Shadow

Author: Kulayefera

পাত্র পাত্রী চাই – দিওতিমা আচার্য্য

পাত্র পাত্রী চাই – দিওতিমা আচার্য্য

ঘটমান বর্তমান
পাত্র পাত্রী চাই দিওতিমা আচার্য্য যুগ যুগ ধরে মানুষের অগ্রগতির সঙ্গে পরিবারগুলির মধ্যে একটি দৃঢ় বদ্ধমূল ধারনা ও বিশ্বাস তৈরী হয়েছে যে, ‘বিয়ে’ হচ্ছে একটি পবিত্র সামাজিক গঠনমূলক বন্ধন যার মাধ্যমে পরিবার ও বংশ এগিয়ে চলে। পথ চলার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যাচ্ছে ‘বিয়ে’ নামক সামাজিক বন্ধন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এগোচ্ছে এবং আজ এই বন্ধন একটি সামাজিক মর্যাদার চিহ্নে পরিণত হয়েছে। আজ সকালের সংবাদপত্রটি পড়তে পড়তে হঠাৎ এই প্রথম ‘পাত্র পাত্রী চাই’ বিভাগে চোখ পড়ল। বিভাগটিতে দুটি উজ্জ্বল রং দেখতে পেলাম। নীল রং পাত্র আর গোলাপী পাত্রী। এটা অত্যন্ত হাস্যকর যে, আমরা যখন নারী–পুরুষ বিভেদের বিপক্ষে সোচ্চার, সমানান্তরে তখন কাগজে লিঙ্গ বিভেদ জাজ্জ্বল্যমান! শুধু তাই নয়, বিভেদকে আরও প্রকট করা হয়েছে জাতি, ধর্ম এবং পেশায়। বিভাগটিতে মনোনিবেশ করলে বোঝা যায়, পাত্রীদের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তার একটিও পাত্রীর স্বয়ং রচি...

জ্যোতিরলিঙ্গ মহাকালেশ্বর – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
জ্যোতিরলিঙ্গ মহাকালেশ্বর বিজিত কুমার রায় মহাকাল জ্যোতিরলিঙ্গের মন্দির উজ্জয়িনী বা অবন্তিকাতে। আমার চাকরির সূত্রে ভুপাল থাকার সময় এই পুণ্যক্ষেত্র দর্শনের অভিজ্ঞতা একাধিকবার হয়েছে। ১৯৯৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে। তবে স্মরণীয় হয়ে আছে ২০০৫ সালে এসে দুই দিন থাকার স্মৃতি। এই উজ্জয়িনীর কত নাম। অবন্তিকা, অমরাবতী, কুশস্থলী, ভোগবতী, হিরণ্যবতী, কনকশৃঙ্গা, কুমুদবতী, বিশালা ইত্যাদি। কথিত আছে স্বয়ং মহাদেব এখানে ত্রিপুরাসুরকে বধ করার জন্য দেবী রক্তদন্তিকা চন্ডীর আরাধনা করে পাশুপত অস্ত্র লাভ করেন। প্রবল শত্রুকে 'উজ্জিত' অর্থাৎ পরাজিত করার জন্য এই স্থানের নাম হয় উজ্জয়িনী । ভোপাল থেকে গাড়িতে করে আমরা এসে পৌঁছাই এই তীর্থে ও বৈকালবেলা মহাকাল দর্শনে আসি। ভিড়ের জন্য লাইন দিয়ে ধীরে ধীরে মন্দিরে প্রবেশ করে মন্দির চত্বর পেরিয়ে মুলমন্দিরের সিঁড়ির কাছে দাঁড়ালাম। তারপর সিঁড়ি বেয়ে ভুগৰ্ভস্থ মন্দিরে প্রবেশ। শ্বেতপাথরের...
পীত দোয়েল ও নীলকণ্ঠ পাখি – চিত্রগ্রাহকঃ ভাস্কর চ্যাটার্জি

