বন বাংলো
মধুমিতা মিত্র
সুকুমারের আজ বড়ো আনন্দের দিন। কলেজ থেকে বেরোনো–চাকরি পাবার পর প্রথম বার তিন বন্ধুতে মিলে চলেছে পাহাড় পরিক্রমণে। নানা!–পরি ক্র ম ণ নয় তো ! যাচ্ছে ওরা পাহাড় পরিভ্রমণে;তা ও কিন্তু যে সে পাহাড় নয়। ভারতবর্ষের উত্তর পূর্বাঞ্চলের অরুণাচল প্রদেশ,যার উচ্চতা,দুর্গমতা,সৌন্দর্য গোটা দেশের আলোচনার,আকর্ষণের বিষয় সেই অরুণাচলেই তারা তিনমূর্তি চলেছে আনন্দ ভ্রমণে।উফফফ বলাই হয় নি–এই তিন মূর্তিও কিন্তু কলেজেরও খুব আলোচনার বিষয় ছিল কারণ এদের মধ্যে এক মূর্তি যে শ্রী নয়,সে তো শ্রী ম তী.. শত্তুরের মুখে ছাই দিয়েও এই তিন মূর্তি কিন্তু পুরো কলেজ কালটাই এক আত্মা,এক প্রাণ হয়ে সবার চোখ–মন টাটিয়ে তাদের সখ্যতাকে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর ক‘রে এবং এই কলেজ উত্তর কালেও একজোট হ‘য়ে আবার চলেছে দেশ ভ্রমণে! তা যাই হোক সুকুমার কপাল গুণে বাড়ীর কাছেই কর্মস্হল জোটাতে পেরেছে কিন্তু বিশ্ব আর এষা ! তারা একজন আসছে ভিন্ন রাজ্য থেকে,আর অন্য জন সাত সমুদ্রের ওপারে ভিন্ন মহাদেশে তো বটেই,অন্য গোলার্ধ থেকে। কতটা ভালোবাসা,মনের টান হলে তবে মানুষ অত যোজন যোজন মাইল টপকে আসে বন্ধু সন্দর্শনে ! এখন তো সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। আন্তর্জাল মারফৎ গোটা বন্ধু মহলে প্রচার পেয়েছে এই ত্রয়ীর ভ্রমণ কাহিনী।
তা চুলোয় যাক্–কে কি জানলো তাতে অভিন্ন হৃদয় এই তিন বন্ধুর কিচ্ছু যায় আসে না !! এরা মত্ত এদের ট্যুর প্ল্যানিং এ। একেবারে ভোরের ফ্লাইটে এরা যাবে গৌহাটি,সেখান থেকে একটা গাড়ি নিয়ে ভালুকপঙ্। ভালুকপঙ্ হলো অরুণাচলের হিমালয়ের পাদদেশের ছোট একটি জনপদ যেখান থেকে পাহাড়ে চড়া শুরু হবে–পাহাড়ে চড়া মানে ট্রেকিং নয় কিন্তু,ঐ গাড়ীই পাহাড়ী রাস্তায় এঁকেবেঁকে উঠবে–এবার এদের গন্তব্য দিরাঙ্। দিরাঙ্ পুরোপুরি একটি পাহাড়ী শহর।
সুকুমারের বাড়ী দমদম এয়ারপোর্টের থেকে বেশ অ–নে–ক দূরে,আর বিশ্ব,এষারও ফ্লাইট মাঝ রাতেই দমদমে নামবে।যেটুকু বেশী সময় পাওয়া যায়,তাতেই তে মাথা এক করার লোভে সন্ধে সন্ধে সুকুমার বাড়ীর থেকে রাতের খাবারটি পুঁটুলি করে নিয়ে এসে বসে রয়েছে এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। মাঝরাত অনেকটাই কাবার করে তবে বাকী দুই মক্কেলের দেখা পাবে,তাই সময় কাটানোর জন্যই সুকুমার তার প্রিয় গল্পের বইয়ের একখান ব্যাক প্যাকে ঢুকিয়ে নিয়েছিল বাড়ী থেকে আসবার সময়তেই।
