Shadow

তৃতীয় বর্ষপূর্তি

মধ্য যান – মণি ফকির

মধ্য যান – মণি ফকির

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
মধ্য যান মণি ফকির এই নদীর নাম কি? বাউল মতী। অদ্ভুত নাম তো। আপনার নাম কি? বদরুদ্দীন হোসেন। লোকে বলে ভাদো মিঞা। আচ্ছা এই নদীর দুই পাড়ে দুটো অনেক পুরনো রাজবাড়ি আছে না? আছে তো জঙ্গলের মধ্যে। সে এক লম্বা ইতিহাস বোজলেন। এপারে রহমত খাঁ এর আলিশান মকান,ওপাড়ে নরসিং উপাধ্যায়দের দালান। দুই পক্ষের ছিল রেষারেষি। কেউ অবশ্য নদী পেরতো না। এদের ঈদের জশন এ মজলিস বসত তো ওদের কালী পূজোয় আতসবাজি। লাভ ছিল গাঁ এর মানুষ দের। পেট পুরে ভাল মন্দ জুটত। শুধু একটি বার.... রাগেশ্রীর আর্তনাদে কথা থামাতে হল। এক লোল চর্ম বৃদ্ধা লাঠি হাতে রাগেশ্রীর সামনে দাঁড়িয়ে। উৎসুক চোখে তাকিয়ে রইল। তার পর বিড় বিড় করে অস্ফুটে পিয়ারী পিয়ারী বলতে বলতে চলে গেল। গাইড অশোক বলল: ভয় পাবেন না। বুড়ি কারোর ক্ষতি করেনা। ওকে সবাই চাঁদ পাগলী বলে। চাঁদ পাগলী, চাঁদ, চন্দ্রা.…..রাগেশ্রীর খুব চেনা চেনা লাগছে। অস্ফুটে বলে উঠল: "চা...
পরিযায়ী – প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত

পরিযায়ী – প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
    পরিযায়ী    প্রত্যুষ  সেনগুপ্ত এইখানে সেই সাগরের নোনা বাতাস কিন্তু নেই। এখানে দগ্ধ দুপুরে গরম ধুলোর উড়ান কই? এখানে কিন্তু সাগর কখনো ধোয়না গিরির চরণ এইখানে আছে গরান সুঁদরী হেতাল গাছের বন! এখানে নদীর মিঠে জল;তীরে গাং চিল দেয় ডাক, জলকেলি করে রূপোলী মাছের ঝাঁক!! এই অঘ্রানে আম,হিজলের পাতা  কাঁপে শিরশির, কুয়াশায় মেখে ভেজে শালিখের নীড়।। দখিনা দোয়েল,চেয়ে দেখ ওই  জাফরানি রঙ হাসে, হেমন্ত বনে সবুজ মুকুটে,শিমুলে ও  পলাশে।। ঘাসফুল ফোটে হলুদ রোদের ওমে, থাকো না এখানে? করুণা অথবা  ভ্রমে? অধরাই আছো,কাছে পিঠে নেই; আছো দৃষ্টিরও দূরে! তবু ভেসে আসা শ্বাসের শব্দ, শুনি যেন বেলা জুড়ে।। এই মাটিতেই স্খলিত চরণে ছায়া এঁকে আসা যাওয়া। ছুঁয়ে ফেলি ছায়া,শুধু ছুঁয়ে যাই, এটাই  কী কম পাওয়া? চলে যাবে কেন পরিযায়ী পাখি,কেন যাবে আর ফিরে? এখানেই থাকো,থেকে যাও উত্তরে।। **********************************...
তারুণ্যের দেশ – বিদ্যুৎ পাল

