Shadow

Author: Kulayefera

প্রকৃতির বন্ধু রাহুল – অজন্তা প্রবাহিতা

প্রকৃতির বন্ধু রাহুল – অজন্তা প্রবাহিতা

বিহানবেলায় ৫
প্রকৃতির বন্ধু রাহুল কলমে - অজন্তা প্রবাহিতা আমার ভাইপো রাহুল ছোট্ট হলেও অসম্ভব কৌতূহলী। সে প্রকৃতি,গাছপালা আর প্রাণীদের নিয়ে জানতে দারুণ ভালোবাসে। একদিন রাতে তার দাদু বললেন,"জানো,দাদুভাই,আমাজন এমন এক জঙ্গল,যেখানে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রহস্য।" রাহুল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল,"কী রহস্য, দাদু?" দাদু মৃদু হেসে বললেন,"শোনা যায়,আমাজনের গভীরে এমন এক গাছ আছে,যা নিজে নিজেই হাঁটতে পারে! কেউ কাছে গেলে তার লতাগুলো সাপের মতো নড়েচড়ে ওঠে। এমনকি,কেউ কেউ বলে,সেই গাছ বড় জন্তু আর মানুষকেও গিলে ফেলতে পারে!" রাহুলের চোখ বড় হয়ে গেল। "সত্যি, দাদু?" দাদু বললেন, "কেউ জানে না সত্যি কি না। আমাজন এখনও রহস্যে মোড়া।" সেদিন রাতে রাহুল যখন ঘুমিয়ে পড়ল,তখনও তার মনে দাদুর কথাগুলো ঘুরছিল। হঠাৎ সে অনুভব করল,সে এক বিশাল সবুজ জঙ্গলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে! চারপাশে অজস্র লম্বা গাছ, ঝুলন্ত লতা,আর নাম না জানা পাখির ডাক। রাহ...
মহাকাল – কঙ্কণা সেন

মহাকাল – কঙ্কণা সেন

বিহানবেলায় ৫
মহাকাল  কঙ্কণা সেন প্রতিদিন ভেসে চলি শিশু থেকে কৈশোরে যৌবন থেকে প্রৌঢ়ত্বে বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে বৃদ্ধত্বে ভেসেই চলি____ মাঝে বয়ে চলে মহাকাল নীরবে,নিঃশব্দে,অব্যক্তে। খড়কুটো কিছু আঁকড়াই বটে তবে কাল-স্রোতে ভেসে যায় সব নিবিড় মুহূর্ত,কথা দেওয়া নেওয়া কত প্রতিশ্রুতি,দৃঢ় অঙ্গীকার জেগে থাকে মহাকাল। তুমি বড়ো নৈর্ব্যক্তিক তোমার অঙ্গুলি হেলনে আমরা পুতুল বৈ তো  নই আর কিছু তবু হাজার বছর ধরে হেঁটেই চলেছি  এই পৃথিবীর পথে। ************************ কঙ্কনা সেন: রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম, এ। ছোট থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বাস মানবতায়। পেশা - শিক্ষকতা।  ...
ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত ‘আরো’ কিছু কথা – জয়িতা সরকার

ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত ‘আরো’ কিছু কথা – জয়িতা সরকার

বিহানবেলায় ৫
ধ্রুপদী ভাষা বাংলা এবং মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত 'আরো' কিছু কথা জয়িতা সরকার একুশে ফেব্রুয়ারি 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'। এটি বাংলা ভাষা দিবস না হলেও বাঙালির দাঁতে দাঁত চেপে বহু যন্ত্রণা সহ্য করে লড়াই করা ও একটি রাষ্ট্র ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই ঘোষণা হয়েছিল। এই দিনটিতে দিকে দিকে সেই ব্যাপার চর্চিত হয়। ভাষার আবেগ রাষ্ট্রের জন্ম দেয় দেখা গেল। "দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা,কারো দানে পাওয়া নয়"(আব্দুল লতিফ)। খুশির কথা এবং ন্যায্য,ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেয়েছে, অনেকটা দেরিতে হলেও। এর প্রাচীনত্ব,এর সমৃদ্ধি,এর অসামান্য বিস্তার,এর চর্চা,প্রাচীন কাল থেকে একটানা এর পথচলা সবই তো গৌরবময় এক অবস্থান সৃষ্টি করেছে। ক্লাসিক্যাল ভাষার সন্তান বিভিন্ন রাজ্যে এবং সারা বিশ্বে গর্বিত হবে।        কিন্তু বাড়িতে বসেই হোক,আর রাস্তায় বের হয়েই হোক,বিশ্বায়নে...
ভাইফোঁটা – চন্দ্র কান্তি দত্ত

