Shadow

Author: Kulayefera

একবার জেগে ওঠ – মেঘদূত (শক্তি শঙ্কর পাণ্ডা)

একবার জেগে ওঠ – মেঘদূত (শক্তি শঙ্কর পাণ্ডা)

কাশবন ৫
"একবার জেগে ওঠ " মেঘদূত (শক্তি শঙ্কর পাণ্ডা) একবার জেগে ওঠ অভয়া : দেখ, রাজপথ জুড়ে আজ নেমেছে লক্ষ লক্ষ নির্ভয়া! তোমার আর্তি পেরেছে জাগাতে; বিবেকবানদের বিবেককে টেনে নামাতে পথে - প্রতিবাদের ভাষা হয়ে। তোমার আর্তনাদ এনেছে প্রত্যাশিত প্রলয় চেতনাকে করেছে আলোড়িত। চেয়ে দেখ, তোমার প্রাণের আলোয় আলোকিত হয়ে কত আলোয় ভরেছে আজ দেশ থেকে বিদেশের রাজপথ। অকালে তোমার রূদ্ধ করে দেওয়া কণ্ঠস্বর - আজ লক্ষ কোটি বজ্রনিনাদ হয়ে মুখরিত করেছে পথ ঘাট,আকাশ,বাতাস। তুমি আজ আর একা নও সেদিনের মতো সেই বিষাক্ত অন্ধকারে - অসহায়,নিরুপায়! চেয়ে দেখ একবার আজ উদ্বেলিত সব সুমন তোমার পাশে, একদম কাছে। যারা তোমার আঁকা সুন্দর স্বপ্নগুলোকে অকালে ঝরিয়েছে : ওই পাপী পশুদের বিচার চাইছে সবাই, চাইছে চরম দণ্ড ওদের। আমরাও নিশ্চিত তোমার ত্যাগের আলোয় ভরবে আগামী লক্ষ কোটি প্রাণ - শান্তির ঘুম ঘুমিও তুমি...
উইশ স্পট – দেব মুখার্জি

উইশ স্পট – দেব মুখার্জি

কাশবন ৫
উইশ স্পট দেব মুখার্জি এখন আমি মারগাঁও থেকে ১০ কিমি দূরে,স‍্যালসেটের লৌটোলিম গ্ৰামে,সাউথ গোয়ায়,রাজুর বাড়িতে। একেবারে ক‍্যালেন্ডারের পাতায় দেখা ছবির মতো বাড়িটা,উঁচু নীচু রাস্তার ধারে,সারি সারি নারকোল গাছ,সবুজে সবুজ চারপাশটা,আমগাছ একটা মস্ত বড়,দুটো পেয়ারা গাছ। নতুন বৃষ্টির জল পেয়ে লতানো আগাছাগুলো পথের ধারের অন‍্যগাছগুলোকে ঢেকে ফেলেছে। দোতলার বারান্দায় বসে দেখছিলাম চারদিকটা,ফুল পাতা ভর্তি রঙীন টবগুলো ঝুলিয়ে রাখা রেলিংয়ের এদিকে ওদিকে। মাছটা রেঁধেছিল নারকোল দিয়ে,হয়ত কোঙ্কনী রান্না,বেশ  হয়েছিল খেতে,ঐ চাখনা। সেই সঙ্গে একটা গ্লাসে লেবুর রস নিংড়ে একটা বোতল থেকে ঢাললো জল রঙের একটা তরল, বোতলটা হাতে নিয়ে দেখি লেখা লেমব্রানকা,কাজু ফেনী,হেরিটেজ গোয়ান স্পিরিট। এর আগে তো কোনোদিন এখানে আসা হয়নি,মনে মনে ইচ্ছে ছিল খুব,সেই যৌবনের শুরুতেই। কিন্তু ঐ...সময়,সুযোগ,অর্থ,প্রয়োজনীয়তা,আবশ‍্যকতা... তখন কত শত প্রতিবন...
নাম গোত্রহীন ফুলগুলো – সুলগ্না চক্রবর্তী

