Shadow

Author: Kulayefera

পথ্য – সুজয় দত্ত

পথ্য – সুজয় দত্ত

কাশবন ৪
PC: Infinite Compassion, Nepal পথ্য সুজয় দত্ত দুশো বাহাত্তর নম্বরের রুগী আজই ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট থেকে ছাড়া পেয়ে জেনারেল বেডে এসেছে। অবস্থার উন্নতিতে সকলের চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ। আর ইন্ট্রাভেনাস নয়,এবার পথ্য খাবে। নিজের মুখে। জেনারেল ওয়ার্ডের মেট্রনের কাছ থেকে নির্দেশ যায় রান্নাঘরে। কী কী খেতে বলেছেন ডাক্তারবাবু,কী কী দেওয়া বারণ। পাশে দাঁড়ানো একশো সাতান্নর আয়া। কাঁচুমাচু মুখ,বিব্রত,মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে। একটু আগেই সবার সামনে বকুনি খেয়েছে মেট্রনের। সেখানকার হার্টের রুগীকে আজ দুপুরে নুন ছাড়া খাবারের বদলে নুন‌ দেওয়া খাবার খাওয়ানো হয়েছে ভুল করে,ওয়ার্ডের আর-এম-ও এসে মেট্রনের ওপর চোটপাট করে গেছে। সেই ঝাল ঝাড়া হচ্ছে এখন আয়ার ওপর। "ট্রে-র গায়ে লেখা থাকে না তো কী হয়েছে? যখন ট্রলিতে করে দিয়ে গেছিল তখন কোথায় যাওয়া হয়েছিল ঘর ছেড়ে? রিপোর্ট করব সুপারকে?""সরকারি হাসপ...
সোমড়ার দেওয়ানজী বাড়ির জগদ্ধাত্রী মন্দির : ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

সোমড়ার দেওয়ানজী বাড়ির জগদ্ধাত্রী মন্দির : ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

কাশবন ৪
সোমড়ার দেওয়ানজী বাড়ির জগদ্ধাত্রী মন্দির : ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলায় গঙ্গার পশ্চিম তীরবর্তী একটি প্রসিদ্ধ প্রাচীন গ্রাম সোমড়া। যদিও খুব বেশি প্রাচীন নয় এই গ্রাম। বড়জোর তিন-চারশো বছরের। গঙ্গার পুরোনো খাতের উপর জঙ্গল হাসিল করে গড়ে উঠেছিল এখানকার জনপদ। গঙ্গার প্রবাহ পরিবর্তনের ফলেই তা সম্ভব হয়। পার্শ্ববর্তী গুপ্তিপাড়ার মতোই সোমড়াও বৈদ্যপ্রধান স্থান। দীনবন্ধু মিত্র রচিত 'সুরধুনী কাব্য' গ্রন্থে এইভাবে সোমড়ার বর্ণনা পাওয়া যায় - ''গঙ্গার পশ্চিম তীরে শোভে নানা গ্রাম / সোমড়া শবিড়া বৈদ্য নিকরের ধাম।" তবে সোমড়া যখন গঙ্গার গর্ভোত্থিত চর ও জঙ্গল ছিল বৈদ্যরা তখন এখানকার অধিবাসী ছিলেন না। তখন এখানে মাঝিমাল্লা, মৎস্যজীবী ধীবর প্রভৃতি সম্প্রদায়ের বাস ছিল। অনতিদূরে শ্রীপুর-বলাগড়ে সেই সময়কালেই নৌশিল্পের বিকাশ ঘটে যার খ্যাতি ছড়িয়েছিল বাংলার বাইরেও। আ...
শতবর্ষ পেরিয়ে মনোরঞ্জন চৌধুরী : রাজেশ দত্ত

