Shadow

কাশবন ৬

কাশবন ৬

বিপন্ন বসুধা – আশিস দাস

বিপন্ন বসুধা – আশিস দাস

কাশবন ৬
বিপন্ন বসুধা আশিস দাস মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি প্রাণ !! এ ঘটনা উত্তরকাশীর ; এ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আজকাল মাঝেমাঝেই এই মেঘ ভাঙ্গা বৃষ্টিতে মৃত্যুর কথা শোনা যায় ; এরকম ঘটনা ঘটেছিল কয়েকবছর আগে পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডিতে I প্রকৃতি চিরকালই এক পরম বিস্ময়,আজ সেই প্রকৃতি যেন আরো বিস্ময়কর হয়ে উঠেছে ; প্রকৃতির রুদ্ররূপ মানুষকে আতঙ্কিত করছে ; আজ প্রশ্ন উঠেছে যে ,শুধু শিশু নয়,আবালবৃদ্ধবনিতার পক্ষেও এ পৃথিবী কতদিন বাসযোগ্য থাকবে?? অবিশ্রান্ত বৃষ্টি, ভয়াবহ তাপপ্রবাহ,  ভয়ঙ্কর দাবানল  ইত্যাদি অস্বাভাবিক  প্রাকৃতিক ঘটনা আজ পৃথিবীর প্রধানতম  সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে  : পৃথিবীর যে সব দেশ শীতল     আবহাওয়ার জন্যে পরিচিত,সেই সব দেশও উষ্ণ হয়ে উঠেছে |  আজ ১লা জুলাই ,২০২৫  এ খবরের কাগজের রিপোর্ট যে "Heatwave singes from France to Turkey" | ফ্রান্স,পর্তুগাল, স্পেন, তুরস্ক প্রভৃতি দেশ ...
যখন বৃষ্টি নামলো – দীপান্বিতা দত্ত

যখন বৃষ্টি নামলো – দীপান্বিতা দত্ত

কাশবন ৬
যখন বৃষ্টি নামলো    দীপান্বিতা দত্ত বয়স তখন বারো পেরিয়ে তেরো সবে কিশোরী মনে সদ্য তখন প্রেম জমেছে মেঘলা আকাশ ঝড় বাদলে শখ জেগেছে । টাপুর টুপুর,রিমঝিম,ঝমাঝম বৃষ্টি জলে পাড়া যেন আস্ত পুকুর মনের ভিতর উথাল পাথাল সারা দুপুর । ভাত ঘুমে শান্ত যখন সারা বাড়ি বেরিয়ে পরি ছাতা হাতে চুপিসারে মা বলতো ভিজে যাবি যাসনা ওরে ...... শরীর ভিজে দেখা দিল বুকের রেখা ওমনি শুরু পুরুষের নজর পরা সেদিন থেকে ফ্রক ছেড়ে শাড়ি ধরা । বাবার শাসন,মায়ের ছিলাম চোখের মনি ভরসার ছায়াপথে দিবস-যামি স্নেহের পরশ কুড়িয়েছি এই আমি । সংসার আপন জনের মায়া ছেড়ে গিন্নি সেজে চাবির গোছা আঁচলে ভরে ডালপালা মেলে ধরি খেলা ঘরে । সময় ফুরায় মেঘ জমে বৃষ্টি নামে অলক্ষিতে বীজমন্ত্রে বিভূতিভূষণ  রবিঠাকুর,তারাশঙ্কর,শেখায় জীবন ।। ************************** দীপান্বিতা দত্ত-জন্ম আসামে,বিবাহসূত্রে বর্তমানে কলকাতায় থা...
লোকরানি ঝলকারি বাঈ – অজন্তা প্রবাহিতা

