Shadow

শ্লোক থেকে ব্লগ

সাহিত্য বিভাগ, প্রবন্ধ গল্প ও কবিতা

বারবার আমাকে ডেকো না – গীর্বাণী চক্রবর্তী

বারবার আমাকে ডেকো না – গীর্বাণী চক্রবর্তী

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
বারবার আমাকে ডেকো না গীর্বাণী চক্রবর্তী খুব সাধ হলে তুমি যাও সখা, শুধু বারবার আমাকে ডেকো না। আমি বেশ আছি এই নদী মাঠ বাগিচায় –শান্ত জীবন যাপনে ; তুমি বড়ো বোকাসোকা থেকে গেলে প্রিয় সখা ---এইসব ছেড়ে ছুঁড়ে কখনো চলে যেতে আছে কোথাও ; দূষণ ছড়ানো জটিল ভুবনে ! এখানে সরস মাটি ভালোবাসা দিতে জানে ;এখানে খোলা আকাশ অকৃপণ আজও –নানান রঙে সকাল দুপুর সন্ধে ঘুরে ফিরে আসে। অলস বেলায় দোতারার মিঠে সুর, মধুর ভাওয়াইয়া হৃদয়ে কত না জলছবি আঁকে। খুব সাধ হলে তুমি যাও সখা, শুধু বারবার আমাকে ডেকো না।   জলপাইগুড়ি শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা লেখিকা গীর্বাণী চক্রবর্তী পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে। প্রায় তিন দশক ছুঁয়ে আছে তার সাহিত্য সৃজন।ইতিমধ্যে অসংখ্য পত্র পত্রিকায় গীর্বাণীর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চার। তার লেখা গ্রন্থগুলি হল, এক ডজন গপ্পো, ভূত বাংলোর আতংক, শ্বেতা তোমা...
প্রতারক -মনি ফকির 

প্রতারক -মনি ফকির 

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
                                                                     প্রতারক                                                                      মনি ফকির নমস্কার।আমি অগ্নি।পেশায় ডোম।চমকে গেলেন? ঠিকই পড়েছেন। পেশাদারি নয়।কারণ উপার্জনের অন্য রাস্তা আছে আমার। মানুষের দহনে আমি সহায়তা করি।আমার ভালো লাগে। জীবনের গল্প গুলোকে যদি একটি নাটকের মত ভিন্ন অধ্যায়ে ভাঙা হয়, একেকটা অঙ্ক বলা যায়।আমার গল্প গুলোকে আমি দহনে ভাঙলাম। আমাদের একটি পারিবারিক দহন কুঞ্জ রয়েছে। যারা দাহ হতে আসে, তাদের সবার মৃত্যুর কারণ,ইতিহাস আমি লিখে রাখি।বলতে পারেন এটা আমার হবি।আসুন।                                                                                        দহন-১ ঐ যে দূরে যিনি পুড়ছেন,তার নাম অবিনশ্বর মিত্র।একদা ব্যাঙ্কের কর্মী। উপার্জন খুবই অল্প।কারো বুদ্ধিতে যোগ দিলেন একটি চিট ফান্ড সংস্থায়। অবস্থা ফিরে গেল।ফুলে...
স্বাধীন রাজা প্রতাপাদিত্য- প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

স্বাধীন রাজা প্রতাপাদিত্য- প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

ছেঁড়া দস্তাবেজ, শ্লোক থেকে ব্লগ
স্বাধীন রাজা প্রতাপাদিত্য প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতাপাদিত্য সম্পর্কে একটু আলাদাভাবে না বললে যশোরের ইতিহাসের একটা গৌরবময় অংশই না বলা থেকে যাবে। কারণ মোঘল আমলে যশোরে ইনিই প্রধান ব্যক্তি। অনেকে বলে থাকেন প্রাচীন গৌড় রাজ্যের যশ হরণ করে ‘যশোহর’ হয়েছিল। তৎকালীন সময় যশোরের ইতিহাস তাই প্রতাপাদিত্যের ইতিহাস। প্রতাপাদিত্যের রাজত্বকাল মাত্র ২৫ বছরের হলেও আজ পর্যন্ত তার গৌরবগাঁথা যশোর খুলনা অঞ্চলে বিদ্যমান। বিক্রমাদিত্য পুত্র প্রতাপাদিত্যের রাজধানী কোথায় ছিলো, তা নিয়ে প্রচলিত ৫ টি মত রয়েছে। ১) সতীশচন্দ্র মিত্রের মতে, প্রতাপাদিত্যের রাজধানী ধুমঘাটের উত্তরাংশ ছিল; কিন্তু বিক্রমাদিত্যের রাজধানী কোথায় ছিল, তা ঠিক নাই। বেভারিজসহ পাশ্চাত্য লেখকরা এই মতাবলম্বী। ২) বিক্রমাদিত্যের রাজধানী ধুমঘাটের উত্তরাংশে ছিল এবং প্রতাপের রাজধানী আধুনিক ধুমঘাটের দক্ষিণভাগে অবস্থিত, কিন্তু সে স্থান তখনও ঘোর জঙ্গল...
প্রতারণা- অঙ্কন দন্ড

