Shadow

কবিতা – বিদ্যুৎ পাল

PC: Facebook

বনভোজন

বিদ্যুৎ পাল

বহুদিন হয়ে গেল ভাড়াবাড়ি বদল করি না।
নিজের বাড়িতে আছি; ফ্ল্যাটবাড়ি। ফোনে,“কুম্‌হ্রার? 
মানে সেই পুরাতত্ত্ব বিভাগের পার্ক,অশোকের 
দরবার?” 
               শুনে বলি,হ্যাঁ,দাদা,সাম্রাজ্য তাঁহার!
পার্ক মানে অনেকেরি মধুস্মৃতি বনভোজনের!
যদিও যাইনি সে পার্কে বনভোজনে কোনোদিন।
বনভোজন সবার কপালে থাকে না।
                                             কবে আসে
সে সময় যখন সবাই,মানে যে ক’জন হলে,
আশৈশব,বলতে পারি সবাই,পৌঁছেছি কোথাও 
একসাথে?  
              কখনো পৌঁছোবো? স্মৃতিতে থাকবে শুধু
নদীচরে ধুলো ওড়া,কাঁপা কাঁপা কিছু প্রিয় মুখ,
অসমাপ্তির একটি অপরাহ্ন,ক্ষীয়মাণ ডাক…!
না থাকলেই যেন ভালো হত,বার বার ফিরে
সেদিকে তাকিয়ে খোঁজা,রোদের ওপারে…তারপর?
——————————————————–

ভেজা ডেক

বিদ্যুৎ পাল

এত আধুনিক মাইকেল কবিজন্ম আপনার ! 
জাহাজে রেলিঙ ধরে যশোরের কপোতাক্ষ নদ 
আগেও হয়তো দৃষ্টি মেলেছিল বঙ্গোপসাগরে!
তারো চোখে ভাতের,ভালোবাসার,ক্ষোভ ছিল,স্বপ্ন …

কেননা জাহাজ ছিল,দ্বীপ ছিল,সতেজ বাণিজ্যে
বিহারি গিরমিটিয়া লাখে লাখে যাচ্ছিল যেমন,
পদ্মাও তো শুনেছিল নিশি ডাক হাসান মিয়াঁর !

কলকাতিয়া বাংরেজ তবু আপনিই,অভিমানে
রুজির তালাশে নব কাব্যস্পন্দে রোদে আনমনা
ছপছপিয়েছিলেন ভেজা ডেক,ভাঁড়ারের সিঁড়ি…

তামিল বনের গাঢ় ছায়া থেকে সঙ্গমের কবি –
যুদ্ধ ও প্রেমের আদিমাতৃকারা – দেখল কি শ্যাম 
শ্মশ্রুময় যুবমুখে,জ্ঞানে,কাব্যে,স্বরূপসন্ধানে, 
সুদূর বাংলার এক জ্বালাময় যোদ্ধার উদ্বেগ? 

সবই পেলেন সেই দূর দেশে স্বেচ্ছানির্বাসনে!
প্রথম দাম্পত্য,রুজি,মাতৃভাষে ফেরার তাগিদ!
কে বলবে অমিত্রাক্ষরে,মিলটন ছিল কত, 
সস্তার টিকিটে কত সাগরের তরঙ্গ নির্ঘুম?

ঘাড় গুঁজে সনির্বন্ধ স্মিতহাস্যে ভাতের জোগাড়, 
শরীরে সত্ত্বায় তবু সম্রাটের ক্ষিন্ন অস্থিরতা…
প্রিয়তমা নারীদের ক্ষতে বিদ্ধ হচ্ছিলেন সেই
কবে থেকে! সেপ্রশ্নেই পেলেন কি বীরাঙ্গনাদের?
নারীঘাতী ঢিল তুলে মুফ্তীর শার্সি ভাঙচুর? 
বেদনার পরাক্রম ভাষায়,কলমে আপনার!  
***************************************

This image has an empty alt attribute; its file name is 10402428_692796074129862_2677252761706232863_n-150x150.jpg

বিদ্যুৎ পাল পরিচিতি
জন্মতারিখ ২৪শে জুলাই ১৯৫২। জন্মস্থান পাটনা (বিহার)। পড়াশুনো সবটাই পাটনায়। চাকরি  ব্যাঙ্কে,বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। সারাদিনের ব্যস্ততায় শামিল নিজের লেখালিখি,পড়াশুনো,বিহার হেরল্ডের সম্পাদনা,দেশবিদেশের সঙ্গীত শোনা,বইপত্র সম্পাদনা। বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা,গল্প ও প্রবন্ধ (প্রবন্ধটা অবশ্য বাংলা,হিন্দী এবং ইংরেজি,তিন ভাষাতেই লিখতে হয়) প্রকাশিত। আপাততঃ ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘বিহার হেরল্ড’এর সম্পাদক,ও বিহার বাঙালি সমিতির মুখপত্র ‘সঞ্চিতা’র যুগ্মসম্পাদক।

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!