লোকরানি ঝলকারি বাঈ – অজন্তা প্রবাহিতা

কাশবন ৬
লোকরানি ঝলকারি বাঈ : বিস্মৃত এক বীরাঙ্গনা কলমে - অজন্তা প্রবাহিতা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস লিখতে গেলে আমাদের চোখে প্রথমেই ভেসে ওঠে ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাই। তিনি সাহসের প্রতীক, প্রতিরোধের প্রতিমা। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় রাণীর ছায়াতেই ঢাকা পড়ে গেছেন আরেক সাহসিনী—লোকরানী ঝলকারি বাঈ। অথচ তাঁর আত্মত্যাগ প্রমাণ করে দিয়েছে,পুরুষের কাঁধে যেমন বন্দুক ছিল,তেমনি নারীর বুকেও জ্বলছিল একই অগ্নিশিখা। ১৮৩০ সালের ২২ নভেম্বর, উত্তরপ্রদেশের ভুজনি গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেন ঝলকারি। শৈশব থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠা দারিদ্র্য ও বৈষম্যের মধ্যে। কিন্তু এই প্রতিকূলতাই তাঁর সাহসকে আরও শানিত করেছিল। ছোটোবেলার এক ঘটনা যেন তাঁর ভবিষ্যতের আগুনকে আগেভাগেই ঘোষণা করেছিল—গরু চরাতে গিয়ে হঠাৎ জঙ্গলে এক বন্য চিতার মুখোমুখি হয় ছোট্ট ঝলকারি। অন্য বাচ্চারা পালিয়ে গেলেও তিনি লাঠি হাতে লড়ে ওঠেন চিতার সঙ্গে,আর অবশেষে...
কালপ্রিট – বিদ্যুৎ পাল

কালপ্রিট – বিদ্যুৎ পাল

কাশবন ৬
কালপ্রিট   বিদ্যুৎ পাল সময়টা বিশ শতকের আশির দশকের শেষভাগ। গঙ্গার ধারে সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষকদের কিছু কোয়ার্টার। বিকেল হতে না হতেই প্রায় সবার গাড়িগুলো বেরিয়ে যায়। বেশির ভাগ নতুন। নতুন প্রধানমন্ত্রী পদভার গ্রহণ করে নতুন আর্থিক নীতিসমুহ জারি করার পর থেকেই হঠাৎ বাজারে গাড়ি কেনার ধুম পড়ে গেছে। গাড়িও বেরুচ্ছে প্রতিদিন নতুন নতুন রকমের। জাপানি টেকনলজির ব্যাপারটা তো আছেই। চতুর্দিকে আশু লক্ষ্মীলাভের একটা আবহাওয়াও আছে। তবে সবচেয়ে বড়ো বোধহয় মনোজগতের দিকটা। যুবক প্রধানমন্ত্রীর সদাসপ্রতিভ মুখশ্রীতে আর চলনে বলনে কেমন একটা বরাভয় আছে, “সময় নষ্ট কোরো না। কিছু করে গুছিয়ে নেওয়ার এই কটা দিন;বিশ্বাস রাখতে পারো,আমি কোনো কিছুতেই বিচলিত হবো না।” আপাততঃ যে ব্যাপারটার দৌলতে এই গাড়ির সৌভাগ্য এসেছে শিক্ষকদের ঘরে,সেইদিকেই বিকেলে যায় গাড়িগুলো–শহরে নতুন গজানো বিভিন্ন কোচিং ইন্সটিট্যুটে।  আড্ডার সম...
আসা যাওয়ার পথের মাঝে – বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত 

আসা যাওয়ার পথের মাঝে – বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত 

কাশবন ৬
আসা যাওয়ার পথের মাঝে                 বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত            অবসন্ন মনে, ক্লান্ত  বিকেলে ,        দীর্ঘশ্বাস  ফেলে ঘরে ফেরা পাখির দল।                  নিঃশব্দে হিসেবের  খাতা উল্টোয়,                          পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বে      স্বপ্নের পাহাড়ে আগাছার ভীড়,               বিশল্যকরণীর অস্তিত্ব বিলুপ্তপ্রায় ।                   মনমাঝি বৈঠা বায় মাঝ দরিয়ায় ,                         অদ্ভুত শান্ত নদীর স্রোত।  প্রতিবাদী ভাষাগুলো মোহনায়  বীতশ্রদ্ধ,             সারাদিনের  পরিশ্রমের ব্যর্থতায়।          রিক্ত হাতে আশ্বাসের বাণী ধ্বনিত,                 সাথে হিমশীতল আস্ফালন ।      অন্ধ সমাজের বুকে বিচার ব্যবস্থা অর্থহীন ,          মূল্যবোধের জটিল  অঙ্কে,                             বিকল হিসাবযন্ত্র।  গুরুমশায়ের পাঠশালায় ,                ...
পাকা দেখা – অমরেন্দ্র কালাপাহাড়

