Shadow

কাশবন ৬

কাশবন ৬

সম্পাদকীয় – কাশবন ৬

সম্পাদকীয় – কাশবন ৬

কাশবন ৬
সম্পাদকীয় কুলায়ফেরার  কাশবন ৬ সময়ের পরিবর্তনে মন এবং অনুভূতি গুলোও কেমন যেন অন্য রকম ভাবে বদলে যাচ্ছে । এখন শরৎ এলেও হাওয়ায় হিমের পরশ পড়েনা। বরং আকাশ কালো করে মেঘ গর্জন আর যখন তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি আসে। তার মাঝে চিটপিটে গরমে আসন্ন শীতকাল মনে হয়না সময়টাকে।নাছোড়বান্দা গ্রীষ্মকে কেউ কি  আছে যে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়াবে ? এর পর বোঝার উপর শাকের আঁটি ক্লাউড বার্স্ট! মেঘ ভাঙা বৃষ্টি তে জল থৈথৈ! অনুভব টাও কেমন যেন পাল্টে গেছে।আগে,আমাদের সময়ে পুজো যত কাছাকাছি আসতো,মনটাও আনন্দে ভরে উঠতো। মহালয়ার ভোরে শিউলি ফুল কুড়ানো অথবা পুকুরে ফোটা শাপলা ফুলকে পদ্ম ভেবে তারিয়ে তারিয়ে অবলোকন করা,এগুলো স্মৃতিই।এখন শিউলি গাছ কোথায় এই কংক্রিটের জঙ্গলে? পুকুরই তো নেইই।শাপলা কোথায় ফুটবে? এখনকার জমানায় ছোটদের মধ্যে  তাই এসব ভাবনা নেই। অবিশ্যি তখন আবার মোবাইল ল্যাপটপ কোথায়? আর পুজোর বাজারের সেই রোমাঞ্চ? দোকানে বাবা মায়...
আকাশে তখন কন্যা রাশি – দীপন মিত্র 

আকাশে তখন কন্যা রাশি – দীপন মিত্র 

কাশবন ৬
আকাশে তখন কন্যা রাশি   দীপন মিত্র  স্বপ্নে এক অন্ধকার পথ যায় প্রগাঢ় গলিতে গলির ভেতরে আরও গলি - শেকড়ের জাল প্রায় আমি যাই সেই পথে সরু আরও সরু যেন ফিতে কিছু দূরে নদীজল-দুদিকে দেয়াল লাগে গায়ে  সেখানেই কবেকার ভাঙা এক মন্দির বিবরে আমার আশ্চর্য ঘর–যেখানে সকাল সন্ধে এক যেখানে কখনও বৃষ্টি,পাতা ঝরে অন্তিম প্রহরে যেখানে প্রভাত আর সূর্যাস্তের রঙে ভরা র‍্যাক নদী এসে জানালার কাছে দেয় সবুজাভ খাম ভেতরে রয়েছে লেখা অচেনা লিপিতে এক নাম তার মুখ মনে পড়ে–পিছনে উদ্যান ছিল বড় বড় বড় গাছে ঢাকা রেলপথে হার মানে ঝড়ও যেতো ট্রেন এত জোরে –কালো ধোঁয়া-বেজে যেতো বাঁশি এপথে দেখেছি দেবী,আকাশে তখন কন্যা রাশি **************************...
ভ্রমণ – কিছু স্মৃতি, কিছু বিস্মৃতি”  পল্লব চট্টোপাধ্যায়

ভ্রমণ – কিছু স্মৃতি, কিছু বিস্মৃতি” পল্লব চট্টোপাধ্যায়

কাশবন ৬
“ভ্রমণ - কিছু স্মৃতি, কিছু বিস্মৃতি” পল্লব চট্টোপাধ্যায় আমি তখন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সদ্য দু-বছর শেষ করেছি, বাবা ডেকে বললেন,‘ওরে,কোম্পানি যে ছুটিতে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাবার জন্যে চার বছর অন্তর একটা লীভ ট্রাভেল অ্যাসিস্ট্যান্স দেয়,সেটা তো আমি বারবার ছেড়ে দিতাম-ভাবতাম কে এসব ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট পোয়াবে। এখন তুই বড় হয়েছিস,দেখ না কিভাবে গুজরাট ঘুরে আসা যায়,তোর কাকা কতবার বলে।’ ও এই কথা! আমি আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম। ‘দাও টাকা, টিকিট করে আনি’- বলে উঠলাম উৎসাহের সঙ্গে। বাবা-মা,আমরা দুই ভাই দুই বোন,দুর্ভাগ্যক্রমে আমি সবার বড় অর্থাৎ দায়িত্ব বেশি-গ্রীষ্মের এক সকালে ধানবাদ স্টেশনে চেপে বসলাম দিল্লিগামী ডিলাক্সের এসি চেয়ার কারে। পরদিন সকালে দিল্লি। বাবার বন্ধুপুত্র দুলালদা দিল্লিতে কাজ করে-কালীবাড়িতে বুকিং করে রেখেছিল,তিনদিন সেখানে থেকে দিল্লিটা ঘুরে নিলাম। একদিন ট্যুরিস্ট বাসে করে দিল্লির দর্শনীয় স্থানগুলো দেখ...
পঙ্কজবাবু জিন্দাবাদ – সোনালী গুহ

