Shadow

Author: Kulayefera

ভয়ঙ্করের আকর্ষণ : লাদাখের চাদর ট্রেক – বিজিত কুমার রায়

ভয়ঙ্করের আকর্ষণ : লাদাখের চাদর ট্রেক – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
ভয়ঙ্করের আকর্ষণ:লাদাখের চাদর ট্রেক বিজিত কুমার রায় বোধহয় পৃথিবীর অন্য কোনো ট্রেকের সাথে এর তুলনা হয় না। ভাবুন তো মাইনাস ৩০ ডিগ্রিতে জমে যাওয়া নদীর ওপরে হেঁটে ট্রেক করা, দুই পাশে জমাট বরফের পাহাড়, জমে যাওয়া পাহাড়ি ঝর্ণা। না আমার নিজে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। সে তাকত ও আর এই ৬৭ বছরে নেই। কিন্তু কয়েকটি লেখা পড়ে মনে হলো এই ট্রেক নিয়ে লেখার কথা। হয়তো পাঠকদের মধ্যে কেউ আছেন যিনি বা যাঁরা এই ট্রেক নিজে করেছেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা জানার অপেক্ষায় রইলাম। নিজে যাইনি বলে ছবিগুলি নেট থেকে সংগ্রহ করা। ১১১৫০ ফুটের উচ্চতায় এই ট্রেক মনে করিয়ে দেয় যেন নর্থ পোলে ট্রেকের কথা। পুরোদস্তুর গরম কাপড়ে ঢেকে, কাঁটা ওয়ালা জুতো পরে জমাট বাঁধা নদীর ওপর ধীরে হাঁটা। সাথে আপনার রসদ চলবে স্লেজের ওপর। এই চাদর ট্রেকে দরকার অভিজ্ঞ গাইডের কারণ নদীর কোথাও পাতলা আস্তরণ ভেঙে ঢুকে যেতে পারেন অতলস্পর্শি ক্রেভিস এ। তাই খুব সাবধানে রাস্ত...
প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি – নবনীতা সাঁতরা দে

প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি – নবনীতা সাঁতরা দে

কবিতা
প্রলাপ ও ছেঁড়া ছবি নবনীতা সাঁতরা দে বেলা শেষ হলে শোকের মতো নেমে আসে সন্ধ্যে দু একটা মানুষ বেঁচে থাকে যেমন শ্বাস প্রশ্বাস বাকিটা যুদ্ধের প্রস্তুতি জেগে থাকে প্রাণভিক্ষায় অবিরত বজ্র কঠিন মুখোশে যেমন বাঁচে ক্যাকটাস। নির্গত শ্লেষ খুঁজে নেয় পোড়া ছাই ভস্মের বিছানা মন খুঁড়ে যাই প্রতিরাতে ঘরের কোণে জমা আলোয় যখন আমি আঁধারে জমিয়ে রাখি পুরোনো মোমদান কখনও অন্ধকারেরও প্রয়োজন হয় আলোর।। তখনই মাঝ নদী জুড়ে আলাপচারিতায় বসে স্টিমারেরা ব্রিজ থেকে দেখা যায় যেন থেমে আছে শুঁয়োপোকা এপারে নামলে বেলা ফুরোনোর গান গায় এক পাগল পাগল জানে নদীতেই মিশে থাকে দুপারের যবনিকা। জ্যোৎস্নায় গলে পড়া চাঁদ ছুঁয়ে দিয়ে যায় ঘর বাড়ি সে সুযোগে অনেকবার আমিও ছুঁয়ে দেখি চাঁদ এ যাপনে সুখ নেই দুখ নেই নদী পারে ছলছল ঢেউ নদী দূরে নিয়ে যায় কাছে আসে সাদা হরিণের ঝাঁক।। *********************************************** নবনীতা সাঁ...
স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে – শাশ্বতী হোসেন

কবিতা
স্মৃতিরা ফুরিয়ে এলে শাশ্বতী হোসেন প্রথম কবিতা কবে লিখেছিলাম? যেদিন শালকুঁড়ির ফাঁকে ফাঁকে রোদ আল্পনা এঁকেছিল? ঝরনা পাথরের আমোদি পথে তুই যেদিন প্রথম সিগারেট খেয়েছিলি? মনে পড়ছে না। ননীবালা গার্লস স্কুলের প্রেয়ার লাইনে তাপ্তী হঠাৎ সেই গানটি গেয়ে উঠেছিল-- "তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় / আমি তখন অষ্টাদশীর ছোঁয়ায়--" হেড বড়দি তাপ্তীকে শাস্তি দিয়েছিলেন। নাকি যেদিন চশমা পরা অনামিকাকে দেখে অমিত বলেছিল, "আজি বিশ্বময় ব্যপ্ত গেছো প্রিয়ে / তোমারে দেখিতে পাই সর্বত্র চাহিয়ে..." নাহ, কিছুতেই মনে পড়ছে না। অঙ্কের খাতায় নাকি ভূগোলের মানচিত্রে ভাঁজে.... কোথায় যেন লিখেছিলাম! তারাফেনীর নদীর বিকেলে সুর্য যখন ডুবছিল, আকাশ থেকে আবির ঝরে পড়ছিল। চারপাশ বসন্তবর্ণ ঝিরঝিরে বাতাসের কোরাস-- কোকিলের ডানার ঝাপটানি। তুই পাথরের ওপর দু-হাত মেলে গলা খুলে বলেছিলি, দাও খুলে দাও, খুলে দাও, খুলে দাও সুর, মেলে দাও গ...
মুক্তির আকাশ – অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

