Shadow

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি

অনুরাধা দেয় সুরা – দীপন মিত্র

অনুরাধা দেয় সুরা – দীপন মিত্র

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
অনুরাধা দেয় সুরা দীপন মিত্র তারাদের ময়দানে আমি এক বাউল ভিখিরি আকণ্ঠ তৃষ্ণায় আমি পান করি স্বাতী নক্ষত্রের শুদ্ধ বারি; অনুরাধা দেয় সুরা স্বাদ কী গভীর! মাকড়সার জাল প্রায় নক্ষত্রের কুয়াশা জড়ায় পায়ে হাতে-বন্দি করে সূক্ষ্মতম তন্তু দিয়ে গড়া কারাগারে; সংগীতের দরোজা জানালা,ও সুদূর আর কতো শাস্তি দেবে? রাতে জাগরণ কতো কাল কতো কাল নিদ্রা নেই ঝরনার মতো অকাতর? পালকের মতো শুধু ঝরে যাই নভলোক থেকে! ***************************** সে মোটেও নয় ভদ্র মেয়ে দীপন মিত্র এ কোন প্রতীক্ষা? এই মঞ্চ জুড়ে বয়ে যাওয়া ঝড় শরীর ফেলেছি ছুঁড়ে জালের মতোন কুয়াশায় ঝাঁপ মারো মাছরাঙা,ঝাঁপ মারো মরায় বাঁচায় যে রকম ঝাঁপ মারে গ্যালাক্সিরা,নির্লিপ্ত কৃষ্ণগহ্বর প্রেমও তো কখনো নয় ঝুঁকিহীন! শুধু কি জীবন? মৃত্যু নয় বাজি? ভেসে গেল কত তরুণ তরুণী দুপয়সা পাবে বলে অন্ধকূপে ঝাঁপায় বারুণী বেতের খাঁচায় ঘোরে ঊর্ধ্ব...
নেওড়া ভ্যালি জঙ্গলের রহস্য – সুরজিত সরখেল

নেওড়া ভ্যালি জঙ্গলের রহস্য – সুরজিত সরখেল

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
  নেওড়া ভ্যালি জঙ্গলের রহস্য  সুরজিত সরখেল জঙ্গল আর পাহাড়ের প্রতি আমার দুর্নিবার আকর্ষণ একেবারে ছোট বেলা থেকেই । ইতিমধ্যেই অনেকগুলো জাতীয় অভয়ারণ্য আমার ঘোরা হয়ে গেছে । কোন একটা ম্যাগাজিনে নেওড়া ভ্যালির সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে ওখানে কয়েকটা দিন একা কাটাব বলে ঠিক করে,একদিন সকালে কলকাতার যে অফিস থেকে বুকিং হয়,সেখানে যেতে রজত কান্তি দাস নামে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ হয়। উনিও এসেছিলেন পরিবার নিয়ে পাহাড়ের কোথাও ভ্রমণ করা যায় কিনা অনুসন্ধান করতে। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ গায়ের রঙ! নাম জিজ্ঞাসা করতেই হেসে বললেন,'মায়ের দেওয়া নাম!' এই জায়গাটা ওনার বছর কয়েক আগেই ঘোরা।একা যেতে বারণ করলেন।কয়েকদিনের ইাঁটা পথ।খাবার নিয়ে যেতে হবে, রান্নাও করে খেতে হবে,জঙ্গলে পথ হারাবার সম্ভাবনা আছে। উনি ওনার এক পরিচিত,লাভার বাসিন্দা পদম ছেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিলেন। লাভাতে পদমদের হোমস্টে আছে।অক্টোবর...
মাপ – সুজয় দত্ত

মাপ – সুজয় দত্ত

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
মাপ  সুজয় দত্ত আমি দাঁড়িয়ে আছি অ্যাটেনশনের ভঙ্গীতে। ঘাড়-মাথা-মেরুদন্ড সোজা, হাতদুটো টানটান শরীরের দুপাশে,পাদুটো একসাথে জোড়া। না,স্কুলের পিটি স্যারের ক্লাস নয়,ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পের প্রশিক্ষণ শিবির নয়, নেহাতই একটা দর্জির দোকান। দরজার ওপরের রং চটা সাইনবোর্ডে বড় বড় হরফে লেখা "সুরুচি টেলার্স"। ফুলবাগান মোড়ের বাসস্ট্যান্ড থেকে যে রাস্তাটা বাটার জুতোর দোকান হয়ে বাঁয়ে চলে গেছে পুরোনো চটকলের দিকে,তার বাঁকের ঠিক মুখে উল্টো ফুটে কয়েকটা ঘুপচি দোকান। সেগুলোরই একটাতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বরে বাবার হাত ধরে আমার আনাগোনা আর অ্যাটেনশনে দাঁড়ানো। পুজোর নতুন জামা-প্যান্টের মাপ দিতে। কতটুকুই বা জায়গা? খুব বেশী হলে দশফুট বাই দশফুট। তারই মধ্যে একদিকে ড্রয়ার-ওয়ালা টেবিল পেতে কাপড়ের লম্বা লম্বা থানে লাল-নীল পেন্সিলের দাগ মারা আর বড় বড় কাঁচি দিয়ে দাগ বরাবর কচকচ করে কাটার কাজ  হচ্ছে। অন্যদিকে দেওয়াল ঘেঁষে  সাইকেল...
সম্পর্ক – দেবলীনা দে

