Shadow

Author: Kulayefera

উজানস্রোত – ব্রততী সেন দাস

উজানস্রোত – ব্রততী সেন দাস

গল্প
উজানস্রোত ব্রততী সেন দাস দেবপ্রিয় বলল- আমি যেখানে থাকি তিয়াসা তোমার ভাল লাগবে না, তুমি থাকতে পারবে না। বরং আমি ফিরে আসি.... - কেন? - খুব নির্জন জায়গা গো, একা তোমার ভয় করবে। -তুমি তো আছো। - আরে: আমি সেই সকালে বেরোব, ফিরব সন্ধে বেলা। মস্ত একটা দিন তুমি কী করে কাটাবে? - সে আমি জানি না, কিন্তু তুমি যদি আমায় ফেলে চলে যাও ফিরে এসে আমায় আর নাও পেতে পারো। মা আর মামা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, আমি জানি। যেদিন আমায় জানাবে ধরে নাও সেদিন থেকে আমি বাধ্য এই বিয়ে করতে। আমার মায়ের বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মামাও তো মায়ের দিকে। আমি তো এখানেই বরং একা দেব। - হুম, চিন্তায় ফেললে! তোমায় নিয়ে যে কী করি। তিয়াসা চোখের জল মুছে মুচকি হেসে বলল-চল, বিয়ে করে নিই। পুরনো আমলের পরিত্যক্ত বাড়ি, সার দিয়ে কাচের জানলা। মেঝে সিমেন্টের, দেওয়াল কাঠের। কোথাও ফেটে গেছে, কোথাও চলটা উঠে গেছে। উঠোনের এক পাশে কয়েকটা পা...

জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর – বিজিত কুমার রায়

দেখবো এবার জগৎটাকে
জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর বিজিত কুমার রায় উজ্জয়িনীতে মহাকাল দর্শনের পর (সাল ২০০৫), আমরা ইন্দোর ও মাণ্ডু দর্শনের পর রওয়ানা হই ওঁকারেশ্বরের উদ্দেশ্যে। তখন আমি ভূপালে পোস্টেড ছিলাম। পথে আরো একটি প্রসিদ্ধ শিব মন্দির মাহেশ্বর দর্শনের অভিজ্ঞতা হয়। নর্মদা তীরে অতি সুপ্রাচীন ও শান্ত পরিবেশে এই মন্দির। এরপরে আমরা এসে উপস্থিত হই নর্মদার দক্ষিণ পাড়ে। নর্মদার অপর পারে সেই সুবিখ্যাত জ্যোতির্লিঙ্গ ওঁকারেশ্বর যেটি একটি দ্বীপে অবস্থিত। কথিত আছে কিছু ওপর থেকে এই দ্বীপটি দেখলে দুইটি দ্বীপকে দেখা যায় যেটি ওঁ বর্ণের আকার। দ্বীপে ব্রিজে করেও পার করা যায় তবে আমরা নৌকায় পার হই। পুরাণে আছে কঠোর তপস্যারত মহাদেব অমরকন্টকে সমাধিমগ্ন অবস্থায় যখন ছিলেন তখন তাঁর সেই তপোজ্জ্বল উত্তপ্ত শরীর ঘর্মাক্ত হতে থাকে। তাঁর পবিত্র সেই স্বেদরাশি থেকে উদ্ভুতা এক অপরূপ কন্যা তাঁর কাছে আসেন। মহাদেব তাঁর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন...
লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

