Shadow

গল্প

দ্বিতীয়া‌-মৃগাঙ্ক‌‌ ‌‌ভট্টাচার্য‌

দ্বিতীয়া‌-মৃগাঙ্ক‌‌ ‌‌ভট্টাচার্য‌

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
দ্বিতীয়া‌ মৃগাঙ্ক‌‌ ‌‌ভট্টাচার্য‌ -  আপনার স্ত্রীর অসংলগ্ন আচরণ আপনি প্রথমবার লক্ষ করেছিলেন গত বছর পয়লা জানুয়ারি। কী তাই তো ? সেদিন একজ্যাক্টলি কী হয়েছিল আর একবার শুরু থেকে বলুন প্লিজ। -ডুয়ার্সে গতবার পয়লা জানুয়ারির ভোর থেকে শুরু হয়েছিল ধুন্ধুমার বৃষ্টি। আমি গভীর ঘুমে ডুবে ছিলাম। আমাকে ধাক্কা দিয়ে ডেকে তুলেছিল বিপাশা। আমি ধড়মড় করে উঠে ভেবেছিলাম ভূমিকম্প হচ্ছে। দু’-এক মুহূর্ত পর বুঝতে পারলাম বাড়ি দুলছে না কাঁচের জানলার বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। একটু ধাতস্থ হয়ে দেখি বিপাশা অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে ? বিপাশা নার্ভাস গলায় বলল ও আর বেঁচে নেই। - বেঁচে নেই মানে ? -প্রথমে ভেবেছিলাম ঠাট্টা করছে। কিন্তু পরমুহূর্তে বুঝলাম যে তা নয়। বিপাশার চোখেমুখে একটা বিহ্বল ভাব। ভাবলাম বাজে স্বপ্ন দেখেছে। ওর কাঁধ ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললাম, রিল্যাক্স। একটু জল...
কোন ক্ষ্যাপা সে-প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

কোন ক্ষ্যাপা সে-প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
কোন ক্ষ্যাপা সে !! প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কবিগুরু লিখেছিলেন, “আমি নটরাজের চেলা চিত্তাকাশে দেখছি খেলা, বাঁধন খোলার শিখছি সাধন মহাকালের বিপুল নাচে। দেখছি, ও যার অসীম বিত্ত সুন্দর তার ত্যাগের নৃত্য, আপনাকে তার হারিয়ে প্রকাশ আপনাতে যার আপনি আছে। যে-নটরাজ নাচের খেলায় ভিতরকে তার বাইরে ফেলায়, কবির বাণী অবাক মানি' তারি নাচের প্রসাদ যাচে।”   রাত্রি তখন নিশুতি। পুরীর সাগরবেলা জনমানবহীন। কয়েকটি সারমেয় সপরিবারে ভ্রমণ পিপাসুদের ফেলে যাওয়া উচ্ছিষ্ট নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে। পরের পর সাগর তরঙ্গ বিকট গর্জন করে ভেঙে পড়ছে বালুকাময় সৈকতে। বিরতিহীন সেই ব্যস্ততা। অষ্টপ্রহর ভীমভৈরবে তান্ডব দেখিয়ে চলেছে সে।জনশূন্য সৈকতে একটা পাগল গোছের লোক দেখি সমুদ্রের দিকে চেয়ে রয়েছে। মুখে অপার প্রশান্তি। কাছে গিয়ে দেখি, মিটিমিটি হাসছে সে। দিনের প্রখর রৌদ্রতাপে দেখেছিলাম তাকে নিরাবরণ। রাত্রে সামুদ্রিক হিমেল হা...
প্রতারক -মনি ফকির 

প্রতারক -মনি ফকির 

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
                                                                     প্রতারক                                                                      মনি ফকির নমস্কার।আমি অগ্নি।পেশায় ডোম।চমকে গেলেন? ঠিকই পড়েছেন। পেশাদারি নয়।কারণ উপার্জনের অন্য রাস্তা আছে আমার। মানুষের দহনে আমি সহায়তা করি।আমার ভালো লাগে। জীবনের গল্প গুলোকে যদি একটি নাটকের মত ভিন্ন অধ্যায়ে ভাঙা হয়, একেকটা অঙ্ক বলা যায়।আমার গল্প গুলোকে আমি দহনে ভাঙলাম। আমাদের একটি পারিবারিক দহন কুঞ্জ রয়েছে। যারা দাহ হতে আসে, তাদের সবার মৃত্যুর কারণ,ইতিহাস আমি লিখে রাখি।বলতে পারেন এটা আমার হবি।আসুন।                                                                                        দহন-১ ঐ যে দূরে যিনি পুড়ছেন,তার নাম অবিনশ্বর মিত্র।একদা ব্যাঙ্কের কর্মী। উপার্জন খুবই অল্প।কারো বুদ্ধিতে যোগ দিলেন একটি চিট ফান্ড সংস্থায়। অবস্থা ফিরে গেল।ফুলে...
প্রতারণা- অঙ্কন দন্ড

