Shadow

কুলায়ফেরা – পঞ্চম বর্ষপূর্তি

কুলায়ফেরা – পঞ্চম বর্ষপূর্তি

বাসাবাড়ি – ডঃ গৌতম সরকার

বাসাবাড়ি – ডঃ গৌতম সরকার

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
বাসাবাড়ি ডঃ গৌতম সরকার দরজা দিয়ে ঢুকেই অপ্রশস্ত শ্যাওলা পড়া উঠোন। বাঁদিকে কুয়ো,কুয়োর পাশেই তিন ধাপ সিঁড়ি উঠে এজমালি পায়খানা। একটু এগিয়ে ঢাকা বারান্দা,যার এদিক থেকে ঢুকে বাঁদিকে ঠাকুরের রান্নাঘর পেরিয়ে সোজা ছাদে ওঠার সিঁড়ি। ছাদে একটা ছোট্ট ঘর। ঢাকা বারান্দার বাইরে ডানদিকে পাশাপাশি তিনটে ঘর। মাঝের লাল টুকটুকে মেঝের ঘরটি আমার বাবার বাসা। জায়গাটা আধাশহর হলেও, আমার চোখে এটাই দিল্লী-বোম্বাই-কলকাতা সব। এখানে ঘরের পাশেই পিচ রাস্তা,মুহুর্মুহু বাস-ট্রাক-ট্যাক্সি ছুটছে। আরেকটু দূরের রেলস্টেশন থেকে আসা ট্রেনের আওয়াজ বাসায় বসেই শুনতে পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামে এসব কল্পনাও করা যায়না। বাড়ি থেকে বাস রাস্তার দূরত্ব প্রায় দু-কিলোমিটার। হেঁটে,নয় সাইকেলে যেতে হয়। সারা গ্রামে দোকান বলতে দুটো মুদিখানা দোকান। আর এখানে ঘর থেকে বেরোলেই ঝাঁ চকচকে দোকান শত সম্ভার সাজিয়ে বসে আছে। আমি এখানে থাকিনা। এটা আমার বাবার বাসা...
ফুটো – দীপাঞ্জন মাইতি

ফুটো – দীপাঞ্জন মাইতি

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
ফুটো দীপাঞ্জন মাইতি মাকে ফুটোর মনে পড়ে না। আট বছর হলো-জন্ম ইস্তক্ ভোলাকেই চিনেছে বাপ বলে। ভোলার সাথে ফুটোর কোনো মিল নেই। আমিনা চাচী বলে,ফুটোর নাকি মায়ের সাথে খুব মিল তবে আয়নায় ফুটো দেখেছে ওর চোখের কটা রংটা ঠিক রকির মত। রেলগেট থেকে স্কুল মোড় এলাকার সত্তরটা ট্রাফিক মোড়ের সর্বেসর্বা রকি।  রকি হল ফুটোর ফেভরিট,ফুটো বড় হয়ে রকির মত হতে চায় কারণ আর লোকে বলে ফুটো নাকি জন্মের আগে থেকেই রকির ফেভরিট। তখন কত হবে বয়স মাস ঘুরেছে হবে বড় জোর...প্রথম দেখাতেই রকির জহুরী নজরে পড়েছিল ফুটো। তখন ফুটোর সে কি ফুটেজ...। তবে সে সব কিছুই ফুটোর মনে নেই সবই আমিনা চাচীর কাছে শোনা। চাচীই নাকি সব থেকে বেশী কাটে,বেশীদিন কোলে পাততো ফুটোকে...শ টাকায় ৪০ রকির,৩৫ চাচীর আর ২৫ ফুটোর। এতদিন কোলে পেতেছে,চাচীর গায়ের গন্ধটাই তাই বোধহয় ফুটোর সবচে চেনা। বেশী জড়িয়ে পড়লে ধান্ধা চৌপাট হয়ে যাবে তাই রোজ রাতে রকির অর্ডারে ভোলার এক হাতে নোট...
দুটি খুন ও পপা মাসীর গোয়েন্দাগিরি – প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত

দুটি খুন ও পপা মাসীর গোয়েন্দাগিরি – প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
দুটি খুন ও পপা মাসীর গোয়েন্দাগিরি   প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত  ।।এক।। পমপম এক মনে ফাইলে চোখ বোলাচ্ছিল। গত সাতদিন ধরে যা ধকল গেলো। আরডিএক্স পাচারকারীদের ধরতে একরাত ধানক্ষেতে জল কাদা আর মশার মধ্যে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হয়েছিল। পাশেই বাংলাদেশ বর্ডার। জলাজমি ছাড়ালেই আত্রেয়ী নদী। ওটা পেরোলেই পগার পার। পমপম আজ অফিসে যাবেনা। বাড়িতে বসেই তাই কিছু কাজ এগিয়ে রাখছিলো। মুনের সঙ্গে দুপুরে একটা ছবি দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে। মুন হলো পমপমের দিদির মেয়ে। ক্লাস ইলেভেন। মাসীর মতন গোয়েন্দা হতে চায়। আর মাসীর পয়েন্ট নাইন রিভলভার দিয়ে মনে মনে গুলি চালায় বদমাশদের উপর। মোবাইলটা বেজে উঠলেই পমপম দেখলো ডিআইজি সাহেব তলব করেছেন। এক্ষুনি যেতে হবে। সিকিউরিটিকে ডেকে দ্রুত গাড়ি বের করতে বললো। ঝটপট জিনসের উপর সাদা টি শার্ট গলিয়ে ওয়ালেট আর বন্দুকটা নিয়ে বেরোতে যাবে তখনই ডাক, - "পপা মাসী? পপা মাসী আজ যাবেনা?”  পমপমের মনটা একটু খারাপ হল...
মোমরঙের সংসার – ব্রততী চক্রবর্ত্তী

মোমরঙের সংসার – ব্রততী চক্রবর্ত্তী

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
  মোমরঙের সংসার  ব্রততী চক্রবর্ত্তী   -- ও ঠাম্মা পয়সা দিবা? কাঠি আসকিরিম খাবো এট্টা। নারকোলের আচায় এক খাবলা ছাইমাটি মিশিয়ে ছোবড়া আনতে গেছিল বিন্দে। সকড়ি বাসনগুলো কলপাড়ে পড়ে রয়েছে সকাল থেকে। হাজারটা কাজ সেরে তবে তো ফুরসত। তারমধ্যে এই এক নাতি তার ঘাড়ে। কলতলায় থেবড়ে বসে নাতিকে ধমকাল বিন্দে, -- পয়সা কি গাছ থেকে টপকায় নাকি রে? এই তো সকালেই এক পেট পান্তা গিললি! আবার এখন খাবার পয়সা চাস তুই? -- ও তো পান্তা! আমি কাঠি আসকিরিম খাবো। হারুরা সব  খেয়েছে। জিভে কী সুন্দর রঙ হয়ে যায়,জানো? আমিও খাবো, দাওনা পয়সা। ও ঠাম্মা… -- এমন রাক্ষস তো আমি জম্মে দেখিনি ঠাকুর! বলি বাপের কি জমিদারি আছে যে আসকিরিম কিনে খাবি? পয়সা নেই আমার কাছে। যা এখান থেকে। আট বছরের নুরু মাটিতে শুয়ে হাত-পা ছুঁড়ে কান্না জোড়ে এবার। বিন্দে কোনো ভ্রূক্ষেপ না করে বাসনগুলো রগড়াতে থাকে। কিছুক্ষণ বাদে আর সহ্য করতে না পেরে ...
কিচির মিচির

কিচির মিচির

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
অয়ন্তিকা দত্তর অঙ্কন সবুজে ভরা পরিবেশ পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্য যুগলে পেঁচা আমাদের গ্রাম বাংলা অয়ন্তিকা দত্ত বেহালা বকুলতলার বাসিন্দা। সাউথ পাবলিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রি। =================================== অর্ণ মৈত্রর অঙ্কন আয় ভাই কৃষি কাজে মন দিই অর্ণ মৈত্র তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র,বয়স ৯ বছর ================================ শুভনিষ্ঠার কবিতা শুভনিষ্ঠা ভট্টশালী,দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। স্কুল: মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি। ভালোবাসে: কবিতা লিখতে,শ্রুতিনাটক করতে,নাটক করতে ও নাচ করতে। ================================== সাগর পণ্ডিত এর অঙ্কন ফুটবল হল একমাত্র জায়গা যেখানে ৯০ মিনিটের জন্য সব কষ্ট ভুলে থাকা যায় সাগর পণ্ডিত,ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র,বিবেকানন্দ মিশন,জোকা,স্কুলে পড়াশোনা করে | ফোটোগ্রাফি করার খুব ...
কিচির মিচির

