Shadow

Author: Kulayefera

কালাপানির প্রেম – শুভজিৎ বসু

কালাপানির প্রেম – শুভজিৎ বসু

কাশবন ২, গল্প
কালাপানির  প্রেম শুভজিৎ বসু  হঠাৎ করে ঘোষণা-আপনারা নিজেদের সিটবেল্ট ভালো করে বেঁধে নিন। বাইরের আবহাওয়া ভালো নেই। ওয়াশরুমে আপাতত যাবেন না। প্লেনটা ডানে বাঁয়ে করছে। বছর চল্লিশের সুজয়ের মুখ শুকিয়ে কিসমিস। সবে তো আধ ঘণ্টা, এখনো কম সে কম দু ঘণ্টা, তবেই না পোর্ট ব্লেয়ার। থাকার বলতে মা একাই। আপাতত গোবরডাঙায় থাকবেন। মফস্বলের ছেলে। বিদ্যা বুদ্ধি সবই ঠিক আছে, তবে লোকজনের মধ্যে এখনো সেভাবে সপ্রতিভ নয়। ষোলো বছর ব্যাঙ্কে করণিকের কাজ করছে। অফিসারের দায়িত্বের বোঝা নেবে না বলে পদোন্নতির পরীক্ষায় বসে নি। বর্তমানে ব্যাঙ্কের যা অবস্থা কেরাণীকুল থাকলেও তা টিম টিম করে জ্বলছে। আর বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা অফিসার হয়ে এসে তার উপর মুরুব্বিয়ানা করছে। এটা মানতে অসুবিধা হবে ভেবেই হয়ত পরীক্ষায় বসল ও উতরেও গেল। বদলি আন্দামানের পোর্টব্লেয়ারে। ঘরকুনো হলেও খুশি। ইতিহাস, ভূগোলের জ্ঞান যথেষ্ট আছে। তাই ওখানকার ভূগোল, নৃতত্ত...
অসমাপ্ত অধ্যায় – প্রতিভা পালসেন

অসমাপ্ত অধ্যায় – প্রতিভা পালসেন

কবিতা, কাশবন ২
  অসমাপ্ত অধ্যায়   প্রতিভা পালসেন  আঙুলের ফাঁক গলে একটা গোটা-পৃথিবী গলাধঃকরণ; হাতের তালুর আয়ুরেখা বরাবর হেঁটে চলে ইচ্ছেদের জিজীবিষা ! অনন্তকাল নক্ষত্রদের ভিড়ে- ঘুরেফিরে ফিরে আসে খসে-পড়া কিছু তারাদের জিজ্ঞাসা ! আলোকবর্ষ দূরত্বের ব্যবধান চোখের পলকে মিশে যায় প্রশ্বাসে ; হামাগুড়ি দেওয়া দুঃসময়ের কালরাত্রি অকারণে অবাধ্য হয় ভীষণ ! দাবানলের ধিকিধিকি আগুন-ঘিরে নৈঃশব্দের প্রকট শীৎকার ! কিছু অধ্যবসায় অচিরেই ধ্বংসাবশেষে আঁকে মন ! অসম্পূর্ণ থেকে যায় থেকে যাওয়া কিছু অসমাপ্ত অধ্যায়, আজীবন!! **************************************************** প্রতিভা পাল সেন পরিচিতিঃ পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি নিবাসী। কম্পিউটার-বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। পেশায় শিক্ষক। সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে ছোট থেকে লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। মূলতঃ কবিতা, গদ্য ও ছোটগল্পে লেখার প্রয়াস সীমাবদ্ধ। এছা...
ও মা দনুজদলনী মহাশক্তি – ভাস্বতী সাধুখাঁ

ও মা দনুজদলনী মহাশক্তি – ভাস্বতী সাধুখাঁ

কাশবন ২, গান নাচ ও বাদ্য
https://youtu.be/TQdo4SwiNzM ভাস্বতী সাধুখাঁ পরিচিতিঃ রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ৷ দীর্ঘদিন ধরে সঙ্গীতের সাধনায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন ৷
হিমালয়ের পথে তৃতীয় কেদার তুঙ্গনাথ – শান্তনু মজুমদার