পঙ্কজবাবু জিন্দাবাদ – সোনালী গুহ

কাশবন ৬
 পঙ্কজবাবু জিন্দাবাদ  সোনালী গুহ    হইহই করে ঘরে ঢুকে এলো একদল ছেলে ।রবিবারে সকালে আয়েশ করে দ্বিতীয়বার চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে সবে খবরের কাগজে মন দিয়েছিলেন পঙ্কজবাবু। একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন," কি ব্যাপার? তোমরা কাকে খুঁজছো? "... ছেলের দল একটু থমকালো। "আমরা দুর্গাপূজার চাঁদা নিতে এসেছিলাম কাকু।".... বললো একজন। "ও,চাঁদা!... তা কোথাকার পূজা?"... " কাকু,আমরা সবাই ক্লাবের পূজার চাঁদা "...কথা শেষ করতে না দিয়ে প্রশ্ন করলেন পঙ্কজবাবু... "সেটা আবার কোথায়? রোজ ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে ক্লাব..."  "না,না,কাকু !আমাদের ক্লাবের বয়স প্রায় দশ বছর। আপনার পাশের গলিতেই আমাদের ক্লাব।দুর্গাপূজা থেকে সব পূজা,রক্ত দান শিবির,কাঙালি ভোজন সব হয় আমাদের ক্লাবের।" " হুমমম!! আচ্ছা।রবিবারটা মাটি করে দিও না।এখন এসো তোমরা। পরে ভেবে দেখছি।"..... এই বলে ষাটোর্ধ্ব পঙ্কজবাবু ছেলেগুলোকে ভাগিয়...
পাপের প্রায়শ্চিত্ত – রেশমি দত্ত

পাপের প্রায়শ্চিত্ত – রেশমি দত্ত

কাশবন ৬
পাপের প্রায়শ্চিত্ত রেশমি দত্ত আজ ষষ্ঠী ,এবার দুর্গা পুজোয় অন্বেষা ঠিক করেছে প্রতিদিন বয়ফ্রেন্ড এর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোবে। কোন্ দিন কি পোশাক পরবে,তার  সঙ্গে ম্যাচিং করে সাজার জিনিস,জুতো সব রেডি করে রেখেছে সে।পঞ্চমী হয়ে কলেজ ছুটি পড়ে গেছে,ষষ্ঠী থেকেই তাহলে ঠাকুর দেখা শুরু হবে । অন্বেষার বয়ফ্রেন্ড ছেলেটি ওর সহপাঠী,একই সঙ্গে ইউনিভার্সিটি তে পড়ে ওরা। ষষ্ঠীর দিন ঠিক বিকেল ৫ টায়  দেখা করবে ওরা,গড়িয়াহাটের মোড়ে।জোসেফ দাঁড়িয়ে সেই পৌনে পাঁচটা থেকে কিন্তু অন্বেষার পাত্তা নেই।জোসেফ হলো অন্বেষার বয়ফ্রেন্ড।ওরা বহু বছর ধরে কলকাতায় আছে,তা প্রায় জোসেফের দাদুর আমল থেকে।জোসেফের পুরো নাম অপূর্ব জোসেফ জন,মা বাঙালি,বাবা খৃস্টান তাই তার এমন নাম। এদিকে ষষ্ঠীর  দিনের ঘড়িটায় প্রায় সাড়ে পাঁচটা,কিন্তু অন্বেষার কি হলো!এখনো এলোনা,জোসেফ অনেকবার ফোন করেছে,টেক্সট করেছে,কিন্তু তার ফোন সুইচড অফ বলছে,ভীষণ রাগ হচ্ছে জো...
গুরুদেবের জয় হোক – ব্রতী ঘোষ