পাকা দেখা – অমরেন্দ্র কালাপাহাড়

কাশবন ৬
পাকা দেখা অমরেন্দ্র কালাপাহাড় তিন্নি কলেজে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলো। মা রান্নাঘর থেকে হেঁকে বলে,“আজ দুটো পর্যন্ত কলেজ করে বাড়ি ফিরবি। আজ তোর পাকা দেখা আছে। ওরা বিকেল চারটার মধ্যে এসে যাবে। তোর বাবা পইপই করে বলে গেছেন যেন অন্যথা না হয়। ছেলে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার। তোর বাবার বন্ধুর ছেলে। ওদের কথা-জানা শোনার মধ্যে যখন একেবারে পাকা দেখাই হবে।"  তিন্নি রাগতস্বরে মাকে বলে,“যে মেয়েটির এখনো কলেজ পড়া শেষ হলো না,নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য একটা চাকরি জুটলো না কেন তাকে নিয়ে এত তোমাদের মাথা ব্যথা? তার চেয়ে গলায় কলসি বেঁধে গঙ্গায় ফেলে দিতে পারো? মা বলে,” অমন সুন্দর ছেলে, জানাশোনা,ভালো চাকরি করে,বাবার বন্ধুর ছেলে ! তারা যেচে এসেছে ! এমন করে হাতের লক্ষ্মী ঠেলে ফেলে দিতে হয় মা?” তিন্নি রাগে গজগজ করতে করতে কলেজে বেরোয়। মনের ভিতর একরাশ চিন্তা কিভাবে এ যাত্রা বিয়ের পাকা দেখার হাত থেকে অব...
“প্রেমানল” :: মেঘদূত 

“প্রেমানল” :: মেঘদূত 

কাশবন ৬
শিরোনাম  :: "প্রেমানল" কলমে :: মেঘদূত  দিয়েছ তুমি ভোরের ঠিকানা, এনেছ প্রেমের জোয়ার,  জীবনের বাগে ফোটালে কুসুম, খুলেছ মনের দুয়ার।  শেখালে সকল শিল্পীর কাজ, মূরতি গড়িতে প্রেমের, তুলিতে মাখালে স্বর্ণালী রঙ, নিঙাড়ি নির্যাস হেমের। তোমার পরশে আলোকিত হল, আমার আঁধার ভুবন, খুলে গেল যত বন্ধ বাতায়ন, মুক্ত উদাসী পবন। আহ্বান তোমার সাড়া ফেলে দিল,হৃদয় নীলিমা জুড়ে, ভষ্মীভূত হল সব রাগ অভিমান, প্রেমের অনলে পুড়ে। তোমার প্রেরণা জোগালো সাহস,লঙ্ঘিতে উচ্চ শিখর, স্রোতস্বিনী হল চর ভরা নদী,বহিল জলধারা প্রখর। তোমার আগমনে খুঁজে পেল মন,একটি নিবিড় বাসা, পুরিল কাঙ্খিত অবলুপ্ত বাসনা,জাগিল হৃদয়ে আশা। *************************** শক্তি শঙ্কর পাণ্ডা : ( সাহিত্যে ছদ্মনাম "মেঘদূত")  তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিমবঙ্গ নিবাসী। জন্ম ইং ১৯৫৩ সাল। জন্মস্থান নন্দীগ্রাম। কেন্দ্রীয় সংস...
হৃদয়ের পাড় ভাঙার শব্দ – অঞ্জন নন্দী 

হৃদয়ের পাড় ভাঙার শব্দ – অঞ্জন নন্দী 

কাশবন ৬
হৃদয়ের পাড় ভাঙার শব্দ          অঞ্জন নন্দী  (এক)  তুমি  তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি সেই কবে শ্রাবণের অঝোর ধারায় ভিজে চলতে চলতে পথে তাকিয়ে দেখি তুমি নেই। শুধু উষ্ণতা রয়ে গেছে বুকে, সুরের ধারার মতো হাসি  বৃষ্টির রিমঝিম শব্দের সাথে মিশে দূর থেকে ভেসে আসে... পাড় ভাঙার শব্দ শুনি, নদী না মনের!   ( দুই )  হৃদয়ে লালন সাঁই  বৃষ্টিতে ভিজে অনেকটা পথ হেঁটে যাই একা,  আকাশের তারা মেঘে ঢাকা দিকদর্শী ধ্রুবতারা নেই, কালিগঙ্গা নদী তীরে শ্মশানের লাশ পোড়া গন্ধ ভেসে আসে , তারপাশে লালনের ঘর গড়াই সাঁতরে যাবো শিলাইদহ ? আমার চলার পথ কোনদিকে ! কোনখানে থিতু হবো , বৃষ্টিতে ভিজি অবিরাম । .................................................. লেখক: অঞ্জন নন্দী  পদার্থবিজ্ঞানের প্রফেসর ও লেখক। বর্তমান ঠিকানা: ডালাস, আমেরিকা। ...
পপামাসির গোয়েন্দাগিরি : সোনা চালান আর মুখের মিলে বিপদ – প্র ত্যু ষ   সে ন গু প্ত

