Shadow

কাশবন ৫

কাশবন ৫

আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক – ঋতুপর্ণা রুদ্র

আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক – ঋতুপর্ণা রুদ্র

কাশবন ৫
আজকের দিনে রবীন্দ্রসংগীত কতটা প্রাসঙ্গিক ঋতুপর্ণা রুদ্র মন এই বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী আর সর্বত্রগামী বস্তু বলে মহাভারতে জানিয়েছিলেন যুধিষ্ঠির। সেই মনের চোখে দেখি,ছোট ষোল বছরের ছেলেটি নিজের ঘরে একান্তে লিখছে 'সজনি সজনি রাধিকা লো' বা,'শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা'। বৈষ্ণব পদাবলীর অনুকরণে ব্রজবুলি ও মৈথিলি ভাষায় রচিত তাঁর পদাবলীর নাম ভানুসিংহের পদাবলী। ভানুসিংহ নাম নিয়ে ছেলেটি নিজেই রোমাঞ্চিত। এই সব ছাড়াও পিতৃদেব পছন্দ করেন ব্রহ্মসংগীত,একের পর এক লিখে চলে ছেলেটি। পিতা ব্যস্ত মানুষ,মাসের পর মাস পশ্চিমে চলে যান। তবে সেখান থেকে ফিরলেই রবির ডাক পড়বে। ছোটবেলায় রবির কবিতা পড়ে হেসে ফেলেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ,সেই তিনিই এখন পুত্রের সৃষ্টিতে মুগ্ধ। ধীরে ধীরে ব্রাহ্মসমাজের অধিবেশনেও রবিকে গান গাইতে হয়। মাঘোৎসবের অধিবেশনের জন্য লিখলেন 'নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে রয়েছো নয়নে নয়নে'। উৎসবে নিজেই গাইলেন সেই গান। পিতা স...
ঘুম নেই চোখে – দীপান্বিতা দত্ত

ঘুম নেই চোখে – দীপান্বিতা দত্ত

কাশবন ৫
ঘুম নেই চোখে  দীপান্বিতা দত্ত দাঁড়িয়ে আছি বারুদের স্তুপে শাসনে শোষণে  জেগে আছে সমাজ লড়াই সেদিন ও ছিল,আজ ও আছে ভদ্রতার আড়ালে মুখোশ পড়ে দুঃশাসন দাপিয়ে বেড়ায় চতুর্দিকে ধর্ষক--হাওয়ার বেত্রাঘাতে ঘুম নেই চোখে,সারারাত ধরে । অস্থিরতার দুরারোগ্য ব্যাধিতে  লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় রোজ ঘর ছেড়ে বাইরে এসো,আগুন হয়ে পৃথিবীতে আলোর কণা ছড়িয়ে দিতে। ধোঁয়াশা ভরা উত্তরণের পথ রন্ধ্রে রন্ধ্রে তাড়া করে ক্ষয় জনস্রোতের তরঙ্গের ধাক্কায় একদিন ধ্বংস হবে শত্রুরা প্রতিবাদ হবে তীব্র ঘৃণায়। ********************* দীপান্বিতা দত্ত-জন্ম আসামে,বিবাহসূত্রে বর্তমানে কলকাতায় থাকেন ৷ সংসারের সব রকম গুরু দায়িত্ব সামলেও কবিতার মধ্যেই তিনি নিজের মনের মুক্তি খুঁজে পান ৷ আর এই ভালোবাসা ছোট বেলা থেকেই ৷ গানেও তাঁর অসীম আগ্রহ এবং এখনও নিয়মিত চর্চা করেন ৷  ...
আহ্বান – চন্দ্র কান্তি দত্ত

