Shadow

কাশবন ৬

কাশবন ৬

প্রেমে  অপ্রেমে – সুরজিৎ সরখেল

প্রেমে অপ্রেমে – সুরজিৎ সরখেল

কাশবন ৬
প্রেমে - অপ্রেমে সুরজিৎ সরখেল ঋতি অনেকক্ষণ ধরে চুপ করে কিছু একটা চিন্তা করছিল। সারাটা ক্ষণ ঘন, গহীন মেঘেদের মতন ভেসে বেড়াচ্ছিল চিন্তার সমুদ্রে। " ও দিদি কি ভাবছেন এত? কাঠগুদাম এসে গেছে তো! আপনার লাগেজ গুলো আমি নিচ্ছি ।আপনি ধীরে ধীরে নামুন।" কথাগুলো বলেই অতি ব্যস্ত রাজু  ঋতির লাগেজ নিয়ে নেমে গেল। প্রতিবছরই ওদের পরিচিত এক নামি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে ঋতি পাহাড়, জঙ্গলে বেরিয়ে পড়ে। আগে একা একাই ট্রেকিং করতে বেরিয়ে পড়তো। পথে কত মানুষের সঙ্গেই তো পরিচয় হয়ে যেত! ইদানিং কয়েকটা বছর এই এজেন্সির সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে দিন কয়েকের জন্য। এবার কুমায়ুন  অঞ্চলের আলমোড়া,বিনসর, চৌকরি অনেক স্পট আছে ওদের তালিকায়। একটা অদ্ভুত আকর্ষণ, ভালোলাগা জড়িয়ে আছে এখানকার পার্বত্য অঞ্চল গুলোর সঙ্গে।  আভাষের সঙ্গেই তো বার দুয়েক এসেছিল এখানে। প্রফেশনের তাগিদে আভাষকে যখন তখনই ক্যামেরা কাঁধে করে বেরিয়ে পড়...
সৃষ্টি – শ্রুতি দত্ত রায়

সৃষ্টি – শ্রুতি দত্ত রায়

কাশবন ৬
সৃষ্টি শ্রুতি দত্ত রায় মৃত্যুই শেষ কথা নয়, শেষ থেকে শুরুও হতে পারে,,,, কোন কোন মৃত্যুও জন্ম দেয়, জন্ম দেয় শত শত নির্ভেজাল প্রাণের। আবর্জনার স্তূপ থেকেও কখনও সৃষ্টি হয় সবুজ অঙ্কুরের, সৃষ্টি হয় দৃঢ়, ঋজু মহীরুহের, শাখা থেকে যার চুঁইয়ে পড়ে নিটোল ছায়ার প্রতিশ্রুতি। লাশ কাটা ঘরের যে জমাট শীতলতা হঠাৎই কখনও বা জন্ম দেয় তীব্র দাবানলের; আগুনের সে লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে চতুর্দিকে পথে,ঘাটে, নগরে,গ্রামে, সাদামাঠা প্রতিটি গৃহকোণে। রাতের নিবিড় অন্ধকারকে ঠেলে সরিয়ে আলোয় আলোকময় হয়ে ওঠে পৃথিবী। চিতাভস্মই শেষ কথা নয়, পোড়া ছাই থেকে জাগতে পারে প্রাণ আগুনরঙা ডানা মেলে আকাশ দখল করতে পারে কোটি কোটি ফিনিক্স পাখির দল আজও,,,,,, ************************ শ্রুতি দত্ত রায় পরিচিতি: সুন্দরী ডুয়ার্সের মফস্বল শহর জলপাইগুড়িতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। পেশায় সরকারি বিদ্যালয়ের ভাষা...
অপরাহ্নের মিঠে আলো – জলি চক্রবর্তী শীল