সম্পর্ক – দেবলীনা দে

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
সম্পর্ক দেবলীনা দে দিনের শুরুটা জয়িতার রোজ প্রায় একই রকম। কাকভোরে উঠে সারা বাড়ি পরিষ্কার করে স্নান সেরে পুজো। ছেলে মেয়ের ঘুম ভাঙানো, নাতনিকে স্কুলের জন্য তৈরী করা ,তারপর রান্না ঘরে যুদ্ধ। কখনও চায়ের পাতা, কখনও পরোটার আটা তার কোমল হাতের স্পর্শে যেন স্নাত হয়। আর পাঁচটা মানুষের মত ভুলও হয়। চায়ে চিনি বেশি বা তরকারিতে নুন কম। তার জেরে বাড়িতে অশান্তি হয়না বললে ভুল হবে। দোতলা বাড়ি হলেও জীবনের পরিধি যেন এই একতলার মধ্যে সীমিত তার। কিন্তু আজ সেই সীমিত জীবনের চেনা গণ্ডি পার করে জীবন যেন ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে। কাপড়ে রক্তের দাগ তার মাতৃত্বকে নানা প্রশ্ন করছে। আর সামনে শুয়ে আছে তার বছর পনেরোর নাতনি তিতলি। নাতনির হাত তিনি শক্ত করে ধরে আছেন আর গলা থেকে হালকা সুরে ভেসে আসছে ঠাকুর নাম। ভগবানের কাছে প্রার্থনা একটাই,'আমার জীবন কেড়ে নিলে নাও,আমার তিতলির যেন কিছু না হয়।'  মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগ...
জীবন জোয়ার – জলি চক্রবর্তী শীল

জীবন জোয়ার – জলি চক্রবর্তী শীল

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
জীবন জোয়ার জলি চক্রবর্তী শীল (১) 'কি রে ক্লাচার কিনছিস কার জন্য? প্রেমিকার জন্য বুঝি? নাকি নিজের জন্য? ' সুপর্ণ  চমকে দোকান থেকে বেড়িয়ে আসে| এখানেও ওরা! হতাশ লাগে সুপর্ণর| ক্লিপ‚ ক্লাচার‚ হেয়ারব্যান‚ নেলপালিশের মত মেয়েলি জিনিসগুলোরা প্রতি তার একটা স্বাভাবিক দুর্বলতা আছে| পাড়ার দোকান থেকে কিনতে লজ্জা পায়‚ তাছাড়া মা জানতে পারলে মেরে সিধে করে দেবে| তাই বাড়ি থেকে বেশ অনেকটা দূরের লাইনের পাড়ের ছোট দোকানটায় ঢুকে দেখছিল‚ পছন্দও হয়েছিল কিন্তু আর কেনা হবে না| 'কি রে বললি না তো কার জন্য কিনছিস?' আবার বলে ওঠে ওরা| ওরা সুপর্ণর  জ্যাঠতুতো দুই দিদি আর দিদির বন্ধুরা| হেসে গড়িয়ে পড়ছে এ ওর গায়ে|  সুপর্ণর গাজ্বালা করে| চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সে| কিছু বললেই সেসব নিয়ে আবার শুরু হয়ে যাবে হা হা হি হি| 'ভাই শুধু শুধু কিনে পয়সা নষ্ট করিস না‚ আমার তো সব আছে‚ তোকে না হয় দিয়ে দেব| তারপর সেজেগুজে ছক্কার মত বের...
ছোটমামার ব্রহ্মচর্য – চন্দ্রকান্তি দত্ত

ছোটমামার ব্রহ্মচর্য – চন্দ্রকান্তি দত্ত

দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
ছোটমামার ব্রহ্মচর্য চন্দ্রকান্তি দত্ত  আমার ছোটমামা। শ্রীসত্যব্রত মিত্র। বয়সে আমার মায়ের চেয়ে প্রায় কুড়ি বছরের ছোট ও দাদুর বারোটি সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। ছোটমামা আমার থেকে মোটামুটি চোদ্দ বছরের বড়। যে সময়ের কথা বলছি তখন আমার বয়স একুশ,ছোটমামার পঁয়ত্রিশ। তখনও বিয়ে-থা করেন নি। আমি জানতাম করবেনও না। ওই বয়সেও কঠোর ব্রহ্মচর্য পালন করতেন। ব্রহ্মচর্য পালনের যে নিয়মগুলো ছোটমামা অনুশীলন করতেন তার মধ্যে যোগব্যায়াম,নিরামিষ খাওয়া আর ঠান্ডা পানীয় ছাড়া অন্য কোন নেশা না করা প্রাথমিকভাবে উল্লেখযোগ্য। ছোটমামা রিফ্র্যাকটরি সামগ্রীর কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। এই কাজে তাঁর সহযোগী ছিল প্রায় পনের বছরের পুরনো একটা বাজাজ স্কুটার। মামা সেই স্কুটারে চেপে কাজের তাগিদে সারাদিন চরকিপাক দিতেন। শীত, গ্রীষ্ম,বর্ষা,কখনোই এর অন্যথা হত না। মামার এই স্কুটার সম্পর্কে একটা কথা না বললেই নয়। আমি বাজি রেখে বলতে পারি,এই স্ক...
error: বিষয়বস্তু সুরক্ষিত !!