লক ডাউন – সুকন্যা দাসগুপ্ত

কবিতা
লক ডাউন সুকন্যা দাসগুপ্ত লক ডাউন সময়ে সময় কি লক ডাউন হয়? জীবন কি থেমে যায়? হয় কি জীবন স্পৃহার ক্ষয়? জীবনের খুঁটিনাটির  চরৈবেতি কই, যায় না তো থেমে? ক্লান্ত কাঁধের বোঝা----চাওয়া পাওয়া যায় কি নেমে? পরিযায়ী শ্রমিকের মতো আনাগোনা দিন নামচার ডালি দেখি না তো পড়ে থাকে কভু---একা একা নিষ্ফলা খালি। মৃত্যুর খতিয়ান ঘেরা অস্থির সময়ের ত্রাস বিবর্ণ সমাজের ওঠা পড়া নিত্য করে গ্রাস। সুখী রাতঘুমেরা বাষ্প হয়ে পোড়ায় দুচোখ ত্রস্ত মন চায় ধস্ত সময় অবসান হোক ভোরের মিঠে আলো ভুলেছে সঞ্জীবনী পরশ তাড়া করে, পিছু ধায়, হতাশার হারানোর তরস বয়ে চলে লক ডাউন, বয়ে চলে ভয় তিরতির আশাহীন দিগন্তে তবু আশা, কাটবেই এ তিমির।। ************************************************ সুকন্যা দাসগুপ্ত পরিচিতি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। সাহিত্য কে সঙ্গী করে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু...
দাম্পত্য – নবনীতা সাঁতরা দে

দাম্পত্য – নবনীতা সাঁতরা দে

কবিতা
দাম্পত্য নবনীতা সাঁতরা দে আলমারির দরজায় দুজনকে পাশাপাশি দেখা যেত না। একজনকে দেখা গেলে অন্যজন চলে যেত আড়ালে, যেমনটা হয়ে থাকে দাম্পত্য জীবনে। আমি চোখে কাজল লেপতে এলে তোমার চুলের সিঁথি সোজা হতো না, মুখে কপট বিরক্তি নিয়ে সরে জেতে দাম্পত্যের রোজনামচায়। রোজ সকালে বাসি বিছানা গোছানোর সময়, সাহায্যের হাত না বাড়ানোর অকর্মণ্যতা বোঝাতে গিয়ে যখন রাগে নীতিবাক্য আউরেছি, তুমি তখন না শুনেই সরে গেছো অকাজের অছিলায়। তবু জীবন তৃপ্ত থাকে বিছানা গোছানোয়। দাম্পত্য বেঁচেছে এভাবেই। তোমার অফিস মোজা আর আমার মুখ মোছা রুমাল, একসাথে কেচে ধুয়ে রোদে শুকিয়েছে, তারপর আবার জলেও ভিজেছে অনেকগুলো বছর। যেভাবে পাশাপাশি থেকে যায় দাম্পত্যের আলোছায়া। একসাথে পথে বেরিয়ে হেঁটেছ একগজ আগে নয়তো একগজ পিছে। মনে হয়েছে এর চেয়ে একলা চলাই ছিল ভালো। তবু খানিক পথ পেরিয়ে দাঁড়িয়েছ অপেক্ষায়, যেভাবে বহু পথ অতিক্রম করা যায় কোন এক স...
মধ্য কলকাতার পুরানো বাড়ি – রাজীব দে

মধ্য কলকাতার পুরানো বাড়ি – রাজীব দে

খিচিক্
মধ্য কলকাতার পুরানো বাড়ি চিত্রগ্রাহক - রাজীব দে চিত্রটি তোলা হয়েছে যে ক্যামেরাতেঃ Hasselblad X pan camera, with 45mm lens (not digital) ********************************************* শিল্পী রাজীব দে পরিচিতিঃ  একজন বিখ্যাত দার্শনিক, বিভিন্ন পুরস্কার প্রাপ্ত এবং সম্পূর্ন ভাবে নিবেদিত পেশাদারী ও ফ্রিলান্সার আলোকচিত্র শিল্পী। বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রদর্শনীর সঙ্গে যুক্ত। আলোকচিত্র শিল্পী ও চিত্র সম্পাদকের ভুমিকায় কাজ করেছেন যথাক্রমে  টেলিগ্রাফ ও স্টেটসম্যান পত্রিকায়। একাকী ও গ্রুপ প্রদর্শনী করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা আন্তর্জাতিক চিত্রমেলা, ভারতীয় আন্তর্জাতিক কেন্দ্র দিল্লি, ভারতীয় যাদুঘর কলকাতা, Vadera in UK, M.I.L.K. in USA, Australia, UK, New Zealand, Tasveer in Mumbai, Delhi, Bangalore ও কলকাতা ইমেজেস দ্বারা আয়োজিত বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনী তে। বিভিন্ন প্রকাশনঃ Frames...
পুস্কর উৎসবে এক রাজস্থানী – বিতান চক্রবর্তী

