Shadow

Author: Kulayefera

মধ্যরাতের রূপকথা – দেবযানী ঘোষ

মধ্যরাতের রূপকথা – দেবযানী ঘোষ

কাশবন ৪
Pc.. Freepik মধ্যরাতের রূপকথা দেবযানী ঘোষ রোজ মাঝরাতে বৃষ্টি নামে নীরার আকাশে। সিঁড়ি বারান্দার লম্বা জানালার গরাদ শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে  নীরা।বাতাসে অশরীরী হাতছানি। অথচ নীরা একটা পুরোনো  সোঁদা গন্ধের আড়ালে নিজেকে বেঁধে ফেলে ঐ গরাদের সাথে। এ বাড়ির রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে আছে কিছু দীর্ঘশ্বাস। এই দীর্ঘশ্বাসের বাষ্পে পুড়তে থাকে নীরা। পুড়তে পুড়তে ভস্মীভূত হয়ে সেই ভস্মে কপালে তিলক কেটে ঘরে ফিরে আসে  শেষ রাতে। ঠিক  সূর্য ওঠার আগে। এসেই এক ঘটি জল খায়। যেন এক যজ্ঞের সমাপ্তি। এরপর স্নান সেরে ছাদে এসে যখন দাঁড়ায় ওর পিঠ ছেয়ে থাকে কোঁকড়া,কালো চুলে। যা রোজ একটু একটু করে হাল্কা হচ্ছে তা বুঝতে পারে নীরা। বুক পেতে শুষে নেয় সূর্যের প্রথম রশ্মি কণা। ওর প্রতি রোমকূপে সঞ্চারিত হয় আরো একটা নতুন দিনের যাপন। বড় পিসিমণি নন্দিনী যত্ন করে নাম রেখেছিলেন "নীরা"।...
আবার বাজল সানাই – চন্দ্রকান্তি দত্ত

আবার বাজল সানাই – চন্দ্রকান্তি দত্ত

কাশবন ৪
P. C . Dreamstime আবার বাজল সানাই চন্দ্রকান্তি দত্ত প্রেমে পড়লে মানুষের যে এরকম দুর্গতি হয়, ভোলাদাকে না দেখলে সেটা আমি জানতে পারতাম না।ভোলাদা আমার থেকে বছর তিনেকের বড়। আমি যখন ক্লাস নাইনে, ভোলাদা তখন কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্র।কলেজে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমাদের জ্ঞানদাসুন্দরী হাই স্কুলের ফুটবল টিমের ক্যাপটেন ছিল। আর শুধু ক্যাপটেন নয়, ফুটবল টিমের অবিসংবাদী সেন্টার ফরোয়ার্ড। ভোলাদা খেললে এ অঞ্চলের কোন দলেরই ক্ষমতা ছিল না যে জ্ঞানদাসুন্দরীকে হারায়। ভোলাদা পায়ে বল নিয়ে এগোলে অন্যপক্ষ 'ত্রাহি মধুসূদন' ডাক ছাড়ত।আমাদের জ্ঞানদাসুন্দরীতে আমরা ছেলেরা মেয়েরা একসাথে পড়তাম। ক্লাস নাইনে ওঠার পর যখন আমরা হাফ প্যান্ট ছেড়ে ফুল প্যান্ট ধরলাম, তখন কিছু ছেলের মধ্যে শাড়ি পরা মেয়েদের দেখে একটু অতিরিক্ত পুলক জাগল। তবে সেটা শুধুই পুলক, তার বেশী কিছু নয়। কারণ, স্কুলের ছেলেমেয়ে পড়াশোনা ছেড...
রেলওয়ে লাউঞ্জ – জলি চক্রবর্তী শীল