সময় মহাশয় তো কারোর তোয়াক্কা করেন না,তিনি আপন শৃঙ্খলায় এগিয়ে চলেন কোন অজানার পানে তা তো একমাত্র তিনিই জানেন! এ দিকে কি হয়েছে,সময় বয়ে চলেছে তার নিজের গতিতে কিন্তু সুকুমারের দুই সাথীর পাত্তাই নেই–অস্হির হয়ে এদিক ওদিক পানে তাকাতেই সুকুমার জানতে পারলো ডোমেস্টিক আর ইন্টারন্যাশনাল দুটি ফ্লাইটই,কি জানি অজানা কি কারণে দেরী করছে। পুব মুখী লাউঞ্জের কাঁচের দেওয়ালের ওপাশে রানওয়ে টপকে–আরও সুবিস্তৃত এয়ারপোর্ট অথরিটির ময়দানেরও পূর্ব দিক পেরিয়ে টকটকে রাঙা গোল থালির মতো সূয্যি মামার যখন উদয় হচ্ছে,ঠিক সেই সময়টাতেই বিশ্ব–এষা কলর-বলর করতে করতে হাজির! গোটা রাতের দুর্ভাবনা ঝেড়ে ফেলে সুকুমার তাদের সঙ্গে হৈ হৈ করতে প্রপেলর ওয়ালা এক্কেবারে মিনিবাসের মতো ছোট্ট এয়ারবাসটিতে চেপে বসলো। এয়ারবাসে চেপেই সুকুমার এ্যান্ড কোম্পানীর মনে হতে লাগল–আরে এ প্লেন কোথায়? এ তো বেহালা চৌরাস্তার মিনিবাস !-যাত্রীরা সব হাঁটাহাঁটি ডাকাডাকি করে স্বজনদের নিজেদের পাশে বসিয়ে নিয়ে সীট নিজেরাই এ্যাডজাস্ট করে নিচ্ছে,তাই দেখে প্লেনের ক্রুরা আবার মুখ টিপে হাসাহাসি করছে। সে নিয়ে ওদের মধ্যে কত না মস্করা ! মিনিবাস হোক বা এয়ারবাস দমদম থেকে সঠিক সময়ে উড়ান দিয়ে প্রপেলারওয়ালা ঐ মিনি প্লেন টি কিন্তু তাদের গৌহাটি তে নিরাপদেই পৌঁছে দিল।
গৌহাটি থেকে তিন সওয়ারীকে নিয়ে গাড়ী ছুটলো ভালুকপঙ—সন্ধেবেলায় ভালুকপঙে পৌঁছে সেদিনের রাতটি হোটেলে কাটিয়ে এবার গাড়ীতে আবার দৌড় দিরাঙ অভিমুখে। পাহাড় মহলে প্রবেশ সুবাদে তিন জনাই কি ভীষণ উৎফুল্ল। এ–ও সেই দিনভরের যাত্রা,পাহাড়ী পথ অতিক্রম করে অবশেষে যখন দিরাঙের হোটেলে গাড়ী তাদের নামালো তখন সূর্য দেব অস্তাচলে যান নি বটে কিন্তু দিনের আলো ম্রিয়মান। হোটেলে মাল পত্র নামিয়ে ফ্রেশ হয়ে দিনের আলো থাকতে থাকতে কাছে পিঠে কোথায় যাওয়া যায় হোটেলের মালিককে সে সুলুক সন্ধানের কথা জিজ্ঞাসা করাতেই মালিক জবাব দিলেন —খুব কাছেই হর্টি কালচার,সেখানে গেলে নানা অর্কিড দেখা যাবে। এরা দেরী না করে বেরিয়ে পড়লো সেই অর্কিড দেখার আশায়..