Shadow

Author: Kulayefera

এক চিলতে রোদ্দুর – ব্রতী ঘোষ

এক চিলতে রোদ্দুর – ব্রতী ঘোষ

বিহান বেলায় ২
এক চিলতে রোদ্দুর ব্রতী ঘোষ ***************************** " কিরে তুই আর একটা রুটি নিবি ?" " কিরে ? " "মোবাইল থেকে মুখটা তুলে একবার হ্যাঁ কি না সেটাও বলতে পারছিস না .?" " না না আমি আর নেবো না ৷" - এ কথাটা বলেই আবার টিকলির চোখ মোবাইলে | " তুমি ? " - কোন উত্তর নেই ৷ " কি হলো ? আর একটা রুটি দেবো ? " " হু " - কোন রকমে মোবাইলের টাচ্ স্ক্রীনে চোখ আটকে বললেন অনিরুদ্ধ ৷ আর একটা রুটি অনিরুদ্ধর থালায় দিয়ে দেয় মনীষা ৷ চুপচাপ খেয়ে অনিরুদ্ধ উঠে শোবার ঘরে চলে যায় ৷ টিকলিও খাওয়া শেষ করে ওর নিজের ঘরে ঢুকে যায় ৷ ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করে খাবার-দাবার ফ্রিজে ঢুকিয়ে মনীষা যখন শোবার ঘরে ঢোকে তখন প্রায় রাত বারোটা ৷ অনিরুদ্ধ বসে আছে ল্যাপটপে চোখ রেখে ৷ "তুমি কি কাল বাজারে যাবে ?" মুখে আঙ্গুল দিয়ে ঈশারা করে মনীষাকে থামিয়ে দেয় অনিরুদ্ধ ৷ বুঝিয়ে দেয় অফিসের মিটিং চলছে ৷ চুপচাপ নিজের বিছানায় শু...
বিষ – কাজরী বসু

বিষ – কাজরী বসু

বিহান বেলায় ২
বিষ কাজরী বসু (এখনকার কথা) (১) "ফ্লাইটে এবার বোর্ডিং হবে তো! ওঠো, ওঠো..চলো..." বিমানবন্দরের নরম সোফায়  বসে বসে কখন যেন চোখটা লেগে এসেছিল রত্নার। পাবলো ডাকতেই ধড়মড় করে উঠলেন। আসলে বিগত অনেকগুলো  দিন নির্ঘুম কেটেছে তাঁর। নানাবিধ  হুমকির চোটে ঘুম আর শান্তির বারোটা বেজে বসেছিল। এখন তাই চোখে রাজ্যের ঘুম... কাঁধে ব্যাগ তুলে নিয়ে এগিয়ে চললেন রত্না পাবলোর পিছু পিছু। পৃথিবী কতভাবে মানুষকে শিক্ষা দেয়... ভাবতে ভাবতে... পূর্বকথা  (১) __তুমি কি জেগে?  জানিও  আমার যাওয়ার ব্যবস্থা কতদূর। আর কতদিন চলবে এই শবরীর প্রতীক্ষা? ঘুম ভেঙে উঠে পাবলো দেখল টফি টেক্সট করে রেখেছে অনেক আগে। প্রতিদিন এমন টেক্সট করে টফি। আর কতদিন পাবলো,আর কতদিন! কতদিন এভাবে একা থাকতে হবে,আর কত মাস... এত অবুঝ মেয়েটা। ছেলেমানুষ একেবারে। ব্রাশ করে কিছু খেয়ে কল করবে ৷ এতক্ষণে ওর অফিসের কাজ শেষ হয়েছে হয়তো। টফিকে যখন বলবে ওর আসার...
স্রোতস্বিনীর দর্পণে এবং আর তাকাবো না – কঙ্কণা সেন