রেলওয়ে লাউঞ্জ – জলি চক্রবর্তী শীল

কাশবন ৪
Pc.. ArchDaily রেলওয়ে লাউঞ্জজলি চক্রবর্তী শীল ট্রেনটা যখন প্ল্যাটফর্মে ইন করল তখন ঘড়িতে প্রায় মধ্যরাত | প্রায় সাতঘন্টা লেট | ট্রেনের যাত্রীদের আর ধৈর্য ধরছে না বসে থাকার | প্ল্যাটফর্মে ঢোকার অনেক আগে থাকতেই তাই যাত্রীদের মধ্যে অস্থিরতা | অনেকেই বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে ট্রেনের গেটের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করছে | প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার সাথে সাথেই তাদের মধ্যে তাড়াহুড়ো পড়ে গেছে নামার | ফলে ট্রেনের দরজার কাছে নামা নিয়ে গোলমাল চলছে | ট্রেনটা এখন স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়াবে | তাড়াহুড়োর কিছু নেই আর এই মধ্যরাতে অনেকে স্টেশনেই কাটিয়ে দেবে | কিন্তু সেটা কে কাকে বোঝায় ! লুম্বিনী ধীরেসুস্থে দুটো পায়েই নীকাপ গলিয়ে নেয় | তারপর উঠে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক তাকায় ট্যুর পার্টির ছেলেগুলোকে দেখতে পায় কিনা | ঠিক সেইসময় উল্টোদিক থেকে শশাঙ্ক নামে ট্যুর পার্টির ছেলেটা এসে বলে‚'রেডি তো জেঠিমা?...
জোকার – অঙ্কন দন্ড

জোকার – অঙ্কন দন্ড

কাশবন ৪
জোকার ✍️ কলমে – অঙ্কন দন্ড সার্কাসের ওই জোকারটাকেনিজের মতই লাগে,দেখলে তাকে সহানুভূতিনিজের প্রতিই  জাগে।পেটের দায়ে লোক হাসাবে তাই তো সাজে সঙ্,কান্নাগুলো হাসির আড়ালদেখায় নানান ঢঙ। আমিও ডুবে আমার রোলেজীবন নাটক স্টেজে,সবার সাথে মানিয়ে চলিনকল সাজে সেজে।সংলাপটা আমার ঠোঁটেররাখছে সমাজ লিখে,অভিনয়ে দক্ষ আমিনিচ্ছি তুরন্ত্ শিখে। ভুল তবু করলে কভুদিচ্ছে সমাজ চাটি,মানুষ সাজার অ্যাক্টিং চাইষোলো আনাই খাঁটি।**************************** অঙ্কন দণ্ড, জন্ম ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী। বাসস্থান পুরুলিয়া জেলার আদ্রায়। অঙ্কনের লেখালেখির পথ চলা কবিতা দিয়ে। আনন্দবাজার পত্রিকার জেলার পাতা " ছোটদের পাতা " শীর্ষক - এ তার স্বরচিত কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হত। স্থানীয় পত্রিকা " ঊষশী" তেও স্থান পেয়েছে তার কবিতা। এছাড়া নানান গল্প ও প্রবন্ধ লিখে স্থানীয় স্তরে অনেক শুভেচ্ছালাভ করেছে ...

সম্পাদকীয় – কুলায়ফেরার তৃতীয় বর্ষপূর্তি

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
সম্পাদকীয় ' কু লা য় ফে রা র   তৃ তী য়   ব র্ষ পূ র্তি '  তীব্র দহনের দু:সহ একটা লম্বা ইনিংসের পর বৃষ্টি ধারায় শুষ্ক ধরা অবশেষে শীতল হতে শুরু করেছে। রুক্ষ ফুটিফাটা মাটি সিক্ত হয়েছে বর্ষণে। ধুলোময়,নোংরা,বিবর্ণ গাছের পাতা গুলো ধারা স্নানে এখন পরিস্কার,চকচকে,সবুজ,প্রাণবন্ত। এই নীল গ্রহের একমাত্র আত্মঘাতী,ভাতৃঘাতী,অকৃতজ্ঞ প্রাণীরা বিশ্বের সর্বত্রই অরণ্য ধ্বংস করে বসত বিস্তৃত করে চলেছে। এদেশও পিছিয়ে থাকবে কেন? পুষ্করিণী,জলাশয় বুজিয়ে মাথা তুলছে মাল্টি স্টোরিড। বিপন্ন হচ্ছে বন্যপ্রাণী। পাখিকুল। বাতাসে বাড়ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা। গ্রীণ হাউস এফেক্টে বাড়ছে উত্তাপ। বরফ গলছে মেরু প্রদেশের। বিজ্ঞানীদের শংকা,আগামী শতকের আগেই বিশ্বের তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রীর উপর উঠে যাবে! তবে বর্ষা এসে যাওয়ায় স্বস্তি। এই লেখা যখন প্রকাশিত হবে,ততদিনে ঝমঝমিয়ে বর্ষণের কাল শুরু হয়ে যাবে! এই চরম প্রতিকূল আবহাওয়াতেও কুলায়...
শতবর্ষে সতীনাথ মুখোপাধ্যায় – মধুমিতা মিত্র 