ভাইফোঁটা – চন্দ্র কান্তি দত্ত

বিহানবেলায় ৫
ভাইফোঁটা চন্দ্র কান্তি দত্ত গল্পটা গত শতকের আটের দশকের শেষ বা নয়ের দশকের শুরুর দিকের। তখনও আমরা, মানে দূর মফস্বলের মানুষ,আজকের মতো বেপরোয়া হয়ে উঠিনি। ধর্ম বা ধর্মীয় আচার-আচরণ সম্পর্কে একটা ভীতি,একটা শ্রদ্ধা সবার মনেই ছিল। বড় শহরের কথা বলতে পারব না। রূপনারায়ণের ধারে অবস্থিত ছোট্ট মফস্বল শহরের ছেলে আমি। ছেলেবেলা আমার সেখানেই কেটেছে। আমাদের শহরে পালা-পার্বণ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে নিষ্ঠা দেখা যেত,বড় কোন শহরে সেরকম নিষ্ঠা বা শ্রদ্ধা দেখা যেত কিনা জানি না। আমরা দুর্গাপুজো,লক্ষ্মীপুজো,কালীপুজো যেমন শ্রদ্ধা-ভক্তি নিয়ে পালন করতাম,তেমনি,দোল,ভাইফোঁটা এসবও একইরকম নিষ্ঠার সাথে মানতাম। ভাইফোঁটার ধর্মীয় তথা সামাজিক  গুরুত্ব সম্পর্কে সকলেই যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলাম।  সেই ভাইফোঁটার প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা  নিয়েই আজ একটা গল্প বলব। টুটুদির সাথে যে পরেশদার  বিয়ে হতে পারে একথা পাড়ার কেউই বিশ্বাস ...
মায়ার মেলা – কলমে : অঙ্কন দন্ড

মায়ার মেলা – কলমে : অঙ্কন দন্ড

বিহানবেলায় ৫
মায়ার মেলা   কলমে : অঙ্কন দন্ড    স্বল্পকালের এই জীবনে হাজার মায়ার মেলা, মায়ার টানে চোখের জলে কাটলো জীবন বেলা।  টাকার মায়া, রূপের মায়া  মায়া রাশি রাশি।  ‘আমার’ বলে করলে দাবি পায় যে ভীষণ হাসি।  মায়ার সাগর স্বপ্নসম ঘুমটা ভীষণ গাঢ়, এই নেশাতে বুঁদ হয়ে তাই ডুব দিতে চাই আরও।  অঙ্গে, মনে সুখের জোগান  দিতেই জীবন শেষ, মায়ার ঘরে শান্তি কোথায়? নিত্য নতুন ক্লেশ।  মানুষ আসে, মানুষ যে যায় মায়ায় মাখা স্মৃতি।  আঁকড়ে ধরি বোকার মত জেনেই হবে ইতি।  হঠাৎ করেই ঘুমটা ভাঙে  স্বপ্ন ভাঙে জোরে, ‘একলা’ আমি উঠছি জেগে সত্যেরই এক ভোরে।  ক্ষণকালের মায়ার মেলা সাঙ্গ তখন হয়, মায়ার সাগর সাঁতরে হলো জীবন অপচয়। ************************ অঙ্কন দণ্ডঃ জন্ম ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী। বাসস্থান পুরুলিয়া জেলার আদ্রায়। ...
প্রকৃত বন্ধু কখনো হারায় না – মহাশ্বেতা ব্যানার্জী