প্রতারণা- অঙ্কন দন্ড

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
প্রতারণা  অঙ্কন দন্ড খড়গপুর স্টেশনে নামতেই জয়কে ফোন করল শ্রী। জয়ের ফোন বন্ধ। আরও কয়েকবার জয়কে ফোনে পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ শ্রী। অবশেষে ক্লান্ত শরীরটাকে রাখলো স্টেশনের একটি বেঞ্চে। শ্রী-কে স্টেশন থেকে নিতে আসার কথা ছিল জয়ের, কিন্তু সে এখনও এসে পৌঁছয়নি ।     একটু ভালোবাসার সন্ধানে নিজের স্বামী ধ্রুব ও বছর ১৩ এর মেয়ে রিম্পাকে ছেড়ে সে ছুটে এসেছে জয়ের কাছে,ঝাড়গ্রাম থেকে খড়গপুর, কাউকে না জানিয়েই। আসার আগে টেবিলে রেখে এসেছিল একটা চিঠি। যেখানে লেখা ছিল,"ধ্রুব,আমার পক্ষে এই তিক্ত জীবন কাটানো আর সম্ভব নয় । ১৫ বছর ধরে সংসার করছি তোমার সাথে। জানি, তোমার প্রাইভেট জব। তাই বলে কি তোমার থেকে একটুও সময় পেতে পারি না আমি? আমারও কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে। রিম্পা আসার পর থেকে একা হাতেই মানুষ করতে শুরু করেছি ওকে। আর না,এবার ওকে তুমিই দেখো।জানি, তোমার জীবনে আমি গুরুত্বহীন। তুমি মত্ত থাকো তোমা...
আলোকবৃত্ত -চিন্ময় চক্রবর্তী

আলোকবৃত্ত -চিন্ময় চক্রবর্তী

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
আলোকবৃত্ত             চিন্ময় চক্রবর্তী             আমার একটা অন্ধকার আছে। জানো? যখন খুব কষ্ট হয়, তখন যাই। ঐ অন্ধকারে। মাঝে মাঝে এক ঢোঁক খেয়েও ফেলি। ওই অন্ধকারটা। প্রচুর জায়গা আছে ওখানে। বসার, দাঁড়াবার, এমনকি শোবারও। এক এক ঢোঁক অন্ধকারে পেয়ে যাই এক এক রাতের ঘুম। খুব দামী ঐ ঘুমগুলো। অনেক দাম দিয়ে কেনা। আলোর রোশনাই ভাল লাগে না সবসময়। চোখে বড্ড লাগে। খানিকটা প্রেম, খানিকটা ব্যথা, আর অনেকটা না পাওয়া আকাঙ্খা মেশানো ওই অন্ধকারটা বড্ড প্রিয় আমার। ওই অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায় আমার সব প্রেমিকারা। আমাকে ছুঁতে চায়, পারেনা। আমি জানি, আমিও আছি ওদের নিজস্ব অন্ধকারে। সেটাও ওদের একান্তই নিজের। ভাবি কতগুলো অন্ধকারে আছি আমি? যারা খুব সযত্নে আগলে রাখে নিজের নিজের অন্ধকার? আর কে কে আছে ওই অন্ধকারে? ওদের অন্ধকার কি আমার অন্ধকারের মত গাঢ়? কি পোশাক সেখানে আমার? না কি আমি সেখানে সম্পূর্ণ...
সেন্টিনেলীদের আশ্চর্য কাহিনী-ডঃ‌ ‌স্বয়ংদীপ্ত‌ ‌বাগ‌