শতবর্ষে সতীনাথ মুখোপাধ্যায় – মধুমিতা মিত্র 

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
শতবর্ষে সতীনাথ মুখোপাধ্যায় মধুমিতা মিত্র  "এলো বরষা  যে  সহসা"কিংবা"আকাশ এত মেঘলা যেও নাকো একলা" গানের এই কলি গুলি এখনও মনের মধ্যে দিয়ে বাজিয়ে যায় সুরের জল-তরঙ্গ,ছবি ভাসে চোখে সেই রেডিওর নব ঘোরানোর দৃশ্যের।মনের মতো গান কিংবা অনুরোধের আসরে বাজতে থাকা সুরেলা মিষ্টি গান-তখন গায়কের মহিমা বোঝার বয়স ছিল না,ধীরে ধীরে যখন সেই জায়গায় এলাম তখনই বুঝতে পারলাম গানের প্রাণ প্রতিষ্ঠা দাতা গায়কের ভূমিকা।আজ তাই বাংলা আধুনিক গানের স্বর্ণযুগের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র শ্রী সতীনাথ মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে এই আলোচনার অবতারণা। এঁর শাস্ত্রীয় জ্ঞান সমৃদ্ধ গায়ন রীতি মিশেছিল দরদী কণ্ঠের সুর মূর্ছনায়।১৯২৩ সালের ৭ই জুন সতীনাথ বাবুর জন্ম হয় উত্তরপ্রদেশের লক্ষ্ণৌ শহরে–ওঁর বড়ো হয়ে ওঠা পশ্চিমবাংলার হুগলী জেলার ঐতিহ্যময় শহর চুঁচুড়াতে এক সঙ্গীতময় পরিবারে।আজ বাংলা সংস্কৃতির এই দোলাচলের কালে এমন মরমী সুরসমৃদ্ধ ...
লাউয়ের ডাঁটা – ব্রতী ঘোষ

লাউয়ের ডাঁটা – ব্রতী ঘোষ

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
লাউয়ের ডাঁটা  ব্রতী ঘোষ রবিবারের বাজারটা জমিয়ে করতে না পারলে রজতবাবুর মন ভরে না ৷ বিশেষ করে নিজের হাতে দেখে মাছটা কিনতে না পারলে ওর শান্তি হয় না ৷ বাজার করে ফেরার পথে মদনের দোকানে এক কাপ চা খেয়ে তবে রিক্সা ধরে বাড়ি ফেরেন ৷ তবে আজ মদনের দোকানটা বন্ধ ৷ এরকম তো হয় না-নিশ্চয়ই ওর ছেলের শরীরটা খারাপ হয়েছে ৷ গত সপ্তাহে বলছিল বটে ৷ যাক্ গে ! বাড়ি ফিরে সাহস করে বউ কাকলিকেই বলতে হবে এক কাপ চায়ের কথা ৷ এই সব চিন্তা করতে করতে রিক্সাটা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো ৷  কিন্তু এ কি  !! এতো ঝন্‌ঝন্ বাসনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে কেন ? আসলে হয়েছে কি !! ব্যাপারটা তাহলে খুলেই বলি ৷ এর আগে বিনতা রজত বাবুদের বাড়ি কাজ করতো,তার ওই খিনখিনে গলার আওয়াজ আর খুক খুক কাশি ইদানিং রজত বাবুর কাছে অসহ্য হয়ে উঠেছিল। তাই কাকলি দেবীর কথা এক প্রকার অগ্রাহ্য করেই রজত বাবু বিনতাকে ছাড়িয়ে দেন। এদিকে বাড়িতে কাজের লোক না থাকলে যে গিন...
ভিটে – শ্রুতি দত্ত রায়