নাম গোত্রহীন ফুলগুলো – সুলগ্না চক্রবর্তী

কাশবন ৫
নাম গোত্রহীন ফুলগুলো সুলগ্না চক্রবর্তী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস পরস্পর বিরোধিতায় ভরা। টাকা ও ক্ষমতার লোভে অনেকে বিপ্লবীদের পুলিশের হাতে তুলে দিতে সাহায্য করেছে। আবার কিছু কিছু ঘটনায় বোঝা যায় সাধারণ লোকেরা কেমন ফেরারী বিপ্লবীদের সাহায্য করেছে,স্বাধীনতা সংগ্রামীদের লোকবল-অর্থবল দিয়েছে,মাইলের পর মাইল হেঁটে রিভলভার-চিঠি চালান করেছে এবং আমজনতার মধ্যে স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতন করেছে। চন্দননগর শহরের এই ব্যাপারটা আবার অন্য মাত্রা আছে। এখানে ফরাসীরাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আর একটা জিনিস না বললেই নয় সেটা হলো মহিলাদের এবং নাট্যকর্মীদের সাথে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমান্তরালভাবে চলা। চলে গেছে তারা স্মৃতির অন্তরালে। অথচ জীবনের সবটুকু বাজি রেখে অপমান-রাগ-বিদ্বেষ ভুলে তারা বিপদের দিনে সঙ্গ দিয়েছে স্বাধীনতার সূর্যকে পূর্বকাশে তুলে ধরতে। দ...
মহাভারতের মাধবী – অজন্তা প্রবাহিতা

মহাভারতের মাধবী – অজন্তা প্রবাহিতা

কাশবন ৫
মহাভারতের মাধবী অজন্তা প্রবাহিতা মহাভারতের উদ্যোগপর্বে নারদমুনি দুর্যোধনকে অতিরিক্ত আগ্রহী বা জেদি হওয়া কেন ভালো নয় তা বোঝাতে গালবের কাহিনী বলেছিলেন । ধর্মরাজ একদিন বিশ্বামিত্র মুনির পরীক্ষা নেবার কথা ভেবে বশিষ্ঠ মুনির রূপ ধারণ করে বিশ্বামিত্র মুনির কুটিরে অতিথি হিসেবে হাজির হন। বশিষ্ঠ মুনির আগমনে বিশ্বামিত্র অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে তাঁকে বিশ্রাম করতে বলেন এবং তিনি ক্ষীর বানাবার আয়োজন করতে শুরু করেন ।   বশিষ্ঠ রূপী ধর্মরাজ কোনরকম অপেক্ষা না করে অন্য আশ্রমে গিয়ে ভোজন  সেরে নেন। এদিকে বিশ্বামিত্র মুনি ক্ষীরের পাত্র  বশিষ্ঠ মুনিকে পরিবেশন করলে,উনি বলেন যে ইতিমধ্যে উনি ভোজন করে নিয়েছেন, এখন ক্ষীরের প্রয়োজন নেই। এই বলে তিনি আশ্রম ছেড়ে চলে যান। অতিথিকে অন্ন দান করতে না পেরে ঋষি বিশ্বামিত্র সেই ক্ষীরের পাত্র মাথায় নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েন এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন যতক্ষণ না এই অতিথি ফিরে এসে এই...
পৃথিবী গা, মা, গা গায়: মণি ফকির