সেন্টিনেলীদের আশ্চর্য কাহিনী-ডঃ‌ ‌স্বয়ংদীপ্ত‌ ‌বাগ‌

প্রবন্ধ
     সেন্টিনেলীদের‌ ‌আশ্চর্য‌ ‌কাহিনী‌ ডঃ‌ ‌স্বয়ংদীপ্ত‌ ‌বাগ‌ আন্দামানের উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপে  বাস করে সেন্টিনেলীরা। তথাকথিত সভ্য জগত থেকে সম্পূর্ণ  বিচ্ছিন্ন, এরা পৃথিবীর এক প্রাচীন জনগোষ্ঠী।অদ্ভুত এদের আচার-আচরণ। দীর্ঘ ৬০০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ওরা এই দ্বীপে বসবাস করছে। ওদের পূর্বপুরুষেরা নাকি এসেছিল আফ্রিকা থেকে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়কালে ওরা বিচ্ছিন্ন রয়েছে বহিঃপৃথিবী থেকে। মাত্র ৭২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ ভূমিটি নিয়েই ওদের জগত।এর বাইরে ওরা কোথাও যেতে চায় না। চায়না কেউ ওদের ভূখণ্ডে  পা রাখুক। তাতে রক্তপাতেও পিছপা নয়। দূর থেকে প্রয়োজনীয় নজরদারি ছাড়া প্রশাসনও ওদের কোন বিষয়ে কোন হস্তক্ষেপ করে না।নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন রাখবার জন্য লাগাতার প্রয়াস গোটা পৃথিবী কে সেন্টিনেলীদের প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। কিন্তু সংযোগ এবং তথ্যের অভাবে আধুনিক পৃথিবী ওদের বিষয়ে খুব কমই জানতে পেরেছ...
দুঃখ রইল এই জীবনে-বন্দনা মিত্র

দুঃখ রইল এই জীবনে-বন্দনা মিত্র

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
  দুঃখ রইল এই জীবনে  বন্দনা মিত্র বড় দু:খ রইল এই জীবনে   আমার পাগল হওয়া হইল না।    পাগল হইয়া দিক ভুলিয়া   আমার উজান বাওয়া হইল না। ছাড়লে নীচে পায়ের মাটি তুমুল ঝড়ে ভাঙলে ঘাঁটি চুলোয় যেত চাটি বাটি আমার বেভুল হওয়া হইল না। অনেক দেখল শুকনো এ চোখ অনেক জ্বালা অনেক অসুখ জ্বলে  পুড়ে খাক হইলাম , তবু  আমার শুদ্ধ হওয়া হইল না। পাইতাম যদি রসিক সুজন মাঝ দরিয়ায় ভাসাইতাম নাও ঘূর্ণি স্রোতে নাও টলমল আমার পুঁজি কিছুই রইল না।। জোয়ার গেছে এখন ভাঁটা জানলা কপাট শক্ত আঁটা মেয়ে হিসাব নিকাশ করে দেখে তার আর পাগল হওয়া হইল না। বড় দু:খ রইল মনে আমার পাগল হওয়া হইল না। বন্দনা মিত্র পেশায়   প্রযুক্তিবিদ, ধাতুবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা।  একটি পাবলিক সেক্টর সংস্থায় কর্মরতা ঘোরতর সংসারী।  শখের খাতিরে লিখতে শুরু করে এখন ওটা প্রাণের তাগিদ হয়ে গেছে। তাছাড়া বাদ বিচার...
ফানুস-দেবপ্রিয়া সরকার