মুক্তির আকাশ – অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

গল্প
মুক্তির আকাশ অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় দিব্য ঝকঝকে এক সোনালী সকাল। তবে এখানে রোদের তেজটা একটু যেন বেশীই। আর সেটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। কারণ রাজ্যটা হল মহারাষ্ট্রের একটা শহর পুনে। তবে আমার কিন্তু এখন তেমন গরম লাগছেনা। ঘামও হচ্ছে না। খুব ভোরেই আজ হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেল। আর তখন থেকেই নিজেকে বড় হালকা ফুরফুরে মনে হচ্ছে। সেই বহুদিন আগে হলং বেড়াতে গিয়ে ভোরবেলায় পাগলা হাওয়ার বুকে নিজেকে সমর্পণ করা শিমুল তুলোর উদ্দেশ্যবিহীন ওড়াউড়ি দেখেছিলাম। এখন নিজেকে ঠিক সেই নরম, তুলতুলে শিমুল তুলোর মতোই লাগছে। আমি এখন বেশ জমিয়ে সোফার মাথায় চেপে দুই বন্ধুর বিচিত্র ঝগড়া উপভোগ করছি। দিনকয়েক আগে আমি বেড়াতে এসেছি পুনেতে, আমার বড়মেয়ের কাছে। দুই বন্ধু একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে বেশ সুন্দর মিলেমিশে থাকে। তবে লড়াইটা হয় মূলতঃ খাওয়া নিয়ে। ক্রিসেন্ট দক্ষিণী খাবার পছন্দ করে, আর আমার মেয়ে অবশ্যই বাঙালি খাবার। গত পাঁচদিন ধরে ত...
সুরের বাঁধনে – ব্রতী ঘোষ

সুরের বাঁধনে – ব্রতী ঘোষ

গল্প
সুরের বাঁধনে ব্রতী ঘোষ রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মোবাইল টা নিয়ে আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লো বীথি। এখন শুয়ে শুয়ে একটা আ্যপে গান শোনাটা একটা নেশা হয়ে গেছে। নিজের গান নিজে শোনা আর সবাই ঐ গানটাই কিভাবে গাইছে শুনতে ওর বেশ লাগে। এই একটা মাসে এটাই ওর অভ্যাস হয়ে গেছে। ভাগ্যিস এবার পুণা যাবার আগে তিতাস, ওর মেয়ে জোর করে মোবাইলে আ্যপটা ডাউনলোড করে দিয়েছিল। অতিমারীর দৌলতে জীবনের ছন্দটাই পুরোপুরি বদলে গেছে। সকাল থেকে সময়ের সঙ্গে ছুটে চলা, অফিস, হাজিরা, কাজের মাঝে কলিগদের সাথে আড্ডা-এগুলো সব কি গত জন্মের ঘটনা? এক এক সময় তাই মনে হয় ওর। "কি গো ঘুমালে?"-সমীর জানতে চায়। "কিগো?" আবার প্রশ্ন করে সমীর, বীথির স্বামী। বীথির কানে ঢোকে না, ইয়ারফোন গোঁজা যে। এবার হাত দিয়ে ঠেলা দিতেই বীথির হুঁশ ফেরে। "অ্যাঁ~কিছু বলছো?" বীথি কান থেকে ইয়ারফোন খুলে বলে। "না, কিছু না" সমীর আবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে। আবার কা...
একান্ত কথারা – লাবন্য নন্দী

একান্ত কথারা – লাবন্য নন্দী

কবিতা
একান্ত কথারা লাবন্য নন্দী ভীষণ ভীড় চার পাশে, সবাই মত্ত নিজের কাজে। প্রচুর সমস্যা ওদের চলো এই ফাঁকে, দু চারটে কথা বলি। শুধু নিজেদের নিয়ে ভাবি, সময় যে  বড় অল্প, রয়েছে কত গল্প, শেষ করবো কখন? আর দুটো স্টেশন নামতে হবে যখন ছাড়াছাড়ি আবার দুদিনের তখন। ******************************************* লাবন্য নন্দী পরিচিতি লাবণ্য নন্দী বর্ধমানের বাসিন্দা। প্রথাগত শিক্ষা Bsc(fishery), M.A.(Mass communication) । অতীতে বর্তমান পত্রিকাতে বেশ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা। প্রায় 400 প্রতিবেদন প্রকাশিত এবং পশ্চিম বঙ্গ সরকারের মৎস্য দপ্তর (মীন ভবনে) জল ও মৃত্তিকা বিশ্লেষক এর কাজে নিযুক্ত  ছিলেন। বর্তমানে বিভিন্ন ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন। এছাড়া গান ও ফটোগ্রাফি তে বিশেষ আগ্রহ আছে এবং স্বীকৃতিও রয়েছে।...
উজানস্রোত – ব্রততী সেন দাস