গুরুদেবের জয় হোক – ব্রতী ঘোষ

কাশবন ৬
গুরুদেবের জয় হোক ব্রতী ঘোষ সকাল ছ'টার অ্যালার্ম টা বেশ কিছুক্ষণ ধরে বেজে চলেছে। সোমনাথ জেগে শুয়ে আছে বিছানায় । আজ আর ভালো লাগছে না উঠতে। রোজকারের একঘেয়েমিতে মনটা একেবারে বিরক্তিতে ভরে আছে । আজ থেকে ও কিছুতেই মৃদুলার কথায় চলবে না । ওর মন যা বলবে সেই ভাবেই চলবে। ও ঠিক করেছে এখন বিছানা ছেড়ে কিছুতেই উঠবে না কিন্তু এইরকম বৈপ্লবিক চিন্তাভাবনা শুধু তো করলেই হয় না তাকে বাস্তবে রূপায়িত করতে গেলে যথেষ্ট দম থাকা দরকার। সোমনাথও সেই দমকে ধরে রেখে বিছানায় পড়ে আছে| দেখা যাক্ !  কতক্ষণ ধরে রাখতে পারে ! যেইমাত্র ভাবনাটা মাথায় এলো অমনি কোথা থেকে যেন একটা ঝড়ের মতো হাওয়া এসে ওকে বিছানা থেকে ফেলে দিল | কোথা থেকে ঝড় এলো,কখন এলো,কিছু তো আগাম বোঝা গেল না | এইসব ভাবতে ভাবতেই ও দেখলো  ওর সামনে মা ছিন্নমস্তার ভঙ্গিতে মৃদুলা দাঁড়িয়ে আছে | শুধু ওর মুন্ডুটা ছেঁড়াটারই  যা অপেক্ষা | আর যেটা সম্পন্ন হলে...
মাতৃরূপেণ – তিতিলা মুখার্জি

মাতৃরূপেণ – তিতিলা মুখার্জি

কাশবন ৬
  মাতৃরূপেণ তিতিলা মুখার্জি                 আজ চতুর্থী ।মায়া একটা চেয়ার নিয়ে বারান্দায় বসে আছে। ওদের বাড়ির প্রায় উল্টো দিকে একটা বড়ো পুজো হয়। প্রত্যেক বছর নানান পুরস্কার পায়। আজকাল তো আবার এমনি পুজো না,সব থিম এর পুজো। এ বছরের পুজো শেষ হতে হতেই মিটিং হয়ে যায়,পরের বছর কি থিম,কে ঠাকুর বানাবে। এ ধরনের নাম করা পুজোতে ঠাকুর বানায় যারা তারাও তো খুব বিখ্যাত একেকজন।                     প্যান্ডেল এর কাজ শুরু হয়ে যায় তিন মাস আগে থেকেই। ভেতরে কি হচ্ছে যেন দেখা না যায় চারদিক ঢাকা। মায়া তাও অফিস থেকে ফেরার পথে মাঝে মাঝে পর্দা সরিয়ে উঁকি দিয়ে দেখে আসতো কি হচ্ছে কাণ্ড টা। নিজেই বাড়ি এসে হাসে নিজের ছেলেমানুষী দেখে ।                  নিজের ছোটবেলাটা মনে পড়ে যায়। মায়ার স্কুল জীবন কেটেছে ভবানীপুরে। ওখানেই তো তখন কত নাম করা পুজো আশেপাশে। বাড়ির কাছের পুজো বলতে মহুয়া ক্লাব ।...
স্মৃতির সরণি বেয়ে – চন্দ্র কান্তি দত্ত

স্মৃতির সরণি বেয়ে – চন্দ্র কান্তি দত্ত

কাশবন ৬
  স্মৃতির সরণি বেয়ে চন্দ্র কান্তি দত্ত অফিস থেকে বেরোতে একটু দেরী হয়ে গেল। অনিমেষ কব্জিতে বাঁধা ঘড়িটা দেখলেন। ছটা বেজে একচল্লিশ। বাসটা হয়তো পাওয়া যাবে না। অনিমেষ দেখেছেন, বাসটা সাধারণত সাড়ে ছটা থেকে ছটা চল্লিশের মধ্যে এ অঞ্চলটা পেরিয়ে চলে যায়। সে হিসেবে আজকে বাসটা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পরের বাস আসতে অন্ততঃ মিনিট দশেক লাগবে। অনিমেষ একটু এগিয়ে এসে ই-মলের সামনে দাঁড়ালেন। ইলেকট্রনিক সামগ্রীর পাঁচতলা একটা অত্যাধুনিক বাজার এই ই-মল। এরকম একটা আধুনিক বাজার থাকার ফলে জায়গাটা যতটা পরিস্কার ততটাই সুন্দর। বাস আসতে দেরী হলেও দাঁড়িয়ে থাকতে অসুবিধা হয় না। অনিমেষ যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন তার ঠিক উল্টোদিকে. রাস্তার ওপারে দক্ষিণ ভারতীয় খাবারের দোতলা একটা রেস্তোরাঁ আছে। ওখানে নাকি খুব সুস্বাদু নোনতা লস্যি পাওয়া যায়। অনিমেষ মিষ্টি লস্যি পছন্দ করেন না। নোনতা লস্যিটা কেমন হয় একব...
ভুল – সুজয় দত্ত

