Shadow

Author: Kulayefera

দত্তবাটি থেকে বংশবাটি-দত্তবংশের ইতিহাস – অনুপ মুখার্জি

দত্তবাটি থেকে বংশবাটি-দত্তবংশের ইতিহাস – অনুপ মুখার্জি

বিহান বেলায় ২
দত্তবাটি থেকে বংশবাটি-দত্তবংশের ইতিহাস অনুপ মুখার্জি রাঢ়ভূমি এদেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি,সমাজ ও অর্থনীতির গুটিকতক আদিমতম পীঠস্থানের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উজ্জ্বল গতিশীল অঞ্চল হওয়ায় যুগে যুগে দেশি-বিদেশিদের আপন আপন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়েছে।সময়ের ধারা বেয়ে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিবর্তনের সূত্র ধরে পরিবর্তিত হয়েছে সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি। ঘটেছে সংঘাত ও সমন্বয়। সেই পথ বেয়ে আজ থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে উত্তর রাঢ়ে আসে পশ্চিমী পঞ্চকায়স্থরা। তাঁদের অন্যতম দত্তবংশের অধিষ্ঠান হয় বরেট্টা গ্রামে (বর্তমান মুর্শিদাবাদের)। অত:পর নাম হয় দত্তবাটি বা দত্তবরুটিয়া। এই অঞ্চলটি রাঢ় ভূমির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী পশ্চিম থেকে পূর্বে ঢালু হওয়ায় জেলার বাগড়ি এলাকা অপেক্ষা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর, আবাদযোগ্য এবং প্রাচীন। বঙ্গে পঞ্চকায়স্থ আগমন এই প্রবন্ধের মুখ্য বিষয়ের সূচক। যে সকল *পঞ্চকায়স্থ  পশ্চিমী দেশ থেকে গৌড়ে এসেছে, কুলপঞ্জিকা...
পাওয়া, না পাওয়া – চন্দ্রকান্তি দত্ত

পাওয়া, না পাওয়া – চন্দ্রকান্তি দত্ত

বিহান বেলায় ২
পাওয়া, না পাওয়া চন্দ্রকান্তি দত্ত গড়িয়াহাটে পাঞ্জাবীর দোকানে এই মুহূর্তে বেশী ক্রেতা নেই। প্রণবেশ দেখলেন, তিনি ছাড়া আর মাত্র এক মা-মেয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত। প্রণবেশ নিজের জন্য একটা কেতাদুরস্ত ধুতি-পাঞ্জাবী কিনলেন। ভাগ্নের বিয়ে দুর্গাপুরে, তার জন্যই বিশেষ পোষাকের ব্যবস্থা। টাকা নেওয়ার সময় দোকানের ভদ্রলোক বললেন,  "আপনার যা চেহারা স্যার, এই পোষাকটাতে আপনাকে দারুণ মানাবে।" চেহারার কথাতেই হয়ত, অন্য ক্রেতারা এক ঝলক তাকালেন মনে হল। প্রণবেশ কথা না বাড়িয়ে মৃদু হেসে প্যাকেটটা নিলেন ও নমস্কার বিনিময় করে দোকানের বাইরে এলেন। হাতে এখনও সময় আছে। ফ্লাইওভারের নীচে ছেলেটা খুব ভাল কফি তৈরি করে। এক কাপ খেয়ে যাওয়া যেতে পারে। প্রণবেশ সে পথেই পা বাড়ালেন। "মানুদা!" বাড়ির বাইরে অব্যবহৃত তাঁর ডাকনাম ধরে কেউ ডাকছে। প্রণবেশ চকিতে পিছনে ফিরে চাইলেন। কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল। চিনতে পারলেন। ঝিনুক। এক গাল হেসে উচ...
বেড়িয়ে আসুন তোপচাচি – অদিতি ঘটক