হর্টি কালচারটি খুব ঝলমলে না হলেও বেশ কিছু অর্কিড সেখানে দেখা গেল। হর্টি কালচার থেকে বেরোনোর মুখে ড্রাইভার বলল-“সাব পিছে সে কামিং নদী বহ্ রাহি হ্যায়—বহতই সুন্দর পাহাড় ঔর নদী কা সিনারী হ্যায়। চলিয়ে না ওহা পর্“- চলো চলো বলে এরা তো মহা উৎসাহে চলল পাহাড় আর নদী দেখতে। সামান্য মিটার কয়েক চলার পরই খানিক জঙ্গুলে পরিবেশে দেখা গেল ভাঙাচোরা এক বাংলো বাড়ি কিংবা বলা ভালো জীর্ণ কিন্তু প্রশস্ত একটি কুটির। সেই কুটিরের চৌহদ্দীর মুখে একটি ভাঙাচোরা গেট,পায়ে চলা রাস্তা এঁকে রেখেছে অতীত পদচারণার চিহ্ন। সেই পায়ে চলা রাস্তায় জীর্ণ সেই কুটিরের সামনে দিয়েই সুকুমারেরা তিন মূর্তি এসে পৌঁছুলো নদীর একেবারে কাছটি ঘেঁষে। কেন জানি না চারিদিকের ঘন জঙ্গলের মধ্যে বহতী নদী–নদীর ওপারে পাহাড়–জঙ্গল,এপাড়ের জঙ্গলের মধ্যে এই বন বাংলো–সব কিছুই সুকুমারের খুব চেনা চেনা লাগছিলো। খালি বারবার মনে হচ্ছিল এ পরিবেশ তার নিজের,এই নদী–এই পাহাড়,জঙ্গল,ঐ বন বাংলোর সঙ্গে তার নিবিড় সখ্যতা। সে সখ্যতা বোধহয় বিশ্ব–এষার সঙ্গে যে সখ্যতা তার থেকে কোনো অংশে কম নয়,বরঞ্চ আরও ঘনিষ্ঠ। অবচেতন মনের সে ভাবনা ঝেড়ে ফেলে সচেতন মনকে সুকুমার বোঝালো–এই যে এত শত হিন্দী সিনেমা দেখে সে,এ তো কোনো হিন্দি সিনেমারই সাইট,যেখানে নায়ক,নায়িকা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে সংসার পেতেছে ঐ বন বাংলোতে। নায়ক গাছের ডালে বসে বাঁশি বাজায় নয়তো গাছেরই ডাল ধরে গান গায়,আর নায়িকা এই কামিং নদীতে স্নান সারে—তাই বোধহয় এই পাহাড় জঙ্গল ওর এত পরিচিত লাগছে!
নাতি চওড়া পাহাড়ী নদী কামিং কলস্বরে কুলু কুলু রবে বয়ে চলছে দুপাশের বন–পাহাড় ভেঙে । এপাশে নানা গাছে ভর্তি জঙ্গল,নদীর ওপারে জঙ্গল পেরিয়েই দাঁড়িয়ে আছে পাহাড় বোধকরি নদীকেই সঙ্গ দেবার জন্যই। নদীর এ পাড়ে যখন তারা তিন বন্ধু দাঁড়ালো ম্রিয়মান দিনের আলো আরও ক্ষীণ হয়ে এসেছে ওপারে পাহাড়ের ওপরে জমাট বাঁধা কালো মেঘের জন্য। চারিদিকের জঙ্গল পাহাড় স্তব্ধ হয়ে যেন বাদল কালোকে বরণ করার জন্য ডালা সাজিয়ে প্রস্তুত। নদীর কুলু কুলু রব ছাড়া বাতাসের শোঁ শোঁ আওয়াজ বলছে ফিসফিসিয়ে “আসছে সে আসছে“-কোন্ অপার্থিব অপরূপা পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছে নতুন অতিথি দের সাথে মিতালী পাতানোর জন্য।
বন বাংলোর ভাঙা চোরা–হাট খোলা গেট পেরিয়ে যখন সুকুমারেরা বাংলো বাড়ির সামনে দিয়ে পায়ে চলা পথ পেরোচ্ছিলো ঠিক তখন থেকেই সুকুমারের যেন কেমন ঘোর লাগা শুরু হয়। মাথা ঝিমঝিম,পা টলোমলো—সারাদিনের ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে আসছে ভেবে সেই টলোমলো ভাব উপেক্ষা করে সুকুমার দাঁড়ায় গিয়ে নদীর পাশে। এ ছাড়া তার উপায় ই বা কি?-বন্ধুরা যদি একবার টের পায় তার শারীরিক অস্বস্তি র কথা তাহলে তাদের আনন্দ তো হবে মাটি! অতএব বন্ধুদের উপভোগ নষ্ট না করার জন্যই সুকুমার তার শারীরিক কষ্টকে শক্ত মনে শাসন করলো।