পৃথিবী গা, মা, গা গায়: মণি ফকির

কাশবন ৫
পৃথিবী গা, মা, গা গায়: মণি ফকির এই উক্তি কার জানেন? কোন সঙ্গীতজ্ঞের নয়। জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোহানেস কেপলারের। "হারমোনিসেস মুন্ডি" গ্রন্থের তৃতীয় অধ্যায়ে এই বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোকপাত করেছেন। মধ্যযুগীয় দার্শনিক​রা যখন "সঙ্গীত গোলকের" এর রূপক ব্যবহার করছেন,তখন কেপলার গ্রহের গতিতে একটি সামঞ্জস্য আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি দেখতে পান যে একটি গ্রহের কক্ষপথে সর্বাধিক এবং সর্বনিম্ন কৌণিক গতির মধ্যে পার্থক্য একটি সুরেলা অনুপাতের সমান। সহজ করে বলি ব্যাপারটা। সূর্য থেকে পরিমাপ করা পৃথিবীর সর্বাধিক কৌণিক গতি একটি সেমিটোন বা হাফ নোট(১৬:১৫ অনুপাত) দ্বারা পরিবর্তিত হয়,অর্থাৎ শুদ্ধ গান্ধার থেকে শুদ্ধ মধ্যম অবধি। কেপলার পৃথিবীর ছোট হারমোনিক পরিসরের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এক মহাজাগতিক গায়ক দল তৈরি করেন। আমরা জানি ভোকাল রেঞ্জ এর চারটি মূল ভাগ-সোপরানো,অল্টো,টেনর,বাস-পাশ্চাত্য মতে SATB. স্বর...
নতুন ভোরের সন্ধানে – জলি চক্রবর্তী শীল

নতুন ভোরের সন্ধানে – জলি চক্রবর্তী শীল

কাশবন ৫
নতুন ভোরের সন্ধানে জলি চক্রবর্তী শীল শরীরটা আজ একদমই ভালো লাগছে না সিঁথির | বিছানা থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না | সমস্ত শরীর কেমন যেন নেতিয়ে আছে | হাতে-পায়ে কোথাও যেন কোন শক্তি নেই | এইসব দিনগুলোতে শরীর বড্ড খারাপ লাগে | কিছুই যেন করতে ইচ্ছে করে না | তবু নিজেকে হাঁচড়-পাঁচড় করে টেনে তোলে সে | মেয়েটা ম্যামের কাছে বসে পড়ছে পাশের ঘরে | ম্যামকে চা দেওয়াও হয়নি | ম্যাম কি ভাবছে কে জানে! রান্নাঘরে গিয়ে চা বসায় সে | নিজের জন্যও এক কাপ চা করে সে | তারপর কাপে ঢেলে বিস্কুট সাজিয়ে একটা ছোট ট্রেতে করে দিতে আসে মেয়ের ম্যামকে | 'বৌদির কি শরীরটা খারাপ? মুখ চোখ কেমন যেন বসে গেছে' | মেয়ের ম্যাম জানতে চায় | 'হ্যাঁ,মানে ঐ আর কি শরীরটা ঠিক জুতের নেই |' মৃদু হেসে উত্তর দেয় সিঁথি | 'তুমি চা 'টা খেয়ে নাও | আমি যাই' | বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে সে | নিজের কাপের চাটা নিয়ে গিয়ে ঘরে খাটের ওপর বসে | কাজের তো শেষ নেই | মেয়ে...
আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক – ঋতুপর্ণা রুদ্র

আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক – ঋতুপর্ণা রুদ্র

কাশবন ৫
আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক ঋতুপর্ণা রুদ্র মন এই বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী আর সর্বত্রগামী বস্তু বলে মহাভারতে জানিয়েছিলেন যুধিষ্ঠির। সেই মনের চোখে দেখি,ছোট ষোল বছরের ছেলেটি নিজের ঘরে একান্তে লিখছে 'সজনি সজনি রাধিকা লো' বা,'শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা'। বৈষ্ণব পদাবলীর অনুকরণে ব্রজবুলি ও মৈথিলি ভাষায় রচিত তাঁর পদাবলীর নাম ভানুসিংহের পদাবলী। ভানুসিংহ নাম নিয়ে ছেলেটি নিজেই রোমাঞ্চিত। এই সব ছাড়াও পিতৃদেব পছন্দ করেন ব্রহ্মসংগীত,একের পর এক লিখে চলে ছেলেটি। পিতা ব্যস্ত মানুষ,মাসের পর মাস পশ্চিমে চলে যান। তবে সেখান থেকে ফিরলেই রবির ডাক পড়বে। ছোটবেলায় রবির কবিতা পড়ে হেসে ফেলেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ,সেই তিনিই এখন পুত্রের সৃষ্টিতে মুগ্ধ। ধীরে ধীরে ব্রাহ্মসমাজের অধিবেশনেও রবিকে গান গাইতে হয়। মাঘোৎসবের অধিবেশনের জন্য লিখলেন 'নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছো নয়নে নয়নে'। উৎসবে নিজেই গাইলেন সেই গান। পিতা স...
ঘুম নেই চোখে – দীপান্বিতা দত্ত