প্রকৃত বন্ধু কখনো হারায় না – মহাশ্বেতা ব্যানার্জী

বিহানবেলায় ৫
প্রকৃত বন্ধু কখনো হারায় না মহাশ্বেতা ব্যানার্জী                   অলকা, মধুমিতা,করবী, সুচরিতা ও দেবযানী এই পাঁচজন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় খুব ভালোভাবে উত্তীর্ণ হবার পর ভৌত বিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে কলকাতার একটি বিখ্যাত গার্লস কলেজে ভর্তি হল। পাঁচজনের যখন নিজেদের মধ্যে পরিচয় হল দেখা গেল ওদের মানসিকতায় খুব মিল। আস্তে আস্তে ওরা পাঁচজনে পরম বন্ধু হয়ে গেল।              পড়াশোনার সাথে সাথেই কলেজ ক্যান্টিনে, রেষ্টুরেন্টে নানা আলোচনা, ছুটির দিনে সিনেমা, পিকনিক ইত্যাদির মাধ্যমে ওদের দিনগুলো রঙিন হয়ে উঠতে লাগলো। কিন্তু শুধু আনন্দ নয় পরস্পরের দুঃখ কষ্টও তারা ভাগ করে নিত। এই রকম ভাবে দেখতে দেখতে তিনটে বছর যে কোথা দিয়ে কেটে গেল সেটা ওরা টেরই পেল না।              গ্রাজুয়েশন ফাইনাল পরীক্ষার পর ওদের মন খুব খারাপ হয়ে গেল। ওরা পাঁচজনে ঠিক করল কখনও ওরা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না। প্রতি মাস...
সাধুসঙ্গ – দেব মুখার্জি

সাধুসঙ্গ – দেব মুখার্জি

বিহানবেলায় ৫
সাধুসঙ্গ দেব মুখার্জি শহরে ঢোকার মুখে, কয়েক ঘর মানুষের বসতি,আশেপাশে নানান গাছগাছালি,পাখির ডাকাডাকি। তার পাশ দিয়েই সরু পাহাড়ি পথটা,এর পোষাকি নাম হিল রোড,বেশ খানিকটা চড়াই পেরিয়ে রাস্তাটা শহরে এসে মিশেছে। কদাচিৎ গাড়িঘোড়া চলে এই পথে। নির্জন এই বনপথ আমার বড়োই পছন্দের,একটু ঘুরপথ হলেও এইপথেই যেতে আমি ভালোবাসি। নিদা ফাজলিকে মনে রেখে বলি,“ রাহগুজর-The favorite pathway." এখানেই পরিচয় আমার সাধুর সঙ্গে,প্রায় সমবয়সী মানুষটা হাত বাড়িয়ে লিফ্ট চেয়েছিল একদিন। পরনে আধময়লা পোষাক, সিকিউরিটি গার্ডের,পায়ে তোবড়ানো ফুটোফাটা একটা জুতো। হাতে একটা থলি,অন্যহাতে চট দিয়ে মোড়া জলের বোতলটা। এ হেন লোকটাকে লিফ্ট ?  কি মনে হয় দাঁড়াই। "বাবুজী একটু এগিয়ে দেবে চড়াইটা,হাঁফ লাগে বড্ড,চড়তে তাই",হাতদুটো জড়ো করে সে। হাবিবগঞ্জে পদ্মশ্রী অশোক চক্রধরকে শুনেছিলাম বলতে একটা কবিতা,মসলারাম। জঙ্গলের মজুর এই মসলারাম,একবার লরিতে সওয়ার হয়...
সিধুজ্যাঠার সঙ্গে সিনসিন্যাটিতে – সুজয় দত্ত