হিমালয়ের পথে তৃতীয় কেদার তুঙ্গনাথ – শান্তনু মজুমদার

কাশবন ২, দেখবো এবার জগৎটাকে
হিমালয়ের পথে তৃতীয় কেদার তুঙ্গনাথ   শান্তনু মজুমদার ২০১২ সালে সেপ্টেম্বর মাসের শেষে কেদারনাথ ধাম দর্শন করার পর আমাদের ইচ্ছে  ছিল তৃতীয় কেদার তুঙ্গনাথ দর্শনে।অবশ্য তা সম্ভব হয়  প্রকৃতিদেবীর সহায়তায়। সেসময় যমুনোত্রী ও গঙ্গোত্রীতে ধস নেমেছিল বলে অনেক যাত্রী তাদের যাত্রাসূচী পালটে অন্যপথে যায়।যারা ভুক্তভোগী তারা জানেন যে পাহাড়ে কোন পরিকল্পনা খাটে না। কখন কোথায় ধস নামবে, রাস্তাঘাট দুর্গম হবে আগের থেকে কেউ পূর্বাভাস করতে পারে না। আমাদের আশঙ্কা ছিল ভারী বৃষ্টিপাতে পথচলায় বিঘ্ন না ঘটে। মেঘলা আকাশ মুখ ভার করে আছে দুপুর থেকে।কেদার দর্শন করে দুপুর তিনটে গৌরীকুন্ডে ফিরেছি।আমাদের দলে আছেন সমাদ্দারদা,তাঁর এক শ্যালক সুবলদা ও সুবলদার ভায়রাভাই শম্ভুদা,আমার ভ্রাতৃপ্রতিম দেবদূত,পঙ্কজদা ও আমি।সমাদ্দারদা বয়সে বড়,প্রায় ৬৭ বছর বয়স কিন্তু মনের দিক থেকে নবীন,তুলনায় শম্ভুদা একটু চুপচাপ,শিক্ষক।সুবলদা চাকরী ও ব্যবস...
“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

“বলি শোন্” – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
"বলি শোন্"  কঙ্কণা সেন এই মেয়ে,তুই কাজল পড়্ চোখদুটো ডাগর কর কেউ যেন না বুঝতে পারে কতো অশ্রু জমাট বেঁধে ঐ নয়ন মাঝারে। এই মেয়ে, তুই রঙ মাখিস শুকনো ওষ্ঠাধরে কেউ না যেন করে আঁচ কতো ঝড় বইছে রোজ তোর হৃদমাঝারে।                           শুনছিস মেয়ে,মুখখানাকে রঙিন কর্ রঙতুলির আলপনায় গাঢ় রঙ ফুটিয়ে তোল কেউ যেন ভেবেই না পায় মুখের পরে রইছে মুখোশ। বলি শোন্,হাসিটা মুখে ঝুলিয়ে রাখিস, ফেসবুকে রোজ স্ট্যাটাস দিস নব সাজে নব রূপে অভিনয়ে নিপুণ হোস। জীবন নদী চলেছে বয়ে ক্ষণিক সুখ ,তার কতো ক্লেশ কেই বা জানে,কেই বা বোঝে কোথায় হবে কার যে শেষ।। ************************************************** কঙ্কনা সেন পরিচিতি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম এ। ছোট থেকেই কবিতার প্রতি ভালোবাসা। বিশ্বাস মানবতায়। পেশা - শিক্ষকতা।  ...
শিউলি – শ্রাবণী দাশগুপ্ত

শিউলি – শ্রাবণী দাশগুপ্ত

কাশবন ২, গল্প
শিউলি শ্রাবণী দাশগুপ্ত আকাশপ্রদীপ আকশের বুকে ছোট্টো, তীব্র, মিষ্টি হয়ে ফুটে আছে। কেমন গন্ধ। আলোরও বিশেষ গন্ধ হয়। হেমন্তের গন্ধ! জানালার ফাঁক দিয়ে আকাশে কুচোকুচো সাজানো ডায়মণ্ড তারা। একদৃষ্টে দেখার মতো ঝলক নেই। বড্ড মায়া-মায়া। চোখ বুজলেও ছুঁয়ে থাকে। কুঁচকির দুপাশ থেকে আড়ষ্ট অচেনা ব্যথা নেমে যাচ্ছে। বুকের মধ্যে তোলপাড়। অস্থির লাগছে শরীর। বাবার ঘর থেকে গান আসছে – ‘শুধু এই পথ চেয়ে থাকা ভালো কি লাগে’? তানিশক থেকে ওরকম হীরের নেকলেস কিনে দিয়েছিল না অরণ্য? বিয়ের জন্মদিনে? “ডাস্কি স্কিনে ডায়মণ্ড গ্ল্যাম দেখাচ্ছে” বলেছিল। তনু বেঢপ পেটে কাত হয়ে কুঁকড়ে আছে, ফোঁপানির মতো শ্বাস। কান্না আটকে ছাতিতে ব্যথা হচ্ছে। উঠে বসে দম ফেলার চেষ্টায় হাঁকপাক করে। খড়খড়িওয়ালা জানালা হাট করে খুলে ফেলে। পারলে ফাঁক দিয়ে মাথা বের করে দিত। হাঁ করে হাওয়া নিতে গিয়ে চেঁচায়, -মা, ও-মা... মা। হেমন্তের নিঝুম সন্ধ্যেতে জটপাকা...
“ফেরত”   ️কলমে – অঙ্কন দন্ড

