Shadow

কাশবন ৩

কাশবন ৩

সূর্যাস্তের পর – শাঁওলি দে

সূর্যাস্তের পর – শাঁওলি দে

কাশবন ৩
সূর্যাস্তের পর শাঁওলি দে (এক) বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। দেওয়ালে হেলান দিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে অভীক অনেকক্ষণ। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সন্ধে থেকে লোডশেডিং । রাস্তার বাতিগুলোও জ্বলছে না তাই। বাড়িতে ইনভার্টার আছে ,অথচ আজ কেউই কোনো ঘরে বাতি জ্বালায়নি। রাত অনেক হয়েছে তাই আশেপাশের সবাইও আলো নিভিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়েছে। শুধু এ বাড়িতে কারো চোখে ঘুম নেই। এক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই অভীক ওর পিঠে একটা স্পর্শ অনুভব করল। মাম এসে দাঁড়িয়েছে কাছে। শুকনো মুখে হাসির চেষ্টা করল অভীক। মাম অন্ধকারে টের পেল না কিছুই। ফিসফিস করে বলে উঠল,’শোবে না,অনেক রাত তো হল !’ -‘মা শুয়ে পড়েছে ?’ শান্ত গলায় জানতে চাইল অভীক। -‘হ্যাঁ। আমি এইমাত্র ও ঘর থেকে এলাম। কিছুতেই ঘুম আসছিল না। একটা ঘুমের ওষুধ দিয়েছি।’ কেমন কৈফিয়ৎ দেওয়ার গলায় বলে উঠল মাম। -‘উফ্‌ ! আবার ঘুমের ওষুধ দিতে গেলে কেন ? ডাক্তারকাকু না করেছেন তো ?’ অধৈর্...
” চিঠি ” – কঙ্কণা সেন

” চিঠি ” – কঙ্কণা সেন

কাশবন ৩
" চিঠি " কঙ্কণা সেন কৃষ্ণচূড়া পাঠায় চিঠি গভীর অনুরাগে থাকবে তুমি আমার পাশে চিরজীবন তরে? চিঠি খুলে রাধাচূড়া মিষ্টিমধুর হাসে এখনো কী বোঝ নি তুমি আছি তো পাশে পাশে! তাই তো দেখি যেতে যেতে পথের ধারে সারি লাল হলুদে মাখামাখি গভীর মিতালি। কৃষ্ণ কয় ফিসফিসিয়ে রাধার রূপে পাগল ওগো রাধা ঝরে যেও না একই সাথে র'ব রাধা হলো কৃষ্ণপ্রাণা উন্মাদিনী রাই তোমায় ছেড়ে কোথাও আমি কি করে যে যাই! থাকবো দোঁহে,অপার মোহে ছাড়ব না বঁধু মোর বিরহজ্বালা অনেক সয়েছি রইবে বাহুডোর।। **************************** "হৃদয়েই আছো তুমি" কঙ্কণা সেন এক ঝাঁক কুয়াশায় মন ছোটে দুরাশায় পথের বাঁকে আছো তুমি চলি শুধু ভরসায়।। রোজ ভাবি পেরবোই এক রাশ হতাশা ধরা বুঝি দেব না তবু সে করে গ্রাস।। তুমি শুধু ভরসা ছাইচাপা আগুনে বুকের ওঠানামা এই বুঝি থামবে।। কি-ই বা ক্ষতি হবে বলো আমি যদি থেমে যাই ন...
শারদ যামিনী – কল্যানী মিত্র ঘোষ