বেড়িয়ে আসুন তোপচাচি – অদিতি ঘটক

বিহান বেলায় ২
বেড়িয়ে আসুন তোপচাচি  অদিতি ঘটক বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। এক জায়গায় বেশি দিন মন টেঁকে না। সব সময় উড়ু উড়ু ঘুরু ঘুরু বাই। এই বাই -ই হালে আমাদের টেনে নিয়ে গেল পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডে। গেলাম তোপচাচি লেক, পার্শ্বনাথ  পাহাড়, ও  ছোটবেলায় সহজ পাঠে পড়া উশ্রী নদীর  ঝর্ণা দেখতে। এন.এইচ.২ ধরে সোজা তোপচাচি। ধানবাদ পেরিয়ে হাইওয়ে ধরে আধঘন্টা গেলেই শুরু হয়ে যাবে পাহাড়ের সারি। যেন হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকছে। নতুন ঝকঝকে তিন লেনের মাঝ বরাবর রাস্তার দুপাশে পাহাড়ের সারি কখনো কাছে কখনো দূরে আবার কখনো লুকিয়ে পড়ছে। যেন কোনো বাচ্চা ছেলের টুকিটুকি খেলা। নিবিড় অরণ্য প্রকৃতি ,দেহাতি গ্রাম্য সরল জীবন ঠিক যেন বিভূতিভূষণের একটুকরো আরণ্যক। তোপচাচিতে রয়েছে চারিদিকে পাহাড় ঘেরা একটি লেক। লেকের জলে পাহাড়ের ছায়া সত্যি অপরূপ। ব্রিটিশ আমলে এবং পরবর্তী কালেও এই লেক থেকেই ঝরিয়া অঞ্চলে জল সরবরাহ করা হত। এইখানে ছিল একটি জল শোধনাগ...
পুরুষ অন্তরে ব্যথা – শুভজিৎ বসু

পুরুষ অন্তরে ব্যথা – শুভজিৎ বসু

বিহান বেলায় ২
পুরুষ অন্তরে ব্যথা শুভজিৎ বসু  বিক্রমশেখর বসু চৌধুরী নামটা উচ্চারণে এক উচ্চণ্ড নাদের সঞ্চার হয়। নামটা কানে এলে এক গম্ভীর জমিদারী ও আভিজাত্যপূর্ণ ব্যক্তিত্বের ব্যঞ্জনা আসে। তাই ভদ্রলোক নিজে নামটা  সহজ করে অতি সাধারণ বিক্রম বসু করে ফেলেছেন। তাঁর রায়বাহাদুর উপাধি প্রাপ্ত পূর্বপুরুষদের ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনের ফলে বেড়ে ওঠা জমিদারীর আভিজাত্য ধীরে ধীরে ক্ষীয়মাণ হতে হতে ১৯৫০ সাল নাগাদ জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায়  স্তিমিত হয়ে আসে। তাই বিচারবুদ্ধির প্রাজ্ঞতায় ওই পুরনো উপাধির কথা বলেন তো নাই ই, উপরন্তু নামের সংকোচন ঘটিয়ে নিজেকে সাধারণ পর্যায়ে অবনত করতে উদ্যোগী হন। তাঁর পিতামহ গত হয়েছেন বহুদিন। তাঁর দুই পুত্রের একজন বিলেতে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আর অপর পুত্র অর্থাৎ বিক্রমের পিতা বালীগঞ্জ প্যালেসে এক প্রাসাদোপম অট্টালিকায় কিছুদিন আগে অবধি থাকতেন। সেরিব্রাল স্ট্রোকে তিনি পৃথিবী ত্যা...
ভারত-বাংলাদেশের মাছ ধরার উৎসব ও মৎস্যমেলাঃ ইতিহাস ও ঐতিহ্য – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