পীত দোয়েল ও নীলকণ্ঠ পাখি – চিত্রগ্রাহকঃ ভাস্কর চ্যাটার্জি

খিচিক্
পীত দোয়েল (Citrine wagtail) দৈর্ঘে প্রায় ৫.৫-১৭ সেমি হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষটি মূলত ধূসর বা কালোর উপরে ও লেজের অংশ কালো হয়। মাথার দিকটা পুরোটাই উজ্জ্বল হলুদ বর্নের হয়ে থাকে। চিত্রগ্রাহকঃ ভাস্কর চ্যাটার্জি ----------------------------------------------------------------------------- নীলকণ্ঠ নীলকন্ঠ পাখি মাপে ৩১-৩৩ সে.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। মাথার উপরে কিছুটা নীল রং থাকে এবং পালকের নিচের দিকে নীল রং থাকে। তবে এই পাখিকে অনেকটা কলার মোচার মত দেখতে হয়। নীলকন্ঠ পাখি সমগ্র ভারত, বাংলাদেশের গারো পাহাড়, হবিগঞ্জ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সমগ্র দঃক্ষিণ এশিয়াতে দেখা যায়। পোকা, কীটপতঙ্গ, ব্যাঙ, সাপের, বাচ্চা, টিকটিকি, গিরগিটি ইত্যাদি নীলকন্ঠ পাখির খাদ্য । চিত্রগ্রাহকঃ ভাস্কর চ্যাটার্জি ************************************************     ভাস্কর চ্যাটার্জি পরিচিতিঃ বিপ...
জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন – সোমনাথ – বিজিত কুমার রায়

জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন – সোমনাথ – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন - সোমনাথ বিজিত কুমার রায় এবার চলুন গুজরাটের এক অপরূপ সুন্দর মন্দির দেখে আসি। বিশাল জায়গা নিয়ে অপূর্ব সুন্দর মন্দির ও মুর্তি (লিঙ্গ) একদম সমুদ্রের ধারে। এই মন্দিরটি প্রভাস পাটান নামক জায়গাতে। একদম ভিড় না থাকাতে আমরা প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে দর্শন করলাম ও পূজা দিলাম। এখানে শিবলিঙ্গের মাথাতে জল দেওয়ার জন্য অনেকটা দূর থেকে একটি পাইপলাইন মতো আছে। এই মন্দিরের দর্শনের অনুভূতি লেখাতে প্রকাশ করার শক্তি আমার নেই কারণ বহুকাল ধরে স্বপ্ন ছিল এখানে আসার। তবুও সোমনাথের সম্বন্ধে কিছুটা ঐতিহাসিক পটভূমিকা দেওয়ার চেষ্টা করছি। সোমনাথ মন্দির ভারতের একটি প্রসিদ্ধ শিব মন্দির। গুজরাট রাজ্যের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের ভেরাভলের নিকটস্থ প্রভাস ক্ষেত্রে এই মন্দির অবস্থিত। শিবের দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে পবিত্রতম। সোমনাথ শব্দটির অর্থ “চন্দ্র দেবতার রক্ষাকর্তা”। সোমনাথ মন্দিরটি...
ভয়ঙ্করের আকর্ষণ : লাদাখের চাদর ট্রেক – বিজিত কুমার রায়