শারদ যামিনী – কল্যানী মিত্র ঘোষ

কাশবন ৩
শারদ যামিনী  কল্যানী মিত্র ঘোষ পিয়া : একি,আবার তুমি স্কুলের গেটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছ? কতবার তোমাকে বলেছি যে আমাকে ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় কোনো দিদিমণি দেখে ফেললে আমার গার্জিয়ান কল হবে। কেন এরকম করো? সামনে আমার টেস্ট, এই সময় বাড়িতে অশান্তি হলে কি হবে ভাবতে পেরেছো? বাবুয়া : কি আর হবে,সোজা আমার বাড়ি নিয়ে চলে যাবো তোকে, মা তো সব জানেই, শুধু বাবাকেই যা একটু ... পিয়া : লেখাপড়ায় জলাঞ্জলি দিয়েছ,সারাক্ষণ হয় মাঠে ফুটবল খেলছ আর নইলে পাড়ার মোড়ে আড্ডা। আচ্ছা,একটুও কি সিরিয়াস হবে না? আমার মা বাবা কি দেখে এই সম্পর্কটা মেনে নেবে শুনি? বাবুয়া: সব ঠিক হয়ে যাবে বস্,তুই খালি আমাকে লেঙ্গি মারিস না। ওই জি ব্লকের আকাশ দেখি হেব্বি তোকে ঝারি মারে। মানে আমাকে একবার কাটাতে পারলেই ও তোর পায়ে এসে ডাইভ দেবে দেখে নিস। পিয়া: হিংসে হচ্ছে? বাবুয়া: এই তোর ব্যাগ টা কি ভারী,দে আমাকে দে,এতটা হাঁটা .....
কিচির মিচির

কিচির মিচির

কাশবন ৩
রথতলা রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যা মন্দির এ অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী। আঁকতে ভালোবাসে। ************************************************ ********************************** ************************************** **************************************** শুভপ্রিয় মন্ডল – বয়স ১০। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় বালিগঞ্জ এর ছাত্র। ফুটবল খেলতে ভালোবাসে। ********************************* * দুগ্গার বর* সাত্যকি লাহিড়ী দুগ্গা ঠাকুর দুগ্গা ঠাকুর               চলে এসো এবার, তোমার আসার সময় টিতে                  পড়াশোনায় ছাড়। মহিষাসুর বধ তো হলো             দিয়ে দশটি হাত - করোনাসুর কেমন করে       করবে  কুপোকাত ? যাই গো যদি পাখি হয়ে                   আকাশপানে উড়ে, মাস্ক,স্যানিটাইজার ছুঁড়ে ফেলে        খেলব ঘুরে ঘুরে ৷৷ মাগো,এমন  দাও নাকো বর?                   ...
নিহারির আত্মা – জলি চক্রবর্তী শীল

নিহারির আত্মা – জলি চক্রবর্তী শীল

কাশবন ৩
নিহারির আত্মা জলি চক্রবর্তী শীল ঘরে ঢুকতে গিয়েই আচমকা হোঁচট টা খায় নিহারি| থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে| এতজোরে হোঁচট খাওয়ার পরেও কোন ব্যথা অনুভূত হয় না তার| আচমকাই শুকনো মুখে ভীষণভাবেই সে বিষম খায়| কেউ নিশ্চয় তাকে মনে করছে ভীষণভাবে| নিশ্চয় ভিল| আর তখনি সে শুনতে পায় তার ঘরে কেউ যেন ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদছে| কি হল যে সবাই এমনভাবে কাঁদছে| মাঝির কি ইন্তেকাল হয়ে গেল| মনটা উচাটন হয়ে ওঠে তার| দ্রুত ঘরের মধ্যে ঢুকে ভিরমি খেতে গিয়ে সামলে নেয় সে| একি কান্ড সামনের একটা নতুন খাটিয়ায় তাকে শুইয়ে রেখেছে| একমাথা মেঠে সিঁদুরে মুখ -মাথা ভর্তি| পায়ে চওড়া করে আলতা| নতুন শাড়ি‚ কপালে চন্দনের ফোঁটা| তাকে ঘিরে পাড়ার মেয়ে-বউরা দাঁড়িয়ে আছে | কেউ কেউ কাঁদছেও| ওদিকে ভিল তার শরীরটার সাথে লেপ্টে আছে| ইনিয়ে  বিনিয়ে কান্নাটা ভিলই কাঁদছে| ওদিকে মাঝি মাঝে মাঝে কপালে চাপড় মেরে মেরে কাঁদছে | তার বাবা-মা-ভাই সবাই কাঁদছে| 'আরে কি জ্বালা ...
শ্রুতিনাটক – “অপরাধের শাস্তি – পুরস্কার” – গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য্য

শ্রুতিনাটক – “অপরাধের শাস্তি – পুরস্কার” – গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য্য