কিচির মিচির

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
অঙ্কন - সৃজনী দাশগুপ্ত             ************************* সৃজনীর পরিচিতি : সৃজনী দাশগুপ্ত মাইকেলনগর শিক্ষা নিকেতনে অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে | নামের সাথে সাজুয্য রেখে সৃজনশীল কাজে সে ধীরে ধীরে পারদর্শী হয়ে উঠছে | আঁকতে‚হ্যান্ড ক্রাফটের কাজ করতে ওর ভালো লাগে | ভবিষ্যতে সবার প্রথমে সে একজন ভালো মানুষ হয়ে উঠতে চায় | পেশাগত জীবনে সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় একজন দক্ষ ও সফল ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবে | -------------------------------------------------------------------------- তানিশা গুহর পেন্টিং ************************** তানিশা গুহ: কাঁকিনাড়া নিবাসী তানিশা গুহ রথ তলা রাজলক্ষ্মী বালিকা বিদ্যামন্দিরের দশম শ্রেণীর ছাত্রী,আঁকতে ভালোবাসে।  ...
রাঙিয়ে দিয়ে যাও – স্মৃতিকণা রায়

রাঙিয়ে দিয়ে যাও – স্মৃতিকণা রায়

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
রাঙিয়ে দিয়ে যাও স্মৃতিকণা রায় প্রায় কুড়ি মিনিট ইউনিয়ন রুমে বসে আছে। শঙ্খদার সঙ্গে দেখা করবে। শেষ দুটো অনার্সের ক্লাস হয়নি। আড্ডা না মেরে ক্যারাম খেলছিল। শঙ্খদা সাধারণত বিকেলের দিকে আসে। তাই একটা গেম শেষ করেই চলে এসেছে। আজ দেখা করতেই হবে। প্রায় ৩৫ মিনিট হয়ে গেল। একটা ছেলে প্রথম থেকেই ইউনিয়ন রুমে রয়েছে। আপাতত ইউনিয়ন রুমে আর কেউ নেই। তারা দু’জন। এখনও পর্যন্ত তারা কেউ কারও সঙ্গে কথা বলেনি। সে উঠে বইয়ের আলমারির কাছে দাঁড়াল। সব কবিতার বই। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, শক্তি, সুনীল। সুভাষ মুখোপাধ্যায় এখনও পড়া হয়নি। তার চোখটা আটকে রয়েছে বইটার দিকে। যদি পাওয়া যেত—! কিন্তু আলমারিতে তালা। বাইরে থেকে দু’বার হাত বোলাল বইটার ওপর। —‘‘পড়বে?’’ —‘‘চাবি দেওয়া তো!’’ —‘‘নেবে কিনা বলো?’’ —‘‘দিন।’’ —‘‘আপনি–আজ্ঞে করলে দেব না।’’ একটু হেসে বলল, ‘‘দাও।’’ —‘‘গুড গার্ল।’’ বইটা পেয়ে সে একটা চেয়ারে বস...
বন্ধন – শ্রীময়ী গুহ

বন্ধন – শ্রীময়ী গুহ

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
  বন্ধন  রঙ তুলিতে - শ্রীময়ী গুহ   ।। এই ছবিটি ভালোবাসা আর বিশ্বাসের এক টুকরো রঙ তুলির আসাযাওয়া কবিতা ।। ********************************************************* শ্রীময়ী গুহ পরিচিতি ছোট থেকেই আঁকার মধ্যেই খুঁজে পান আনন্দ, শান্তি, বন্ধুত্ব এবং অবশ্যই নিজেকেও। নাচ, গান, সাঁতার, বাগান করা, পড়ানো এবং এখনও বইয়ের মধ্যে ডুব দেওয়া শ্রীময়ীর শ্বাস প্রশ্বাস। অল্পস্বল্প লেখেন, কখনও কবিতা কখনও ছোট গল্প। লেখক বা কবি হয়ে ওঠার বাসনা নেই। এমনভাবেই বৈচিত্র্যময় জীবনের রঙ তুলির বন্ধনে পরিবারের সাথে সব্বাইকে ভালোবেসে মুহূর্ত বাঁচাটাটাই ওনার সাধনা। এছাড়া অতি সাধারণ এক মানুষ হতে চাওয়া মানুষ,ছোটবেলায় মাতৃহারা, বাবার যত্নে শাসনে বড় হয়ে ওঠা আর আজীবন স্পষ্টভাবে স্পষ্ট কথা বলেই সহজভাবে নিত্যদিনের যাপনে মিশে থাকা এক রঙ তুলি নিয়ে আঁকিবুকি কাটতে চাওয়া একজন ব্যাক্তিত্ব।    ...
শেষ চিঠি – দেবলীনা দে