উজানস্রোত – ব্রততী সেন দাস

গল্প
উজানস্রোত ব্রততী সেন দাস দেবপ্রিয় বলল- আমি যেখানে থাকি তিয়াসা তোমার ভাল লাগবে না, তুমি থাকতে পারবে না। বরং আমি ফিরে আসি.... - কেন? - খুব নির্জন জায়গা গো, একা তোমার ভয় করবে। -তুমি তো আছো। - আরে: আমি সেই সকালে বেরোব, ফিরব সন্ধে বেলা। মস্ত একটা দিন তুমি কী করে কাটাবে? - সে আমি জানি না, কিন্তু তুমি যদি আমায় ফেলে চলে যাও ফিরে এসে আমায় আর নাও পেতে পারো। মা আর মামা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, আমি জানি। যেদিন আমায় জানাবে ধরে নাও সেদিন থেকে আমি বাধ্য এই বিয়ে করতে। আমার মায়ের বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মামাও তো মায়ের দিকে। আমি তো এখানেই বরং একা দেব। - হুম, চিন্তায় ফেললে! তোমায় নিয়ে যে কী করি। তিয়াসা চোখের জল মুছে মুচকি হেসে বলল-চল, বিয়ে করে নিই। পুরনো আমলের পরিত্যক্ত বাড়ি, সার দিয়ে কাচের জানলা। মেঝে সিমেন্টের, দেওয়াল কাঠের। কোথাও ফেটে গেছে, কোথাও চলটা উঠে গেছে। উঠোনের এক পাশে কয়েকটা পা...

জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর বিজিত কুমার রায় উজ্জয়িনীতে মহাকাল দর্শনের পর (সাল ২০০৫), আমরা ইন্দোর ও মাণ্ডু দর্শনের পর রওয়ানা হই ওঁকারেশ্বরের উদ্দেশ্যে। তখন আমি ভূপালে পোস্টেড ছিলাম। পথে আরো একটি প্রসিদ্ধ শিব মন্দির মাহেশ্বর দর্শনের অভিজ্ঞতা হয়। নর্মদা তীরে অতি সুপ্রাচীন ও শান্ত পরিবেশে এই মন্দির। এরপরে আমরা এসে উপস্থিত হই নর্মদার দক্ষিণ পাড়ে। নর্মদার অপর পারে সেই সুবিখ্যাত জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর যেটি একটি দ্বীপে অবস্থিত। কথিত আছে কিছু ওপর থেকে এই দ্বীপটি দেখলে দুইটি দ্বীপকে দেখা যায় যেটি ওঁ বর্ণের আকার। দ্বীপে ব্রিজে করেও পার করা যায় তবে আমরা নৌকায় পার হই। পুরাণে আছে কঠোর তপস্যারত মহাদেব অমরকন্টকে সমাধিমগ্ন অবস্থায় যখন ছিলেন তখন তাঁর সেই তপোজ্জ্বল উত্তপ্ত শরীর ঘর্মাক্ত হতে থাকে। তাঁর পবিত্র সেই স্বেদরাশি থেকে উদ্ভুতা এক অপরূপ কন্যা তাঁর কাছে আসেন। মহাদেব তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন...
লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

কবিতা
লক ডাউন সুকন্যা দাসগুপ্ত লক ডাউন সময়ে সময় কি লক ডাউন হয়? জীবন কি থেমে যায়? হয় কি জীবন স্পৃহার ক্ষয়? জীবনের খুঁটিনাটির  চরৈবেতি কই, যায় না তো থেমে? ক্লান্ত কাঁধের বোঝা----চাওয়া পাওয়া যায় কি নেমে? পরিযায়ী শ্রমিকের মতো আনাগোনা দিন নামচার ডালি দেখি না তো পড়ে থাকে কভু---একা একা নিষ্ফলা খালি। মৃত্যুর খতিয়ান ঘেরা অস্থির সময়ের ত্রাস বিবর্ণ সমাজের ওঠা পড়া নিত্য করে গ্রাস। সুখী রাতঘুমেরা বাষ্প হয়ে পোড়ায় দুচোখ ত্রস্ত মন চায় ধস্ত সময় অবসান হোক ভোরের মিঠে আলো ভুলেছে সঞ্জীবনী পরশ তাড়া করে, পিছু ধায়, হতাশার হারানোর তরস বয়ে চলে লক ডাউন, বয়ে চলে ভয় তিরতির আশাহীন দিগন্তে তবু আশা, কাটবেই এ তিমির।। ************************************************ সুকন্যা দাসগুপ্ত পরিচিতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। সাহিত্য কে সঙ্গী করে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!