শতবর্ষ পেরিয়ে মনোরঞ্জন চৌধুরী : রাজেশ দত্ত

কাশবন ৪
PC: Youtube শতবর্ষ পেরিয়ে মনোরঞ্জন চৌধুরী বিস্মৃত এক স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সংগীতসাধক রাজেশ দত্ত ১৯৪৫ সালের অক্টোবর। পরাধীনতার নাগপাশে ভারতবর্ষ। ব্রিটিশ অত্যাচারে নিপীড়িত দেশবাসীর বুকে দিকে দিকে জ্বলছে বিদ্রোহ ও বিক্ষোভের আগুন। সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ বাহিনীর মুক্তি সংগ্রাম ব্যর্থ হয়েছে। আজাদ হিন্দ ফৌজের সেনানীদের বিচারের নামে চলছে নির্দয় প্রহসন। নেতাজীর অন্তর্ধানে দেশবাসী .স্তব্ধবাক অন্যদিকে রচিত হচ্ছে ঐতিহাসিক নৌবিদ্রোহের প্রেক্ষাপট। এই অগ্নিগর্ভ সময়ে বাংলার এক গায়ক উদাত্ত কণ্ঠে গেয়ে উঠলেন এক আশ্চর্য তেজোদীপ্ত ও মর্মভেদী গান -- "পৃথিবী আমারে চায়, / রেখো না বেঁধে আমায়, / খুলে দাও প্রিয়া, খুলে দাও বাহুডোর /...শোন না কি ওই আজ দিকে দিকে হায়, / কত বঁধু কাঁদে, কাঁদে কত অসহায়, / পথ ছেড়ে দাও, নয় সাথে চলো, মুছে নাও আঁখিরোল, / খুলে দাও প্রিয়া, খুলে দাও বাহুডোর...
বাস স্ট্যান্ড – মণি ফকির

বাস স্ট্যান্ড – মণি ফকির

কাশবন ৪
PC India Mart বাস স্ট্যান্ড মণি ফকির তুই কোথায় দাঁড়াবি?রুবি মোড় ছাড়িয়ে সামান্য এগোলেই বাঁ হাতে দেখবি একটা বাস স্ট্যান্ড। মানে কয়েকটা জং ধরা লোহার কাঠামো আরকি। হয়তো কখনো তার বাস স্ট্যান্ড হয়ে ওঠার কথা ছিল হয়নি।যথা সময়ে পৌঁছে গিয়ে দাঁড়ালাম। ওরা তখনো এসে পৌঁছয়নি। কতবার এই জায়গাটা পেরিয়ে গিয়েছি। অথচ খেয়াল করিনি। বেশ কিছু বাঁকানো লোহার কাঠামো। মরচে পড়া। উৎসুক ভাবে মুখ বাড়িয়ে। একটা স্টপেজ হতে পারত। হয়নি। দুরন্ত গতিতে সদর্পে ছুটে চলা বাস থামাতে পারেনি। মানুষের অধীর আগ্রহের শরীক হতেই পারত। খুব রোদে কিংবা ঝমঝমে বৃষ্টি তে আশ্রয় হবার কথা তো। কিন্তু হলনা। ওরা কিছুক্ষণ এর মধ্যেই এসে পড়ল। আমার ইচ্ছে ছিল ওখানে আরো কিছু সময় দাঁড়িয়ে যাই। ঐ মরচে পড়া লোহা গুলোর একাকীত্ব মোচন করে ওদের একটা স্টপেজ উপহার দি। এটুকু তো করতেই পারি। তাই না?আমি আরেকদিন আসব এখানে। হয়ত আরো অনে...
অখ্যাত মহান শিক্ষক ননী স্যার – জয়িতা সরকার

অখ্যাত মহান শিক্ষক ননী স্যার – জয়িতা সরকার

কাশবন ৪
**স্মৃতিচারণ সূত্রে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন**  ||অখ্যাত মহান শিক্ষক 'ননী স্যার'||             জয়িতা সরকার স্কুল,টিউশন,বইপত্র বাছাই ইত্যাদি নিয়ে আজকাল অভিভাবকদের চিন্তার শেষ নেই। বাড়ির পরে ছাত্রজীবনে ছেলে-মেয়েদের জীবনের বেশিরভাগ সময়টা কাটে স্কুলে, নানা কোচিং সেন্টারে।আগামী দিনে তারা কেমন মানুষ হয়ে উঠবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে পথপ্রদর্শকের দক্ষতা-আন্তরিকতার উপর। আমার দেখা এমন এক শিক্ষকের কথা এখানে লিখছি, যিনি নীরবে বিস্ময়কর সেবাদান করে গেছেন অতুলনীয় পরিশ্রমে, দিনের পর দিন। নিঃশর্ত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা নিয়ে।বীরভূমের দুবরাজপুর ও তার আশপাশের অঞ্চলের মানুষের কাছে সুপরিচিত সেই এক মহান শিক্ষকের স্মরণে এই লেখা।তিনি স্বর্গীয় 'ননী স্যার' (ননী গোপাল দত্ত), এক আদর্শ শিক্ষাব্রতী। কি তার পুরস্কার? কই উপযু...
নিংড়ে নিই দিন – বিদ্যুৎ পাল