ঘুম নেই চোখে – দীপান্বিতা দত্ত

কাশবন ৫
ঘুম নেই চোখে  দীপান্বিতা দত্ত দাঁড়িয়ে আছি বারুদের স্তুপে শাসনে শোষণে  জেগে আছে সমাজ লড়াই সেদিন ও ছিল,আজ ও আছে ভদ্রতার আড়ালে মুখোশ পড়ে দুঃশাসন দাপিয়ে বেড়ায় চতুর্দিকে ধর্ষক--হাওয়ার বেত্রাঘাতে ঘুম নেই চোখে,সারারাত ধরে । অস্থিরতার দুরারোগ্য ব্যাধিতে  লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় রোজ ঘর ছেড়ে বাইরে এসো,আগুন হয়ে পৃথিবীতে আলোর কণা ছড়িয়ে দিতে। ধোঁয়াশা ভরা উত্তরণের পথ রন্ধ্রে রন্ধ্রে তাড়া করে ক্ষয় জনস্রোতের তরঙ্গের ধাক্কায় একদিন ধ্বংস হবে শত্রুরা প্রতিবাদ হবে তীব্র ঘৃণায়। ********************* দীপান্বিতা দত্ত-জন্ম আসামে,বিবাহসূত্রে বর্তমানে কলকাতায় থাকেন ৷ সংসারের সব রকম গুরু দায়িত্ব সামলেও কবিতার মধ্যেই তিনি নিজের মনের মুক্তি খুঁজে পান ৷ আর এই ভালোবাসা ছোট বেলা থেকেই ৷ গানেও তাঁর অসীম আগ্রহ এবং এখনও নিয়মিত চর্চা করেন ৷  ...
আহ্বান – চন্দ্র কান্তি দত্ত

আহ্বান – চন্দ্র কান্তি দত্ত

কাশবন ৫
আহ্বান    চন্দ্র কান্তি দত্ত সময় সকাল নটা কুড়ি কি বাইশ। বাইক নিয়ে অফিসে যাচ্ছে প্রবাল। ত্রিকোণ পার্কের কাছে আসতেই সামনে সব গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল। রাসবিহারী মোড়ের সিগন্যাল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পাক্কা সাড়ে তিন মিনিটের অপেক্ষা। প্রবাল একটা সিগারেট বার করে ধরালো। সাড়ে তিন মিনিটে শেষ হয়ে যাবে। হঠাৎ চোখে পড়ল,ত্রিকোণ পার্কের লাগোয়া ফুটপাথে একজন মুচি এসে বসেছে। প্রবালের চোখে পড়ল এইজন্যই যে,রোজ এই একই সময়ে প্রবাল এই রাস্তা দিয়ে যায়। অথচ,গতকাল পর্যন্ত প্রবাল এই লোকটিকে দেখেনি। সিগন্যাল খুলে গেছে। প্রবাল সব চিন্তা সরিয়ে রেখে সোজা এগিয়ে গেল। সারাদিন কাজের মধ্যে রাস্তার কথাবার্তা আর দেখাশোনার বিষয় বিশেষ কিছুই মনে থাকে না। প্রবালেরও ছিল না। সন্ধ্যায় ফেরার পথে আনমনা ভাবেই চোখ গেল সেই মুচির বসার জায়গায়। মুচি এখন নেই। চলে গেছে। প্রবাল কব্জিতে বাঁধা ঘড়িতে সময় দেখল। প্রায় সাতটা। প্রবাল বাইকের গ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!