আহ্বান – চন্দ্র কান্তি দত্ত

কাশবন ৫
আহ্বান    চন্দ্র কান্তি দত্ত সময় সকাল নটা কুড়ি কি বাইশ। বাইক নিয়ে অফিসে যাচ্ছে প্রবাল। ত্রিকোণ পার্কের কাছে আসতেই সামনে সব গাড়ি দাঁড়িয়ে গেল। রাসবিহারী মোড়ের সিগন্যাল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পাক্কা সাড়ে তিন মিনিটের অপেক্ষা। প্রবাল একটা সিগারেট বার করে ধরালো। সাড়ে তিন মিনিটে শেষ হয়ে যাবে। হঠাৎ চোখে পড়ল,ত্রিকোণ পার্কের লাগোয়া ফুটপাথে একজন মুচি এসে বসেছে। প্রবালের চোখে পড়ল এইজন্যই যে,রোজ এই একই সময়ে প্রবাল এই রাস্তা দিয়ে যায়। অথচ,গতকাল পর্যন্ত প্রবাল এই লোকটিকে দেখেনি। সিগন্যাল খুলে গেছে। প্রবাল সব চিন্তা সরিয়ে রেখে সোজা এগিয়ে গেল। সারাদিন কাজের মধ্যে রাস্তার কথাবার্তা আর দেখাশোনার বিষয় বিশেষ কিছুই মনে থাকে না। প্রবালেরও ছিল না। সন্ধ্যায় ফেরার পথে আনমনা ভাবেই চোখ গেল সেই মুচির বসার জায়গায়। মুচি এখন নেই। চলে গেছে। প্রবাল কব্জিতে বাঁধা ঘড়িতে সময় দেখল। প্রায় সাতটা। প্রবাল বাইকের গ...
উড়ান – সুজয় দত্ত

উড়ান – সুজয় দত্ত

কাশবন ৫
উড়ান সুজয় দত্ত (ক্লীভল্যান্ড, ওহায়ো, যুক্তরাষ্ট্র) টার্মিনালের এদিকটা এতক্ষণ বেশ নিরিবিলি ছিল। ডিপার্চার গেটগুলো ফাঁকা,সামনে পাতা সারি সারি চেয়ারেও অল্প দুচারজন,আশপাশের খাবারের দোকান আর স্যুভেনির শপে সকালের সেই লম্বা লাইন আর ভীড়ভাট্টা অদৃশ্য। কিন্তু আর বেশীক্ষণ নয়। একটু পরেই শুরু হবে দুপুরের ব্যস্ততা। পাশাপাশি অনেকগুলো গেটে এসে দাঁড়াবে একের পর এক বিমান--দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রী নিয়ে। আর তারই প্রস্তুতিতে টার্মিনালের বিমানকর্মীদের মধ্যে দেখা যাবে তৎপরতা,ঘন ঘন নির্দেশ আসবে ওয়াকিটকিতে,মানুষের পদশব্দে আর ক্যারিঅন লাগেজের  চাকার শব্দে জমজমাট হয়ে উঠবে চারিদিক। ডাক পড়বে লায়লারও। অমুক গেটে তমুক জায়গা থেকে আসা ফ্লাইটে একটা হুইলচেয়ার লাগবে সাড়ে বারোটায়,তারপরেই উল্টোদিকের গেটে অপেক্ষমান প্লেনটায় যাত্রী ওঠার ঠিক আগে আরও একটা,সেটা মিটতে না মিটতেই হয়তো  ছুটতে হবে একটু দূরে অন্য কোনো গেটে। বেশ ...
স্মৃতি – অঙ্কন দন্ড 