নিংড়ে নিই দিন – বিদ্যুৎ পাল

কাশবন ৪
PC - Jugantor নিংড়ে নিই দিন বিদ্যুৎ পাল এভাবে না বাঁচলে আমাদের চলে না যে বস্‌!কী করব ট্রেন যদি সিগনালে থামে প্রতি ভোরে,বাস পৌঁছে ফেঁসে যায় বাইপাসে স্ট্যান্ডের জ্যামে?রিক্সা,অটো,এমনকি টাঙাগুলো জানে দৈনন্দিন,লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে হর্ণ দেয় রাস্তার ওপারে।বাচ্চাবুচ্চি,সুটকেস গিন্নির মদতে কোলেকাঁখে,লাফিয়ে নামি পাথরে,ঢাল বেয়ে দেয়াল টপকে …কখনো পা হড়কে জবর্দস্ত চোট খায় কেউ,কখনো চমকে বুঝি আপ ট্রেন কাছে এসে গেছে … ধুলোপথে বাড়ি যাই,পরে বেশ ফলাও শোনাইবেমক্কা সমস্যা থেকে খুঁজে খুঁজে মজার চুটকি।কাদের বোঝাবে কে,সতর্কতা,আইন-বেআইন?হিমসিম খেয়ে এই বাঁচামরা সাধে কি সইছি?নিংড়ে নিই দিন,যাতে আনন্দেরি স্বাদটুকু থাকে।**************************************** বিদ্যুৎ পাল পরিচিতিজন্মতারিখ ২৪শে জুলাই ১৯৫২। জন্মস্থান পাটনা (বিহার)। পড়াশুনো সবটাই পাটনায়। চাকরি  ব্যাঙ...
মালিকা-এ-তরন্নুমঃ পল্লব চট্টোপাধ্যায়

মালিকা-এ-তরন্নুমঃ পল্লব চট্টোপাধ্যায়

কাশবন ৪
মালিকা-এ-তরন্নুম পল্লব চট্টোপাধ্যায়  "ইয়ে না হামারি কিসমত মে থী"- এ তো আমার ভাগ্যে ছিল না!দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ দশক তাঁর জাদুকরী কণ্ঠসুধায় মোহাবিষ্ট ছিল ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের গজল ভক্তরা। তিনি গজল সম্রাজ্ঞী বেগম আখতার। তার জন্মশতবার্ষিকী পেরিয়েছে নয় বছর আগে।সঙ্গীত জগৎ তাঁকে গজল সম্রাজ্ঞীর আসনে বসালেও বেগম আখতারের ব্যক্তিজীবন ছিল যেন যন্ত্রণার এক অন্তহীন যাত্রা। শিশুকালেই পিতা তাকে পরিত্যাগ করেন। বয়স তখন মাত্র চার- এসময়ে সম্পত্তিলোভী কুটিল আত্মীয়রা বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা চালায় যমজ দুবোনকে। কিন্তু সকল প্রতিকূলতা আর ভয়াবহ শত্রুতাকে দূরে ঠেলে এক প্রাকৃতিক শক্তির মতই জেগে উঠেছিলেন বেগম আখতার যেন কষ্টের সাগর পান করা নীলকণ্ঠ।তাঁর মৃত্যুর পর লক্ষ্মৌয়ের ‘পসন্দাবাগ’-এ সমাধিটার উপর জমেছে শুকনো ঝরাপাতার রাশি, জ্বলেছে হাজার মোমবাতি। কখনো বা কোনো ভক্ত এক গোছা রক্তিম গোলাপ রা...
*যাযাবর* – ব্রততী সেন দাস