স্রোতস্বিনীর দর্পণে এবং আর তাকাবো না – কঙ্কণা সেন

বিহান বেলায় ২
স্রোতস্বিনীর দর্পণে  কঙ্কণা সেন ইচ্ছে করে নদী হবো-------- বইব আবহমান কালের সিঁড়ি বেয়ে ঘাটে ঘাটে কত কোলাহল মাঝি করে পারাপার দুই পারে দুই গ্রাম কতবার আনাগোনা আদান প্রদান জনে জনে। সকাল বিকেল ছেলের দল করে এপার ওপার কত হুটোপুটি,আনন্দ অপার জলে দিই বুক ঢেলে স্নেহচুম্বন ওরে বাছা,তোরা যে কেউ ন'স অকিঞ্চন। ওই যে ভিড়ল তরী ঘাটের কিনারায় ওঠে ক্রন্দনরোল,কী বা হল গাঁয়? অশ্রুসিক্ত মুখখানি,এ কোন্ বালিকাবধূ দিল পাড়ি নব জীবনের ঠিকানায়। ওই দেখি ধূম্র আকাশ,আগুন কোথা জ্বলে? কেউ বুঝি শেষ শয্যায়?কতো মানুষ কাঁদে! প্রিয় বিয়োগের ব্যথা অন্তহীন সবাই যে বিন্দুসম হইব বিলীন! জীর্ণ শরীর নষ্ট হয়,নব কলেবর লাগি আমি শুধু বয়ে যাই,দেখি চক্ষু ভরি। নূতনের পথে চলেছ আগায়ে, নূতনের হাত ধরো চিরদিনকার বন্ধু যে জন তাঁহারে নিয়ত স্মরো।। ****************************************   আর তাকাবো না কঙ্কণা স...
অন্তঃসলিলা – মধুমিতা মিত্র

অন্তঃসলিলা – মধুমিতা মিত্র

বিহান বেলায় ২
অন্তঃসলিলা  মধুমিতা মিত্র “শ্বশুর বাড়ির এত পাওনা গয়নার মধ্যে শুধু মাত্র এ ক’টিই জুটলো আমার ফুলশয্যার সাজে”? বৌভাতের রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করতে করতে নতুন বৌয়ের চাপা স্বগতোক্তিতে স্তব্ধ নিখিলেশ দরজার ছিটকিনি লাগাতেও যেন ভুলে গেল! ভোরের আলো তখনও অস্ফুট,শেষ বৈশাখের ছোট রাত্রি তার শেষ প্রহর কাটাচ্ছে, ভৈরবীতে সানাইয়ের তান ঘুম ভাঙিয়ে দিল নিখিলেশের। ভৈরবীর মোচড় কেমন বুকে এক বেদনার সুর তুললো,তার‌ একলার জীবন জুড়তে চলেছে অন্য আর এক অদেখা জীবনের সঙ্গে। সারা বাড়িও তখন দধিমঙ্গলের আয়োজনে মত্ত। যৌবনের আঙিনায় পদার্পণ করতে না করতেই নিখিলেশের খুব সচেতন বাবা মা বিয়ের ব্যবস্হা সেরে ফেলেছেন এক রকম নিখিলের মতামতের তোয়াক্কা না করেই। লোকমুখে শুনছে নিখিলেশ, বৌ নাকি পরমাসুন্দরী;তপ্ত গৌরী,হরিণ আঁখির এক অপরূপা,আসছে নিখিলের জীবন আলো করতে। ছাদনা তলায় প্রথম দেখা,ভ্রমর চোখের সলাজ চাহনি বুকে দোলা লাগিয়ে দিল...
আবরণ – রমা চ্যাটার্জি

আবরণ – রমা চ্যাটার্জি

বিহান বেলায় ২
আবরণ রমা চ্যাটার্জি          "মনীশদা, দেখো দেখো অঙ্কন প্রতিযোগিতার কাগজপত্রগুলো কর্তৃপক্ষ পাঠিয়ে দিয়েছে।" মনীশের বিরক্তি ভরা উত্তর, "দেখছিস না , ডান্স কম্পিটিশন এর সার্টিফিকেট গুলো গুছিয়ে রাখছি ,আমাকে একটা একটা করে কাজ সারতে দে। আবার দশ দিনের মধ্যে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হতে চলেছে সুতরাং বুঝতেই পারছিস আমার নাওয়া-খাওয়া সব মাথায় উঠবে!         মনীশ এই পাড়ায় বছর চারেক হল  একটা ওয়ান রুম ফ্ল্যাট কিনে থাকে। চালচলন বেশভূষায় সবই খুব সাধারণ কিন্ত ব্যবহারটা অমায়িক আর সব সময় হাসি ও গান করেই সারাটা দিন কাটিয়ে দেয়। সকলেই মনে করে মনীশের জীবনে কোন দুঃখ সমস্যা কান্না কিছুই নেই ,আছে শুধু প্রাণ-খোলা-হাসি আর গান।সব সময় তার গলায় সুর ওঠে খেলা করে 'এমনি করে যায় যদি দিন যাকনা' । অনেকে তো জিজ্ঞেসই করে বসে" মনীশ, তুমি সব সময় সব বিষয়ে এত কেয়ার ফ্রি থাক কী করে?"মনীশ একটা রহস্যময় হাসি হেসে ...
রোদন ভরা হিয়া – নাজির হোসেন বিশ্বাস