ওদিকে পাহাড়ের ওপরের জমাট বাঁধা কালো মেঘ ছলাৎ ছলাৎ শব্দে নদী পেরিয়ে এসে দাঁড়ালো নদীর এপারে–ঠিক তিন বন্ধুর মাথার ওপরে। কোথা থেকে শোঁ শোঁ শব্দে কোনো এক পাগল হাওয়া কালো মেঘের দরজার কপাটে ঘা দিয়ে,তার ভিতরকার জমা জলের পাত্র উপুড় করে দিল গোটা চরাচরে। ঘন বর্ষণে দিশাহারা তিনজনা দৌড়ে এসে আশ্রয় নিল ভাঙাচোরা ঐ বন বাংলোর ভিতরে। বাইরে হাওয়া আর বৃষ্টির তান্ডব,সুকুমারের শরীরের ভিতরকার টলোমলো ভাবে সুকুমার তলিয়ে যেতে থাকলো কোন্ অতলে,তার ঠাহর করার সব ক্ষমতাই সে ক্রমাগত হারিয়ে ফেলল। সামনের সব কিছু ধোঁয়া ধোঁয়া,সে পিছিয়ে চলেছে কোন্ আদিম কালে। সিনেমার ফ্ল্যাশব্যাকের মতো তার চোখের সামনে ভেসে উঠছে একের পর এক দৃশ্য–পট! একি তার এ কেমন বেশ! আর বিশ্ব এষা তারাও কোথা থেকে পোষাক পাল্টে কোনো সেকেলে পাহাড়ী পোষাকে এই ঘন বৃষ্টির মধ্যে কেমন মাতামাতি করেই চলেছে! এ কোন্ খেলা? এ খেলার মানে কি? সুকুমার কে তারা ডাকছে বংশী বলে,সুকুমার ও তো এষাকে বলে ঝুমরি আর বিশ্ব নাকি সোহন লাল…তিনজনের হৈ চৈ,দৌড়োদৌড়ি,হুড়োহুড়তে বর্ষাও কেমন তাল মিলিয়েছে! বংশী তখন সামনে নেই–কিন্তু সুকুমার দেখলো বংশী কোনো কারণে যেই একটু এ ধার–ওধার হয়েছে,তখনি সোহন আর ঝুমরি তাদের মধ্যেকার সব ফাঁক টুকু মুছে,একাকার হয়ে গেল!ওদের একজনের ওষ্ঠামৃত আর একজন পান করছে সারা পৃথিবী বিস্মৃত হয়ে। হ ঠা ৎ বংশীলাল ঝড়ের গতিতে প্রবেশ করেই স্তম্ভিত এ কোন্ দৃশ্যের সাক্ষী সে! ওদের তিনজনের বন্ধুত্বের মধ্যে কি বংশী বহিরাগত?-তবে কি সোহান আর ঝুমরি তাকে এতদিন ঠকিয়েছে?-বন্ধুত্বের অছিলায় তারা তলে তলে ভালবাসার এই খেলা খেলেছে?-আচ্ছা খেলা কেন?-ঝুমরি তো কোনোদিন ও বংশীকে ভালোবাসার কোনো ইঙ্গিত দেয় নি,তবে ঝুমরি যে সোহনকে ভালোবাসে এমন ইঙ্গিত না দেওয়াটাই কি ঝুমরির অপরাধ?-বংশী জর্জরিত নিজের প্রশ্ন ও উত্তরে। প্রেমে উন্মত্ত সোহন–ঝুমরির হুঁশ ফিরতেই ঝুমরি কেন যে দৌড়ে ঐ তুমুল বৃষ্টিতে ঘরের আশ্রয় ছেড়ে বাইরে দৌড়োলো তা বুঝে ওঠার আগেই বংশী দেখে সোহনও ঝুমরিকে অনুসরণ করলো।এবার রাগে হিংসায় দিশাহারা বংশী তাড়া করলো দুজনকেই। লজ্জায়?-নাকি ভয়ে ঝুমরি তখন ঝাঁপ দিয়েছে প্রখর বর্ষার কামিং নদীতে,ঝুমরির প্রেমের আকর্ষণে দিশেহারা সোহন ও ঝুমরিকে বাঁচাতে ঐ পাগল নদীতে ঝাঁপ দিল। দুজনেরই,প্রেমন্মাদনায় এই ভয়ঙ্কর নদীতে সাঁতরানোর মতো দক্ষতা যে তাদের নেই তা তারা তখন বিস্মৃত।