পপামাসির গোয়েন্দাগিরি : সোনা চালান আর মুখের মিলে বিপদ – প্র ত্যু ষ   সে ন গু প্ত

কাশবন ৬
পপামাসির গোয়েন্দাগিরি : সোনা চালান আর মুখের মিলে বিপদ প্র ত্যু ষ   সে ন গু প্ত   ।। এক।।   পান্ডুরঙ্গপূরমের ভেনাস অ্যাপার্টমেন্টের ১৪ তলার মিসেস ফার্নান্ডেজ প্রতিদিন ভোরে তাঁর রটহুইলার টি কে নিয়ে হাঁটতে বের হন। নিজেরও তাতে একটু হাঁটাহাঁটি হয়। ওঁর ফ্ল্যাট থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে  রামকৃষ্ণ বীচ। সমুদ্রতটের শহর বিশাখাপত্তনমের সমুদ্রতীর বরাবর অগুন্তি বীচ রয়েছে। রামকৃষ্ণ বীচ বা সংক্ষেপে আর ,কে বীচ এর মধ্যে জনপ্রিয়তম। এই দীর্ঘ সমুদ্র তট টি পরিচ্ছন্ন এবং বেশ ছড়ানো ছিটোনো। এর অবস্থান মূল শহরের গা ঘেঁষে হওয়ায় এটি দারুন জনপ্রিয় এবং জনবহুল। রাস্তা বরাবর দীর্ঘ লোহার রেলিং সমুদ্রতটকে আলাদা করে রেখেছে। একটু উঁচু  ফুটপাথ। রেলিংয়ের মাঝে মাঝে গেট। সিঁড়ি দিয়ে নেমে বালুকাবেলা। একশো পা হাঁটলে তবে সমুদ্র। সারাবছর টুরিস্টদের ভিড় লেগে থাকে এখানে । এখানে দ্রষ্টব্য স্থানও অনেক। একটা সাবমেরিন রাখা আছে। আইএনএ...
রক্তে রঞ্জিত প্রেম – নবনীতা চক্রবর্তী

রক্তে রঞ্জিত প্রেম – নবনীতা চক্রবর্তী

কাশবন ৬
রক্তে রঞ্জিত প্রেম   নবনীতা চক্রবর্তী "আরও কতটা পথ পার হতে হবে একসাথে পথ চলতে গেলে,বলতে পারিস,বাবুল?”  কথাটা বলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় রুকসা। যাকে বলে,তার দীঘল চোখের দৃষ্টি তখন দূরের সর্ষে ক্ষেতের দিকে। সে বিভোর হয়ে দেখছিল,নীল আকাশের ক্যানভাসে হলুদ সবুজের রং-মিলান্তির খেলা। রুকসার একহাত শক্ত করে তার একহাতে ধরা। হঠাৎ রুকসার এই প্রশ্নে,প্রায় চমকে তাকায়। দেখে, বড় বড় চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে রুকসা। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বাবুল বলে,"এমন সব প্রশ্ন করিস না মাঝেমাঝে !” রুকসা আর বাবুলের বন্ধুত্ব তাদের কলেজ জীবনের শুরু থেকেই। শহরতলির বড় একটি কলেজে পড়ত ওরা। আড়ষ্ট ও মুখচোরা বাবুলের মায়াবী চোখ, আকৃষ্ট করেছিল ছটফটে মেয়ে রুকসাকে। হস্টেলে থাকা বাবুল মোটেই মিশুকে ছিল না। এদিকে নাচ গানে পটু এবং সারাক্ষণ হইচই করা রুকসার ভীষণ মনে ধরেছিল এই নিরীহ ছুপারুস্তম কবিকে। ধীরে ধীরে যত জেনেছে,দেখেছে,ততই জড়...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!