রোদন ভরা হিয়া – নাজির হোসেন বিশ্বাস

বিহান বেলায় ২
রোদন ভরা হিয়া নাজির হোসেন বিশ্বাস  দোতলার ব্যালকনিতে নরম রোদ বিড়াল ছানার মত খেলায় মত্ত। সাদা মার্বেল পাথরের বারান্দাটি ঝকঝক করছে। এককোণে সুন্দর কারুকার্য খচিত রঙিন পাথরের টবে মানিপ্ল্যান্টের লকলকে লতাটি সবুজ পাতার ঢেউ তুলে পাশের রেলিংয়ে ভর দিয়ে  হাওয়ায় দোল খাচ্ছে। নীচের সবুজ লন জুড়ে নানা রকম দেশী বিদেশী ফুলেরা মাথা দুলিয়ে আলাপন জুড়েছে।ভুবন ডাঙ্গার এই দ্বিতল বাড়ির মালিক সুবিমল বোস। এই মুহূর্তে ব্যালকনিতে সকালের সোনারঙা রোদ্দুরটুকু উপভোগ করছেন। ডিসেম্বরের শেষ, ঠাণ্ডা জাঁকিয়ে বসেছে, গাছের পাতায় শিশির বিন্দু রোদের আলোয় হীরকদ্যুতি বিচ্ছুরণ করছে অকৃপণ ভাবে। এমন সময়ে গুটিগুটি পা’য়ে এসে দাদার অদূরে দাঁড়িয়ে, কোন ভণিতা ছাড়াই নির্মল  বলে উঠলো, -“দাদা আমার পক্ষে আর এই বাড়িতে থাকা কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না…আলাদা হতে চাই”। হতভম্ব দাদা কোন কথা না বলে ফ্যালফ্যাল করে ছোট ভাইয়ের মুখের দিকে অপলক চেয়ে রই...
আপনজন – বিশ্বজিৎ দে

আপনজন – বিশ্বজিৎ দে

বিহান বেলায় ২
আপনজন বিশ্বজিৎ দে বাগবাজারের এক সাবেক বাড়ির দারোয়ানের পাশের ঘরে পারুলদি থাকেন। আছেন প্রায় বছর সাতেকের বেশি। ওই বাড়ির মেজকত্তার একমাত্র ছেলের একমাত্র কন্যা মিঠুর দেখাশোনা করেন। ওই যেদিন মেজকত্তার গিন্নি নাতনি হওয়াতে আটকৌরের দিন কুলো বাজিয়ে আর খই ছড়িয়ে নাতনির জন্য লাড্ডু বিতরণ করলো, তার ঠিক দুদিনের মাথায় পারুলদি এলো ওই বাড়িতে। দারোয়ান রাম সিংহের দূর সম্পর্কের কে যেন একটা হয়! সে যাইহোক এখন পারুলদি আর নাতনি মিঠুর এই এতগুলো বছরে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে ভারী মিঠে। শীতের রোদে লুডো খেলার সঙ্গী হোক বা পড়ার পরে কার্টুন দেখার বন্ধু। মিঠুর সব আবদারের একমাত্র দাবিদার পারুলদি। স্নানের শেষে ভিজে মাথা মোছানো, যখন তখন নুডলস খাবার বায়না মেটানো, বারান্দায় রান্নাবাটি খেলার সঙ্গী কিংবা ঘুমের সময় গল্প বলা, সবই পারুলদি দক্ষ ভাবে সামলান। মিঠুর মা স্কুল শিক্ষিকা এবং বাবা একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন। দুজনের কাজের ...
উতলা উলূপী – পরাগ ভূষণ ঘোষ