ওদিকে সত্য উদঘাটনের আকস্মিকতায় ক্রুদ্ধ,ক্ষিপ্ত বংশী তখন স্হির করে ফেলেছে যে এদের দুজনার আর এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। বংশীও যে ঝুমরিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলো মনের একান্তে। সে স্বপ্ন যখন এরা দুজনে মিলে চুরমার করলো,তখন মৃত্যু ই এদের একমাত্র শাস্তি। কোন্ অসুর যে বংশীকে ভর করলো! নদীর জলে ঝাঁপ দিয়ে দুজনার চুলের মুঠি দুহাতে ধরে দুজনাকে ই বারবার নদীর জলে ডুবিয়ে–ডুবিয়ে খানিক শাস্তি দিয়ে–দুজনকেই নদীর জলে ডুবিয়ে,শ্বাসরোধ করে হত্যা করলো। তারপর সেই ধারা বৃষ্টির মধ্যেই নদীর জলে ভাসিয়ে দিল ওদের মৃতদেহ!
তীরে এসে বংশী যখন সেই বাংলোতে প্রবেশ করতে গেল—একি! প্রেমে ভরপুর নিষ্পাপ দুটি চেহারা,আকুল দু–জোড়া চোখ তুলে দাঁড়ানো যে ঐ বাংলোর সদর দরজায়!! যাদের মৃতদেহ নদীর জলে ভাসিয়ে,বংশী এসেছে নিশ্চিন্ত ঘরের আশ্রয়ে,সেই ঘরেরই দরোজায় ঐ দুটি মৃত মানুষ! আতঙ্কে বংশী দৌড় লাগালো পাহাড়,নদী,জঙ্গল পেরিয়ে। যত দৌড়োয় পিছন ফিরে দেখে বাড়ীটিও যেন ওই দুটি নিষ্পাপ অসহায় মানুষদুটিকে নিয়ে তাকে ধাওয়া করেছে। দৌড়!দৌড়!দৌড়—আতঙ্কে জর্জরিত বংশী মুখ থুবড়ে পড়লো সামনের জমিতে—পিছনে রোষান্বিত বাড়ীটিও তার জানলার কাঁচ সমেত ঝনঝনিয়ে পড়লো বংশীর ওপর…না—চীৎকারে!
একি!!! সে কোথায়? তার মুখের ওপর সবাই কেন হুমড়ি খেয়ে?–ঐ দূর থেকে ঐ তো ঝুমরি–সোহন না!না! –এষা আর বিশ্ব দৌড়ে আসছে,কোথায় নদীর তীর,কোথায় সেই পাহাড় আর জঙ্গল আর ঐ বন বাংলো? –এও তো এয়ারপোর্ট,তবে এখনো কি তারা রওয়ানাই দেয় নি?-বিভ্রান্ত বংশী থুড়ি সুকুমার যখন উঠে দাঁড়ালো,ওর কোলের থেকে ওরই খুব প্রিয় বই H G Wells এর লেখা The Time Machine ঝুপ করে পড়লো….
****************************
মধুমিতা মিত্র: পেশা–স্বপ্ন দর্শন,স্বপ্ন গুলো ই বাঁচিয়ে রাখে,
নেশা–আনন্দ চয়ন,জীবন পথের সমস্ত জঞ্জাল,বোঝা,দুঃখ সব দূর করে ফেলে দিয়ে আনন্দ কুড়িয়ে বেড়ানো,
প্রেম-রবীন্দ্রনাথ,উদয়শঙ্কর,উত্তমকুমার। সাম্প্রতিকতম প্রেম শ্রীকৃষ্ণ..
দারুন লাগলো, পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছিলাম খরস্রোতা নদীতে।👌👌