ভিটে – শ্রুতি দত্ত রায়

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
ভিটে শ্রুতি দত্ত রায় (১) কলা আর কাঁচা দুধ ভরা মাটির মালসাটা সন্তর্পণে পুকুরপাড়ে নামিয়ে হাতজোড় করলেন সৌদামিনী। মনে মনে মা মনসাকে কল্পনা করে আকুলভাবে প্রার্থনা করলেন,"হে ঠাকুর, ছেলেটার অপরাধ নিও না। তোমার সন্তানের গায়ে হাত তুলেছে ঠিকই, কিন্তু তুমি তো জান এটা ছাড়া সেই মুহূর্তে ওর আর কিছু করার ছিল না। ক্ষমা করে দাও মা, রক্ষা কর আমার পরিবারটা।"         নাহ্ , এবার ফেরা যাক।পুকুরপাড়ের এই ঝোপ জঙ্গলে আর দাঁড়িয়ে থাকাটা উচিত হবে না। তাছাড়া তেনাদের তো এ তল্লাটে মাঝে মধ্যেই দেখা যায়। তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে পা চালালেন তিনি। গতকালের ঘটনাটা আবারও মনে পড়ল তাঁর। গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল।        প্রতিদিনের মত ঠিকে ঝি শেফালী এসে সকালে বাসি ঘর ঝাঁট দিচ্ছিল। বাইরের ঘরে সৌদামিনীর ছয় বছরের নাতিবাবু তখন বেতের বড় সোফাটায় শুয়ে টিভিতে কার্টুন দেখছিল। শেফালী ঘরের বুককেসের তলায় ঝাড়ু ঢুকিয়েই ভয়ে চ...
কাগজের তরী – সহেলী মুখার্জি

কাগজের তরী – সহেলী মুখার্জি

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
কাগজের তরী  সহেলী মুখার্জি  আকাশ পথে বাদল বাউল আসি সন্ধ্যাপ্রদীপ মেঘ চাদরে ঢাকি বৃষ্টিমুখর সভায় ছন্দে ছেয়ে কাগজের ওই নৌকা চলেছে বেয়ে। কোন ঘাটেতে ভিড়বে তরী খানি হাওয়ার সাথে বন্ধু হৃদয় জানি যাত্রাপথের জমাট পলির চরে দাঁড়িয়ো ক্ষণিক একটি বারের তরে। ঝড়ের কাছে বিদায় নেবার বেলায় নিরুদ্দেশের অসীম অবোধ খেলায় হঠাৎ যদি পাও পথিকের দেখা বলবে তারে করছি তার অপেক্ষা। স্রোতের দেশে তোমার অভিসার পরম্পরায় মিশেছে যুগান্তর, আলিঙ্গনের আকুল সম্মোহন মিলন মোহে মত্ত সমর্পণ। । **************************** সহেলী মুখার্জি পরিচিতিঃ স্কুল শিক্ষিকা,নিবাস-ব্যান্ডেল/হুগলি,শখ-লেখা এবং গান করা    ...
কথায় কথায় (রম‍্যকথা) – তাপস দে

কথায় কথায় (রম‍্যকথা) – তাপস দে

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
কথায় কথায় (রম‍্যকথা) তাপস দে কিছু প্রবচন ও বাগধারা নিয়ে আজ একটু কাটাছেঁড়া করা যাক।ক্ষেত্রবিশেষে দেখা যায় এইসব কথার প্রচলিত অর্থ ব‍্যবহারিক দিক থেকে অনেকটা আলাদা আর প্রয়োগের কৌশলে কখনও সম্পূর্ণ বিপরীত অর্থের হয়ে যায়। প্রথমে লজ্জা নিয়ে পড়া যাক।বাংলায় লজ্জা শব্দটি একটি  অনুভূতিবাচক বিশেষ‍্য।আমরা প্রায়ই বলি "লজ্জার মাথা খেয়ে" এই কাজটা করলাম।মানে লজ্জা না করে কাজটা করলাম।এখানে আক্ষরিক অর্থে অগৌরবজনক ভাবে লজ্জাকে একটি মাথাবিশিষ্ট  প্রাণীর  সঙ্গে তুলনা  করা হয়েছে এবং তার মাথাকেও হেঁট বা হেট( hate) করা হয়েছে। এই কথার সূত্র ধরে একটু তলিয়ে ভাবলে যে ছবিটা ফুটে ওঠে তা হল সমাজে  যারা বিশেষ এবং  মাথা স্থানীয় তারা সবসময়েই কিছু না কিছুর মাথার খোঁজখবর করতে থাকে  যেমন মাছের,দইয়ের অথবা অধস্তনের আর তা সগৌরবে চেটে  যেতে থাকে বিন্দুমাত্র লজ্জা না করে।এইভাবেই  মূল কথাটার ওপর একটা দ্বন্দ্ব তৈরী হয়। তারপর "ধার...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!