কাশবন ৩
শ্রুতিনাটক - “অপরাধের শাস্তি – পুরস্কার” রচনা– গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য্য [ঘুমের ঘোরে মাষ্টারমশাইয়ের বেতের শব্দ ও বকা শুনতে হয় শুভ’কে। সহপাঠীর ব্যাগ থেকে লোভনীয় ক্যালকুলেটর চুরি করে নেয় সে।] মাষ্টারঃ Stand up!  Stand up on the bench….. হতচ্ছাড়া, ছিঃ ছিঃ ছিঃ। শেষ পর্য্যন্ত তুই চোর হলি? ছিঃ। এত কষ্ট করে – পরের বাড়িতে কাজ করে, তোর মা তোকে লেখাপড়া শেখাচ্ছে- কি-না, পড়াশোনা শিখে চাকরি-বাকরি করে মা’র দুঃখ কষ্ট ঘোচাবি… এই তোর পরিণতি, দূর’হ – দূর হয়ে যা – আমার চোখের সামনে থেকে। [ঘুমের ঘোরে গোঁ গোঁ করতে করতে আঁতকে ওঠে] শুভ ~ আঁ… আঁ… আঁ… আঁ… ওঃ  (হাঁফায়) মা ~ কি হলো? কি হলো বাবা! শুভ – কি হয়েছে – (শুভ হাঁফায়) শুভ কি হয়েছে বাবা? এরকম করছিস কেন? স্বপ্ন দেখছিলি? কি হয়েছে? শুভ ~ না, কিছু হয়নি মা …… মা ~ জল খাবি? দাঁড়া… জলের বোতলটা কোথায় যে রাখলাম!!... এই নে-বোতলটা ধর…   (শুভ জল খায়) নিশ্চয়ই ভয়ের...
বদ্ধ ঘরে কেবল বাঁচা-অর্চনা মহান্তি

বদ্ধ ঘরে কেবল বাঁচা-অর্চনা মহান্তি

কাশবন ৩
বদ্ধ ঘরে কেবল বাঁচা  অর্চনা মহান্তি বদ্ধ ঘরে কেবল বাঁচা,একেই নাকি জীবন বলে! মন ময়ূরী নাচছে নাতো ঘড়ির কাঁটা কেবল চলে উদাস সকাল,উদাস দুপুর ঘুমিয়ে আছে পায়ের নুপূর মন যমুনায় জোয়ার কোথায়? বালির চড়া বুকের তলে। সূর্য ওঠে নিয়ম মতো, তবু কোথায় আলোর আশা? অষ্টপ্রহর চোখের পাতায় কালো ঝালর সর্বনাশা বিরাম বিহীন অন্ধকার নেইতো খুশির উপচার গরমিলেতে হাপুসনয়ন,নেইতো কোন সুখের ভাসা। পদ্মপাতায় প্রাণের ফোঁটা অস্থিরতায় কেবল টলে পাপড়ি মেলে সকালগুলো একটি উঠোন চোখের জলে আকাশ ডাকে আ চই চই পাখির এখন পাখনাটা কই ঢাকছে গোপন কষ্টগুলো মিথ্যে-মেকি হাসির ছলে বদ্ধ ঘরে কেবল বাঁচা,একেই নাকি জীবন বলে! ******************************** অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য পাঠের সুন্দর পরিবেশে বড় হওয়ায় খুব ...
রাত্রির ইতিহাস – সুরভী চট্টোপাধ্যায়

রাত্রির ইতিহাস – সুরভী চট্টোপাধ্যায়

কাশবন ৩
রাত্রির ইতিহাস  সুরভী চট্টোপাধ্যায় আমি মাথা নিচু করে পড়ছিলাম রাত্রির ইতিহাস বিজ্ঞাপনের মতো উঠে আসছিল ধ্বংসের ছায়াগুলো আমি নিরীক্ষণ করছিলাম আর ঢেউ হারিয়ে ফেলছিল নিজেকে দামাল সাগরের বুকে বিকলাঙ্গ শিশুর মতো। যুদ্ধের পালক পুড়িয়ে তুমি কয়েকটি বর্ণ লিখেছিলে আর আমরা তলানিতেও খড় যুগিয়েছিলাম পর্যবেক্ষক দল ফিরে গেছে ঘষা কাঁচে ব্যস্ত প্রত্নতাত্ত্বিকেরা.. নিয়ম মেনে আমরা করছি এসব হাওয়ার রাস্তা ধরে কতগুলো আঙ্গুল ছিঁড়ে পড়ে আছে সুবর্ণরেখার ধার ঘেঁষে পশ্চিমে সরে যাচ্ছে মাথাগুলো এবং সুবর্ণরেখাও হাত ধুয়ে নিয়েছে এত রক্ত মেখে কয়েকটি হাঁস শুধু ভেসে যাচ্ছে মুগ্ধ রূপ নিয়ে… ******************************************* কবি পরিচিতি - সুরভী লেখালেখির চেষ্টা করতে ভালোবাসে। এর মধ্যে বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা বেরিয়েছে,নিজের লেখাকে সকল পাঠকের মধ্যে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর স্বপ্ন।...
শূন্য বালুচর – সুপ্রিয়া মুখার্জী