“ফেরত” ️কলমে – অঙ্কন দন্ড

কাশবন ২, গল্প
“ফেরত” ️কলমে - অঙ্কন দন্ড রাগে, দুঃখে, অভিমানে নিজের ফোনটা মাটিতে আছাড় মারল অর্ঘ্য। বুকের মধ্যে ফুটছে হতাশার বুদবুদ আর তার গালকে উপত্যকা করে বয়ে চলেছে অশ্রু। বুকের মধ্যে হেরে যাওয়া তীব্র যন্ত্রণা দুমড়ে-মুচড়ে মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে নিঃশব্দে। তার নিজের পৃথিবীতে জলভাগের সমান যাকে স্থান দিয়েছিল সেই তিথি তার জীবনকে মরুভূমি করে দিয়ে চলে গেছে। নিজেকে নিঃস্ব, ভিখিরি মনে হল অর্ঘ্যর। সে ভাবল কী লাভ এই জীবন রেখে?  আঘাতে মতিভ্রষ্ট হয়ে উঠে দাঁড়াল সে। অবিবেচকের মতো ঘর থেকে বেরিয়ে গেল আত্মবলিদানে। চোখের জল কে নিয়ন্ত্রণ করে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে অর্ঘ্য। চেপে রাখা কান্না ভারী করে তুলেছে তার কণ্ঠ। কান্না চেপে রাখলে হয়তো সেই অবদমিত তরল নাসারন্ধ্র দিয়ে নির্গত হয়। তাই না চাইলেও বারবার মুছতে হচ্ছে নাক। হঠাৎ সে দেখল ফুটপাতের পাশেই বসে কাঁদছে বছর চারেকের একটি ছোট্ট শিশু। অর্ঘ্য সে সব এড়িয়ে এগিয়...
অপেক্ষা – কাজরী বসু

অপেক্ষা – কাজরী বসু

কবিতা, কাশবন ২
অপেক্ষা  কাজরী বসু  সুবাতাস বইছিল কই! হঠাৎই আকাশ কালো মেঘমন তাই থৈথৈ  হারিয়ে নিথর আলো। খুঁজেছি সেদিন থেকে আলোতে হাতছানি-ভোর। শিউলির সুবাস মেখে সেদিনের প্রথম প্রহর। একদিন বৃষ্টি আসে রোদ্দুর একলা নীরব রিমঝিম অনুপ্রাসে বেজে যায় কালভৈরব। বেজে যায় একলা বাঁশি সবুজের প্রেক্ষাপটে সে রাতেই পৌর্ণমাসী নীল চাঁদ জ্যোৎস্না তটে। আলো মন ভাঙতে থাকে ভেঙে পড়া ব্রিজের মতো অদেখা ঘূর্ণিপাকে বেড়ে যায় নীলচে ক্ষত। তথাপি পাড় ভাঙেনি গভীরের তর্জমাতে থেকে যায় মেঘরা সুনীল আগামীর অপেক্ষাতে। থেকে যায় ঈশান কোণে সন্ধান ফল্গুজলের থেকে যায় একলা মনে বিরহের অকুস্থলে। বাঁধা হয় আকাশমণি ঝরে পড়া শিউলি, গিঁটে থাকে না ভুল সরণি না পাওয়ার ব্যালেন্সশিটে। বয় ফের সেই সুবাতাস শরতের গন্ধ নিয়ে বৃষ্টির গন্ধে আকাশ ঢুকে যায় জানলা দিয়ে। না পাওয়ারা আগাম ভোরের দরজায় দেয় পাহারা পরিযায়ী স্বপ্নে ওড়ে চিরকাল অপেক্ষারা।...
মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

আলোকপাত, কাশবন ২
মিলন সেতু অমৃতা লাহিড়ী 'ধর্ম 'শব্দটির প্রকৃত অর্থ নির্ধারণ করা সহজ নয়। আপাতদৃষ্টিতে ধর্ম বলতে বোঝায় দেবদেবীর উদ্দেশ্যে কিছু আচার-অনুষ্ঠান এবং কিছু রীতিনীতি পালন ,তথাপি এটিও ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ নয় ।'ধর্ম ' শব্দের প্রকৃত অর্থ যা মানুষকে ধারণ করে থাকে ।যুগে যুগে জাতিতে, আদর্শের কত বিভিন্নতা ঘটে, আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির অনুসরণ যদি ধর্মের একান্ত রূপ হতো তাহলে ধর্মের সার্বজনীন কোন রূপ থাকত না। 'ধর্ম' কথাটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত ও জাতিগত ব্যাপারই মাত্র বোঝাত। কিন্তু সনাতন ভারতবর্ষ কখনো ধর্ম বলতে এই সংকীর্ণ অর্থ কে বোঝে নি । তার দৃষ্টিতে সকল তুচ্ছতার মধ্যে,সকল আচার-অনুষ্ঠান এর মধ্যে, সকল উত্থান-পতনের মধ্যে যা মানুষকে চিরন্তন সত্যে ধারণ করে থাকে তাই ধর্ম । রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, "সংসারের একমাত্র যাহা সমস্ত বৈষম্যের ঐক্য, সমস্ত বিরোধীদের মধ্যে শান্তি আনয়ন করে, সমস্ত বিচ্ছেদের মধ্য...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!