উতলা উলূপী – পরাগ ভূষণ ঘোষ

বিহান বেলায় ২
উতলা উলূপী পরাগ ভূষণ ঘোষ নাগরাজ কৌরব্যের রাজত্বে প্রজারা সর্বদাই খুশীতে থাকেন। কৌরব্য শুধু রাজাই নন, সকলের সর্ব বিষয়ে দৃষ্টি রাখেন। অনার্য কৌরব্যের সুনাম, খ্যাতি, যশ চতুর্দিকে থাকা সত্বেও মনের ঈশান কোণে একটি কালো মেঘ জমে থাকে। আর্যরা তাদের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। ওরা যুদ্ধবিদ্যায় ও গুপ্ত আক্রমণে পারদর্শী। এদিকে তার বৈমাত্রেয় শত্রু শিবিরও ওত পেতে থাকে সর্বক্ষণ। একটু অসতর্কতা ডেকে আনতে পারে চরম বিপর্যয়। এ কারণেই তার একমাত্র কন্যাকে পিতা কৌরব্যের উৎসাহকে সম্মান জানিয়ে যুদ্ধবিদ্যা করায়ত্ত করতে হয়েছে।যথাসময়ে কন্যার বিবাহ দেন বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবে। অসামান্য সুন্দরী ছিলেন সেই রাজকন্যা। পদ্মফুলের মতো মুখমন্ডলে বুদ্ধিদীপ্ততার ছাপ স্পষ্ট। সরোবরের ন্যায় চক্ষুদুটির মনোহরী দৃষ্টিতে স্নিগ্ধতা। একঢাল দীর্ঘ কৃষ্ণকুন্তলদাম রাজকন্যার পৃষ্ঠদেশ অতিক্রম করে কটিদেশ ছাড়িয়ে নিম্নাঙ্গে প্রবাহিত। দেহসৌষ্ঠব ঈর্ষ...
ইচ্ছে এবং বছর সতের পরে – শ্রুতি দত্ত রায়

ইচ্ছে এবং বছর সতের পরে – শ্রুতি দত্ত রায়

বিহান বেলায় ২
                          " ইচ্ছে "                        শ্রুতি দত্ত রায় ইচ্ছে করে তোমাকে পাশে নিয়ে চলে যাই বহুদূর _ ঠিক যেখানে তিস্তার ধূসর সীমাহীন চরের কেবলমাত্র শুরু, সেখানে রাতের বেলা যখন গোটা পৃথিবী নিঝুম, তোমার কালো চুল ও নীল শাড়ির আঁচলে যাব হারিয়ে। নিজেকে কিভাবে হারাতে হয় সে শিক্ষা দেবে আমাদের চাঁদ আর আকাশের তারাগুলো। আর নদীর চুমকি বসানো জল শেখাবে আমাদের ভালবাসতে। এভাবেই নিজেদের একে অন্যের মাঝে হারিয়ে ফেলতে ফেলতে খোলা আকাশের নীচে বালিময় জমির উপর দাঁড়িয়ে আমরা দুজনে পাঠ নেব ভালবাসাকে কিভাবে নিবিড়ভাবে ভালবাসতে হয়। ************************************************************************       " বছর সতের পরে "       শ্রুতি দত্ত রায় আজ থেকে বছর সতের পরে আবার ,  হঠাৎ যদি দেখা হয় তোমার আমার – আকাশের মত উদার চোখ দুটি তুলে দৃষ্টি দানে সিক্ত করবে না কি...

ঋতুর অভিযোজন – প্রতিভা পালসেন  

বিহান বেলায় ২
ঋতুর অভিযোজন প্রতিভা পালসেন   বসন্ত শেষে বর্ষবরণ, পরবর্তী ঋণের এক পরিবর্তিত সাল! নতুন ঋতু তবু একই নাম, একই আবহাওয়ায় সময় বহমান ! চৈতী হাওয়া কখন যেন গ্রীষ্মের স্পর্শে ক্রমশ জমাট, অচেনা কোনও কালবৈশাখীর রূপ! বর্ষা-মেঘের জলনূপুর কখনও বা খর দুপুরের রোদে হঠাৎ প্লাবন! শরতের আর্দ্র-শিশির, ভোরের শিউলি-বাসর- শীতের কুয়াশা-চাদরে কী সুন্দর, কী অম্লান! বসন্ত শেষে প্রতিবার নববর্ষের শপথ, রঙ চেনায়! থমকে থাকা স্রোত ইচ্ছেনদী হয়, পলির বাধা সরিয়ে বেগে, বৈঠা বেয়ে জীবন গায় ভাটিয়ালি গান, অভিযোজনের নতুন আশ্লেষে.... ************************** প্রতিভা পাল সেন পরিচিতিঃ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি নিবাসী। কম্পিউটার-বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। পেশায় শিক্ষক। সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে ছোট থেকে লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। মূলতঃ কবিতা, গদ্য ও ছোটগল্পে লেখার প্রয়াস সীমাবদ্ধ। এছাড়া সংগীত চর্চা, ছবি আঁকা, রান্না...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!