Shadow

কাশবন ২

গল্প

মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

মিলন সেতু – অমৃতা লাহিড়ী

আলোকপাত, কাশবন ২
মিলন সেতু অমৃতা লাহিড়ী 'ধর্ম 'শব্দটির প্রকৃত অর্থ নির্ধারণ করা সহজ নয়। আপাতদৃষ্টিতে ধর্ম বলতে বোঝায় দেবদেবীর উদ্দেশ্যে কিছু আচার-অনুষ্ঠান এবং কিছু রীতিনীতি পালন ,তথাপি এটিও ধর্মের প্রকৃত স্বরূপ নয় ।'ধর্ম ' শব্দের প্রকৃত অর্থ যা মানুষকে ধারণ করে থাকে ।যুগে যুগে জাতিতে, আদর্শের কত বিভিন্নতা ঘটে, আচার-অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির অনুসরণ যদি ধর্মের একান্ত রূপ হতো তাহলে ধর্মের সার্বজনীন কোন রূপ থাকত না। 'ধর্ম' কথাটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত, সম্প্রদায়গত ও জাতিগত ব্যাপারই মাত্র বোঝাত। কিন্তু সনাতন ভারতবর্ষ কখনো ধর্ম বলতে এই সংকীর্ণ অর্থ কে বোঝে নি । তার দৃষ্টিতে সকল তুচ্ছতার মধ্যে,সকল আচার-অনুষ্ঠান এর মধ্যে, সকল উত্থান-পতনের মধ্যে যা মানুষকে চিরন্তন সত্যে ধারণ করে থাকে তাই ধর্ম । রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, "সংসারের একমাত্র যাহা সমস্ত বৈষম্যের ঐক্য, সমস্ত বিরোধীদের মধ্যে শান্তি আনয়ন করে, সমস্ত বিচ্ছেদের মধ্য...
সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি – সুলগ্না চক্রবর্তী

সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি – সুলগ্না চক্রবর্তী

আলোকপাত, কাশবন ২
সিপাহী বিদ্রোহ এবং চার কলোনি  সুলগ্না চক্রবর্তী ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের কথা কে না জানে ? এই প্রবন্ধ এই ক্রান্তিকাল কে ঘিরেই তৈরি হয়েছে। স্থান হলো হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে অব্রিটিশ কলোনি গুলো। আর পাত্ররা হলো ব্যান্ডেলের পর্তুগিজ, চন্দননগরের ফরাসি, শ্রীরামপুরের ডেনিস ও হাওড়ার ব্রিটিশ নয় এমন শ্বেতাঙ্গরা ও মেটে ফিরিঙ্গিরা। তারা এই বিদ্রোহকে কী চোখে দেখেছিলো , তাদের অবস্থান কী ছিলো এবং তাদের আশা-নিরাশা কীভাবে বিবর্তিত হয়েছিলো - এইসব সাতপাঁচ নিয়েই এই লেখা। প্রথমেই বলে রাখা ভাল এই লেখা পণ্ডিতদের জন্য  নয়।  হুগলী - ব্যান্ডেল : ============ ১৮৫৭ র মহাবিদ্রোহের সময় হুগলি ও ব্যান্ডেল থেকে অনেক পর্তুগিজ ব্যক্তিরা ইংরেজদের বাহিনীতে যোগ দেয়। তাদের গোলন্দাজ ও অফিসারদের পোস্টও দেওয়া হয় ।তারা আশা করেছিল এর ফলে তাদের সামাজিক সম্মান বাড়বে ও শাহজাহানের দেওয়া ৭৭৭ বিঘা জমি ফেরত পাবে। ব্যান্ডেল চার্চের ভ...
আত্মজ – ব্রতী ঘোষ

আত্মজ – ব্রতী ঘোষ

কাশবন ২, গল্প
আত্মজ ব্রতী ঘোষ  পাশের ফ্ল্যাট থেকে মাঝেমধ্যেই হাসির শব্দ ভেসে আসছে ৷  মায়া বসে আছে প্রতিমা দেবীর মাথার কাছে ৷  মাঝে মাঝে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ৷  "তুমি কাঁদছো ?" "নারে মা !! বয়স হলে এমনিতেই চোখ দিয়ে জল পড়ে ৷" মায়া বুঝতে পারে এই চোখের জলের কারণ ৷  আজ মাসিমার ছোট ছেলের জন্মদিন ৷ থাকে পাশের ফ্ল্যাটেই ৷ লোকজনের হাসি হুল্লোড়ের শব্দ ভেসে আসছে সেই সন্ধ্যে থেকে ৷ মুখে না বললে কি হবে মায়া জানে মাসিমা সেই সকাল থেকে অপেক্ষা করে আছে কখন তার ছোট ছেলে আসবে মার সাথে দেখা করতে !! আজ বছর চারেক হল মায়া প্রতিমাদেবীকে  দেখাশোনার কাজ নিয়েছে ৷ সপ্তাহে এক দিন শনিবার সন্ধ্যা বেলা বাড়ি যায় আবার রোববার সকালেই ফিরে আসে ৷ "মায়া হাতটা একটু ধর তো !!" মায়া সাবধানে হাতটা ধরে আরামকেদারায় বসিয়ে দেয় ৷ "জানিস !! যখন তোর মেসোমশাইয়ের সংসারে আমি আসি তখন আমার মাত্র ঊনিশ বছর বয়স ৷ সেই ছোটবেলায় মাকে হা...
টং আছু – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