ভয়ঙ্করের আকর্ষণ : লাদাখের চাদর ট্রেক – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
ভয়ঙ্করের আকর্ষণ:লাদাখের চাদর ট্রেক বিজিত কুমার রায় বোধহয় পৃথিবীর অন্য কোনো ট্রেকের সাথে এর তুলনা হয় না। ভাবুন তো মাইনাস ৩০ ডিগ্রিতে জমে যাওয়া নদীর ওপরে হেঁটে ট্রেক করা, দুই পাশে জমাট বরফের পাহাড়, জমে যাওয়া পাহাড়ি ঝর্ণা। না আমার নিজে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। সে তাকত ও আর এই ৬৭ বছরে নেই। কিন্তু কয়েকটি লেখা পড়ে মনে হলো এই ট্রেক নিয়ে লেখার কথা। হয়তো পাঠকদের মধ্যে কেউ আছেন যিনি বা যাঁরা এই ট্রেক নিজে করেছেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা জানার অপেক্ষায় রইলাম। নিজে যাইনি বলে ছবিগুলি নেট থেকে সংগ্রহ করা। ১১১৫০ ফুটের উচ্চতায় এই ট্রেক মনে করিয়ে দেয় যেন নর্থ পোলে ট্রেকের কথা। পুরোদস্তুর গরম কাপড়ে ঢেকে, কাঁটা ওয়ালা জুতো পরে জমাট বাঁধা নদীর ওপর ধীরে হাঁটা। সাথে আপনার রসদ চলবে স্লেজের ওপর। এই চাদর ট্রেকে দরকার অভিজ্ঞ গাইডের কারণ নদীর কোথাও পাতলা আস্তরণ ভেঙে ঢুকে যেতে পারেন অতলস্পর্শি ক্রেভিস এ। তাই খুব সাবধানে রাস্ত...
প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি – নবনীতা সাঁতরা দে

প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি – নবনীতা সাঁতরা দে

কবিতা
প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি নবনীতা সাঁতরা দে বেলা শেষ হলে শোকের মতো নেমে আসে সন্ধ্যে দু একটা মানুষ বেঁচে থাকে যেমন শ্বাস প্রশ্বাস বাকিটা যুদ্ধের প্রস্তুতি জেগে থাকে প্রাণভিক্ষায় অবিরত বজ্র কঠিন মুখোশে যেমন বাঁচে ক্যাকটাস। নির্গত শ্লেষ খুঁজে নেয় পোড়া ছাই ভস্মের বিছানা মন খুঁড়ে যাই প্রতিরাতে ঘরের কোণে জমা আলোয় যখন আমি আঁধারে জমিয়ে রাখি পুরোনো মোমদান কখনও অন্ধকারেরও প্রয়োজন হয় আলোর।। তখনই মাঝ নদী জুড়ে আলাপচারিতায় বসে স্টিমারেরা ব্রিজ থেকে দেখা যায় যেন থেমে আছে শুঁয়োপোকা এপারে নামলে বেলা ফুরোনোর গান গায় এক পাগল পাগল জানে নদীতেই মিশে থাকে দুপারের যবনিকা। জ্যোৎস্নায় গলে পড়া চাঁদ ছুঁয়ে দিয়ে যায় ঘর বাড়ি সে সুযোগে অনেকবার আমিও ছুঁয়ে দেখি চাঁদ এ যাপনে সুখ নেই দুখ নেই নদী পারে ছলছল ঢেউ নদী দূরে নিয়ে যায় কাছে আসে সাদা হরিণের ঝাঁক।। *********************************************** নবনীতা সাঁ...
স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

কবিতা
স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে শাশ্বতী হোসেন প্রথম কবিতা কবে লিখেছিলাম? যেদিন শালকুঁড়ির ফাঁকে ফাঁকে রোদ আল্পনা এঁকেছিল? ঝরনা পাথরের আমোদি পথে তুই যেদিন প্রথম সিগারেট খেয়েছিলি? মনে পড়ছে না। ননীবালা গার্লস স্কুলের প্রেয়ার লাইনে তাপ্তী হঠাৎ সেই গানটি গেয়ে উঠেছিল-- "তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় / আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়--" হেড বড়দি তাপ্তীকে শাস্তি দিয়েছিলেন। নাকি যেদিন চশমা পরা অনামিকাকে দেখে অমিত বলেছিল, "আজি বিশ্বময় ব্যপ্ত গেছো প্রিয়ে / তোমারে দেখিতে পাই সর্বত্র চাহিয়ে..." নাহ, কিছুতেই মনে পড়ছে না। অঙ্কের খাতায় নাকি ভূগোলের মানচিত্রে ভাঁজে.... কোথায় যেন লিখেছিলাম! তারাফেনীর নদীর বিকেলে সুর্য যখন ডুবছিল, আকাশ থেকে আবির ঝরে পড়ছিল। চারপাশ বসন্তবর্ণ ঝিরঝিরে বাতাসের কোরাস-- কোকিলের ডানার ঝাপটানি। তুই পাথরের ওপর দু-হাত মেলে গলা খুলে বলেছিলি, দাও খুলে দাও, খুলে দাও, খুলে দাও সুর, মেলে দাও গ...
মুক্তির আকাশ – অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

