Shadow

সম্পাদকীয় – “কুলায়ফেরার কাশবন ৫”

সম্পাদকীয়

কুলায়ফেরার কাশবন ৫

 

“আকাশ জুড়ে শুনিনু ওই বাজে
তোমারি নাম সকল তারার মাঝে।
..আঁধারে মোর তোমার আলোয় জয়
গভীর হয়ে থাক জীবনের কাজে।।..”

দীর্ঘ অপেক্ষার পর বছর ঘুরে  আবার মা আসছেন। বর্ষা শেষে আকাশে পেঁজা তুলোর মতন মেঘ। মাঝে মধ্যে সোনালী উঁকিঝুঁকি।
তপ্ত দ্বিপ্রহরের পর সন্ধ্যায় একটু যেন হিমের ছোঁওয়া। কিন্ত সব থেকেও কি যেন নেই। শরৎ প্রভাতেও কেন মনে হচ্ছে কোন সকাল! রাতের চেয়ে অন্ধকার?
মাঝে মাঝে মনে হয়,এত অন্ধকার কেন? কিন্ত এর পরও হঠাৎ হঠাৎ আবার আলোর ঝলকানি মনে সাহস আনছে! যেন অরোরা বোরিয়ালিস!
সত্যি বলতে কি,নারীর চোখের জলের মতন অমূল্য আর বিশ্বব্রহ্মান্ডে কিছু নেই। নারী আমাদের জন্মদাত্রী মাতা। নারী আমাদের সহেদরা,আমাদের অর্ধেক আকাশ। এই আকাশ কেন মেঘাচ্ছন্ন হবে? নারী কিন্ত অবলা নয়,সবলা! সংসার থেকে বিশ্ব সংসার,জগজ্জননী রূপে তিনি সামাল দেন।  দূর্বল হয়েও কমজোর নন /শক্তি অপর নাম নারী / জগত প্রসবিনী / মৃত্যুও সরে থাকে দূরে..!”কেউ তা অস্বীকার করতে পারবেন না |
আজ সোনার রঙে রাঙানো সূর্য, শিউলি পাতার কাঁপনে,সরোবরে শালুকের দরাজ হাসিতেনীল আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘপাখিদের স্বাধীন এবং নি:শব্দ কলরোল যখন জানান দিচ্ছে বিশ্বমাতার আগমনবার্তা,তখন তাঁর আগমন পথ কেন অশ্রু ভেজা? কার শোনিতে পিচ্ছিল? বাতাসে কেন গুমরে ওঠা কান্না? তাই মন ভালো নেই,কারোরই। এই দু: বেদনার কুয়াশা ভরা জীবনের মধ্যেও কুলায় ফেরা তার শারদ সংখ্যাকাশবনপ্রকাশে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আসলে এটাতো অস্তিত্বের প্রশ্ন।অধিকারের প্রশ্ন। বেঁচে থাকার অধিকার। সকলের মতন কুলায়ফেরারও অস্তিত্বের,বেঁচে থাকার অধিকারের প্রশ্ন। পাঠক পাঠিকাদের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রশ্ন। চোখের জল মুছে,দাঁতে দাঁত চেপে পুজো সংখ্যা প্রকাশের এই কর্মযজ্ঞে নিমগ্ন এই আন্তর্জাতিক, আন্তর্জালিক,সাংস্কৃতিক পত্রিকা পরিবারের সকলে।
কথায় আছে,যে সহে সে রহে। আমাদের সহ্য করে যেতে হবে। কোনও দুর্যোগই চিরস্থায়ী হয়না। টানা বৃষ্টি মেঘ কেটে রোদ্দুর ওঠে। তাই রাতের চেয়েও অন্ধকার সকালে সূর্য উঠবেই। এই আশা নিয়েই এগিয়ে চলা।
সকল পাঠকপাঠিকাদের,লেখক লেখিকা,কুলায় ফেরা সংসারের সকল সদস্য,বিজ্ঞাপন দাতা,শুভাকাঙ্খী এবং পর্দার অন্তরালে থেকে নি:স্বার্থ ভাবে যাঁরা কাজ করে চলেছেন,তাঁদের সকলকে শারদ শুভেচ্ছা। সুস্থ থাকুন,পুজোর দিনগুলি ভালো কাটুক।

নমস্কারান্তে

দেবদত্ত বিশ্বাস

সম্পাদক,কুলায় ফেরা

2 Comments

  • Surajit Sarkhel

    প্রতিবারের মতন এবারের সম্পাদকীয় বক্তব্যও দারুণ ঝরঝরে,পরিশীলিত।

    • Shakti Shankar Panda

      অনবদ্য হৃদয়গ্রাহী সম্পাদকীয়। অন্তহীন শারদ শুভেচ্ছা জানাই। অশেষ ধন্যবাদ।

Comments are closed.

error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!