টং আছু – সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়

আলোকপাত, কাশবন ২
পথ চিনে এদেশে চিনের প্রথম বসতি আছিপুরে                                  সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়  "The main purpose of the horseshoe-shaped or, more frequently, omega-shaped ridge surrounding the tomb is to substitute for a range of hills ridge which, according to the principles of feng shui, needs to protect the grave from the "noxious winds" from the three sides – the situation that is rarely naturally obtainable." কথাগুলো লিখেছিলেন প্রখ্যাত চীনতত্ত্ববিদ জাঁ জ্যাকব মারিয়া দে গ্রুট (Jan Jakob Maria De Groot)। তাঁর 'The Religious System of China' গ্রন্থে। জীবনে অনেক সমাধিক্ষেত্রে গিয়েছি। চন্দননগরে ফরাসীদের কবরখানা দেখেছি। চুঁচুড়ায় ডাচদের কবরখানা দেখেছি। কলকাতায় সাউথ পার্ক স্ট্রিট কবরখানাতেও উঁকি দিয়েছি। নানান স্থাপত্যের স্মৃতিসৌধ দেখেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত চিন ভ্রমণে না যাওয়ায় সেখানকার অশ্ব...
এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

এ কেমন তুমি? – কঙ্কণা সেন

কবিতা, কাশবন ২
এ কেমন তুমি?   কঙ্কণা সেন ------------------------- এ তুমি কেমন মাগো? প্রতিবার বন্যা কবলিত তোমার সন্তান! প্রতিটি পদক্ষেপে মৃত্যুর অগ্ন্যুৎপাত জীবন স্তব্ধ হতে হতে টিকে থাকা তুমি না দুর্গতিনাশিনী? তুমি না অসুরদলনী? তবে কেন এতো নারী নির্যাতন! লোলুপ দৃষ্টির লেহনে কুঞ্চিত সত্তা অসুর তো হয় নি দলিত,মদগর্বী তারা উচ্চাশার স্বপ্নরা উড়ে যায়,ডানা ভাঙে মাথা কুটে মরে কন্যাভ্রূণগুলো। তুমি তো সর্বজ্ঞা,,,,,বোঝো না মর্ত্যে শুধু দেবী পূজা,হয় না মাতৃ আরাধনা মূর্তির জাঁকজমকে আদিখ্যেতায় বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা বাড়ে নিখোঁজ হয় মানবীগুলো; কালের প্রলেপে রোজ রোজ নতুন ইতিহাস রচিত হয়। তুমি তো অঘটন ঘটনপটীয়সী---তাই বুঝি আশার ডানা মেলে স্বপ্নের জাল বুনি অন্তরের অন্দরমহল থেকে উঠে আসে মাভৈ ধ্বনি-------------------শান্তিরূপেন সংস্থিতা শ্রদ্ধারূপেন সংস্থিতা দয়ারূপেন সংস্থিতা জীবনী শক্তি রূপেন সংস...
একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

একদিন – গীর্বাণী চক্রবর্তী 

কবিতা, কাশবন ২
একদিন  গীর্বাণী চক্রবর্তী  নদীর ছলাৎ ঢেউ বাতাসে দোল খায়, খুনসুটি করে;দিঘিও কেমন হেসে ওঠে সলাজ কিশোরীর মতো। মাছরাঙা ডানা মেলে উড়ে যায় --- নদীর ঢেউ আর শ্যাওলার জল চুপিচুপি কত কথা বলে। শরীর ভেজায় জল, মেয়েলি আলতা, মসৃণ গোড়ালি হেসে খুন হয়।নরম কিশোরী ভেঙেচুরে অচেনা যুবতী-- তার চোখ দুটি নীল;নদীর জল আর শ্যাওলা দিঘি শ্বাস ফেলে জোরে। নীল আকাশের জলছবিতে সোহাগ ছড়িয়ে পড়ে।। ********************************************** গীর্বাণী চক্রবর্তী পরিচিতি জলপাইগুড়ি শহরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতাকে। প্রায় তিন দশক ছুঁয়ে আছে তার সাহিত্য সৃজন। ইতিমধ্যে অসংখ্য পত্র পত্রিকায় গীর্বাণীর লেখা প্রকাশ পেয়েছে। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা চার। তার লেখা গ্রন্থগুলি হল, এক ডজন গপ্পো, ভূত বাংলোর আতংক, শ্বেতা তোমার জন্য এবং অরণ্য জোনাকি।  ...
বন্ধু – ডঃ গৌতম সরকার

