Shadow

Author: Kulayefera

ধ্রুবসত্য – ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী

ধ্রুবসত্য – ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
ধ্রুবসত্য ডা. সুচন্দ্রা মিত্র চৌধুরী এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় সবকিছুই পরিবর্তনশীল। সবকিছুই পাল্টায় সময়ের হাত ধরে,নিয়ম করে, তাইতো দিন থেকে কাল,কাল থেকে যুগ,যুগ সাক্ষী হয় ইতিহাসের ।। এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় মানুষ ও পাল্টায় সময়ের সাথে পা মেলাতে মেলাতে,নিজের খোল-নলচে বদলে ফেলে কখন, তা সে নিজেও জানে না বা জানতে চায় না। সময়ের সাথে চলতে চলতে কেউ বা যায় এগিয়ে কেউ রয়ে যায় পিছনে,আবার কেউ মুখ থুবড়ে পড়ে। টেনে তোলার হাত তখন পাবে,যখন তাদের দলভুক্ত হবে।। মূল‍্যবোধ ও পরিবর্তিত হয়,সময় থাকে তার সাক্ষী।। আজ যা সত্যি কাল তা মিথ্যা আর কাল যা ছিল মিথ্যা আজ তা সত্যি। সত্যি-মিথ্যার চলে লুকোচুরি এখন যা ভালো পরে তা খারাপ,আর এতদিন যা খারাপ ছিল আজ তা ভালো। এ জগতে ধ্রুবসত্য কিছুই নেই,সবকিছু আপেক্ষিক।। এই পরিবর্তনশীল দুনিয়ায় সবাই পাল্টায়,সবকিছুই পাল্টায়,পাল্টায় না শুধু বোকারা। তাই বোকারা একা আর কিছুটা বিভ্...
অনাকাঙ্খিত জীবন – ঊর্মি সরকার

অনাকাঙ্খিত জীবন – ঊর্মি সরকার

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
আমি সুতপা। বাবা-মায়ের দুই সন্তানের আমি প্রথম। আমার একটা ছোট বোন আছে। তার নাম অনুতপা। আমার শৈশব কাটে মুম্বইয়ে, দাদু-দিদার কাছে। আমার যখন তিন মাস বয়স, তখন মা আমায় রেখে ফিরে যান আমার বাবার সংসারে। পাঁচ বছর পরে আমায় নিয়ে আসা হয় আমার পৈতৃক বাড়িতে। কিন্তু আজকের কথা আমায় নিয়ে নয়। এ কাহিনী আমার মায়ের জীবনের কাহিনী। একটা বয়সের পর থেকে মা কিছুটা আমার বন্ধু হয়ে গেছিলেন। মানে, সেই আমলে, যতটা ফ্রি হওয়া যায়। তখন মা'র কাছেই মা'র নিজস্ব কিছু কথা শুনেছিলাম। কিছু অনুভূতির কথা। সেই কথাই আজ বলতে এসেছি। রেখা অল্প বয়স থেকেই, "বিবাহ" নামক বস্তুটি কে একদম পছন্দ করত না। কোনদিনই বিয়ে করতে চায়নি সে। চেয়েছিল উচ্চশিক্ষা নিয়ে স্বাধীন জীবন যাপন করতে। কিন্তু সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরে এই আবদার মানা হবে কেন? তাই যথা সময়ে, তার বিয়ের কথাবার্তা শুরু হয়। রেখা সুন্দরী ছিলনা মোটেই। তবে সুশ্রী ছিল। উজ্জ্বল শ্যামবর্ণা মেয়েটি পড়াশোনা ...
ব্যথা – কাজরী বসু