শেষ চিঠি – দেবলীনা দে

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
PC: Free Press Journal শেষ চিঠি দেবলীনা দে  নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে কোনো স্বপ্ন দেখা এভারেস্ট জয়ের থেকে কোনো অংশে কম নয়। কোনো স্বপ্ন পূরণ করতে সেখানে ঘাত প্রতিঘাত ত্যাগ অনেক কিছুই সইতে হয়। রোহিণীকেও করতে হয়েছে,সইতে হয়ছে অনেক ঝড়। বাংলা ভাষার প্রতি টান ভালবাসা তার অনেক দিনের। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়,মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার গুলে খাওয়া। বাবার গ্রামে ছোটো কেরানীর দোকান। মায়ের অধীনে বাড়ির বাকি দায়িত্ব। রোহিণীর এক বোন আছে, ঋতিকা। চারজনের এই ছোট্ট সংসারে অভাব অনটন চিরদিনের। তাও সব বাধা অতিক্রম করে জীবন নিজ নিয়ম মেনে চলতে থাকে।বাবার স্বল্প আয়ের কথা দুই বোনেই খুব ছোটো থেকে অবগত। তাই সেভাবে দুজনের কোনো আবদার বা বায়না ছোটো থেকেই নেই।কিন্তু চোখে স্বপ্ন আছে অনেক। দুই কন্যা নিয়ে রথীনবাবু ও রমাদেবীর ছোটো সংসার ভালই চলছিল। মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র। সুখ দুঃখের খেলা লেগেই থাকে। কিন্তু অ...
ভাবনার পরিসর – প্রতিভা পাল সেন

ভাবনার পরিসর – প্রতিভা পাল সেন

কুলায়ফেরা - পঞ্চম বর্ষপূর্তি
ভাবনার পরিসর প্রতিভা পাল সেন ঝুরঝুরে ভাবনার শরীরে ঘুণপোকার দৌরাত্ম্য,ক্লান্ত অবসরে; স্মৃতির রেলিং ধরে উদাস হওয়া মনের-বাঁক! পরিবর্তনের খেলায় সামিল,অভিযোজিত আগামীর অলি-গলি; স্পর্শক বরাবর হেঁটে চলা জীবন হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়ে বলে,- 'স্বপ্ন'রা আজীবন মনেই বেঁচে থাক!' বন্ধ চোখের কোণ-জমা আর্দ্রতা,নীল-শূন্যতায় বাষ্পীভূত হতে চায়; ভোরের আলোর-স্নিগ্ধতায় আশার কিরণ লেখে,নতুন-সুরের স্বরলিপি! ব্যস্ততার ভীষণ-ভিড়ে তপ্ত রোদের দুপুর-ছোঁয়া অনুরাগ- গোধূলির আলোকবর্তিকায় আঁকে,আঁধার রাতের প্রতিচ্ছবি! কথা ছিল আবেগের মিছিলে সামিল হবে না পিচ্ছিল কোনও অনুভব; হিসেবের পাকদণ্ডী বেয়ে,সাজানো হবে কল্পনার পরিবৃত্ত! গুটিগুটি পায়ে যখন তারা'রা জ্বলে ওঠে আকাশের বুকে- এলোমেলো শহর তখন ভাঙা-চাঁদের জ্যোৎস্না মেখে সম্পৃক্ত! বাস্তবে,জীবন-পরিসর ভাবনার রঙে আবৃত!! *************************************************************...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!