বন্ধু – ডঃ গৌতম সরকার

কাশবন ২, গল্প
বন্ধু ডঃ গৌতম সরকার এদিকটায় নন্দ আগে কখনও আসেনি। কয়েকটা বাড়িঘর, একটা বড় মাঠ আর পুকুর পেরিয়ে জঙ্গল শুরু হয়েছে। নন্দর আজ এতটাই মনখারাপ যে বেখেয়ালে জঙ্গুলে পথ পেরিয়ে অনেকটা ভিতরে চলে এসেছে৷ যত এগোচ্ছে জঙ্গল আরও ঘন হচ্ছে, বড় বড় গাছগুলো মাথার ওপর যেন চাঁদোয়া খাটিয়ে রেখেছে। রোদ প্রায় ঢুকতেই পারছেনা। ভরা দুপুরেও জায়গাটা বেশ ঠান্ডা। পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে। পরিষ্কার জায়গা দেখে একটা গাছের গায়ে হেলান দিয়ে বসে পড়লো। স্কুলের ব্যাগটা পায়ের কাছে নামিয়ে রাখলো। কিছুদিন আগে নন্দ কৃষ্ণনগরে মাসির বাড়ি গিয়েছিল। সেখানেই প্রথম স্মার্টফোন দেখে। এত তাক লেগে গিয়েছিল, বাড়ি ফিরে বহুদিন ঘ্যানঘ্যান করেছে ওরকম একটা মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার জন্যে। মোবাইল তো জোটেইনি, উল্টে বাবার হাতে বেদম পেটানি জুটেছে। আজ ক্লাসে বিপিনের হাতে স্মার্টফোন দেখে পুরোনো দুঃখটাই চাগিয়ে উঠেছিল। তাতাইদার কাছে সে ফোনের অনেক ফাংশন শিখেছিল। আজ বিপনে...
হে ক্ষণিকের অতিথি – সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী

হে ক্ষণিকের অতিথি – সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী

কাশবন ২, গান নাচ ও বাদ্য
https://youtu.be/j-6OBt34whE শিল্পী পরিচিতিঃ সিদ্ধার্থ চক্রবর্তীঃ আদি বাড়ি উত্তরবঙ্গের বালুরঘাট শহরে।পড়াশোনা সেখানেই। বর্তমানে কলকাতা সংলগ্ন হরিনাভির স্থায়ী বাসিন্দা। সঙ্গীত শিক্ষা নিয়েছেন শিক্ষাগুরু শ্রী বিকাশ সরকারের কাছে। পরবর্তীকালে শ্রী শান্তিরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের কাছে মার্গসঙ্গীত শিখেছেন। কিছু কাল তালিম নিয়েছেন শ্রী জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। কলকাতায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অসম্ভব চর্চিত সুকন্ঠের অধিকারী। দূরদর্শনের শিল্পী। প্রচুর স্টেজ প্রোগ্রাম করেছেন। যে স্তরের শিল্পী সেরকম কোনও অহংকার নেই। বয়স মাত্র উনপঞ্চাশ। প্রচার প্রিয় একদমই নন। শুভেন্দু চক্রবর্তী ওরফে বাপ্পাঃ বয়স উনপঞ্চাশ। কোদালিয়া হরিনাভির আদি বাসিন্দা শুভেন্দু বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। দুর্দান্ত তবলা বাজান। অসাধারণ সুকন্ঠের সঙ্গীত যেন আলাদা মাত্রা পায়। নিখুঁত ছবি আঁকেন এবং মাটির মূর্তি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে ওর আ...
ঠাকুরবাড়ি ও বাঈজি সংগীত – অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়

ঠাকুরবাড়ি ও বাঈজি সংগীত – অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়

কলাকেন্দ্রিক, কাশবন ২
    ঠাকুরবাড়ি ও বাঈজি সংগীত অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় উনিশ শতকের মধ্যভাগে বাংলার সেই ইতিহাস লগ্ন৷ সাংস্কৃতিক নানা বিভাগেই সেই শতাব্দীর শেষার্ধে বিপুল প্রেরণা যুগিয়েছিল৷  কলকাতার তথা বাংলার সংগীত ক্ষেত্রেও তখন নব নব কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টিতে বিভোর৷  ভারতীয় সংগীতের মূল ধারা রাগ সঙ্গীতের চর্চায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে বাঙালি প্রতিভা৷ কলকাতায় খেয়াল ঠুংরির  সত্যিকারের চর্চা ও খানদান শুরু হয় ১৮৫৬ সালে যখন লক্ষ্মৌ থেকে নবাব ওয়াজেদ আলী শা মেটিয়াবুরুজে বন্দীজীবন কাটান  সঙ্গে আনা ওস্তাদ কলাবন্তদের সাহচর্যে৷  ঠুংরি গানের যোগসূত্র যেন নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ দরবারের তওয়ায়েফ বা বাঈজিদের সঙ্গে৷  নবাবের মৃত্যুকাল পর্যন্ত প্রায় তিরিশ বছর ধরে সেই দরবারে নিয়মিত বসতো নাচ-গানের মেহফিল৷ ভারতবর্ষের নানা স্থান থেকে ওস্তাদ বাঈজিরা আসতো এই দরবারে৷ কলকাতার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের মায়া এড়াতে পারত না তাঁর...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!