ভারত-বাংলাদেশের মাছ ধরার উৎসব ও মৎস্যমেলাঃ ইতিহাস ও ঐতিহ্য – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিহান বেলায় ২
ভারত-বাংলাদেশের মাছ ধরার উৎসব ও মৎস্যমেলাঃ ইতিহাস ও ঐতিহ্য                                       সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়                    প্রথা মেনে বছরের একটি দিনে মাছ ধরা বা মৎস্যমেলা  (Fish Fair) - র উৎসব উর্বরতাকেন্দ্রিক ধর্মধারার ঐতিহ্যগত উত্তরাধিকার বলেই মনে হয়। ভারত ও বাংলাদেশের নানা স্থানে এই ধরনের উৎসব হয়। সর্বত্রই এই উৎসব কোথাও ফসলের বীজ বপনের পর, কোথাও বা নতুন ফসল গোলাজাত করার সময়ে কোনো একটি দিন অনুষ্ঠিত হতে দেখা যায়। যেহেতু জল নিজেই উর্বরতার প্রতীক, তাই মাছ-ও জলজ প্রাণী বলে জীবন ও উর্বরতার প্রতীক। মাছের ডিমে থাকে জন্মলাভের সম্ভাবনাময় অসংখ্য পোনা। তাই সন্তানবতী নারীর প্রতীক রূপেও মাছকে উর্বরতার প্রতীক ও 'শুভদ্যোতক' গণ্য করা হয়। সেই কারণে বিভিন্ন লৌকিক আচার-অনুষ্ঠানে মাছ ব্যবহৃত হয়। আলপনায় মাছ আঁকা হয়। কাঁথায় মাছের নকশা করা হয়। আবার অনেকের মতে মাছ লৈঙ্গিক প্রতীক (phallic symbol)...
প্রকৃতি – শিবপ্রসাদ ভৌমিক

প্রকৃতি – শিবপ্রসাদ ভৌমিক

বিহান বেলায় ২
প্রকৃতি শিবপ্রসাদ ভৌমিক আকাশ দিল খুশির আলো , ফুলের মধুর হাসি , বলল পাখি বন্ধু আমি তোমায় ভালোবাসি । সাগর দিল নীলের আভা জলের উপর এঁকে , পাহাড় বলল ঝরনা ধারা একটু যেও দেখে । সূয্যি দিল সোনালী রোদ ছড়িয়ে পথের বাঁকে , পথের যত গাছপালার স্নেহের ছায়ায় রাখে । গরম যখন ঘামিয়ে দিল বলল ডেকে হাওয়া মন্দ ভালো দুই দিকেতেই আমার আসা যাওয়া । বৃক্ষ বলল এই প্রকৃতি আদর যতন পেলে , থাকবে সবাই সুস্থ সবল বাঁচবে হেসে খেলে । -------------------------------- শিবপ্রসাদ ভৌমিক নতুন পাড়া পোঃ অ্যাঙগাস, হুগলি    ...
শিরোনাম স্নেহের পরশ – রিমা মজুমদার

শিরোনাম স্নেহের পরশ – রিমা মজুমদার

বিহান বেলায় ২
শিরোনাম স্নেহের-পরশ কলমে – রিমা মজুমদার  মা,দেখো না,দাদাভাই আমার পুতুলটা নিয়ে নিয়েছে...ওওওও...মাআআআ..  বোনের এই নাকি কান্নাটা বেশ উপভোগ করে ছোট্ট পাবলো!..তাই হাততালি দিয়ে বলতে থাকে  দেবো না..দেবো না!!..কি করবি!যা আরো কাঁদ গিয়ে ..মা কে বল গিয়ে..  পাবলোর কথাটা শেষ হতে না হতেই ওদের মা দীপা দুম করে পাবলোর পিঠে একটা কিল মেরে বলে, –অসভ্য ছেলে কোথাকার!!..সবসময় ছোট বোনের পিছনে লাগা ..খালি ওর জিনিস নিয়ে কেন এত টানাটানি করিস বল!পাবলোর হাত থেকে টান মেরে টুকুর পুতুলটা ছিনিয়ে নেয় দীপা!আজ আসুক বাবা তারপর তোর হচ্ছে দাঁড়া..  পাঁচ বছরের ছোট্ট টুকুকে নিয়ে পাবলোর সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায় দীপা,বারো বছরের পাবলোর দিকে ফিরে তাকানোর প্রয়োজন মনে করে না ও।  ঠাম্মির ঘরে খাটের একটা কোণায়  হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে কাঁদতে থাকে পাবলো.. —'বাবা গো!..আর পারিনা..' সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হাঁটুর ব্যথায় কাহিল অনিমা নিজের ঘরে ঢুকে...
পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে – সোনালী গুহ

পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে – সোনালী গুহ

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
।। পৌষ পার্বণ : স্মৃতির জানলা বেয়ে।। সোনালী গুহ পৌষ সংক্রান্তিতে শীতের ওম মেখে পিঠে পুলি খাওয়ার মজাই আলাদা। খুব মনে পড়ছে, ছোটবেলায় এইদিনে সকাল থেকেই শুরু হতো আমাদের যাদবপুরের বাড়িতে বাস্তুপুজো। আগের দিন বাগানের একটি জায়গায় মাটি খুঁড়ে উনান বানানো হতো। জায়গাটা লেপা হতো গোবর দিয়ে।সংক্রান্তির ভোরে পুরোহিত মশাই এসে শুকনো ডালপালা, নারকেল পাতা দিয়ে উনান জ্বালাতেন। পৌষ বা মকর সংক্রান্তিকে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলে। কারণ, এই দিন থেকে সূর্য উত্তরায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে। উত্তরায়ণ সংক্রান্তিতে বাস্তুপূজার প্রচলন আছে। শঙ্খপাল বঙ্কপাল ক্ষেত্রপাল নাগপালের ধ্যান করে বাস্তুর ধ্যান করা হয় এইদিনে। বাস্তুর প্রণাম মন্ত্র হল,“ওঁ বাস্তুরাজ নমস্তুভ্যং পরমস্থানদায়ক। সর্বভূতজিতস্ত্বঞ্চ বাস্তুরাজ নমোহস্তুতে।“ সেইমতো গৃহ পুরোহিত উনান জ্বালিয়ে পেতলের কড়াইতে পায়েস রান্না করতেন। উপাদেয় সেই পায়েসকে ...

সম্পাদকীয় (বসন্ত সংখ্যা) – দেবদত্ত বিশ্বাস

বসন্ত সংখ্যা
সম্পাদকীয় দেবদত্ত বিশ্বাস কৃষ্ণচূড়া আর পলাশ আর শিমুল বনের রঙ বার্তা এনেছে বসন্ত এসে গেছে। দূরন্ত শীতলতার পর মৃদু মন্দ বাতাস রিনরিন করে অনুভবে আনছে বসন্তের আমেজ।  প্রাকৃতিক নিয়মে বসন্ত নতুন রঙের সম্ভার নিয়ে আসে।ফাগের রঙে রাঙিয়ে তোলে ত্রিভুবন। ফুল ফোটে,পাখি  গায়। কিন্ত এবার এ কোন বসন্ত এলো ?অজানা মারণ ভাইরাসের আতঙ্ক কাটিয়ে একটু একটু করে যখন স্বাভাবিক হচ্ছে জীবন, তখনই  প্রকৃতি বড় নির্মম হলো। কালের নিয়মে বজ্রবর্ষণ হলো আমাদের মনের ওপর। এই বসন্তে হৃদয় শূণ্য করে ঈশ্বর ডেকে নিলেন মা সরস্বতীর দুই রূপকে। স্তব্ধ করে দিলেন দুই কোকিল কণ্ঠীকে। লতা মঙ্গেশকর এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় পাড়ি দিলেন সুরলোকে। সুরসৃষ্টির দুই প্রজন্ম অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কভি অলবিদা না কহেনার জনক বাপ্পী লাহিড়ি অলবিদা জানালেন। সত্তর আশির দশকের কথা মনে পড়ে যায়। কলকাতা ময়দানে দুই'পা দিয়ে  ঝঙ্কার তোলা ছিপছিপে,দী...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!