আরব্ধ শৈশব
বিদ্যুৎ পাল
ক্রুশের কাঠ বেয়ে আপনার
শেষ রক্তবিন্দু মাটিতে মিশে যাওয়ার অনেক পরে
অত্যাচারিত মানুষের গোপন হৃদয়সভাগুলোয়
আস্তে আস্তে জুটেছিল শৈশবকথা:
সেই রাত,দূরের তারাটি,তিন মহাদেশ থেকে জ্ঞানী,
এমনকি খড়ের পিছনে ভেড়াটির ডাক!
অত্যাচারিত মানুষেরা তাদের রোজকার
আত্মপরিচয়ে এঁকেছিল,
তরুণী কন্যার প্রসবক্লান্ত মুখ দেখে চিন্তিত পিতা,
এঁকেছিল প্রশ্নদীর্ণ নৈঃশব্দ–
এ শিশু কি ভালোবাসার? নাকি…? চুপ!
গ্রামের বাইরে কুচকাওয়াজ রোমক বাহিনীর! …
তারা শুনেছিল,
কুমারী মায়ের অটল প্রসবসিদ্ধান্তের
পাশে দাঁড়ানো তাদের পূর্বপুরুষদের
জয়ধ্বনি,”এই তবে ঈশ্বরপুত্র!
জন্ম হোক! মুক্তির বার্তা ছড়াক দিকে দিকে!”
বলা হয় নাকি বেথেলহেমের রাস্তায়
ইয়ারদোস্তদের সঙ্গে মৌজে মশগুল
ভিনদেশি ব্যাপারিদের আপনি ত্রাস ছিলেন!
শহরটাকে ঘিনঘিনে বাজার করে তুলছিল তারা …
সে নিয়েই তো বাধল ঝগড়া!
ঢুকে পড়েছিল,কবজায় করে নিয়েছিল এমনকি
মন্দির চত্বরও!
সেদিন দেখেই ক্ষেপে উঠে
মেরে ভাগালেন তাদের …
আর মিথ্যে লুটের অভিযোগে
আপনাকে গ্রেপ্তার করল রোমের পুলিস!
গত শতকেই তো ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিল স্পার্টাকাস
ও তার সঙ্গীদল;
তার একশো বছরে ঈশ্বরপুত্রও!
বৃষ্টিতে রক্তের রঙ ছাড়ছেই না কিছুতেই!
মুক্তিরই বার্তা তো! ভিজেও বুঝলে না?
****************************
বিদ্যুৎ পাল পরিচিতি
জন্মতারিখ ২৪শে জুলাই ১৯৫২। জন্মস্থান পাটনা (বিহার)। পড়াশুনো সবটাই পাটনায়। চাকরি ব্যাঙ্কে,বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। সারাদিনের ব্যস্ততায় শামিল নিজের লেখালিখি,পড়াশুনো,বিহার হেরল্ডের সম্পাদনা,দেশবিদেশের সঙ্গীত শোনা,বইপত্র সম্পাদনা। বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা,গল্প ও প্রবন্ধ (প্রবন্ধটা অবশ্য বাংলা,হিন্দী এবং ইংরেজি,তিন ভাষাতেই লিখতে হয়) প্রকাশিত। আপাততঃ ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘বিহার হেরল্ড’এর সম্পাদক,ও বিহার বাঙালি সমিতির মুখপত্র ‘সঞ্চিতা’র যুগ্মসম্পাদক।