ব্যথা – কাজরী বসু

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
ব্যথা কাজরী বসু দরজাটা সামান্য ফাঁক করে ঈশিতা দেখল হাত মুখ নেড়ে ঋষির সঙ্গে গল্প করছে ঋদ্ধি। ঋষিও শুনছে খুব মন দিয়ে। মধ্যে মধ্যে হেসে উঠছে হো হো করে,ঋদ্ধিও হাসছে পাহাড়ী ঝর্নার মতো কলকলিয়ে,অনাবিল খুশিতে। ঋষিকে কেমন অচেনা লাগছে,শিশুদের সঙ্গে মেলামেশায় এত সাবলীল কবে থেকে হলো ঋষি? ঈশিতা অবাক। কাস্টডি মামলায় ঈশিতা ছেলের দখল পেলেও ডিভোর্সের সময় কোর্টের নির্দেশ ছিল ঋদ্ধিকে সপ্তাহে একবার ওর বাবার কাছে নিয়ে যেতে হবে। ছেলের হেফাজত পেতে খুব লড়েছিল ঋষি। মামলায় হেরে গিয়ে খুব মুষড়ে পড়েছিল সম্ভবত আর তারপরেই চাকরি থেকে দীর্ঘকালীন ছুটি নিয়ে কোথায় যেন উধাও হয়ে যায়। ঋদ্ধিকে যে আনবে,অনেক চেষ্টা করেও ঋষির পাত্তাই পায়নি ঈশিতা। ইতিমধ্যে প্রীতমকে বিয়ে করে নতুন সংসারের গোড়াপত্তন করার কাজটিও মিটে গেছে। দুম করে গতকালই হোয়াতে মেসেজ করে ঋষি জানায় সে ফিরেছে, ঋদ্ধিকে দেখতে চায়। সেই অনুযায়ী বেলতলা রোডের এই ফ্ল্যাটে ...
অঙ্কন – অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়

অঙ্কন – অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়

অঙ্কন, বসন্ত সংখ্যা
অঙ্কন শিল্পীঃ অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায়   ************************************** অগ্নিজ চট্টোপাধ্যায় পরিচিতিঃ টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ অফ পাব্লিক স্কুলে ক্লাস সেভেন এ পাঠরত, চন্দননগরের বাসিন্দা, Taekwondo শেখে।            
দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

বসন্ত সংখ্যা, ভ্রমণ কাহিনী
দারুশিল্পীদের গ্রাম নতুনগ্রামের ইতিকথা                              সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায় রংবেরঙের বিচিত্র গড়নের বিভিন্ন রকমের পুতুল। সবই কাঠের পুতুল। উজ্জ্বল নানা রঙের বৈভবে গোল গোল চোখওয়ালা তিন কোণা ছোটো-বড় পেঁচাগুলো সবার আগে নজর কাড়ত। রাজা-রানী,বর-বউ বা উদ্বাহু নৃত্যরত গৌর-নিতাই পুতুলগুলো দেখেও মজা পেতাম। নিজের হাতে বানানো এইসব পুতুল ঝুড়িতে সাজিয়ে বিক্রি করতেন এক ফেরিওয়ালা। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় চন্দননগর স্টেশন রোডে শ্যাম মাস্টারের গলির কাছে। প্রতি বছর মোটামুটি একই জায়গায় তিনি তাঁর পসরা নিয়ে বসতেন। তাঁকে দেখলেই 'ভানু পেলো লটারী' ছবিতে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'লিপ'-এ শ্যামল মিত্রের গাওয়া 'পুতুল নেবে গো পুতুল' গানটা মনে পড়ে যেত। গানটা সেইসময় রেডিওতে প্রায়ই বাজানো হত। 'সেইসময়' বলতে আমার তখন শৈশবকাল। স্কুলে নীচু ক্লাসে পড়তাম। একবার একটা পেঁচা কিনেছিলাম। আর একবার একটা বউপুতুল। সেটিকে দেখতে অনে...
অতি পরিচিত গল্প – ব্রতী ঘোষ