অপরাহ্নের মিঠে আলো – জলি চক্রবর্তী শীল

কাশবন ৬
অপরাহ্নের মিঠে আলো জলি চক্রবর্তী শীল ঘুম থেকে উঠেই এক কাপ চা না হলে ঠিক ঘুমের রেশটা কাটতে চায় না দীর্ঘইয়ের |  কিন্তু আজ ছন্দপতন | ঘড়ির কাঁটা আটটার ঘর ছুঁই ছুঁই | জানলার কাঁচ থেকে সূর্যের আলো প্রতিবিম্বিত হয়ে চোখে পড়ছে | ঘুমটা তাই আগেই ভেঙে গেছে | তবু বিছানা কামড়ে পড়ে আছে সে‚চা'টা খেয়েই একেবারে স্নান করতে ঢুকবে বলে | কিন্তু আজ আর কেউ চা দিতে আসে না দেখে নিজেই বিছানা ছেড়ে নেমে আসে সে | চিৎকার-চেঁচামেচি করে কথা বলা কোনকালেই দীর্ঘই পছন্দ করে না | তাই সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়েই দাঁড়িয়ে পড়ে | ছোট ভাইয়ের বউ নিভা চা নিয়ে উপরেই আসছে | 'আজ একটু দেরী হয়ে গেল ছোড়দি |' নিভা কৈফিয়ত দেয়ার চেষ্টা করে | দীর্ঘই চা'টা নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায় কোন কথা না বলেই | পারতপক্ষে সে কম কথার মানুষ | চা খেয়েই টয়লেটে চলে যায়  সে |  বেশ কিছুটা সময় এখন সে নিজের জন্য ব্যয় করবে | যৌথ বাড়িতে যদিও সবার জন্য একটাই টয়লেট‚তবে বেশ...

শাওন শেষে – নন্দিতা ঘোষ

কাশবন ৬
শাওন শেষে নন্দিতা ঘোষ ভেবেছিলেম আসবে তুমি শাওন শেষে- মালাখানি রেখে ছিলেম সে উদ্দেশ্যে |  জুঁই মালতি সাজিয়ে ছিলেম তোরণ দ্বারে, বীণা খানি বাঁধা ছিলো বেহাগ  সুরে |  ঝড় বাদলে আকাশ ছিলো নিকষ কালো, মনে ছিলো প্রথম দেখার নতুন আলো | বুকের মাঝে জড়িয়ে থাকা তোমার ছবি , মেঘে ঢাকা সেদিন ছিলো লুকিয়ে রবি | স্বপ্ন আমার ভাঙল শেষে এক নিমেষে ! বন্ধু তোমায় নিয়ে এলো এ কোন বেশে | ***************************** নন্দিতা ঘোষ পরিচিতি জন্ম মুর্শিদাবাদ এর এক  প্রত্যন্ত গ্রামে । ছোটো বেলা কেটেছে বীরভূম জেলায় মামার বাড়িতে l প্রথম জীবনে প্রখ্যাত কবি ও সাহিতিক মামা শ্রী আনন্দ ঘোস হাজরা র কবিতা ও মা এর লেখা বিশেষ করে, সাহিত্য চর্চার দিকে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। পড়াশোনা বাংলা সাহিত্য নিয়ে, তার সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্র সঙ্গীত শিক্ষা l বিবাহ সূত্রে প্রবাসে থাকা তিন দশক, তবুও বাংলা কে ন...
আসানসোল – মনি ফকির

আসানসোল – মনি ফকির

কাশবন ৬
আসানসোল মনি ফকির আমরা যারা নদীর এপার,  শহর কিংবা মফস্বলী।  আমরা যারা শিউলি ছায়ায়,  তারক সেনের গল্প বলি।  পায়ের তলায় কয়লা মাটি,  চায়ের কাপে লালচে ধোঁয়া।  খোকা খুকুর  খেলনা বাটি,  মাথার পাশে পুতুল শোয়া।  আমরা যারা ঘাম ঝরিয়ে,  পিটিয়ে লোহা চাল কিনেছি। সমন্বয়ের স্বপ্ন নিয়ে,  লড়াই করে এগিয়ে গেছি।  আমরা যারা ঢোকার মুখে,  বন্ধ কলের গল্প জানি।  রুজি রুটির কাব্য দিয়ে,  ঘরের উঠোন নিকিয়ে আনি।  অনেক দূরের টিকিট কেটেও, সুখ খুঁজেছি মায়ের কোলে।  পুল পেরোনো মানুষ জানে,  আমরা থাকি আসানসোলে। ************************* মণি ফকিরের জন্ম শিল্পনগরী বার্ণপুরে। সাহিত চর্চার অভ্যাস ছাত্র জীবন থেকেই। অনুপ্রেরণা মা ও মামার কাছ থেকে। প্রথম কবিতার বই *মণি ফকিরের পদাবলী* প্রকাশিত হয় ২০১৮ পূজোয়। গল্পকারের মূল বৈশিষ্ট্য তার গল্প বোনার ও...
একরোখা জীবন বার্তা – অর্চনা মহান্তি 

