধকার। ধূসর মেঘের ওড়না জড়ানো এ যেন এক অস্পষ্ট বাদল দুপুর! অক্টোবরের শুরুই যে এভাবে!
কাগজে কলমে শরৎ এসে গেলেও বর্ষার কিন্ত যাবার নাম নেই। আবহাওয়া বলছে পুজোর চারদিন বাংলা ভাসবে নিম্ন চাপে। এমনিতে নানান রকম চাপে বঙ্গজীবন অতিষ্ঠ। সব প্রতিকূলতাকে দুহাতে সরিয়ে “কুলায়ফেরা” কিন্তু তাঁর আপন কর্মে নিয়োজিত স্থিতধি,অনড় এক উৎসর্গিত সাধক।
শারদ সংখ্যা “কাশবন”এবারে চতুর্থ বছরে পদার্পণ করলো। মারণ ভাইরাসের সেই মৃত্যু আতঙ্কের রুদ্ধদ্বার বছরগুলোতেও কুলায় ফেরার কাশবন ফুটেছে স্বাভাবিক ছন্দে। এবারও এসেছে নতুন আঙ্গিকে। পুরনো কলমের পাশাপাশি একঝাঁক নতুন কলম। এসবের মধ্যেই ঘটে গেছে এক নতুন ঘটনা। কুলায় ফেরার নিজস্ব সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী তাঁর নিজস্ব পরিচিতি লাভ করেছে। সরকারি ভাবে নথিভুক্ত কুলায়ফেরার সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর রেজিস্টার্ড নাম হয়েছে “কুলায় ফেরার সঙ্গীতাঞ্জলী”। এটা আমাদের কাছে আনন্দের কথা। গর্বের কথা। ভার্চুয়ালিটি থেকে বাইরে বেরিয়ে চোখের সামনে ধরাতলে কুলায় ফেরা এরমধ্যে একাধিক বার বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। গত শীতে বেহালা বইমেলায় পল্লীগানের অনুষ্ঠান খুব জনপ্রিয় হয়েছিলো। বইমেলায় আসা বিভিন্ন সুজন ভীড় করে ধৈর্য ধরে অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছিলেন। আগামী ডিসেম্বরেও বেহালা বইমেলায় অংশ নিতে চলেছে কুলায়ফেরা,তার স্বনামে। অনুষ্ঠানের প্রস্ততি শুরু হয়ে গেছে। সঙ্গীতের অসাধারণ প্রতিভা সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষ পালনেরও পরিকল্পনা রযেছে। আরও একটি সাহিত্য প্রতিযোগিতার পরিকল্পনাও চলছে। এ সবের মধ্যে তবুও একটি কথা বারবার ফিরে আসে। বিজ্ঞাপন। স্পনসর। এসবের সহায়তা পেলে কুলায় ফেরা তার সংস্কৃতির ধ্বজাকে উড্ডীন রাখতে পারবে দৃঢ়তার সঙ্গে। নয়তো শ্রদ্ধেয় সলিল চৌধুরীর কথাতেই বলা যায় “…….জনম জনম ভরে/পতাকার মত ধরে নিয়ে ইতিহাস/যেতে যেতে ক্রমে ক্রমে/কখন গিয়েছি থেমে/ভেঙে গেছে শ্বাস……!” তবে কুলায় ফেরার শক্তি তাঁর প্রবল শক্তিশালী পাঠক/পাঠিকা কূল,শিল্পীকূল,শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সুজনবন্ধুদল। আমরা প্রত্যয়ী,এঁদের মধ্যে কেউ না কেউ ঠিক সময়ে এই দায়িত্বধ্বজ তুলে নেবেন নিজ হাতে। মাথা উঁচুকরে,ঠিক এভাবেই এগিয়ে চলবে কুলায় ফেরার সংস্কৃতির রথ,শিখর থেকে শিখরে।
পরিশেষে,কুলায়ফেরা পরিবারের সকল স্তরের পাঠকপাঠিকা,লেখনীদল,কম্পিউটর নিয়ন্ত্রক,শুভাকাঙ্ক্ষীকূল,প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে শুভেচ্ছা। শারদ শুভেচ্ছার পাশাপাশি সকলের আগামী দিন গুলি সুস্স্থতা সহ ভালো কাটুক,এটাই আমাদের প্রার্থনা,এটাই আমাদের একমাত্র কামনা।
নমস্কার!

দেবদত্ত বিশ্বাস