অতি পরিচিত গল্প – ব্রতী ঘোষ

গল্প, বসন্ত সংখ্যা
অতি পরিচিত গল্প ব্রতী ঘোষ আজকাল অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে আমার আর ভালো লাগে না | বাস থেকে নেমে পাড়া দিয়ে হেঁটে যখন বাড়ি ফিরি তখন আমার পা দুটো আর চলে না কারণ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই লীনা আর মায়ের কথা কাটাকাটি লেগেই থাকে ৷ লীনার  সাথে আমার বিয়ে হয়েছে বছর তিনেক আগে ৷ আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,মার নয়নের মণি ৷ মা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছেন আর সে কথা পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনকে বলতে  বেশ গর্ব বোধ করেন ৷ বাবার ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের বদলির চাকরি-সবে দু বছর হলো অবসর নিয়েছেন ৷ বারো  ক্লাস পর্যন্ত প্রতিদিন মা সাথে করে স্কুলে,টিউশনে নিয়ে গিয়ে বসে থেকেছেন ৷ মার পরিশ্রমের মূল্য আমি দিয়েছি,আইটি সেক্টরে বেশ বড় একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে মোটা মাইনের চাকরি করি আমি ৷ ও হ্যাঁ,বলতে ভুলে গেছি,আমি তন্ময় চক্রবর্তী ৷ চাকরি পেয়ে মার পছন্দ করা সর্বগুণসম্পন্না মেয়েকে বাড়ির বউ করে এনেছ...
ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া – সুলগ্না চক্রবর্তী

ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া – সুলগ্না চক্রবর্তী

আলোকপাত, বসন্ত সংখ্যা
ব্যান্ডেল চার্চ এবং তৎকালীন ইন্ডিয়া  সুলগ্না চক্রবর্তী খবর পাওয়া মাত্র মাহমুদ শাহ চোখে অন্ধকার দেখলেন। কী করবেন ভেবে পেলেন না। পশ্চিম থেকে শেরশাহ আসছে তাঁর রাজ্য আক্রমণ করতে। এই আক্রমণ রুখে দেওয়ার মতো লোকবল তাঁর কাছে থাকলেও তা যে খুব একটা কার্যকর হবে না তা তিনি জানতেন। তাই খবর পাঠালেন গোয়াতে পর্তুগীজদের কাছে , সাহায্যের জন্য। পর্তুগীজরা সাহায্য করতে রাজি হলো একটা শর্তে। মাহমুদ শাহ ভেবে দেখলেন আগে তো রাজ্য সামলানো যাক তারপর পর্তুগীজদের ব্যবসা করার অধিকার নিয়ে ভাবা যাবে। রাজি হয়ে গেলেন তিনি। মাহমুদ শাহের রাজ্য আক্রমণ করলেন শেরশাহ বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে। পর্তুগীজদের কিছু করার ছিলো না এবং গৌড় দখল হলো। শেরশাহ প্রচুর স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে গৌড় ছাড়লেন আর এই যুদ্ধে পূর্ব শর্ত অনুযায়ী পর্তুগীজরা গৌড়ে বাণিজ্য করার অধিকার পেলো। যখন সপ্তগ্রামে  পর্তুগীজরা বাণিজ্য করে মোটা লাভের মুখ দেখবো  দেখ...
মৃত্যুঞ্জয় – ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী

মৃত্যুঞ্জয় – ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
মৃত্যুঞ্জয় ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী    জীবন তুমি মৃত্যুকে ছুঁয়ে থাকো ভয়কে জয় করবে তুমি তখনই, জীবন তুমি ভয়কে দূরে রাখো জয়টা তোমার হবেই হবে জানি। জীবন তুমি মানুষকে ভালোবাসো ভালোবাসার মানুষ বড় কাঁদে, চলার পথে থমকে যেয়ো নাকো ভালোবাসা তোমায় বড়ো বাঁধে। বাঁধন পড়া তোমার কর্ম নয় বাঁধন টুটে দিতেই হবে পাড়ি , সঙ্গে থাকুক জীবনমুখী চলা চলার পথে তুমিই তো কান্ডারী। শূন্য হাতের শত বঞ্চনা আসুক শূন্য মানেই শূন্যতা নয়, হতাশার গ্লানি ঝেড়ে পড়ো নির্মোক বিবেকাদর্শে তুমিই মৃত্যুঞ্জয়। জীবন তুমি মৃত্যুকে ছুঁয়ে থাকো মৃত্যু তোমার স্পর্শে জীবন পাক, সত্য নিষ্ঠা সততার জয় হোক দেহটুকু শুধু অগ্নিতে পুড়ে যাক ৷ ********************************* ধ্রুবজ্যোতি  চক্রবর্তী কবি গল্প লেখক ও আবৃত্তিকার। এছাড়াও নাট্যশিল্পী ও নাট্যপরিচালক  ...
হায়দার আলি এবং দাক্ষিণাত্যের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী সামরিক জোট – দীপাঞ্জন মাইতি