একরোখা জীবন বার্তা – অর্চনা মহান্তি 

কাশবন ৬
একরোখা জীবন বার্তা  অর্চনা মহান্তি প্রতি মুহূর্তে যদি চড়াই না উৎরাতে পারি, তবে বৃথাই এই স্রোত, এই জীবন প্রবাহ, আমার বিষাদ দেখে কেউ সান্ত্বনা দেওয়ার আগেই আমি হেসে উঠি সশব্দে, ছিঁড়ে ফেলি ছায়ার আবরণ, মুছে ফেলি ক্যানভাসের বিবর্ণ কয়েকটা আঁচড়। তারপর রঙের বন্যায় ভাসে আমার অন্তর মহল --- একগুঁয়ে জেদি ইচ্ছায়,  কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ থেকে জ্বলে উঠি সূর্যের মতো সোনালী উজ্জ্বলতায়, যেখানে কোন করুণা ভিক্ষার গ্লানি নেই, আছে শুধু নিজস্ব অভিলাষ, সাধারণের অসাধারণ জীবন দর্শন, টিকে থাকার পারদর্শিতা। মেঘ ক্ষণস্থায়ী, সূর্য যে অবিনশ্বর, বেঁচে থাকতে চাই এই প্রতিপাদ্যে। *************************** অর্চনা মহান্তি পরিচিতি: বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ গ্রামে জন্ম। বাবা শ্রী ফণীভূষণ মহান্তি,মা শ্রীমতী সরোজিনী মহান্তি। পারিবারিক ভাবে সাহিত্য পাঠের সুন্দর পরিবেশে বড় হওয়ায় খুব ছোটবেলা থেক...
কচুশাক – সাথী সেনগুপ্ত

কচুশাক – সাথী সেনগুপ্ত

কাশবন ৬
কচুশাক সাথী সেনগুপ্ত সুলগ্না ফ্রিজ পরিষ্কার করছিল । মানার মা ঘর ঝাঁট দিয়ে, বালতিতে ন্যাতা ভিজিয়ে মোছার জোগাড় করছিল। সুলগ্না ফ্রিজ থেকে একগাদা কৌটো বার করেছে। তাতে অনেক পুরনো খাবার জমে আছে । সেগুলো খুলে খুলে , গন্ধ শুঁকে ময়লা ফেলার বালতিতে ফেলছিল সে। মানার মা ঘর মুছতে মুছতে মনে মনে ভাবল – ‘বাবাঃ, বউদিরা কত খাবার নষ্ট করে। সময়মত খেয়ে নিলে বা ওকে দিয়ে দিলেও তো পারে।’ সুলগ্না বলল, ‘তুমি শোবার ঘর দুটো আগে মুছে নাও। তারপর এদিকে এসো।’  এ কৌটো ও কৌটো খুলতে খুলতে একটা কৌটোয় ভেজে রাখা ইলিশ মাছের মাথাটা পেল সুলগ্না। দুদিন আগে ইলিশ মাছ রান্না হয়েছিল। তখনই বাণীকে দিয়ে মাথাটা ভাজিয়ে রেখেছিল । পুঁইশাক , চালকুমড়ো ইত্যাদির সঙ্গে ইলিশের মাথা দিয়ে কাঁটা চচ্চড়ি বা ঘণ্ট বেশ লাগে সুলগ্নার। কিন্তু মুশকিল হল কাঁটা চিবোবার সময় কোথায় ? রোজই তাড়াহুড়ো করে অফিস ছুটতে হয়। আর বিপ্লব এসব কাঁটা চচ্চড়ি খেতে পছন্দই করেন...
নীরবতা পালন – রাজর্ষি দত্ত 