মুক্তির আকাশ – অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

গল্প
মুক্তির আকাশ অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় দিব্য ঝকঝকে এক সোনালী সকাল। তবে এখানে রোদের তেজটা একটু যেন বেশীই। আর সেটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। কারণ রাজ্যটা হল মহারাষ্ট্রের একটা শহর পুনে। তবে আমার কিন্তু এখন তেমন গরম লাগছেনা। ঘামও হচ্ছে না। খুব ভোরেই আজ হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল। আর তখন থেকেই নিজেকে বড় হালকা ফুরফুরে মনে হচ্ছে। সেই বহুদিন আগে হলং বেড়াতে গিয়ে ভোরবেলায় পাগলা হাওয়ার বুকে নিজেকে সমর্পণ করা শিমুল তুলোর উদ্দেশ্যবিহীন ওড়াউড়ি দেখেছিলাম। এখন নিজেকে ঠিক সেই নরম, তুলতুলে শিমুল তুলোর মতোই লাগছে। আমি এখন বেশ জমিয়ে সোফার মাথায় চেপে দুই বন্ধুর বিচিত্র ঝগড়া উপভোগ করছি। দিনকয়েক আগে আমি বেড়াতে এসেছি পুনেতে, আমার বড়মেয়ের কাছে। দুই বন্ধু একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বেশ সুন্দর মিলেমিশে থাকে। তবে লড়াইটা হয় মূলতঃ খাওয়া নিয়ে। ক্রিসেন্ট দক্ষিণী খাবার পছন্দ করে, আর আমার মেয়ে অবশ্যই বাঙালি খাবার। গত পাঁচদিন ধরে ত...
সুরের বাঁধনে – ব্রতী ঘোষ

সুরের বাঁধনে – ব্রতী ঘোষ

গল্প
সুরের বাঁধনে ব্রতী ঘোষ রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মোবাইল টা নিয়ে আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লো বীথি। এখন শুয়ে শুয়ে একটা আ্যপে গান শোনাটা একটা নেশা হয়ে গেছে। নিজের গান নিজে শোনা আর সবাই ঐ গানটাই কিভাবে গাইছে শুনতে ওর বেশ লাগে। এই একটা মাসে এটাই ওর অভ্যাস হয়ে গেছে। ভাগ্যিস এবার পুণা যাবার আগে তিতাস, ওর মেয়ে জোর করে মোবাইলে আ্যপটা ডাউনলোড করে দিয়েছিল। অতিমারীর দৌলতে জীবনের ছন্দটাই পুরোপুরি বদলে গেছে। সকাল থেকে সময়ের সঙ্গে ছুটে চলা, অফিস, হাজিরা, কাজের মাঝে কলিগদের সাথে আড্ডা-এগুলো সব কি গত জন্মের ঘটনা? এক এক সময় তাই মনে হয় ওর। "কি গো ঘুমালে?"-সমীর জানতে চায়। "কিগো?" আবার প্রশ্ন করে সমীর, বীথির স্বামী। বীথির কানে ঢোকে না, ইয়ারফোন গোঁজা যে। এবার হাত দিয়ে ঠেলা দিতেই বীথির হুঁশ ফেরে। "অ্যাঁ~কিছু বলছো?" বীথি কান থেকে ইয়ারফোন খুলে বলে। "না, কিছু না" সমীর আবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে। আবার কা...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!