সম্পাদকীয়
দেবদত্ত বিশ্বাস
সুখের মাস পৌষ মাস। আনন্দের মাস পৌষ মাস,উৎসবেরও। এই মাসের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে বাঙালীর বিভিন্ন পার্বণ। কুলায় ফেরার আনন্দ ঘেরা পৌষ সংখ্যার নামও তাই পার্বণী। এমাসেই বিশ্বপিতার জন্মদিন। ইংরেজি সালের ২৫ শে ডিসেম্বর। এমাসেই আসে ইংরেজি সালের নতুন বছর। ১লা জানুয়ারি থেকে যা শুরু হয়। ঘন কুয়াশায় শীতের চাদরে মোড়া,ঠকঠক করে কাঁপার মাস হলো পৌষ মাস। আগুনে গা তাপিয়ে পিঠেপুলি খাওয়ার মাস পৌষ। কথায় বলে,মাঘের শীতে বাঘ পালায়। কিন্ত এবার যেন মনে হচ্ছে,তার আগে,এই পৌষেই বাঘ পালাবে! এ যেন টেস্ট ম্যাচে জিওফ্রে বয়কটের বিরক্তিকর ঠুকঠুকানি আর কুড়ি-কুড়ির স্লগওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনীর চালিয়ে খেলা! সংক্রান্তি র আগেই তো শীতে জবুথবু বাংলা। গোটা পৌষ ঘুমিয়ে থেকে পৌষের শেষাশেষি পাহাড় থেকে সাগর,কুয়াশার চাদরে মোড়া বাংলা যেন কবিগুরু র কথায়..”হিমেল ঘন ঘোমটা খানি,ধুমল রঙে আঁকা..”!নতুন বছর শুরুর পর থেকে পতন হচ্ছে পারদের। কিন্ত এমনটা তো ছিলোনা? মনে হচ্ছিলো এবার সেই শীতের ঝাপটা গেলো কোথায়? অগ্রহায়ণ চলে গেলো,কিন্ত তেমন শীত এলো কই? খেয়ালি প্রকৃতি বদলে দিলো সব,এক লহমায়। আবহ বিজ্ঞানীরা বলছেন,শীতটা আটকে রেখেছিল উত্তর পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বাধা। সেই বাধা কেটে যাওয়ায় কনকনে উত্তুরে হাওয়া ঢুকছে বাংলায়।তবে সার্বিক চিত্র কিন্ত এমনটা নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation বা WHO)র কথায় গত এক শতাব্দী তে এই নীল গ্রহের তাপমাত্রা বেড়েছে গড়ে ১.২ থেকে ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পৃথিবী ক্রমশঃ উত্তপ্ত হচ্ছে। এন্তার বনছেদন,কলকারখানা নির্গত গ্যাস,গাড়িঘোড়ার জ্বালানী,যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রগুলির দেদার গুলি বোমার ব্যবহারে ধরণী অতিষ্ঠ। ন্যাশনাল এয়ারোনটিক্স অ্যান্ড রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা নাসা র এক সমীক্ষায় জানা যায়,গত দেড়শো বছরে ২০১১-২০ দশকটি ছিলো উষ্ণতম! এর জন্য দায়ি বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড,মিথেন জাতীয় গ্রীন হাউস গ্যাসের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি! উন্নত বিশ্বের কিছু দেশের কান্ডজ্ঞানহীন কাজকর্ম,বৃক্ষছেদন,নিয়ন্ত্রণ হীন কলকারখানার দূষণ,অপদার্থতা এই বিপদ ডেকে এনেছে। আমেরিকা,ব্রিটেন,চীন,রাশিয়া এবং ভারত এই তালিকার প্রথম পাঁচে রয়েছে। আমাদের দেশের ব্যপক বনভূমি নাশ,পেট্রোল,ডিজেল জাত জ্বালানীর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার যার অন্যতম কারণ। সম্পাদকীয় তে বিশ্বের উষ্ণায়ণ নিয়ে জ্ঞানগর্ভ রচনা লেখার কোনও উদ্দেশ্য এখানে নেই। পৌষের সেই ‘শীতের বেলা’র অভাবের কারণ খুঁজতে গিয়ে কথাগুলো এসে গেলো। তবে,প্রাকৃতিক ভারসাম্যগত সমস্যা যাইই থাক না কেন,কুলায় ফেরার পার্বণী সংখ্যা কিন্ত বর্ণময় লেখনীসম্বৃদ্ধ হয়েই এসেছে। এবারে নানান কবিতা দিয়ে যেমন সাজানো হয়েছে কবিতা বিভাগটি,উষ্ণতা কিন্তু এখানেও! তেমনি পুরনো ও নতুন কলমে সেজে উঠেছে কুলায় ফেরার সাহিত্য পত্রের সঙ্কলণ।প্রবন্ধতেও বিষয় বৈচিত্রের ঘাটতি নেই। নজরুল শতবার্ষিকী উপলক্ষে এবার কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গীত সৃষ্টির বহুমুখী প্রতিভা নিয়ে রয়েছে একটি তথ্যমূলক প্রবন্ধ। এই পৌষ পার্বণে কুলায় ফেরা তাঁর সঙ্গীতের ডালি উজাড় করবে না,তা হতে পারে না। অন্তর্জাল এবং বাস্তবের মাটি,দু ক্ষেত্রেই কুলায় ফেরা হাজির হচ্ছে তাঁর সঙ্গীত সম্ভার নিয়ে! আগামী দিনে,বিভিন্ন তারিখে,বিভিন্ন স্থানে। সঠিক সময়ে এ বিষয়ে আলোকপাত করা হবে।
ইংরেজি সাল বদলে গেল। ২০২৩ সাল চলে গেল ইতিহাসের পাতায়। এলো ২০২৪ সাল।। এবারে ২৩শে জানুয়ারি,২০২৪ ভারত মাতার সোনার সন্তান নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৭ তম জন্মজয়ন্তী। নেতাজীকে কুলায়ফেরা পরিবারের পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম। ২৬ শে জানুয়ারি ২০২৪ ভারতের ৭৫ তম সাধারণতন্ত্র দিবস। দেশমাতার পায়ে মাথা রাখি আমরা।
পরিশেষে,কুলায়ফেরা র সমস্ত লেখক লেখিকা,পাঠক পাঠিকা,সমস্ত শুভানুধ্যায়ী,সকল স্তরের শিল্পী,যন্ত্রী,কম্পিউটরকুশলী, নেপথ্যশিল্পী,সকলকেই কুলায়ফেরা পরিবারের তরফে প্রীতি ও ভালবাসা। স্বাগত ২০২৪। সকলকে ২০২৪ সালের শুভেচ্ছা। আগামী দিনগুলি ভালো কাটুক।
নমস্কার।
দেবদত্ত বিশ্বাস।
সম্পাদক।
কু লা য় ফে রা
চমৎকার সম্পাদকীয়🙏
Khub valo likhechen. Global warming sampork jotharthoi likhechen. Global worming samporke manush k sacheton korte kono podokkhep naoar anurodh roilo. Ami nijeo sei kaje broti hote chai. Dhonyobad o namoshkar