শূন্য বালুচর – সুপ্রিয়া মুখার্জী

কাশবন ৩
শূন্য বালুচর সুপ্রিয়া মুখার্জী স্বপ্নের বুক চিরে আসা শাঁখ উলু ধ্বনিত হল চারিদিক জন্মটা নাকি সার্থকতা পেল সত্যিই পেল কী? যখন ছিলে ক্ষুদ্র,দন্ডী হয়ে দন্ডায়মান ছিলাম পাশটিতে। হঠাৎ ঝাঁকড়া চুল উড়িয়ে ছিনতাইয়ের ভঙ্গিতে ছুটে এল এক ঝাঁক হাওয়া। পড়ে গেলাম। অর্ধভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি ছাড়ি নি হাতের দন্ডী সেটাকে ছাতার মতো ধরে আছি রোদ,বৃষ্টি,ঝড় সবকিছু থেকে বাঁচাব বলে। খুঁজতে আমাকে পিপাসার্ত মানুষ যেমন খুঁজে নেয় জলস্রোত। আর বোধহয় খুঁজবে না,খুঁজো না। বুকে আমার রুদ্ধ কান্নার ভার ছিন্ন আশার রেশ নিয়ে অপেক্ষায় থাকি বশে আনতে চেষ্টা করি নিজেকে কোথায় হারিয়ে যাই সাজানো কথার মায়াময় চত্বরে। জানি না কবে ভরবে আমার এই শূন্য বালুচর।। ******************************************** সুপ্রিয়া মুখার্জী চন্দননগরের বাসিন্দা। কবিতার সঙ্গে পথ চলা শুরু বেশ বড় বয়সেই। কবিতা লিখতে ও পড়তে ভালোবাসেন...
সত্যদা এবং……… লেখকঃচন্দ্রকান্তি দত্ত

সত্যদা এবং……… লেখকঃচন্দ্রকান্তি দত্ত

কাশবন ৩
সত্যদা এবং.........  চন্দ্রকান্তি দত্ত  বাড়ি থেকে বেরোতেই কানুর সাথে দেখা। বলল,"কিরে? কবে এলি?" বললাম,"কালকে।" কানুর মুখ কিছুটা থমথমে। বলল,"ঘটনা সব শুনেছিস তো?" কানুর কথাটা আমার ঠিক মাথায় ঢুকল না। কি ঘটনা,কারই বা ঘটনা,কই,আমাকে তো কেউ কিছু বলেনি। কানু মনে হয় আমার বিমূঢ় ভাব দেখে কিছু আন্দাজ করতে পারল। বলল,"সে কি রে? তোর বাড়ির লোকেরাই বা কেমন,এত বড় ঘটনাটা বেমালুম চেপে গেল?" বাড়ির লোকেদের দোষ দেওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি প্রতিবাদ করলাম,"বাড়ির লোকেদের দোষ দিচ্ছিস কেন? কি এমন হয়েছে যে আমাকে বলতেই হবে?" "আলবাত্ বলতে হবে",কানু ঝাঁঝিয়ে উঠল,"সত্যদার হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাটা এভাবে কেউ চেপে যেতে পারে না।" "সত্যদার হারিয়ে যাওয়া?",কি বলছিস তুই? সত্যদা হারিয়ে যাবে কেন?" -"সে অনেক কথা। আজ  নিয়ে ষোলদিন হল,সত্যদাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।"              * * * * * * আমাদের সহযাত্রী সংঘের প্রতিষ...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!