পুস্কর উৎসবে এক রাজস্থানী – বিতান চক্রবর্তী

আঁকিবুকি
পুস্কর উৎসবে এক রাজস্থানী শিল্পীঃ বিতান চক্রবর্তী রাজস্থানের ঐতিহ্যবাহী উট উৎসব পুস্করে প্রতিবছর পালিত হয়। এই উৎসব উপলক্ষে আগমন হয় অনেক দেশী বিদেশী ভ্রমণপিপাসু মানুষের। চলে উট ছাড়াও অন্যান্য গবাদিপশুর কেনাবেচা। কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তে এই উৎসব আয়োজন করে রাজস্থানের ট্যুরিজম বিভাগ। ছবিতে এক বিক্রেতার ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। ছবিটি জল রং এ আঁকা *************************************** বিতান চক্রবর্তী পরিচিতি বিতান চক্রবর্তী পেশায় ইলেক্ট্রনিক এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। KIIT ভুবনেশ্বর থেকে ২০১৭ সালে পাশ করে বর্তমানে হায়দ্রাবাদ এ Tech Mahindra তে কর্মরত। বিতানের ভালোবাসা হল, ছবি আঁকা, ছবি তোলা, গিটার এবং উকুলেলে বাজানো। অবসর সময় এরাই ওর সঙ্গী। বিতানের ছবি আঁকার বা তোলার কোনো প্রথাগত শিক্ষা নেই। এটা ওর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।...
শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন – মধুপর্নি  চট্টোপাধ্যায়

শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন – মধুপর্নি চট্টোপাধ্যায়

কবিতা
শেষ পৃষ্ঠায় দেখুন মধুপর্নি  চট্টোপাধ্যায় রোজ সকাল হলে দেখি দৌড়ে দৌড়ে ওরা যায়  - ওদের দৌড়োনো দেখে জানলা দিয়ে উঁকি দেয় বুড়ো শালিকেরা চিৎকার করে বলে - "লক্ষ্য তো স্থির - এবার এগোও" কচি ঘাস অনাবৃত একটা শুকনো মাঠে দৌড়োয় ছোট - বড়ো - মেজো রা আমি গেলে ওরা ভয় পায় ওদের চোখে কখনো বা ভাসে তীব্র বিরক্তি আমার শরীরে নেই দৌড় - চাঞ্চল্য ছাপ পড়ে না শৈশব, কৈশোর কিংবা যৌবনের, আমাদের মতো বুড়ো বট গাছের সাথে তাই ওদের ঠিক জমে না চাঞ্চল্য-হীন জীবনে হিসেব রাখি আকাশলীন লেনদেনের আর ওরা হিসেব ধরে - কোনো গন্ধযুক্ত অঙ্কের ।। ********************************************** মধুপর্নি চট্টোপাধ্যায় পরিচিতি বাংলা সাম্মানিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী। কবি, আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী। বাংলা সাহিত্য এবং সুস্থ সংস্কৃতির অনুরাগী।      ...
ক্রন্দনরত শিশু (Crying Child) – বিতান চক্রবর্তী