স্মৃতি – অঙ্কন দন্ড 

কাশবন ৫
"স্মৃতি " - অঙ্কন দন্ড  তোমার দুর্বল স্মৃতি  সহজেই ভুলে যেতে পারো -  ইতিহাসের সাল,অঙ্কের সূত্র এবং আমাকে।  আমার তুখোর স্মৃতিশক্তি। এক নিঃশ্বাসে দিয়ে দিতে পারি - তারিখ,সময়,তোমার সাথে কাটানো  প্রতি মুহূর্ত ও কথোপকথনের  পূর্ণাঙ্গ বিবরণ।  স্মৃতির পাতা জুড়ে একরাশ মিথ্যে লেখা।  মুখস্ত বলে দিতে পারি সেই সব মিথ্যে।  তবে আজ সে সব ভুলে যেতে চাই! তুমি শিখিয়ে দেবে কীভাবে ভোলা যায়? কারণ দায়িত্ব বাড়ছে, সত্যিই চাঁদ আর আগের মতো সুন্দর লাগে না। **************************** অঙ্কন দণ্ডঃ জন্ম ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী। বাসস্থান পুরুলিয়া জেলার আদ্রায়। অঙ্কনের লেখালেখির পথ চলা কবিতা দিয়ে। আনন্দবাজার পত্রিকার জেলার পাতা "ছোটদের পাতা" শীর্ষক-এ তার স্বরচিত কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হত। স্থানীয় পত্রিকা "ঊষশী" তেও স্থান পেয়েছে তার কবিতা। এছাড়া নানা...
লোকাল ট্রেন – দীপন মিত্র

লোকাল ট্রেন – দীপন মিত্র

কাশবন ৫
লোকাল ট্রেন     দীপন মিত্র   লোকাল ট্রেনের কামরা শরীরের স্পর্শ-তাপে ভরা লজেন্স,দিলখুশ,মোওয়া-নখ-কাটা-যন্ত্র বেচা দেবতারা গান গাওয়া জন্মান্ধ ভিখিরি,সঙ্গে বউ সিটে চেপে-চুপে বসা মফস্‌সলি মানুষেরা সকলেই  নেমে যায় নীচু আকাশের খেতে মাঠে,অসীম স্টেশনে কখনও উঠেছি ভুলে চটজলদি ভেন্ডরের কামরায় মৎসবীজ ভরা হাঁড়ি,সবজি বিক্রি করা গাঁয়ের বউরা অথবা কাপড়ে বাঁধা মিঠে-পচা-গন্ধী ছানা,মর্গগামী লাশ গমগমে আওয়াজ তুলে সবজান্তা লোকাল ট্রেন চলে মিষ্টি মিষ্টি নামওলা হাবড়া,হৃদয়পুর,গুমা,কিংবা বনগাঁ-স্টেশন নদ-নদী-খাল-বিল,জঙ্গল-বেষ্টিত এক প্রাচীন বঙাল নিগৃটো, ককেসিয়, আর্য-অনার্যের রক্তে বলীয়ান বাঙালি লোকাল ট্রেন ছুটে যায় আহা সবুজ মায়ায়!   লোকাল ট্রেনের কামরা শরীরের স্পর্শ-তাপে ভরা লজেন্স,দিলখুশ,মোওয়া-নখ-কাটা-যন্ত্র,পেন বেচা দেবতারা;গান গাওয়া জন্মান্ধ ভিখিরি,সঙ্গ...
তুমি রবে নীরবে, নিভৃতে সংগোপনে – তীর্থঙ্কর সান্যাল

তুমি রবে নীরবে, নিভৃতে সংগোপনে – তীর্থঙ্কর সান্যাল

কাশবন ৫
তুমি রবে নীরবে, নিভৃতে সংগোপনে তীর্থঙ্কর সান্যাল নীরা নেই, তবু আমার জীবনের সাথে ওতপ্রোত হয়ে মিশে আছে, ধরা ছোঁয়ার  বাহিরে, নীরবে নিশ্চিন্তে সংগোপনে, রোজ দেখা হয় মনের অলিন্দ গলিতে। অভিজ্ঞতায় বুঝেছি নীরবতা কথা বলে, চিত্য বিকলিত হয়ে, আনন্দধারার প্লাবনে, শোনা যেত পূর্ণতা, নীরবতার মাঝে।  নীরবতায় অপরূপ নির্জনতা, সংগোপনে জেগে ওঠে শিল্পী সত্তা, আঁধারে জীবনবোধের শিক্ষা, নিভৃত যতনে উৎযাপন,শান্তির নীড় গড়া।  নীরবতা যখন কথা বলে শব্দ নিজের থেকে চুপ হয়ে যায়, হয়তো পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্ম হয়, সংগোপনে জ্ঞানের আরাধনা দীপ্ত হয়, মুক্তধারা নিভৃতে যতনে পথ চলায়। তোমার বিচ্ছেদ ব্যথা আমার সংগোপনের ইতিহাস, হৃদয় নন্দন বনে অবসাদ,                                                                                                                                              নীরবতা ...
খেলা – বিদ্যুৎ পাল