হায়দার আলি এবং দাক্ষিণাত্যের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী সামরিক জোট – দীপাঞ্জন মাইতি

আলোকপাত, বসন্ত সংখ্যা
হায়দার আলি এবং দাক্ষিণাত্যের প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী সামরিক জোট  দীপাঞ্জন মাইতি আজ থেকে প্রায় আড়াই শো বছর আগে ভারতবর্ষ তখন ছোট বড় অজস্র রাজ্য–অঙ্গরাজ্যের সমষ্টি মাত্র। স্বভাবতই নিজের নিজের ক্ষমতা আর রাজত্ব বিস্তারই প্রতিটি রাজার লক্ষ্য। প্রতিবেশী রাজ্যেরা নিজেদের মধ্যে অনবরত যুদ্ধে ব্যস্ত। যুদ্ধ জয়ের অদম্য স্পৃহায় রাজারা বিদেশী বণিক বাহিনীর সাহায্য নিতে লাগলেন। এই সুযোগে বিশেষ করে ব্রিটিশ এবং ফ্রেঞ্চ কোম্পানি বহির্বিশ্বের যুদ্ধ টেনে আনলো ভারতের মাটিতে একাধিক যুদ্ধে যুযুধান রাজাদের পক্ষ নিয়ে মাঠে নামল বিদেশী বণিক বাহিনী। একদিকে জয় পরাজয়ে ক্ষত বিক্ষত হতে লাগলো তৎকালীন ভারতীয় রাজারা আর সবার অলক্ষ্যে একে একে সমস্ত দেশী বিদেশী শক্তিকে পর্যদুস্ত করে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসল ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এমন সময় যখন আপতদৃষ্টিতে প্রতিবেশী বিদেশীর চেয়ে বড় শত্রু এক রাজা! না ঠিক রাজা হয়ত নয় সেনাপতি,নবাব বা ...
মহাশ্বেতা – বন্দনা মিত্র

মহাশ্বেতা – বন্দনা মিত্র

কবিতা, বসন্ত সংখ্যা
মহাশ্বেতা বন্দনা মিত্র বসন্ত পঞ্চমী রাতে ব্যস্ত স্টেশনে দেখেছি বালিকাটিকে। দেখেছি আলোর নীচে একমনে ঝুঁকে পড়া একাগ্র শরীর, খোলা বই, বাসি কাগজের কাটা খাতা। ভ্রূকুঞ্চিত উজ্জ্বল বাদামী মুখে পলাশরেণুর মত গুঁড়ো মাখা জ্ঞা পূর্বক সন প্রত্যয়। প্রত্যয় দেখেছি আমি অপুষ্ট চিবুকে তার, শক্ত পেন্সিল ধরা শীর্ণ হাতে দেখেছি অদৃশ্য বীণা, অনুপম মীড় চোখের আড়াল করা দেদীপ্য ত্রিনয়ন - বসন্ত পঞ্চমী তিথি, শীতার্ত সন্ধ্যায় দেবীকে দেখেছি আমি স্টেশনের ম্লান আলো মেখে সকরুণ জ্ঞানস্বরূপিনী। চলন্ত জানলা থেকে কৌতূহলে প্রশ্ন করি, "কে তুমি! কি নাম তোমার?" উচ্ছল কৌতুক স্বর দূর থেকে ভেসে আসে "সরস্বতী মুর্মু বটে।" **************************************** বন্দনা মিত্র পরিচিতি পেশায় প্রযুক্তিবিদ,ধাতুবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা। একটি পাবলিক সেক্টর সংস্থায় কর্মরতা। ঘোরতর সংসারী। শখের খাতিরে লিখতে শুরু করে ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!