ফানুস-দেবপ্রিয়া সরকার

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
  কারশেড থেকে ধীর গতিতে একনম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াল শিয়ালদাগামী দার্জিলিং মেল। ট্রেনটার দিকে তাকিয়ে একটা লম্বা শ্বাস নিল শাওন। বলল, -চলি রে। কুহু আর পিহুর খেয়াল রাখিস। মা কে দেখিস। আমি জানি তোর ওপর অনেক দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। পাড়ার দোকানের ডাব্বুকে বলে রেখেছি তোদের খবর নিতে। কিছু দরকার হলে ওকে বলবি। জানি কষ্ট হবে। তবুও, একটু মানিয়ে নিস গুড়িয়া। কাঁধের ব্যাগটা নামিয়ে আলগোছে অয়ন্তিকাকে জড়িয়ে ধরল শাওন। একটা  চুমু আঁকল কপালে।  তারপর লাগেজগুলো নিয়ে এগিয়ে গেল ট্রেনের দিকে। স্তব্ধ হয়ে অয়ন্তিকা দেখছিল শাওনের চলে যাওয়া। হুইসল বাজল। আস্তে আস্তে এগোচ্ছে ট্রেন। এতক্ষণ ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু  আর পারল না। ট্রেনটা চলে গেল দৃষ্টিপথের বাইরে। আর শাওন, তার নাগালের অনেক দূরে। ২ সিটিঅটো থেকে নেমে গলি দিয়ে হাঁটছিল অয়ন্তিকা। পা গুলো কেমন যেন অসাড় হয়ে আসছে। মনে ...
এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প –শাঁওলি দে

এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প –শাঁওলি দে

গল্প, শ্লোক থেকে ব্লগ
  এক রাতের প্রেমিক ও জেলখানার গল্প শাঁওলি দে প্রলাপ আকাশের দিকে চোখ মেলে শুয়ে আছি। আহ ! অপূর্ব ! যেন কোনো নিপূণ শিল্পী তার দক্ষ হাত দিয়ে কাঁথার ওপর  সেলাই করে রেখেছে। তারই মাঝে একটা গোল ফ্যাকাশে চাঁদ ,না না পোড়া রুটির মতো তো লাগছে না ওকে ! বরং কেমন যেন ওর দিকে তাকিয়ে মনে হল আমি একটা আয়নার দিকে তাকিয়ে আছি ! কিছুক্ষণ থম মেরে তাকিয়ে রইলাম। আমার অবয়ব স্পষ্ট দেখতে পেলাম যেন।  সবাই আমাকে পাগল বলে। আচ্ছা আমি কি সত্যিই পাগল ? কী জানি ? এর উত্তর জানা নেই আমার। আমি রাতকে ছুঁতে ভালোবাসি, আমি রাতের প্রেমিক। কেউ বোঝে না জানেন, সবাই আমায় পাগল বলে !  আজ ভরা পূর্ণিমা। এই সব রাতগুলো আমার খুব প্রিয়। এই রাতকেই আমি বেশি ভালোবাসি। আসলে আমার ভালোবাসা দুজনের জন্যই, কিন্তু কালো রাতের চাইতে এই আলো রাত আমায় অস্থির করে তোলে। আমি একটু একটু করে আলোর চাদর জড়িয়ে নিই শরীরে, তারপর গভীর, তীব্র অশ্লেষে ডুবে...
মানুষ যখন পরিযায়ী-বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত

মানুষ যখন পরিযায়ী-বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত

কবিতা, শ্লোক থেকে ব্লগ
মানুষ যখন পরিযায়ী বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত   আমরা পরিযায়ী বাবু। দিনে দিনে ,মানুষ থেকে , পশুপাখির  দলে ভিড়িয়ে দিল আমাদের। দুমুঠো অন্নের সন্ধানে একদিন ছেড়েছিলাম ঘর। আমাদেরও আছে পরিবার । তোমাদের মত আমার মাও , রোজ রাতে তার খোকার কথা ভেবে , লুকিয়ে চোখের জল ফেলে। রাজনীতির পরিযায়ীরা , আসে পাঁচবছর ছাড়া-ছাড়া। প্রতিশ্রুতি  আর প্রতিশ্রুতি । হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা। বছরের পর বছর পেরিয়ে যায়। নিজেদের আখের গুছাতে , কার্পণ্য  করে না কখনও। না শিল্পের ভাবনা না কর্মসংস্থান। হীরক রাজার  দেশে সকলেই পরিযায়ী । লম্বা লম্বা ভাষণে পেট ভরে না। চাই আধপেটা ভাত।  বেঁচে থাকার তাগিদে , কাজের সন্ধানে কোথাও গেলেই , আমরা পরিযায়ী । দেশের দুঃসময়ে ,এ তকমা এঁটে বসে , আমাদের গায়ে। তোমরা যখন গৃহবন্দি হয়ে , বাঁচার লড়াই  কর , আমরা তখন খোলা আকাশের তলে বাসা বাঁধি। আমরা তো মানুষ নই , আমরা যে পরিযায়ী । ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!