ভুল – সুজয় দত্ত

কাশবন ৬
ভুল সুজয় দত্ত চোঙা করে পাকানো খবরের কাগজটা বারান্দার চাতালের বদলে গিয়ে পড়ল সামনের এক চিলতে বাগানের নরম কাদায়। ছুঁড়তে গিয়ে লক্ষ্যে ভুল হয়েছে কাগজওয়ালার। এ-বাড়ির কাজের লোকটি গেট দিয়ে ঢুকে বারান্দায় ওঠার আগে কাদামাখা কাগজটা দেখে গজগজ করতে করতে তুলে নিয়ে গেল ভেতরে। এমনিতেই আসতে দেরি হয়েছে তার। রোজ ভোরবেলা উঠে লোকাল ট্রেনের ঠাসাঠাসি ভিড়ে এতটা পথ আসে। আজ তাড়াহুড়োয় সোনারপুর লাইনের বদলে ভুল করে বজবজ লাইনের গাড়িতে উঠে পড়েছিল। আবার একটা অচেনা স্টেশনে নেমে উল্টোদিকে ফিরতে হল, তাই এত দেরি ।  বাড়ীর বুড়োকত্তা অবশ্য দেরিতে আসা বা নোংরা কাগজ -- কোনটা নিয়েই কিছু বললেন না। শুধু বারান্দায় এতো ঘেউঘেউ করে কুকুর ডাকছে কেন, জিজ্ঞেস করলেন বিরক্তমুখে। আসলে কাজের লোকটি ঢোকার সময় বাগানের গেটটা বন্ধ করতে ভুলে গেছে, তাই ফাঁক পেয়ে ভেতরে সেঁধিয়েছে হতচ্ছাড়ারা। অগত্যা তাকেই গিয়ে আবার তাড়িয়ে আসতে হল। গেট-টেট বন্ধ করে...
উপস্থিত-বুদ্ধি – মধুমিতা মিত্র

উপস্থিত-বুদ্ধি – মধুমিতা মিত্র

কাশবন ৬
উপস্থিত-বুদ্ধি মধুমিতা মিত্র বুড্ঢা বুঢ়িয়া ছোট্ট দুটি ভাই আর বোন  তারা আপন মনে আপন হারা,দিনের সর্বক্ষণ  বয়স তাদের পিঠোপিঠি, করে তারা ছুটোছুটি তাদের লাফালাফির তালে, অতিষ্ঠ সর্ব জন... বুড্ঢা-বুঢ়িয়ার বাবা যথানিয়মে অফিসে যান,মা পড়াতে যান স্কুলে,তাই ছুটির দিন গুলোতে দুটি ভাই বোনে বাড়িতে একাই-একা মানে মা বাবা ছাড়া খালি দুজনেই থাকে। না না,এমনটিও বলা চলবে না,ওদের বাড়িতে সব সময়ের কাজের লোক না থাকলেও সারা দিনের লোক অবশ্যই একজন আছে, মদনের মা। প্রচন্ড চটপটে,ভীষণ বিশ্বাসী,কাজে কর্মে হাতে পায়ে পটু।  সেদিন বুড্ঢা-বুঢ়িয়ার বাবা যথারীতি তাঁর নির্ধারিত সময়ে অফিসে বেরোলেন,তাদের মা-ও তার কিছুক্ষণ পরেই বুড্ঢা-বুঢ়িয়ার অন্য আর সব ছুটির দিনের মত‌ই,মদনের মায়ের হেফাজতে দুই ভাই বোনকে রেখে স্কুলে যাওয়ার রিক্সা চেপে র‌ওনা দিয়েছেন। মদনের মা বাড়ির কর্তা গিন্নীকে সেদিনকার মতো তাঁদের কর্মস্থলে...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!