নীরবতা পালন – রাজর্ষি দত্ত 

কাশবন ৬
নীরবতা পালন রাজর্ষি দত্ত  প্যারি কার্ডিনের কলমটা লেখা থেকে উঠিয়ে ঢাকনা বন্ধ করলেন সিরাজুল-দা। বললেন “আয়! বোস এখানে !”     রাকেশ ঝাঁকড়া চুলে হাত বুলিয়ে চেয়ারে বসলো। টেবিলের উল্টোদিকে সিরাজুলদাকে দেখে ছোটখাট লাগছে–সেটা তাঁর নিজের উচ্চতার জন্যও হতে পারে। উনি বলা শুরু করলেন–“দ্যাখ,বেশি কথায় যাচ্ছি না। কাল থেকে সিচুয়েশনটা আটারলি গ্রেভ। শুকিয়াগড় জায়গাটা টার্বুলেন্ট না,আবার প্রায়ই কিছু না কিছু লেগে আছে। কিন্তু কালকের কেসটা খুব সেনসিটিভ। একটি ২২ বছরের মেয়েকে রেপ করে মার্ডার ! তারপর তো সবই জানিস। ঘেরাও,ভাঙচুর,রোড ব্লক...পুলিশ সবটা সামলাতে হিমশিম খেয়েছে। রুলিং পার্টির কেউ যেতে পারেনি–অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যালাও করেনি...মানে এখনো করছে না। এদিকে ঘটনার বারো ঘন্টা পার হয়ে গেল। ব্যাপারটা ঠিক হচ্ছে না!”   মোবাইলটা বেজে উঠলো। সিরাজুলদা নম্বরটা দেখেই কেটে দিলেন। এবার একটু সামনে ঝুঁকে রাকেশের দিকে...
মা দুর্গা – কঙ্কণা সেন

মা দুর্গা – কঙ্কণা সেন

কাশবন ৬
মা দুর্গা কঙ্কণা সেন মা দুর্গা ,দেবী দুর্গা  যা বলেই ডাকি না কেন মা বলতেই দুর্গা পটে আমার মায়ের ছবিটি যেন। কখনো অপার সহিষ্ণুতা কখনো অপার ক্ষমা কখনো আবার প্রতিবাদে মুখর আমার মা। দীনজনে দরাজ দু'হাত উজাড় হত মা যে সংসারের দশদিক সামলাতো উদার ভাবে। লালপাড় শাড়িতে ঘামে ভেজা সিঁদুরে  হাতে শুধু শাঁখা পলা তাতেই মা জমজমা। তাই বলি ভাই ------ মা দুর্গা দেবী দুর্গা  যা বলেই ডাকি না কেন  মা বলতেই দুর্গা পটে  আমার মায়ের ছবিটি যেন।  *********************************** আস্ফালন কঙ্কণা সেন ----------------- চায়ের কাপে তুফান ওঠে! ভেক দরদে নেতা কাঁদে।। জ্বলছে আগুন পুড়ছে মানুষ কার তাতে কী?নেই কারো হুঁশ! হাত পা সেঁকো খোসমেজাজে ক্ষমতা তোমার পেশীর ভাঁজে। মানুষ কাঁদে সাঁঝ সকালে নারীর লজ্জা ঢাকো আঁচলে। শাসক শাসায়...
মায়ের টানে – অঙ্কন দন্ড

মায়ের টানে – অঙ্কন দন্ড

কাশবন ৬
“মায়ের টানে” কলমে : অঙ্কন দন্ড  শরতে মায়ের পুজোর বেদী পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, আর শূন্যস্থান পূরণ হয় বহু ঘরে।  সারাবছর অবহেলায় পড়ে থাকা বালিশটা মাথা পায়, ডাইনিংয়ের ফাঁকা চেয়ারটা সঙ্গী পায়। যারা ঘর ছাড়া তারা পুজোর স্বপ্ন দেখে - স্বপ্নে আসে মায়ের হাতের খাবার,  ছেলেবেলার বন্ধু বান্ধব,নীল রঙের শাড়িতে প্রেমিকা। স্বপ্নে তারা কাশের ঢেউয়ে ভাসে।  মায়ের টানে তাদের ফিরতে হয়। মা আসেন,বাড়িকে ঘর করে তোলেন। ************************** অঙ্কন দণ্ড, জন্ম ২০০৩ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী। বাসস্থান পুরুলিয়া জেলার আদ্রায়। মাতার নাম বনশ্রী দণ্ড, পিতার নাম স্নেহাশিস দণ্ড। অঙ্কনের লেখালেখির পথ চলা কবিতা দিয়ে। আনন্দবাজার পত্রিকার জেলার পাতা " ছোটদের পাতা " শীর্ষক - এ তার স্বরচিত কবিতা নিয়মিত প্রকাশিত হত। স্থানীয় পত্রিকা " ঊষশী" তেও স্থান পেয়েছে তার কবিতা। এছাড়া নানান গল্...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!