খেলা – বিদ্যুৎ পাল

কাশবন ৫
খেলা  বিদ্যুৎ পাল তোমাকে তোমার খেলা ঠিক মত খেলে যেতে হবে। দেখবে নিয়মে জাল,কাদায় জুতোর ভাঙা নাল খুবলে ধরবে হাঁটু,রেফারির বাঁশি হবে ঝুঠো, যতক্ষণ খেলা,পুরো মাঠ ধরে রাখতেই হবে। কথাটা পুরোনো,বহু শিক্ষকেরা বলেছেন,শীতে পাড়ার কুয়াশা ঢাকা মাঠের বেড়ার কাছে ফিরে, বলেছেন মাঝেমধ্যে চিনে নিবি গিয়ে স্টেডিয়াম, এমাঠে খেলার জোর সেই মত বাড়াবি পেশিতে।        স্টেডিয়ামে প্রথম তো,এখনো জানিনা ঠিক,দূরে দাগগুলো ঠিক কিনা;ওদেরই আঁকন,সবকিছু মুঠোয় ওদের,এই খেলাটাও খেলাচ্ছে ওরাই। জিতব ওদের ভূল ধরে নয়,নিজেদের সুরে। গড়ছি উদ্ভিন্ন সুর,মাঠ ভরা ছন্দে এগোবার – ছড়াতে পারব গান,ওদের ফাটলে বেঁধে তার? ************************** বিদ্যুৎ পাল পরিচিতি জন্মতারিখ ২৪শে জুলাই ১৯৫২। জন্মস্থান পাটনা (বিহার)। পড়াশুনো সবটাই পাটনায়। চাকরি  ব্যাঙ্কে,বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। সারাদিনের ব্যস্ততায় শামিল নিজের লেখালিখি,পড়াশু...
আগমনী – তিতিলা মুখার্জি

আগমনী – তিতিলা মুখার্জি

কাশবন ৫
আগমনী   তিতিলা মুখার্জি               কাল মহালয়া l রমলা আর সমর বসে টিভি দেখছিল l রমলা তাড়া দিল l সেই কোন ছোটবেলার অভ্যেস রেডিও তে  বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী পাঠ না শুনলে ওর  চলবেই না l রমলা  যৌথ পরিবারে বড় হয়েছে l সবাই মিলে দাদুর ঘরে বসে একসঙ্গে শোনা হতো  l যদিও রমলা একটু পরেই ঢুলতে শুরু করতো,তবুও ওখানেই বসে থাকতো l ঘুম কেটে গেলে,‘রূপং দেহি জয়ং দেহি' শুনতে পেত l কি করে যে প্রত্যেকবার এক সময়েই ঘুম ভাঙত সেটা ও ভেবে পেতো না  l সেই এখনো এক ব্যাপার রয়ে গেছে,কি করে কে জানে !!  রমলা  সমরকে আবার তাড়া দিলো,-"এই চলো চলো ! খেয়ে নাও কাল তো সকালে উঠতে হবে l" সমর হাসলো-"কি শুনবে ? একটু পরেই তো ঘুমোবে l খালি আমাকেও উঠিয়ে দাও l" -"তা হোক তবুও ভোরেই শুনতে হবে l এমনিতে আজকাল তো ইউটিউবে সারা বছর শোনা যায় l কিন্তু ভোরে উঠে শোনার আনন্দই আলাদা l"               সমর সব জানে তাও মজা কর...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!