সিধুজ্যাঠার সঙ্গে সিনসিন্যাটিতে – সুজয় দত্ত

বিহানবেলায় ৫
সিধুজ্যাঠার সঙ্গে সিনসিন্যাটিতে সুজয় দত্ত "তুমি কি মুকুল ধর নামক ছেলেটির বিষয়ে প্রশ্নটি করছ?" প্রশ্নটি শুনে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যে সশ্রদ্ধ আত্মসমর্পণের ভঙ্গীতে তাকালেন হারীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে, সেটি তিনি পরিচালক মানিকদা-র নির্দেশে করে থাকতে পারেন,কিন্তু আমরা দর্শকরা হারীন্দ্রনাথের ওই কথাটি এবং পরবর্তী সংলাপগুলো শুনে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই একধরণের বিস্ময়মিশ্রিত সমীহ অনুভব করতে শুরু করি তাঁর অভিনীত চরিত্রটির প্রতি। তিনি গোয়েন্দাগিরিতে নামলে ওই পেশার অনেকেরই যে আর পসার থাকত না, ফেলুদারূপী সৌমিত্রের মুখে একথা শোনার পর উদ্দিষ্ট ব্যক্তিটি যা বললেন তা মুহূর্তের মধ্যে আমাদের মনে তাঁর চরিত্রটিকে এক বইমুখো সবজান্তা জ্যাঠা থেকে একজন নিরাসক্ত প্রাজ্ঞ দার্শনিকে রূপান্তরিত করল।  তিনি অনেক কিছু করলেই অনেকের পসার থাকত না--সেকথা তিনি জানেন। জেনেও কিছুই করেননি তিনি জীবনে,শুধু মনের জানলা খুলে বসে আছে...
নতুন সূর্যোদয় – অর্পিতা রায় আসোয়ার

নতুন সূর্যোদয় – অর্পিতা রায় আসোয়ার

বিহানবেলায় ৫
নতুন সূর্যোদয়   অর্পিতা রায় আসোয়ার     সুদূর অজ্ঞাত বৃত্তে অনেকটা ঘূর্ণনের পর স্থিত হয়েছি। এ যেন পূর্বনির্ধারিত,  ঈশ্বরের এ এক আশীর্বাদ। কতকাল  যে গেয়েছিলাম গান  অজ্ঞাত সুরে। এবার সুর অনেকটা চেনা- জানা। স্থিত হয়ে গাই এবার  নিজের গান। নির্বিঘ্নে, নিশ্চিন্তে করি  প্রাতঃভ্রমণ। দেখি এক নতুন সূর্যের  উদয়। *************************** এলেম নতুন দেশে  অর্পিতা রায় আসোয়ার এখানে বাতাস বড়  নিঃসঙ্গ,  গায় না গান; শুধু স্তব্ধতাকে জড়িয়ে  ফুঁপিয়ে কাঁদে।   এখানে নদী হারিয়েছে  তার নাব্যতা,  গতিপথ বদলে হয়েছে  দিশেহারা। এখানে মাটি বহুকাল  অনুর্বর, বন্ধাত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়ে  নিজের কর্তব্য ভোলে।  এখানে খেয়ালী রাখাল  বাজায় না বাঁশি,  মাঝি আপন ভাটিয়ালী ভুলে  ভাসে ভিন্ন সুরে। ভবঘুরে আ...
পাখির মান – অর্চনা মহান্তি

পাখির মান – অর্চনা মহান্তি

বিহানবেলায় ৫
পাখির মান   অর্চনা মহান্তি বদ্ধ ঘরের জানলা খুলে  তাকিয়ে থাকে একটি পাখি আকাশ যেন বড্ড দূরে নাগাল তার পাবেই না কি? বুকের ভিতর গুমরে ওঠে অভিমানের কষ্ট গুলো এই জীবনে ঝরবে না আর বন্ধ থাকা ডানার ধুলো। চোখের কোনে জলের ধারা ঝড়ের ভাঙন বুকের মাঝে ইচ্ছে ছিল চাঁদকে ছোঁয়ার স্বপ্ন এমন তার কি সাজে? তাই তো পাখি ঠোঁট ফুলিয়ে মিষ্টি সুরে গাইছে না গান কেইবা দেখে ?কেইবা বোঝে? কেইবা ভাঙায় তার অভিমান? *********************** অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য পাঠের সুন্দর পরিবেশে বড় হওয়ায় খুব ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য অনুরাগী। কলেজ জীবনে লেখায় হাতেখড়ি। তিন বছর আগে অসুস্থতার অবসাদ কাটাতে আবার কলম হাতে তুলে নেওয়া। ছন্দ,গদ্যকবিতা ও ছড়ায় সাবলীল ভাবে লেখ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!