প্রতারণা- অঙ্কন দন্ড

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
প্রতারণা  অঙ্কন দন্ড খড়গপুর স্টেশনে নামতেই জয়কে ফোন করল শ্রী। জয়ের ফোন বন্ধ। আরও কয়েকবার জয়কে ফোনে পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ শ্রী। অবশেষে ক্লান্ত শরীরটাকে রাখলো স্টেশনের একটি বেঞ্চে। শ্রী-কে স্টেশন থেকে নিতে আসার কথা ছিল জয়ের, কিন্তু সে এখনও এসে পৌঁছয়নি ।     একটু ভালোবাসার সন্ধানে নিজের স্বামী ধ্রুব ও বছর ১৩ এর মেয়ে রিম্পাকে ছেড়ে সে ছুটে এসেছে জয়ের কাছে,ঝাড়গ্রাম থেকে খড়গপুর, কাউকে না জানিয়েই। আসার আগে টেবিলে রেখে এসেছিল একটা চিঠি। যেখানে লেখা ছিল,"ধ্রুব,আমার পক্ষে এই তিক্ত জীবন কাটানো আর সম্ভব নয় । ১৫ বছর ধরে সংসার করছি তোমার সাথে। জানি, তোমার প্রাইভেট জব। তাই বলে কি তোমার থেকে একটুও সময় পেতে পারি না আমি? আমারও কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে। রিম্পা আসার পর থেকে একা হাতেই মানুষ করতে শুরু করেছি ওকে। আর না,এবার ওকে তুমিই দেখো।জানি, তোমার জীবনে আমি গুরুত্বহীন। তুমি মত্ত থাকো তোমা...
ফানুস-দেবপ্রিয়া সরকার

ফানুস-দেবপ্রিয়া সরকার

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
  কারশেড থেকে ধীর গতিতে একনম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াল শিয়ালদাগামী দার্জিলিং মেল। ট্রেনটার দিকে তাকিয়ে একটা লম্বা শ্বাস নিল শাওন। বলল, -চলি রে। কুহু আর পিহুর খেয়াল রাখিস। মা কে দেখিস। আমি জানি তোর ওপর অনেক দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। পাড়ার দোকানের ডাব্বুকে বলে রেখেছি তোদের খবর নিতে। কিছু দরকার হলে ওকে বলবি। জানি কষ্ট হবে। তবুও, একটু মানিয়ে নিস গুড়িয়া। কাঁধের ব্যাগটা নামিয়ে আলগোছে অয়ন্তিকাকে জড়িয়ে ধরল শাওন। একটা  চুমু আঁকল কপালে।  তারপর লাগেজগুলো নিয়ে এগিয়ে গেল ট্রেনের দিকে। স্তব্ধ হয়ে অয়ন্তিকা দেখছিল শাওনের চলে যাওয়া। হুইসল বাজল। আস্তে আস্তে এগোচ্ছে ট্রেন। এতক্ষণ ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু  আর পারল না। ট্রেনটা চলে গেল দৃষ্টিপথের বাইরে। আর শাওন, তার নাগালের অনেক দূরে। ২ সিটিঅটো থেকে নেমে গলি দিয়ে হাঁটছিল অয়ন্তিকা। পা গুলো কেমন যেন অসাড় হয়ে আসছে। মনে ...
এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প –শাঁওলি দে

এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প –শাঁওলি দে

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
  এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প শাঁওলি দে প্রলাপ আকাশের দিকে চোখ মেলে শুয়ে আছি। আহ ! অপূর্ব ! যেন কোনো নিপূণ শিল্পী তার দক্ষ হাত দিয়ে কাঁথার ওপর  সেলাই করে রেখেছে। তারই মাঝে একটা গোল ফ্যাকাশে চাঁদ ,না না পোড়া রুটির মতো তো লাগছে না ওকে ! বরং কেমন যেন ওর দিকে তাকিয়ে মনে হল আমি একটা আয়নার দিকে তাকিয়ে আছি ! কিছুক্ষণ থম মেরে তাকিয়ে রইলাম। আমার অবয়ব স্পষ্ট দেখতে পেলাম যেন।  সবাই আমাকে পাগল বলে। আচ্ছা আমি কি সত্যিই পাগল ? কী জানি ? এর উত্তর জানা নেই আমার। আমি রাতকে ছুঁতে ভালোবাসি, আমি রাতের প্রেমিক। কেউ বোঝে না জানেন, সবাই আমায় পাগল বলে !  আজ ভরা পূর্ণিমা। এই সব রাতগুলো আমার খুব প্রিয়। এই রাতকেই আমি বেশি ভালোবাসি। আসলে আমার ভালোবাসা দুজনের জন্যই, কিন্তু কালো রাতের চাইতে এই আলো রাত আমায় অস্থির করে তোলে। আমি একটু একটু করে আলোর চাদর জড়িয়ে নিই শরীরে, তারপর গভীর, তীব্র অশ্লেষে ডুবে...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!