ক্রন্দনরত শিশু (Crying Child) – বিতান চক্রবর্তী

আঁকিবুকি
ক্রন্দনরত শিশু (Crying Child) শিল্পীঃ বিতান চক্রবর্তী ছবিটি পেন্সিল স্কেচ। অতিমারির আবহে শিশুটি তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কর্মহীন পিতা প্রয়োজনীয় খাদ্য শিশুটির মুখে তুলে দিতে পারছেনা। ************************************************* বিতান চক্রবর্তীর পরিচিতি বিতান চক্রবর্তী পেশায় ইলেক্ট্রনিক এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। KIIT ভুবনেশ্বর থেকে ২০১৭ সালে পাশ করে বর্তমানে হায়দ্রাবাদ এ Tech Mahindra তে কর্মরত। বিতানের ভালোবাসা হল, ছবি আঁকা, ছবি তোলা, গিটার এবং উকুলেলে বাজানো। অবসর সময় এরাই ওর সঙ্গী। বিতানের ছবি আঁকার বা তোলার কোনো প্রথাগত শিক্ষা নেই। এটা ওর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।...
বেকড্ পটাটো – ক্যারিসা

বেকড্ পটাটো – ক্যারিসা

ঠাম্মি-ইয়াম্মি
বেকড্ পটাটো (Baked Potato) ক্যারিসার রেসিপি (Carissa's recipe)  উপকরণ আলু ১ কিলোগ্রাম (মাঝারি আকারের আট টুকরো করে কাটা) রসুন ৪ কলি কুচোনো পেয়াজ ১টা (চৌকো করে কাটা) লাল, হলুদ, সবুজ রঙের ক্যাপসিকাম ১ টা করে (চৌকো করে কাটা) ।। অলিভ অয়েল ২চা চামচ মাখন ২চা চামচ (গলানো) নুন  স্বাদমতো লাল লঙ্কা গুড়ো ১/২চা চামচ গোলমরিচ ১/২চা চামচ বিটনুন অথবা চাটমশলা ১/২চা চামচ প্রক্রিয়া উপরের উপকরণ গুলি একটি বড়ো পাত্রে মিশিয়ে রাখুন। কুকিং ওভেন (১৬০ - ১৮০) ডিগ্রীতে প্রিহিট করে নিয়ে, পাত্রে মেশানো উপকরণ গুলি বেকিং ট্রেতে ঢেলে ২০ – ২৫ মিনিট বেক করতে হবে। মাঝে এক দুবার উল্টে পাল্টে দিতে হবে। প্রয়োজনে তাপমাত্রা বাড়িয়ে লালচে কুড়মুড়ে করে বেক করতে হবে। এবার বেকিং ট্রে থেকে বেকড্ পটাটো পরিবেশনের পাত্রে নিয়ে নিন। ****************************************** Carissaর পরিচিতি Born and raised in Oh...
মান – জলি চক্রবর্তী শীল

মান – জলি চক্রবর্তী শীল

গল্প
মান জলি চক্রবর্তী শীল আল্লাহ মেহেরবান!! মনে মনে আল্লাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানায় ফরিদা| এবারটায় তার ছেলে হয়েছে| ওয়াকিব হালদারের বংশে প্রদীপ এসেছে। সাত মেয়ের কোলে ছেলে। ফরিদার মনেও আহ্লাদ। কাল হাসপাতাল থেকে ছুটি পাবে সে। তারপর সে‚ওয়কিব হালদারের গর্বিত বউ ছেলে কোলে বাড়ি ফিরবে সেই পাড়া দিয়ে যে পাড়ায় সবাই বলত তাকে অপয়া। এই বউয়ের কোল থেকে কোনদিনই ছেলে জন্মাবে না। শুধু কি পাড়া প্রতিবেশী‚ ওয়াকিবের মা কি কম তানা দিয়েছে। আর ওয়াকিব‚ সেও তো ছেড়ে কথা বলেনি। আল্লাহর দোরে মান্নত মেনেছে ফরিদা কত বার। মাদুরের মত নিজেকে বিছিয়ে দিয়েছে ওয়াকিবের শরীরের তলায়  একটা ছেলের আশায়। অবশেষে আল্লাহ দয়া করেছেন। ফরিদার চোখ দিয়ে জল চুঁইয়ে নামে। এটা ফরিদার দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম বিয়ে মাত্র এগারো বছর বয়সে। বিয়ে কি তা জানার আগেই ফরিদার বিয়ে হয়ে যায় সুলতান আহমেদের সাথে। ফরিদা তখন সবে গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা করছে। একদিন লেখাপড়া ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!