তারুণ্যের দেশ – বিদ্যুৎ পাল

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
তারুণ্যের দেশ      বিদ্যুৎ পাল সাতসকালে সতেরোখানা বাইক, অন্তঃস্রাবে অ্যাড্রিনালিন, রোববার,বন্ধ দোকানপাট –মাঝচত্বরে দাঁড়িয়ে বৈঠক, “হামলার অ্যাটিচুড চাই,তবে পুরো হবে টার্গেট। প্রত্যেক বাড়ি তোমাদের বাজার; আজ কোনদিকে,অবধেশ? রবীন?” এখন সে এম.আর.এর দিন নেই,ইয়েজ্‌দি হাঁকিয়ে মিঠাপুর গুমটি পেরিয়ে...বীমা এজেন্টেরও কি আছে? সব সেল্‌স-ভীড়, ঘাম, ছাঁটাইয়ের হুমকি,গলায় জিপিএস ট্র্যাকার–“শোহেব,তোমার সিগন্যালে কাটনি,চা খাচ্ছো স্টেশনে;সাতনা যথেষ্ট দূর!” এবং সবটাই তো বাজার–আলাদা আলাদা-চুল,খুলি,কান চোখ,কপাল,নাক,গলা,চামড়া,নখ,অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দেহের... মেডিক্যাল,কস্মেটিক,জিমের আসবাব,হেল্‌থড্রিঙ্ক,গার্মেন্ট্‌স; ঘরে কড়া নাড়ে শীর্ণ কালো মেয়ে,“ধুপকাঠি নেবেন? সাবান?” অদৃশ্য চাবুকে বিষোচ্ছে তারুণ্যের দেশ,জীবন তবু ঢেউ; “আমরা ফ্রেঞ্চাইজি মশাই,চাকরি গেছে,যান মুম্বই, দিউ!” ----------------------------------...
সম্পর্কের মূল্যায়ন – জলি চক্রবর্তী শীল

সম্পর্কের মূল্যায়ন – জলি চক্রবর্তী শীল

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
সম্পর্কের মূল্যায়ন জলি চক্রবর্তী শীল হাতদুটো প্রায় ছিঁড়ে যাবার জোগাড় |  অফিসফেরতা একটু বাজারে ঢুকেছিল বিতস্তা | বাজারে আগুন দাম‚ সেই সঙ্গে সব্জির অপ্রতুলতা | এমনিতে সংসারে সপ্তাহে একদিনই বাজার আসে কিন্তু এবারে সেই সাপ্তাহিক বাজার বাড়ন্ত | অগত্যা বাজারে ঢুকতেই হল তাকে | মা বলতেন‚'ঢেঁকি স্বর্গে গেলে ধান ভানে আর তুই বাজারে ঢুকলে পুরো বেহিসেবীর মত বাজার করিস' |  একটা সময়ে মায়ের সংসারে জুতোসেলাই থেকে চন্ডীপাঠ সবই তাকেই করতে হত |  মা আর নেই ইহজগতে‚কিন্তু অভ্যাসটা রয়ে গেছে | দুহাতে ছোট ছোট বেশ কয়েকটা  ব্যাগে আনাজপত্র নিয়ে বেশ বিপাকে সে | এর মধ্যেই থেকে থেকেই নিয়মিত বিরতিতে কাঁধের ব্যাগের ভিতর থেকে মোবাইলটা  বেজে উঠছে |  যেই কল করুক না কেন এই মুহূর্তে বিতস্তা কিছুতেই কলটা নিতে পারবে না | রিং বেজে বেজে থেমে যায় | বাড়ি ফিরে না হয় কল করে নেবে | আবার বেজে ওঠে মোবাইলটা | বাজুক‚যত ইচ্ছে বাজুক | এই...
ভরা থাক স্মৃতি সুধায় – সুরজিত সরখেল

ভরা থাক স্মৃতি সুধায় – সুরজিত সরখেল

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
"ভরা থাক,স্মৃতি সুধায়" সুরজিত সরখেল "আগে মত যাও দিদি,গ্লেসিয়ার গিরনে কা আওয়াজ শুনাই নাহি দে রাহা হ্যায় কেয়া!" সুখনলালের স্নেহ মিশ্রিত ঈষৎ ধমকের সুরে বলা কথাগুলো জয়ন্তী যেন শুনতেই পেলনা! ততক্ষণে ওর মন চলে গেছে সুদূর অতীতে!      প্রায় বছর কুড়ি আগে স্বরূপ আর  তার বন্ধুদের সাথে এসেছিল এই পিন্ডারি গ্লেসিয়ার ট্রেকিং করতে।সেটাই ছিল জয়ন্তীর জীবনের প্রথম ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা।ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মচারি স্বরূপের প্রচন্ড নেশা ছিল পাহাড় আরোহণ বা মাউন্টেনিয়ারিং। ভীষণ ঝুঁকিবহুল ও বিপদসংকুল এই নেশার জন্যই জয়ন্তীর মা,বাবা প্রথমে এই বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না। তাদের একমাত্র আদরের মেয়ের সাংসারিক জীবনে কোন অভিশাপ নেমে আসুক,তারা মনে প্রাণে চাইতেন না। এটাই স্বাভাবিক! কিন্তু জীবনের প্রথম প্রেমের মানুষটাকে কিছুতেই হাতছাড়া করতে রাজি ছিল না জয়ন্তী | গড়িয়াহাটের বাসন্তী দেবী কলেজের ফাইনাল ইয়ারের ...
জানিনে কে সে – মানবী ঘোষাল দাস