*যাযাবর* – ব্রততী সেন দাস

কাশবন ৪
pc.. Ekushey TV *যাযাবর*ব্রততী সেন দাস আমি বাঙালি হয়েও ভ্রমণপিয়াসী নই,এই কথাটা বললে বেশির ভাগ বন্ধু-বান্ধব আশ্চর্য হয়ে মুখের দিকে চেয়ে ভাবে-এই কোন গ্রহের এলিয়েন এলো? সত্যি আমি ঘুরতে ভালবাসি না। এ নিয়ে আমার একটা নিজস্ব থিওরি আছে। ভাবি,চারদিন বা এক সপ্তাহ বা দিন পনেরো কোন নতুন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে কে কতটুকু সেই জায়গাটি চিনতে পারে? নাকি ঠাঁইনাড়া হওয়াই ঘোরার একমাত্র আনন্দ? টিকিট কাটলাম,হোটেল বুক করলাম,আশেপাশে দ্রষ্টব্য স্থান দেখলাম,ভালমন্দ খেলাম,ছবি তুললাম,ফেসবুকে পোস্টালাম,ব্যস ফিরে এলাম! দুদিন পরে ভুলে গেলাম! সেই জায়গার কৃষ্টি-সংস্কৃতি- আচার-আচরণ-খাওয়াদাওয়া-ভাষা-মানুষ কিচ্ছু জানলাম না। জানলাম না ওরা কেন এত পরিশ্রমী,কীভাবে অর্থ রোজগার করে,কেন মিশুকে বা অমিশুকে,শিক্ষার হার কেমন,কী খায়,কেন ওদের আচার ব্যবহার আমাদের থেকে ভিন্ন এ সব না জানলে দেশ ঘোরা কী হল?তাই বলে আমি ...
জীবনের দর্শন – অর্চনা মহান্তি

জীবনের দর্শন – অর্চনা মহান্তি

কাশবন ৪
PC: wallpaper safari জীবনের দর্শন অর্চনা মহান্তি --------------------------------- দুর্বলতার কোন ঠাঁই নেই আমার নিজস্ব মানচিত্রেমৃত্যুর গন্ধগুলো বড় চেনা চেনাআসে-যায়,যায়-আসেসঙ্গে করে নিয়ে গেলেও তেমন কোন ক্ষতি নেই একান্তের।অপরপক্ষে দুর্বলতা বেআব্রু হয়ে জায়গা দখল করে আছে সার্বজনীন মানচিত্রটায়সেখানে প্রতিটি তুচ্ছ আশঙ্কাই চরমবিন্দু,ভয়ানক মৃত্যুহিম দুর্ভাবনায়।এই বোধহয় হৃদয়ের বন্ধনএই বুঝি মায়ার জগৎযার মোহে আমরা মৃত-সঞ্জীবনী মন্ত্র আওড়াই মনে মনে অহর্নিশিডানার আড়ালে লুকিয়ে রাখতে চাই জীবনের ওম,নিজের ঠোঁটওকামনা করি মানচিত্রের সার্বিক কুশল।****************************************** অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য পাঠের সুন্দর পরিবেশে ব...
সমর্পণ – সম্পা চক্রবর্তী

সমর্পণ – সম্পা চক্রবর্তী

কাশবন ৪
ছবি : ব্রতী ঘোষ সমর্পণ সম্পা চক্রবর্তী     অ্যাম্বুলেন্স থেকে ধরাধরি করে অরুকে নামিয়ে ঘরে নিয়ে গেল সকলে। ঘরের কোণে পাতা চৌকিতে শুইয়ে দেবার সময় দেবু বলল —"অরুদা,ভাগ্যবান তুমি। আমরা চিন্তায় পড়েছিলাম তোমার থাকা নিয়ে।"   —"ক্লাবের বারান্দার একপাশে ফেলে রাখলে কি হোত বল? এ কার বাড়িতে নিয়ে এলি কে জানে। চিনিনা,জানিনা আর তোরা বলছিস দূর সম্পর্কের আত্মীয়!"      দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বছর চল্লিশের একটা লোক সরল হাসি ঝরিয়ে বলল—"মাস্টারদা,আপনি আমাদের পর ভাববেন না। রক্তের সম্পর্কেই কি আত্মীয় হয়? আত্মার কাছে থাকলেই আত্মীয়। আমার মা আর বউ তাই বলে।"    "মাস্টারদা" ডাক শুনে অবাক হয়ে যায় অরু। ওর সঙ্গী দেবু,পলাশ,মনু,বিলুরা সহাস্যে বলে উঠল—"যাক,অরুদার নতুন ঠিকানার সাথে সাথে নতুন নামকরণও হোল।"      ঠাট্টা-ইয়ার্কি ও চা পানের মধ্য...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!