জানিনে কে সে – মানবী ঘোষাল দাস

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
জানিনে কে সে মানবী ঘোষাল দাস  জানিনা আমার জীবনের উপর দিয়ে গেল চলে কে যেন এক জন ! অনুভূতি বলল, সে বুঝি ফাগুন-চৈত্রের সমীরণ। যাত্রাপথে,নত মাথে দিল আমায় পরশ, কানন মাঝে ফুটিয়ে কুসুম আনল মনে হরষ । আমায় অবগত না করেই নিল যে সে বিদায়, একেবারেই গেল চলে জানিনে আমি কোথায় ! যাত্রাপথে আপনমনেই মেলেছিল সে তাঁর নয়ন, জানিনে আমি গেয়েছিলাম কি জানে শুধুই তাঁর মন । স্মৃতিটুকুই অবলম্বন করে আছি বেঁচে ধরণীতে, মনই এখন বন্ধু আমার হয়েছে সাথী কাননেতে । তার যাওয়ার ধরণ এমনই যেন সাগরের বক্ষ মাঝে তরঙ্গের বন্যা, হাসির রাশি ছড়ায়ে সে,শশধরের আলোর দেশে নয়ন কোণে ইশারা রেখে হয়েছে চাঁদের কন্যা । একাকী অন্তর তাই,করছে চিন্তা কেবলই আমি যেতে পারি কোন গন্তব্যে, ভাবনা আমায় করে আকুল তবুও আমি চলি ভেবে । সুধাংশুর নয়ন মাঝে আনল তো সেই তন্দ্রাচ্ছন্নতা, অন্তর মাঝে দিল দোলা দিয়ে ফুলের স্নিগ্ধতা । পুষ্পব...
অঙ্কন – আহেরি মন্ডল

অঙ্কন – আহেরি মন্ডল

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
"সাদা কালো ডালপালা উঁচু করে মাথা গাছে নেই একটাও পাতা। ## দু'হাত মুকুটে ঝুঁকে সামনে খুঁজছে পথ, নাক জুড়ে এই বড় নথ্! ## তারা জ্বলে আকাশের গায়, বাবার হাতটি ধরে সন্ধ্যায় খুকুটি বেড়ায়।।" - আহেরি মন্ডল আহেরী মন্ডলঃ বিশাখাপত্তনম নিবাসী আহেরী, টিম্পনি স্টীল সিটি স্কুলে সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী। পড়াশোনার ফাঁকে ছবি আঁকতে, পাশ্চাত্য গান গাইতে এবং শুনতে খুব ভালোবাসে।  আহেরীর বিজ্ঞান বিষয়টি খুবই পছন্দের। বিজ্ঞান বিষয়ক পরীক্ষা নীরিক্ষা গুলো করে সময় সুযোগ মতো। পড়াশোনা ছাড়াও আহেরী teakwondo মার্সাল আর্ট এবং বাংলা গান শেখে।...
এ যেন এক দুঃস্বপ্ন – কল্যাণী ঘোষ

এ যেন এক দুঃস্বপ্ন – কল্যাণী ঘোষ

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
        এ যেন এক দুঃস্বপ্ন                কল্যাণী ঘোষ         গভীর রাত, নিস্তব্ধ -নীরব       নিবিড় সত্য করি অনুভব,         ভাবিনি এমন এক দুঃস্বপ্ন               ঘুম ভাঙাবে আমার,     স্বজন হারা মানুষের আর্তনাদ,               কাঁদাবে আমায়  ........ মানুষ যেমন অসহায় মৃত্যুর কাছে          তেমনি অসহায় প্রকৃতির কাছে, প্রকৃতিও যেন আজ         নীরবতা পালন করছে, নির্দোষ মানুষের মৃত্যু দেখে।        আমরা সমাজবদ্ধ জীব, সমগ্র মানবজাতি নিয়ে গড়া সুন্দর এই পরিবার.......          সেই পরিবারের সদস্য আমরা,                কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষের 'অসচেতনতা' কলঙ্কিত করে সমগ্র মানবজাতিকে.........           লজ্জার আবরণে মুখ ঢাকতে হয় মানবতাকে।         তাই আজও "বিচারের বাণী"                    নীরবে নিভৃতে কাঁদে........            একান্তে, সততার আদালতে। ************************...
নির্বিকল্প – অর্চনা মহান্তি

নির্বিকল্প – অর্চনা মহান্তি

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
 নির্বিকল্প অর্চনা মহান্তি  অসংখ্য ছোট বড় ঘূর্ণিপাক ,বক্ররেখার সমষ্টিতে আঁকা হয় জীবন-মৃত্যুর সংযোগ রেখা। যা অনিবার্য সরলরেখা,তবু 'সরল' রেখা নয় তবুও হাঁটতে হয় গন্তব্যে হাঁটা ! নাকি গড়ানো ? সময়ের অমোঘ ঠেলায় । যখন শ্রান্ত পথিক হাত-পা জুড়িয়ে নিচ্ছ পৃথিবীর কোনো সরাইখানায় , ভাবছ এ তোমার ক্ষণিকের থেমে থাকা যাত্রাকে দীর্ঘায়ত করার ছল তখনও তো এগিয়েই যাও নিরুপায় পরমায়ুর পায়ে পায়ে । পৃথিবীর অতিথি,গোনাগুন্তি তোমার দিনরাত,সীমিত ভিসার মেয়াদ । প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান।  -- তাই ভালো থাকার আপ্রাণ চেষ্টায় অনিবার্য দুর্গম পথ অতিক্রান্ত করার নিবিষ্ট প্রয়াসে সহযাত্রীদের সঙ্গে নিবিড় সদ্ভাবের শর্তে করে নিতে হয় পারস্পরিক সহযোগিতার দরপত্র। পর্যটকের দৃষ্টিতে অথবা তীর্থ যাত্রীর দৃষ্টিতে দেখে নিতে নয় মহাকালের সুসজ্জিত মন্দির, ঈশ্বরের ভালোবাসার নন্দন-কানন হেম-শীর্ষ সুমহান হিমালয়। প্রশান্তির মলয়-সাগ...
চপের যাদু – অঙ্কন দন্ড

চপের যাদু – অঙ্কন দন্ড

তৃতীয় বর্ষপূর্তি
-- “ চপের যাদু ” --    কলমে:- অঙ্কন দন্ড ~~~~~~~~~~~~~~~~~~ নিমাই কাকুর চপের দোকান গার্লস স্কুলের মোড়ে, রাত দশটায় বন্ধ করে দোকান খোলে ভোরে। চপ - সিঙ্গারা - বেগুনি আছে আছে পাপড়ি চাট, মনের সুখে খাচ্ছে কিনে আশি থেকে আট। প্রথম যেদিন দোকান খোলে সেদিন যে তেল ঢালে, পাঁচটা বছর পরেও সে তেল ভাসে কড়াই তলে। আগের সে তেল কমলে তাতেই ঢালে নতুন তেল, সেই তেলেরই চপ বেগুনি দিচ্ছে ভীষণ সেল। ভুলবশত চুলকে বগল ঠোঙায় ভরে চপ, সেই চপেরই স্বাদ সীমাহীন খায় যে টপাটপ। বাঁচলে কভু তেলেভাজা পাম তেলেতে ভেজে, পরের দিনই বিকিয়ে যাবে ফ্রেশ লুকেতে সেজে। কম দামেতে বেছে বেছে আলু কিনে পচা সেই আলু পুর চপের ভেতর বন্দী করে চাচা। কাকীমা তো আগের রাতেই চপের আলু মাখে, খুব গরমে কপাল মোছে সে হাত ঢোকায় নাকে। তোমার কাছে আমার কাছে সে চপ যেন মধু, খোঁজ নিয়েছ নিমাই কাকু মেশায় কী সেই যাদু! *****...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!